জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (জকসু) নির্বাচনের নীতিমালার সংশোধনী শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের বৈঠকে চূড়ান্ত করা হয়েছে। এখন আইন আকারে প্রকাশের আগে কেবল রাষ্ট্রপতির অনুমোদনের অপেক্ষা।

মঙ্গলবার (১৪ অক্টোবর) শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে অনুষ্ঠিত বৈঠকের বিষয়ে জকসু নীতিমালা কমিটির আহ্বায়ক অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ বিলাল হোসাইন এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

আরো পড়ুন:

শিক্ষকদের সাদা-নীল দলে বিভাজন বন্ধ করতে হবে: সাদিক কায়েম

জবিতে বিশ্ব মানসিক স্বাস্থ্য দিবস পালন

অধ্যাপক ড.

মোহাম্মদ বিলাল হোসাইন বলেন, “জকসু নীতিমালার যেসব সংশোধনী ছিল, সেগুলো সম্পন্ন হয়েছে। শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের বৈঠকে তা চূড়ান্ত করা হয়েছে। এখন শুধু রাষ্ট্রপতির অনুমোদনের অপেক্ষা। আর কোনো প্রক্রিয়া বাকি নেই।”

তিনি আরো বলেন, “এখান থেকে পিছিয়ে যাওয়ার কোনো সুযোগ নেই। আইন প্রণয়ন সম্পন্ন হয়ে আসতে কতটা সময় লাগবে, সেটা বলা যাচ্ছে না। তবে আমরা আশাবাদী— জকসু নির্বাচন নির্ধারিত সময়েই অনুষ্ঠিত হবে।”

এর আগে, গত ১১ অক্টোবর শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে জকসু নীতিমালা সংক্রান্ত বৈঠকের জন্য আহ্বান জানানো হয়।

বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হওয়ার পর থেকে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে এখনো পর্যন্ত কোনো কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (জকসু) নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়নি। দীর্ঘদিন ধরে শিক্ষার্থীরা জকসু নির্বাচনের দাবিতে আন্দোলন করে আসছে।

এরই ধারাবাহিকতায় গত ৭ অক্টোবর জকসু নির্বাচন সুষ্ঠুভাবে সম্পাদনের লক্ষ্যে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন পাঁচ সদস্যবিশিষ্ট একটি নির্বাচন প্রস্তুতি কমিটি গঠন করে। এর আগে, গত ১৭ সেপ্টেম্বর জকসুর রোডম্যাপ প্রকাশ করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। সেই রোডম্যাপ অনুযায়ী, আইন পাসের পর আগামী ২৭ নভেম্বর জকসু নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে।

ঢাকা/লিমন/মেহেদী

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর জকস জকস অন ষ ঠ ত

এছাড়াও পড়ুন:

‘আইএফআইসি শ্রীপুর বন্ডের’ তহবিল ব্যবস্থাপনায় অনিয়ম তদন্তে বিএসইসি

পুঁজিবাজারে বন্ড খাতে তালিকাভুক্ত বেক্সিমকো গ্রুপের আইএফআইসি গ্যারান্টেড শ্রীপুর টাউনশিপ গ্রিন জিরো কুপন বন্ডের তহবিল ব্যবস্থাপনায় অনিয়ম, দুর্নীতি ও সার্বিক কার্যক্রম তদন্ত শুরু করেছে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)। বন্ডটির সঙ্গে সম্পৃক্ত সব প্রতিষ্ঠানের কার্যক্রম অনুসন্ধান করার লক্ষ্যে তিন সদস্যের একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। গঠিত তদন্ত কমিটিকে আগামী ৬০ দিনের মধ্যে তদন্ত কার্যক্রম সম্পন্ন করে প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দিয়েছে কমিশন।

তবে আইএফআইসি গ্যারান্টেড শ্রীপুর টাউনশিপ গ্রিন জিরো কুপন বন্ডটির মাধ্যমে সংগৃহীত তহবিল অপব্যবহার হয়েছে কি-না, তা অনুসন্ধানের লক্ষ্যে ইতিপূর্বে জারি করা বিএসইসির তদন্তের আদেশ বাতিল করে নতুন আদেশ জারি করা হয়েছে।

আরো পড়ুন:

কারণ ছাড়াই বাড়ছে ওয়েব কোটসের শেয়ারদর

পুঁজিবাজারে সূচকের পতন, বেড়েছে লেনদেন

সম্প্রতি বিএসইসির মার্কেট ইন্টেলিজেন্স অ্যান্ড ইনভেস্টিগেশন বিভাগ থেকে এ সংক্রান্ত একটি আদেশ জারি করা হয়েছে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে।

২০২৪ সালে আইএফআইসি গ্যারান্টিড শ্রীপুর টাউনশিপ জিরো কুপন বন্ড ইস্যু করে ১ হাজার ৫০০ কোটি টাকা সংগ্রহ করেছিল। তবে এই বিপুল পরিমাণ অর্থ নির্ধারিত প্রকল্প ও খাতে বিনিয়োগ হয়েছে কি না তা খতিয়ে দেখবে বিএসইসি। বিনিয়োগকারীদের তহবিল যথাযথ খাতে ব্যবহার নিশ্চিত করা এবং পুঁজিবাজারে স্বচ্ছতা ও শৃঙ্খলা বজায় রাখা-তদন্তের মূল লক্ষ্য।

আইএফআইসি গ্যারান্টিড শ্রীপুর টাউনশিপ জিরো কুপন বন্ডের জন্য গঠিত তদন্ত কমিটির সদস্যরা হলেন-বিএসইসির অতিরিক্ত পরিচালক মোহাম্মাদ রাকিবুর রহমান, উপ-পরিচালক শাহনেওয়াজ এবং সহকারী পরিচালক মো. হাসান।

বিএসইসির তদন্ত আদেশ
বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন আইএফআইসি গ্যারান্টেড শ্রীপুর টাউনশিপ গ্রিন জিরো কুপন বন্ডের ইস্যুয়ার শ্রীপুর টাউনশিপ লিমিটেড, ট্রাস্টি সন্ধানী লাইফ ইনস্যুরেন্স লিমিটেড ও নিরীক্ষক এম.জে. আবেদীন অ্যান্ড কোং চার্টার্ড অ্যাকাউন্টেন্টসের ওপর উক্ত বন্ড সংশ্লিষ্ট কার্যক্রম সম্পকিত বিষয় এবং আইএফআইসি গ্যারান্টেড শ্রীপুর টাউনশিপ গ্রিন জিরো কুপন বন্ডের মাধ্যমে উত্তোলিত অর্থের ব্যবহারের বিষয়ে তদন্ত কার্যক্রম পরিচালনার জন্য নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। এ লক্ষ্যে সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ অধ্যাদশ, ১৯৬৯ এর ধারা ২১ এবং বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ আন্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন আইন, ১৯৯৩ এর ধারা ১৭ক এ প্রদন্ত ক্ষমতাবলে তিন জন কর্মচারীর সমন্বয়ে একটি অনুসন্ধান ও তদন্ত কমিটি গঠন করা হলো। অনুসন্ধান ও তদন্ত কমিটির সদস্যরা এই আদেশ জারির তারিখ থেকে ৬০ দিবসের মধ্যে অনুসন্ধান ও তদন্ত সম্পন্ন করে কমিশনে প্রতিবেদন দাখিল করবে।

আগে এ বিষয়ে বিএসইসির চলতি বছরের ২৭ আগস্ট জারি করা তদন্তের আদেশ বাতিল করা হলো।

যেসব বিষয় খতিয়ে দেখবে তদন্ত কমিটি
গঠিত তদন্ত কমিটি আইএফআইসি গ্যারান্টেড শ্রীপুর টাউনশিপ গ্রিন জিরো কুপন বন্ডের ইস্যুয়ার শ্রীপুর টাউনশিপ লিমিটেড, ট্রাস্টি সন্ধানী লাইফ ইনস্যুরেন্স লিমিটেড ও নিরীক্ষক এম.জে. আবেদীন অ্যান্ড কোং চার্টার্ড অ্যাকাউন্টেন্টসের সকল কার্যক্রম অনুসন্ধান করে দেখবে।

শ্রীপুর টাউনশিপ গ্রিন জিরো কুপন বন্ডের মাধ্যমে সংগৃহীত অর্থ প্রকল্প অনুযায়ী ব্যবহার করা হয়েছে কি না, বিনিয়োগকারীদের স্বার্থ ক্ষুণ্ণ হয়েছে কি না, কিংবা কোনো অনিয়ম বা তথ্য গোপন করা হয়েছে কি না-তা যাচাই করবে গঠিত তদন্ত কমিটি।

‎বিএসইসির পরিচালক ও মুখপাত্র মো. আবুল কালামের সঙ্গে একাধিকবার যোগাযোগ করা হলেও তিনি ফোন ধরেননি।

‘আইএফআইসি গ্যারান্টিড শ্রীপুর টাউনশিপ জিরো কুপন বন্ড’ শীর্ষক ১৫০০ কোটি টাকা অভিহিত মূল্যের ও ১০০০ কোটি টাকা ইস্যু মূল্যের বন্ড ২০২৩ সালের ৪ জুন ৮৭১তম কমিশন সভায় অনুমোদিত হয়েছিল। ওই বছরের ১২ জুলাই সেটার সম্মতিপত্র ইস্যু করা হয়েছিল। ওই বন্ডটির ইস্যুয়ার ছিল শ্রীপুর টাউনশিপ লিমিটেড, যা ওই বছরের ২ মার্চ নিবন্ধিত একটি প্রাইভেট লিমিটেড কোম্পানি। কোম্পানিটি নিবন্ধিত হওয়ার পরপরই ২০২৩ সালের ১১ এপ্রিল ওই বন্ড ইস্যুর আবেদন করেছিল। ওই কোম্পানির অনুমোদিত মূলধন ছিল ৫০০ কোটি টাকা ও পরিশোধিত মূলধন ছিল ৩৩৫ কোটি টাকা, যার মধ্যে মাত্র ৪ দিনের ব্যবধানে ২৪৮ কোটি টাকার নগদ অর্থ ভূমি ক্রয় বা উন্নয়ন সংক্রান্ত কারণে উত্তোলন করা হয়েছিল, যেটি কমিশনের কাছে প্রশ্নবিদ্ধ ছিল।

এছাড়া ওই বন্ডটির জামিনদার (গ্যারান্টার) হিসেবে আইএফআইসি ব্যাংক পিএলসি, অ্যাডভাইজার ও অ্যারেঞ্জার হিসেবে আইএফআইসি ইনভেস্টমেন্টস লিমিটেড, ট্রাস্টি হিসেবে সন্ধানী লাইফ ইনস্যুরেন্স লিমিটেড, ক্রেডিট রেটিং প্রদানকারী হিসেবে ইমার্জিং ক্রেডিট রেটিং লিমিটেড, নিরীক্ষক হিসেবে এমজে আবেদীন অ্যান্ড কোং চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্ট দায়িত্ব পালন করেছে। আইএফআইসি ব্যাংক ওই বন্ড ইস্যু করেনি, মূলত রিয়েল এস্টেট কোম্পানি শ্রীপুর টাউনশিপ লিমিটেড (এসটিএল) ওই বন্ডের মাধ্যমে টাকা উত্তোলন করেছে। কিন্তু বিভিন্ন বিজ্ঞাপনে বন্ডের নাম হিসেবে ‘আইএফআইসি আমার বন্ড’ নামটি ব্যবহার করা হয়েছে, যা বিনিয়োগকারীকে ধারণা দেয় যে, এ বন্ড আইএফআইসি ব্যাংক ইস্যু করেছে। কিন্তু আইএফআইসি ব্যাংক ছিল মূলত বন্ডটির জামিনদার (গ্যারান্টার)। এভাবে বিনিয়োগকারীদের প্রতারিত করে বিনিয়োগে আকৃষ্ট করা হয়।

এ ঘটনায় সংশ্লিষ্টতার কারণে বেক্সিমকো গ্রুপের কর্ণধার ও আইএফআইসি ব্যাংকের সাবেক চেয়ারম্যান সালমান এফ রহমান এবং বিএসইসির তৎকালীন চেয়ারম্যান অধ্যাপক শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলামকে পুঁজিবাজারে আজীবন অবাঞ্ছিত ঘোষণা করেছে বিএসইসি। পাশাপাশি একইসঙ্গে সালমান এফ রহমানের ছেলে আহমেদ সায়ান ফজলুর রহমানকে আজীবন, বিএসইসির সাবেক কমিশনার শেখ সামসুদ্দিন আহমেদ ও আইএফআইসি ইনভেস্টমেন্টের সাবেক সিইও ইমরান আহমেদকে ৫ বছর পুঁজিবাজারে নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। এছাড়া সালমান এফ রহমানকে ১০০ কোটি টাকা, তার ছেলে আহমেদ সায়ান ফজলুর রহমানকে ৫০ কোটি টাকা ও ক্রেডিট রেটিং প্রদানকারী ইমার্জিং ক্রেডিট রেটিংকে ১০ লাখ টাকা জরিমানা করেছে।

ঢাকা/এনটি/এসবি

সম্পর্কিত নিবন্ধ