চলতি ২০২৫ সালের জন্য অর্থনীতিতে অর্থনীতিতে নোবেল পুরস্কার পেয়েছেন তিনজন অর্থনীতিবিদ— জোয়েল মোকির, ফিলিপ অ্যাগিয়ন ও পিটার হাউইট। উদ্ভাবননির্ভর অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ব্যাখ্যা করার জন্য তাঁরা এই পুরস্কার পেয়েছেন।

এই তিন অর্থনীতিবিদের মধ্যে অর্ধেক পুরস্কার পেয়েছেন জোয়েল মোকির। প্রযুক্তিগত অগ্রগতির মাধ্যমে টেকসই প্রবৃদ্ধির পূর্বশর্তগুলো শনাক্ত করার জন্য তিনি পুরস্কার পেয়েছেন। ‘সৃজনশীল বিনাশ’প্রক্রিয়ার মাধ্যমে টেকসই প্রবৃদ্ধির তত্ত্ব দেওয়ার জন্য বাকি অর্ধেক পুরস্কার যৌথভাবে পেয়েছেন ফিলিপ অ্যাগিয়ন ও পিটার হাউইট। রয়টার্সের তথ্যানুসারে, এই পুরস্কারের মূল্যমান ১২ লাখ ডলার।

বিবৃতিতে নোবেল কমিটি বলেছে, নোবেলজয়ীরা আমাদের শিখিয়েছেন—সব সময় প্রবৃদ্ধি হবে, এটা কখনোই নিশ্চিত ধরে নেওয়া যায় না। মানবসভ্যতার ইতিহাসে প্রবৃদ্ধি নয়, বরং স্থবিরতাই ছিল স্বাভাবিক অবস্থা। তাঁদের গবেষণা দেখিয়েছে, এই প্রবৃদ্ধির ধারা অব্যাহত রাখতে হলে সম্ভাব্য হুমকিগুলো চিহ্নিত করে তা মোকাবিলা করতে হবে।

ঐতিহাসিক উপাত্ত ও দলিল ব্যবহার করে মোকির দেখিয়েছেন, কীভাবে প্রযুক্তিগত অগ্রগতি ও উদ্ভাবন একসময় অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধিকে নিয়মিত বিষয়ে পরিণত করেছে। অন্যদিকে অ্যাগিয়ন ও হাউইট সেই প্রবৃদ্ধির অন্তর্নিহিত প্রক্রিয়া বিশ্লেষণ করে দেখিয়েছেন। ১৯৯২ সালের এক প্রবন্ধে তাঁরা গাণিতিক মডেলের মাধ্যমে ব্যাখ্যা করেন, যখন নতুন ও উন্নত কোনো পণ্য বাজারে আসে, তখন পুরোনো পণ্য বিক্রি করা প্রতিষ্ঠানগুলো ধীরে ধীরে টিকে থাকতে পারে না। এই প্রক্রিয়াই অর্থনীতিতে ‘সৃজনশীল বিনাশ’ নামে পরিচিত। অর্থাৎ পুরোনো ব্যবস্থার ভেতর থেকেই নতুন উদ্ভাবন হয়।

পুরস্কারের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, ধারাবাহিকভাবে যে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি হতে পারে, গত দুই শতকের ইতিহাসে তা প্রথম দেখা গেছে। এর ধারাবাহিকতায় কোটি কোটি মানুষ দারিদ্র্য থেকে মুক্ত হয়েছে। সেই মানুষেরাই আজকের সমৃদ্ধির ভিত্তি গড়ে তুলেছে।

চলতি বছর অর্থনীতিতে নোবেলজয়ী জোয়েল মোকিয়ার, ফিলিপ আগিয়োঁ ও পিটার হুইট দেখিয়েছেন, উদ্ভাবনই ভবিষ্যৎ অগ্রগতির মূল চালিকাশক্তি। তাঁদের গবেষণা স্মরণ করিয়ে দেয়—অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি স্বয়ংক্রিয় বা নিশ্চিত প্রক্রিয়া নয়।

অর্থনীতির এই পুরস্কার মূল নোবেল পুরস্কারের অন্তর্ভুক্ত নয়। ১৯৬৯ সালে সুইডেনের কেন্দ্রীয় ব্যাংক নোবেল পুরস্কারের প্রতিষ্ঠাতা অ্যালফ্রেড নোবেলের স্মরণে এই পুরস্কার চালু করে। তখন থেকে এখন পর্যন্ত মোট ৫৭ জন এই পুরস্কার পেয়েছেন। আলফ্রেড নোবেলের স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে অর্থনীতিতে সুইডেনের কেন্দ্রীয় ব্যাংকের পুরস্কার—এটাই এই পুরস্কারের কেতাবি নাম।

সবচেয়ে বেশি বয়সে এই পুরস্কার পেয়েছেন লিওনিড হারউইচ। ২০০৭ সালে এই পুরস্কার পাওয়ার সময় তাঁর বয়স ছিল ৯০ বছর। তিনি আরও দুজনের সঙ্গে যৌথভাবে এই পুরস্কার পেয়েছিলেন। সবচেয়ে কম বয়সে(৪৬) এই পুরস্কার পেয়েছেন ্টেস্থার দুফলো। ২০১৯ সালে স্বামী অভিজিৎ ব্যানার্জির সঙ্গে যৌথভাবে এই পুরস্কার পান তিনি।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ন ব ল প রস ক র ই প রব দ ধ র প রস ক র র প রক র য় র জন য

এছাড়াও পড়ুন:

সারা দেশে সরকারি কলেজে অবস্থান কর্মসূচি ঘোষণা মঙ্গলবার

ঢাকা কলেজে শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের হাতাহাতি ও শিক্ষকদের ওপর হামলার ঘটনায় সারা দেশের সরকারি কলেজে অবস্থান কর্মসূচির ঘোষণা দিয়েছে বিসিএস জেনারেল এডুকেশন অ্যাসোসিয়েশন। মঙ্গলবার (১৪ অক্টোবর) থেকে দেশের সব সরকারি কলেজে শিক্ষকেরা শ্রেণিকক্ষে না গিয়ে নিজ নিজ প্রতিষ্ঠানে অবস্থান কর্মসূচি পালন করবেন।

সোমবার (১৩ অক্টোবর) এই তথ্য জানিয়েছেন সংগঠনের সদস্য সচিব ড. মো. মাসুদ রানা খান।

আরো পড়ুন:

শিক্ষা উপদেষ্টার সঙ্গে আলোচনায় বসেছেন শিক্ষার্থীরা

নবীনদের বরণ করে নিল রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়

তিনি জানান, শিক্ষকদের ওপর হামলার প্রতিবাদ জানাতে এবং শিক্ষক সমাজের মর্যাদা রক্ষার দাবিতে এই কর্মসূচি পালন করা হবে।

মাসুদ রানা খান বলেন, “এ ঘটনায় আমরা গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করছি। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শিক্ষকদের মর্যাদা ও নিরাপত্তা প্রশ্নে আমরা কোনোভাবেই আপস করব না। কর্মবিরতির পাশাপাশি শিক্ষকসমাজ ঐক্যবদ্ধভাবে প্রতিবাদ জানাবে।”

এর আগে, সোমবার সকালে ঢাকা কলেজ প্রাঙ্গণে ‘ঢাকা সেন্ট্রাল ইউনিভার্সিটি আইন-২০২৫’ দ্রুত বাস্তবায়নের দাবিতে সাত কলেজ শিক্ষার্থীদের পদযাত্রা শুরুর সময় শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের মধ্যে ধস্তাধস্তির ঘটনা ঘটে। এক শিক্ষার্থীকে শিক্ষকেরা কমনরুমে আটকে রাখলে সহপাঠীরা প্রশাসনিক ভবন ঘেরাও করে তাকে ছাড়িয়ে আনেন। এ ঘটনায় উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়লেও পরে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসে।

চলতি বছরের ২৬ মার্চ সরকার রাজধানীর সাত সরকারি কলেজকে পৃথক করে নতুন একটি বিশ্ববিদ্যালয় গঠনের ঘোষণা দেয়। বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি) প্রস্তাবিত নাম নির্ধারণ করে ‘ঢাকা সেন্ট্রাল ইউনিভার্সিটি’। কলেজগুলো হলো— ঢাকা কলেজ, ইডেন মহিলা কলেজ, বেগম বদরুন্নেসা সরকারি মহিলা কলেজ, শহীদ সোহরাওয়ার্দী কলেজ, কবি নজরুল সরকারি কলেজ, মিরপুর বাঙলা কলেজ ও সরকারি তিতুমীর কলেজ। 

ঢাকা/রায়হান/সাইফ

সম্পর্কিত নিবন্ধ