এনসিপির মুখ্য সংগঠক (উত্তরাঞ্চল) সারজিস আলম বলেছেন, ‘আমরা মনে করছি, আগামীর বাংলাদেশে গণতন্ত্রের পথে এনসিপি নির্ণায়কের ভূমিকা পালন করবে। আগামীতে কারা সরকার গঠন করবে, সে ক্ষেত্রেও এনসিপি নির্ণায়কের ভূমিকায় থাকবে।’ আজ মঙ্গলবার দুপুরে নেত্রকোনা শহরে একটি রেস্তোরাঁয় সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন।

সারজিস আলম বলেন, ‘আপনারা, বাংলাদেশের রাজনৈতিক পরিক্রমায় দেখেছেন—বিএনপি এককভাবে সরকার গঠন করতে পারেনি। আবার জামায়াতও দীর্ঘদিন রাজনীতি করেও বৃহৎ পরিসরে জনগণের প্রতিনিধিত্ব করতে পারেনি। সে ক্ষেত্রে এনসিপি বাংলাদেশের রাজনৈতিক পরিক্রমায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। আগামী দিনে বিচার ও সংস্কারের প্রক্রিয়ায় ধারাবাহিকতা রক্ষা করতে হবে। আমরা মনে করি, অন্য যেকোনো দলের চেয়ে এনসিপি এই প্রক্রিয়ায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। কারণ, গণ-অভ্যুত্থানের সময় এনসিপি একটি গুরুত্বপূর্ণ অবস্থানে ছিল।’

ভারতের প্রভাব প্রসঙ্গে সারজিস আলম বলেন, ‘আমরা মনে করি, ভারতীয় যে আধিপত্যবাদ রয়েছে, তা বিএনপি ও জামায়াত তাদের অবস্থান থেকে প্রত্যাশা অনুযায়ী মোকাবিলা করতে পারবে না। সে ক্ষেত্রে এনসিপি একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারবে। আমরা একটি স্থিতিশীল সরকার চাই, যা এনসিপির সহযোগিতা ছাড়া সম্ভব নয়।’

‘সেফ এক্সিট’ প্রসঙ্গে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে সারজিস আলম বলেন, ‘আপনারা সেফ এক্সিট বলতে যেভাবে বুঝছেন, বিষয়টি ঠিক তেমন নয়। আমরা বলতে চাচ্ছি, জুলাই বিপ্লবের মাধ্যমে যে ফ্যাসিস্ট সরকারকে পতন করা হয়েছে, সেই খুনি ও পতিত সরকারের রাঘববোয়ালদের বিচারের মুখোমুখি না করে যেন কেউ সেফ এক্সিট নিতে না পারে। জুলাই সনদের আইনগত ভিত্তি না দিয়ে কারও এক্সিট নেই। এই সনদ বাস্তবায়ন করা বর্তমান সরকারের সবচেয়ে বড় দায়িত্ব।’

নির্বাচন নিয়ে এনসিপির অবস্থান প্রসঙ্গে সারজিস আলম বলেন, ‘আমরাও মনে করি দ্রুত নির্বাচন হোক। যারা অভ্যুত্থানের চেতনায় সংস্কারের জন্য কাজ করবে, বিচারিকপ্রক্রিয়াকে অব্যাহত রাখবে এবং বাংলাদেশের পরিবর্তনের জন্য কাজ করবে—আমরা তাদের সঙ্গে নির্বাচনী জোটে যেতে পারি। তবে জোট হলেও এনসিপি অন্য কোনো দলের মার্কা বা নামে নির্বাচন করবে না। শাপলা প্রতীকেই নির্বাচন করবে।’

শাপলা প্রতীক না পেলে এনসিপির অবস্থান কী হবে—এমন প্রশ্নে সারজিস আলম বলেন, ‘আমরা আশা করছি, শাপলা প্রতীক আমরা পাবই এবং আগামী নির্বাচনে শাপলা প্রতীক নিয়েই অংশ নেব।’

সেনাবাহিনীর বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে সারজিস আলম বলেন, ‘সেনাবাহিনীর কিছু অফিসারকে ব্যবহার করে শেখ হাসিনা অসংখ্য গুম, বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছেন। আয়নাঘরের মতো অসংখ্য নির্মমতা আমরা দেখেছি। শুধু একজন অফিসার অসংখ্য মানুষকে হত্যা করেছে—এ রকম তথ্যও আমরা ট্রাইব্যুনালে দায়ের করা প্রতিবেদনের মাধ্যমে জেনেছি। এসব সিরিয়াল কিলারের সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে। আমরা আশা করি, সেনাবাহিনী এসব খুনির দায়ভার গ্রহণ করবে না।’

পরে সারজিস আলম নেত্রকোনা জেলা ও উপজেলা এনসিপির সমন্বয় কমিটির নেতাদের সঙ্গে একই স্থানে সমন্বয় সভায় অংশ নেন। এ সময় দলের ময়মনসিংহ বিভাগের বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক আশিকিন আলম, কেন্দ্রীয় সংগঠক (উত্তরাঞ্চল) প্রীতম সোহাগ, কেন্দ্রীয় সদস্য ফাহিম খান প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: অবস থ ন এনস প র এক স ট সরক র

এছাড়াও পড়ুন:

বাগেরহাটে দুর্বৃত্তদের হামলায় যুবদল কর্মী নিহত

বাগেরহাটের কচুয়ায় দুর্বৃত্তদের হামলায় জাহিদুল ইসলাম মিন্টু (৪৫) নামের এক যুবদল কর্মী নিহত হয়েছেন। গতকাল সোমবার রাত সোয়া তিনটার দিকে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে তাঁর মৃত্যু হয়। তিনি কচুয়া উপজেলার শিবপুর গ্রামের বাসিন্দা। তাঁর দুই স্ত্রী, এক ছেলে ও এক মেয়ে রয়েছে।

পুলিশ জানায়, দুই বিয়ের কারণে জাহিদুলের পারিবারিক অশান্তি চলছিল। সোমবার গভীর রাতে শিবপুর এলাকায় নিজ বাড়িতে প্রথম স্ত্রীর সঙ্গে বাগ্‌বিতণ্ডার একপর্যায়ে বাড়ির বাইরে থেকে ৮–১০ জন এসে জাহিদুলকে মারধর ও ধারালো অস্ত্র দিয়ে আঘাত করেন। গুরুতর আহত অবস্থায় উদ্ধার করে তাঁকে বাগেরহাট জেলা হাসপাতালে নেন পরিবারের সদস্যরা। অবস্থার অবনতি হলে সেখান থেকে তাঁকে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। সেখানে পৌঁছালে চিকিৎসক তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন।

রাঢ়িপাড়া ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি সরদার রেজাউল হোসেন বলেন, ‘তিনি যুবদলের কর্মী ছিলেন। আমরা তাঁর মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করছি এবং হত্যাকারীদের দ্রুত গ্রেপ্তার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করছি।’

বাগেরহাটের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) মো. শামীম হোসেন বলেন, খবর পেয়ে আজ মঙ্গলবার সকালে পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে। খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ময়নাতদন্ত শেষে লাশ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হবে। হত্যাকারীদের শনাক্ত ও গ্রেপ্তারে পুলিশ কাজ শুরু করেছে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ