২০১০ সালে স্বাগতিক হিসেবে সর্বশেষ বিশ্বকাপ খেলেছিল দক্ষিণ আফ্রিকা। এরপর নিজ যোগ্যতায় আর বিশ্বকাপ খেলার সুযোগ পায়নি দলটি। তবে এবার বাছাইপর্বের নাটকীয় বাধা পেরিয়ে ২০২৬ বিশ্বকাপে জায়গা করে নিয়েছে তারা।

লম্বা সময় পর বিশ্বকাপ নিশ্চিত করার পথে তারা পেছনে ফেলেছে নাইজেরিয়া ও বেনিনকে। একই রাতে সরাসরি বিশ্বকাপ খেলার সুযোগ নিশ্চিত করেছে আইভরি কোস্ট ও সেনেগালও। এ ছাড়া এশিয়ান অঞ্চল থেকে বিশ্বকাপ নিশ্চিত করেছে সৌদি আরব ও কাতার।

বিশ্বকাপ বাছাইয়ের শেষ ম্যাচে আফ্রিকান অঞ্চলের গ্রুপ ‘সি’র পয়েন্ট টেবিলে শীর্ষে ছিল বেনিন। দক্ষিণ আফ্রিকার চেয়ে ২ পয়েন্ট ও নাইজেরিয়ার চেয়ে ৩ পয়েন্ট এগিয়ে থেকে প্রথমবারের মতো বিশ্বকাপে খেলার স্বপ্ন দেখছিল তারা। কিন্তু সাবেক নাইজেরিয়া কোচ জারনো রোরের নেতৃত্বে দলটি নাইজেরিয়ার বিপক্ষে বিধ্বস্ত হয় ৪-০ গোলের হারে।

আরও পড়ুনরোনালদোর রেকর্ডের রাতে বিশ্বকাপ নিশ্চিত করল ইংল্যান্ড২ ঘণ্টা আগে

স্বাগতিক দলের হয়ে হ্যাটট্রিক করেছেন ভিক্টর ওসিমেন। আর বিশাল এই হারে গোল ব্যবধানে পিছিয়ে তৃতীয় স্থানে নেমে গেছে বেনিন। সুযোগটা দারুণভাবে কাজে লাগিয়েছে দক্ষিণ আফ্রিকা। এমবোমবেলায় তারা ৩-০ গোলে রুয়ান্ডাকে হারিয়ে নিশ্চিত করেছে বিশ্বকাপের টিকিট। বেনিন বিদায় নিলেও এখনো বিশ্বকাপে খেলার আশা বেঁচে আছে নাইজেরিয়ার। রানার্সআপ দলের সেরা চারে থাকায় নাইজেরিয়ার সঙ্গে প্লে–অফ খেলার সুযোগ পাচ্ছে কঙ্গো, ক্যামেরুন ও গ্যাবনও।

একই রাতের অন্য ম্যাচে বিশ্বকাপ নিশ্চিত করার পথে মৌরিতানিয়াকে ৪–০ গোলে হারিয়েছে সেনেগাল। ঘরের মাঠে পাওয়া এ জয়ে গ্রুপ ‘বি’-এর শীর্ষস্থান দখল করেছে ২০০২ সালের কোয়ার্টার ফাইনালিস্টরা। এ নিয়ে টানা তৃতীয় ও সবমিলিয়ে চতুর্থবারের মতো বিশ্বকাপ নিশ্চিত করল ‘তেরাঙ্গা লায়ন্স’রা।

বিশ্বকাপ নিশ্চিত করার পর সেনেগালের উদ্‌যাপন.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ন ইজ র য় র র ব শ বক প

এছাড়াও পড়ুন:

হামাসকে নিরস্ত্র করার প্রতিশ্রুতি ট্রাম্পের, কিন্তু কীভাবে তা বললেন না

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প সোমবার (১৩ অক্টোবর) মধ্যপ্রাচ্য সফর শেষে এই অঞ্চলের জন্য একটি ‘নতুন দিন’ উদযাপন করেছেন। কারণ তার মধ্যস্থতায় ইসরায়েল ও হামাসের মধ্যে যুদ্ধবিরতির যে চুক্তি হয়েছে, তার প্রথম ধাপ শুরু হয়েছে।  

তবে মধ্যপ্রাচ্য সফর শেষে ওয়াশিংটনে ফেরার পর মার্কিন প্রেসিডেন্ট গাজায় পরবর্তী পদক্ষেপ কী হবে, তা নিয়ে সাংবাদিকদের কঠিন প্রশ্নের মুখোমুখি হোন।

আরো পড়ুন:

গাজা চুক্তির ‘দ্বিতীয় পর্যায়’ শুরুর ঘোষণা দিলেন ট্রাম্প

ফিলিস্তিনের স্বীকৃতির দাবি এড়িয়ে গেলেন ট্রাম্প

গাজায় দীর্ঘস্থায়ী শান্তি নিশ্চিত করার একটি গুরুত্বপূর্ণ শর্ত হলো হামাসকে নিরস্ত্রীকরণ। ট্রাম্পের ২০ দফা শান্তি পরিকল্পনায় এর উল্লেখ রয়েছে। কিন্তু চুক্তির প্রথম পর্যায়ে বিষয়টি খোলাসা করা হয়নি। গতকাল মঙ্গলবার ট্রাম্প যুদ্ধবিরতি চুক্তির ‘দ্বিতীয় পর্যায়’ শুরুর ঘোষণা দেন। 

মার্কিন চুক্তির দ্বিতীয় পর্যায়ে গাজায় একটি নতুন শাসনব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা, একটি বহুজাতিক বাহিনী গঠন এবং হামাসকে নিরস্ত্রীকরণের কথা বলা হয়েছে। 

 মার্কিন সংবাদমাধ্যম এবিসি নিউজের হোয়াইট হাউজ সংবাদদাতা কারেন ট্র্যাভার্স মঙ্গলবার হোয়াইট হাউজে ট্রাম্পের কাছে জানতে চান, হামাসকে নিরস্ত্রীকরণে কত সময় লাগবে এবং হামাস যে এটি করবে, তার গ্যারান্টি তিনি দিচ্ছেন কিনা। 

উত্তরে ট্রাম্প বলেন, “হামাস নিরস্ত্র হতে যাচ্ছে, কারণ তারা বলেছিল যে তারা নিরস্ত্র হবে। যদি হামাস অস্ত্র নামিয়ে না রাখে, তাহলে আমরাই তাদেরকে নিরস্ত্র হতে বাধ্য করবো।” 

তিনি এটি কীভাবে করবেন, এবিসি নিউজের সাংবাদিক তা জানতে চাইলে ট্রাম্প বলেন, “আমি এটার ব্যাখ্যা আপনাকে দেব না। কিন্তু যদি হামাস নিরস্ত্র না হয়, আমরা তাদের নিরস্ত্র করব। তারা জানে আমি খেলা খেলছি না। তারা যদি অস্ত্র না ছাড়ে, তাহলে আমরা তাদেরকে নিরস্ত্র করব এবং এটি দ্রুত ও সম্ভবত সহিংসভাবে ঘটবে।”

হামাসকে নিরস্ত্র করার জন্য কতদিন লাগতে পারে, তা জানতে চাইলে ট্রাম্প বলেন, “বেশ দ্রুত। একটি যুক্তিসঙ্গত সময়কাল।” 

ট্রাম্প গাজায় পরবর্তী পদক্ষেপগুলো নিয়ে বিস্তারিত কিছু বলেননি। তিনি জানান, ফিলিস্তিনি রাষ্ট্র এবং গাজা উপত্যকার শাসনব্যবস্থার জটিল বিষয়গুলো পরে সমাধান করা হবে।

এ প্রসঙ্গে ট্রাম্প বলেন, “বিষয়টি নিয়ে আমাদের কাজ করতে হবে। আমি বলতে চাচ্ছি, অনেক মানুষ এক-রাষ্ট্রীয় সমাধান পছন্দ করে। কিছু লোক দুই-রাষ্ট্রীয় সমাধান পছন্দ করে। বিষয়টি আমাদের দেখতে হবে।”

এই ব্যবধান কীভাবে পূরণ করা যায় সে সম্পর্কে জানতে চাইলে মার্কিন প্রেসিডেন্ট বলেন, তিনি অন্যান্য দেশের সঙ্গে সমন্বয় করে ‘আমি যা সঠিক বলে করি’ সেই সিদ্ধান্ত নেবেন। 

গাজা শান্তি পরিকল্পনার দ্বিতীয় ধাপ এবং গাজা পরিচালনা সম্পর্কে মার্কিন প্রেসিডেন্টকে আরো কিছু বলার জন্য এবিসি নিউজের সাংবাদিক অনুরোধ করলে ট্রাম্প কেবল জানান, গাজার ভবিষ্যৎ নিয়ে আলোচনার জন্য সোমবার মিশরে জড়ো হওয়া বিশ্ব নেতাদের দলে ‘প্রচুর ক্ষমতাবান’ রয়েছেন।

তিনি বলেন, “আপনি জানেন, তারা সত্যিই ধনী দেশ এবং তারা এটি পরিচালনা করতে পারবে।”

ট্রাম্প এবং মিশরের প্রেসিডেন্ট আবদেল ফাত্তাহ আল-সিসি সোমবার (১৩ অক্টোবর) মিশরের পর্যটন শহর শারম আল-শেখে গাজা শান্তি সম্মেলনের আয়োজন করেন। মার্কিন প্রেসিডেন্টের গাজা শান্তি পরিকল্পনাকে সমর্থন জানাতে এই সম্মেলনে ২০টিরও বেশি দেশের রাষ্ট্রপ্রধান ও প্রতিনিধিরা রাষ্ট্রনেতা উপস্থিত ছিলেন। ইসরায়েল-হামাস যুদ্ধবিরতি আলোচনায় মধ্যস্থতাকারী দেশগুলো শান্তি চুক্তির নথিতে স্বাক্ষর করেন।

ট্রাম্প এটিকে ‘ঐতিহাসিক’ চুক্তি বলে অভিহিত করেছেন। তবে অনেকের কাছে এটিকে ‘প্রতীকী’ বলে মনে হয়েছে। কারণ এতে কেবল যুক্তরাষ্ট্র, মিশর, তুরস্ক এবং কাতারের ‘পারস্পরিক শ্রদ্ধা ও নীতির উপর ভিত্তি করে এই অঞ্চলে শান্তি ও নিরাপত্তা’ নিশ্চয়তার ব্যাপক প্রতিশ্রুতি রয়েছে। কিন্তু গাজা নিয়ে পরবর্তী পদক্ষেপ কী হবে, সে সম্পর্কে কোনো সুনির্দিষ্ট উল্লেখ ছিল না।

মিসরের গাজা শান্তি সম্মেললে ইসরায়েল ও হামাসের কোনো প্রতিনিধি উপস্থিত ছিলেন না। ফলে এতে ইসরায়েল ও হামাস স্বাক্ষর করেনি। 

সোমবার ইসরায়েল এবং গাজায় আবেগঘন পরিবেশের সৃষ্টি হয়। এদিন গাজায় জীবিত ২০ জন ইসরায়েলি জিম্মিকে মুক্তি দেয় হামাস, একইসঙ্গে ইসরায়েলও ফিলিস্তিনি বন্দিদের মুক্তি দেয়। টানা কয়েক মাসের উত্তেজনাপূর্ণ আলোচনার পর ট্রাম্পের জন্য এটি একটি বড় কূটনৈতিক সাফল্য।

ঢাকা/ফিরোজ

সম্পর্কিত নিবন্ধ