অগ্নি ঝুঁকিতে মানিকগঞ্জ: ছোট প্রতিষ্ঠানে জরিমানা
Published: 12th, October 2025 GMT
মানিকগঞ্জে অগ্নি নিরাপত্তা ও আইন বাস্তবায়নে ফায়ার সার্ভিসের তৎপরতা সীমিত। মোবাইল কোর্ট পরিচালনার হারও খুবই কম। এর মধ্যেও যেসব প্রতিষ্ঠানে অভিযান পরিচালিত হয়েছে, সেগুলোর পরিধি ছোট এবং প্রভাবও সীমিত।
অথচ শহরের কেন্দ্রের বড় বড় প্রতিষ্ঠানগুলো বছরের পর বছর অনিয়ম করলেও তাদের বিরুদ্ধে কোনো কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। জরিমানা বা আইনের প্রয়োগ না করে ফায়ার সার্ভিস কর্তৃপক্ষ কেবল নোটিশ দিয়েই দায়িত্ব শেষ করেছে।
তথ্য অধিকার আইনের মাধ্যমে পাওয়া নথি বিশ্লেষণে দেখা গেছে, ২০২৫ সালের ৩০ জুন ফায়ার সার্ভিসের লাইসেন্স না থাকায় শহরের শহীদ রফিক সড়কের পাশে অবস্থিত ধানসিঁড়ি হোটেল অ্যান্ড রেস্তোরাঁকে তিন হাজার টাকা জরিমানা করা হয়।
নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট আল-মুনতাসির মামুন মনি ও ফায়ার সার্ভিসের ওয়্যারহাউজ ইন্সপেক্টর মন্টু বিশ্বাসের তত্ত্বাবধানে এ মোবাইল কোর্ট পরিচালিত হয়। একই দিনে ঢাকা-আরিচা মহাসড়কের পাশে অবস্থিত ক্যাফে হাইওয়ে রেস্তোরাঁ অ্যান্ড চাইনিজকে লাইসেন্স নবায়ন না করায় পাঁচ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। কিন্তু বছরের পর বছর লাইসেন্স নবায়ন না করা বড় বড় প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে এমন অভিযান চালানোর নজির পাওয়া যায়নি।
সম্প্রতি নানা অনিয়মে আলোচনায় থাকা ডেরা রিসোর্ট অ্যান্ড স্পা সেন্টার ২০২২ সালে শর্তসাপেক্ষে ফায়ার লাইসেন্স নিয়েছিল। পরের দুই বছর তারা লাইসেন্স নবায়ন করেনি। তবুও ফায়ার সার্ভিস তাদের বিরুদ্ধে কোনো অভিযান বা জরিমানা করেনি। বরং লাইসেন্স নবায়নের জন্য তিন দফা নোটিশ দিয়েই দায়িত্ব সেরেছে। ২০২৪ সালের ১০ অক্টোবর, একই বছরের ১৯ নভেম্বর এবং ২০২৫ সালের ১৫ জানুয়ারি তারিখে এই তিনটি নোটিশ পাঠানো হয় ডেরাকে।
তবে তিনবার নোটিশ দেওয়ার পরও প্রতিষ্ঠানটি লাইসেন্স নবায়ন করেনি। অথচ ফায়ার সার্ভিস কোনো শাস্তিমূলক ব্যবস্থাও নেয়নি প্রতিষ্ঠানটির বিরুদ্ধে। তবে চলতি বছরের ১৭ সেপ্টেম্বর পর্যটন মন্ত্রণালয় ডেরা রিসোর্টের লাইসেন্স বাতিল করলে ফায়ার সার্ভিস নড়েচড়ে বসে। এরপর নিজেদের দায় এড়াতে গত ২৫ সেপ্টেম্বর ফায়ার সার্ভিসের মানিকগঞ্জ কার্যালয় থেকে ঢাকা বিভাগীয় কার্যালয়ে ওই প্রতিষ্ঠানের লাইসেন্স বাতিলের আবেদন পাঠানো হয়।
আরও পড়ুন
অগ্নি ঝুঁকিতে মানিকগঞ্জ: লাইসেন্স নবায়ন ছাড়া চলছে কয়েকশ’ প্রতিষ্ঠান
অগ্নি ঝুঁকিতে মানিকগঞ্জ: নিয়ম না মেনেও মিলছে ফায়ার লাইসেন্স
বিষয়টি নিয়ে সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন) মানিকগঞ্জ জেলা শাখার সভাপতি অধ্যাপক ইন্তাজ উদ্দিন বলেন, “নিয়মিত অভিযান পরিচালনা করা হলে অগ্নি সুরক্ষা অনেকটা নিশ্চিত করা সম্ভব। যে কয়টি প্রতিষ্ঠানে জরিমানা হয়েছে, তা কেবল রুটিন ওয়ার্ক। প্রভাবশালী মালিকানার কারণে বড় প্রতিষ্ঠানগুলোতে অভিযান চালানো হয় না। এসব অনিয়ম ঠেকাতে প্রশাসনের আরো কঠোর হওয়া প্রয়োজন।”
মানিকগঞ্জ পরিবেশ অধিদপ্তরের উপপরিচালক আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, “অগ্নি সুরক্ষা নিশ্চিত করতে সকল সংস্থাকে সমন্বিতভাবে কাজ করতে হবে। ডেরা রিসোর্ট শর্তভঙ্গ করে এসটিপি নির্মাণ না করায় এবং ছাড়পত্র নবায়ন না করায় পরিবেশ অধিদপ্তর থেকে প্রতিষ্ঠানটিকে এক লাখ টাকা জরিমানা করা হয়েছে।”
মানিকগঞ্জ ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের উপসহকারী পরিচালক মোহাম্মদ আব্দুল হামিদ মিয়া বলেন, “অগ্নি সুরক্ষা সচেতনতা বাড়াতে আমরা নিয়মিত মহড়া, সভা ও প্রচারণা চালাই। কেউ নিয়ম না মানলে ফায়ার সার্ভিস আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হয়।”
তবে ডেরা রিসোর্টে কেন কোন ব্যবস্থা না নিয়ে কেবল নোটিশ দেওয়া হয়েছে- সে বিষয়ে তিনি কিছু বলেননি।
মানিকগঞ্জের জেলা প্রশাসক (যুগ্ম সচিব) ড.
এশিউর গ্রুপের ট্যুরিজম সিনিয়র ক্লাস্টার ইমাম উদ্দিন আহমেদ বলেন, “এশিউর গ্রুপ দেশের প্রচলিত সকল আইন কানুন মেনে পরিচালিত হয়। ডেরা রিসোর্ট এন্ড স্পা সেন্টার এই গ্রুপের অন্যতম প্রতিষ্ঠান। কয়েকজন কর্মকর্তার গাফলতির কারণে লাইসেন্স নবায়ন করা হয়নি। এসব কর্মকর্তার বিরুদ্ধে আমরা ব্যবস্থা গ্রহণ করেছি। নিয়ম কানুন মেনে লাইসেন্স পেতে আবেদন করা হয়েছে। আইননুসারে দ্রুত লাইসেন্স নবায়ন হয়ে যাবে।”
ঢাকা/এস
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ম ন কগঞ জ ব যবস থ সহয গ ত বছর র
এছাড়াও পড়ুন:
মামলা থেকে অব্যাহতি পেলেন মির্জা আব্বাস, রিজভীসহ ১৬৭ জন
সাত বছর আগে বিশেষ ক্ষমতা আইনে করা মামলা থেকে অব্যাহতি পেয়েছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস, তাঁর স্ত্রী আফরোজা আব্বাস, দলের জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভীসহ ১৬৭ ব্যক্তি।
ঢাকার মহানগর দায়রা জজ সাব্বির ফয়েজ আজ সোমবার এ আদেশ দেন। প্রথম আলোকে এ তথ্য নিশ্চিত করেন মির্জা আব্বাসের আইনজীবী মহিউদ্দিন চৌধুরী।
মহিউদ্দিন চৌধুরী প্রথম আলোকে বলেন, রাজধানীর নয়াপল্টন এলাকার সড়ক বন্ধ করে মিছিল করা, জনদুর্ভোগ সৃষ্টি ও পুলিশকে মারধরের অভিযোগে ২০১৮ সালের ১৪ নভেম্বর মামলাটি করা হয়। পল্টন থানায় মামলাটি করে পুলিশ। মামলায় মির্জা আব্বাস, তাঁর স্ত্রী আফরোজা আব্বাসসহ অন্যদের আসামি করা হয়। মামলায় সম্প্রতি আদালতে চূড়ান্ত প্রতিবেদন জমা দেয় পুলিশ। এতে মামলা থেকে ১৬৭ জনকে অব্যাহতি দেওয়ার আবেদন করা হয়। আদালত পুলিশের চূড়ান্ত প্রতিবেদন গ্রহণ করে মির্জা আব্বাসসহ অন্যদের মামলা থেকে অব্যাহতির আদেশ দেন।
আরও পড়ুনমাকে ৩৬ কোটি টাকার শেয়ার উপহার দিলেন মির্জা আব্বাসের ছেলে০৫ অক্টোবর ২০২৫মামলা থেকে অব্যাহতি পাওয়া অন্যদের মধ্যে আছেন বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কফিল উদ্দিন, দলের নির্বাহী কমিটির সদস্য হাবিবুর রশিদ হাবিব প্রমুখ।
আরও পড়ুননির্বাচন সামনে রেখে আরও অনেক কিছু দেখতে পাবেন: মির্জা আব্বাস০৬ সেপ্টেম্বর ২০২৫