মিয়ানমারের সামরিক সরকারের বিরুদ্ধে জড়ো হওয়া একটি প্রতিবাদ সমাবেশে সেনাবাহিনীর পাঠানো দুটি প্যারাগ্লাইড বোমা বিস্ফোরণে ২৪ জন নিহত হয়েছেন। এ সময় আহত হয়েছেন ৪৭ জন।

বুধবার (৮ অক্টোবর) বিবিসির খবরে বলা হয়, সোমবার সন্ধ্যায় মধ্য মিয়ানমারের চাউং উ শহরে জাতীয় ছুটির দিন উপলক্ষে প্রায় ১০০ জন জড়ো হয়েছিলেন, এ সময় সেনাবাহিনী আক্রমণ করে।

আরো পড়ুন:

সেনাপ্রধানের বক্তব্যকে বিকৃতভাবে উপস্থাপন করে বিভ্রান্তিকর তথ্য প্রচার করা হচ্ছে: আইএসপিআর

ইউপিডিএফের গোপন আস্তানা থেকে অস্ত্র ও গোলাবারুদ জব্দ  

২০২১ সালে সেনাবাহিনী ক্ষমতা দখলের পর থেকে হাজার হাজার মানুষ মারা গেছে এবং লক্ষ লক্ষ মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছে, যার ফলে সশস্ত্র প্রতিরোধ গোষ্ঠী এবং জাতিগত মিলিশিয়াদের সাথে গৃহযুদ্ধ শুরু হয়েছে।

দেশের অর্ধেকেরও বেশি নিয়ন্ত্রণ হারানোর পর, সেনাবাহিনী আবারও উল্লেখযোগ্য সাফল্য অর্জন করছে। তারা বিমান হামলা ও ভারী বোমাবর্ষণ করে যাচ্ছে।

বিবিসি বার্মিজ সম্প্রতি জানিয়েছে, বিমান ও হেলিকপ্টারের অভাবের মধ্যে জান্তা ক্রমবর্ধমানভাবে প্যারামোটর বেছে নিচ্ছে। সোমবার যে শহরটিতে হামলা চালানো হয়েছিল তা সাগাইং অঞ্চলে অবস্থিত, যা যুদ্ধের একটি গুরুত্বপূর্ণ যুদ্ধক্ষেত্র ছিল। এর বেশিরভাগ অংশ সামরিক বা জান্তা সরকারের বিরুদ্ধে লড়াইরত মিলিশিয়াদের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে।

পিপলস ডিফেন্স ফোর্স (পিডিএফ) নামে পরিচিত এই দলগুলো স্থানীয় প্রশাসনও পরিচালনা করে। পিডিএফের একজন কর্মকর্তা বিবিসি বার্মিজকে জানিয়েছেন, সোমবারের সমাবেশের সময় তারা সম্ভাব্য বিমান হামলার তথ্য পেয়েছিলেন। তারা দ্রুত বিক্ষোভ শেষ করার চেষ্টা করেছিলেন, কিন্তু প্যারামোটরগুলো প্রত্যাশার চেয়ে আগেই ঘটনাস্থলে পৌঁছে যায়।

তিনি বলেন, “সবকিছু সাত মিনিটের মধ্যে ঘটে। বিস্ফোরণে তার পায়ে আঘাত লেগেছে। তবে তার কাছাকাছি থাকা কিছু লোক মারা গেছে।”

স্থানীয়রা জানিয়েছেন, পরবর্তী সময়ে মৃতদেহগুলো শনাক্ত করা কঠিন ছিল।

ঢাকা/এসবি

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর

এছাড়াও পড়ুন:

বাস্তব দর্শনে  যাহা বলে

আপনার কথার দ্বারা মানুষের সম্মানহানি হচ্ছে না তো; আত্ম মর্যাদায় আঘাত হানছে না তো? কথা বলার সময় এই বিষয়গুলি খেয়াল করা অত্যন্ত জরুরী; যদি তাই হয়, তাহলে আত্মসম্মান রক্ষার্থে মানুষ দূরে চলে যায় ও যাবে।

 লোক সম্মুখে কথার ছলে; মজার ছলে কাউকে খোঁচা দিয়ে কথা বলা তাকে হেয় প্রতিপন্ন করার স্বামীল ; এতে একজনের আত্মমর্যাদা ও সম্মান ক্ষুন্ন হয়। তখন ওই লোকটি তার আত্মমর্যাদা রক্ষার্থে, সম্মান রক্ষার্থে বহুদূর চলে যায় ও যাবে। 

 উপরে উপরে সুনাম করা, আর তলে তলে দুর্নাম করা স্পষ্টত চোগোলখোরী; হেয় প্রতিপন্ন ও সম্মান নষ্ট করার জন্যই চোগোলখোরী করা হয়। মনে রাখা উচিত যে, কোন সময়ই চোগোলখোরী চাপা থাকে না ; যখন প্রকাশ পায়, তখন চোগলখোর থেকে মানুষ দূরত্ব বজায় রাখে ও রাখবে।

 কথা দেওয়া ও গোপন কথা মানুষের কাছে আমানত। যখন কথা দিয়ে কথা না রাখা ও গোপন কথা ফাঁস করে দেওয়া হয়, তখন আমানত ভঙ্গ হয়ে যায়। এমন ধরনের আমানত ভঙ্গ হওয়া মানে উদ্দেশ্য প্রমাণিতভাবে মানুষের সম্মানকে নষ্ট করা। আর এমন আমানত ভঙ্গকারীকে মানুষ ঘৃণা করে, দূরত্ব সৃষ্টি করে দূরে রাখে ও রাখবে।

 মানুষকে সম্মান করলে সম্মান পাওয়া যায়; না করলে নাই। যেখানে সম্মান নাই সেখানে মানুষ থাকে না। মানুষ সম্মান ও সুনামের কাঙ্গাল। তাই যেখানে সম্মান নাই  সেখানে দূরত্ব তৈরি হয় ও হবে।

অন্যের কথাকে সম্মান জানিয়ে তার কথা সমাপ্ত করার সুযোগ দিতে হবে। অপর পক্ষে শ্রোতাকেও প্রশ্ন করা, কথা বলার সুযোগ করে দিতে হবে। কেউ প্রসঙ্গ তুলে দিল, আর কেউ বক্তৃতা দেওয়া শুরু করে দিল আবার প্রসঙ্গ তুলে দেওয়া লোকটি বক্তার বক্তব্যকে মাঝপথে থামিয়ে দিল; এর মানে বক্তার কথাকে অসম্মান করা, বক্তাকে হেয় প্রতিপন্ন করা। এমন ক্ষেত্রে বক্তা ওই স্থান-কাল-পাত্র  থেকে নিজেকে দূরে সরিয়ে নেয় ও নিবে।

মানুষের শারীরিক, অর্থনৈতিক, পারিবারিক  অবস্থা যেমন সকলেরই এক নয় ; পৃথক পৃথক বা কাছাকাছি, তেমনি  মানুষের মন-মগজ, জ্ঞান- বুদ্ধি, চাল-চলন, বেশ-ভূষা, কৃষ্টি-কালচার, সামাজিকতা, সার্টিফিকেট-শিক্ষাও এক নয় ; পৃথক পৃথক বা কাছাকাছি। এখন উক্ত বিষয়গুলি নিয়ে মানুষে মানুষে যদি তুলনা করা হয়, তাহলে কেউ কারো সাথে মিশে চলতে পারবে না; যদি তাই করে, তাহলে মানুষে মানুষে  বিভেদ সৃষ্টি হয়। যদি পারস্পরিক সম্মান বোধ রেখে চলা যায়, জ্ঞানী ও গুণীদের কদর করা যায়, সম্মান শ্রদ্ধার সাথে ভালোবাসা যায়, তাহলে মানুষের ভিতরে পারস্পরিক মেলবন্ধন গড়ে ওঠে, ঐক্য গড়ে ওঠে, সম্প্রীতি গড়ে ওঠে, বিভেদহীন সুন্দর একটি সমাজ গড়ে তোলা যায়। আমাদের সকলেরই মনে রাখা উচিত, মানুষ হল  একটি বৃক্ষের শাখা প্রশাখার মত; যেমন সকল শাখা প্রশাখা মূল কাণ্ড নিয়ে গড়ে ওঠে একটি শক্তিশালী পূর্ণাঙ্গ ফলজ বৃক্ষ।

সম্পর্কিত নিবন্ধ