ভেনেজুয়েলার উপকূলে নৌকায় ফের মার্কিন হামলা, নিহত ৬
Published: 15th, October 2025 GMT
যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক বাহিনী মঙ্গলবার (১৪ সেপ্টেম্বর) ভেনেজুয়েলার উপকূলে আরেকটি নৌকায় হামলা চালিয়ে ৬ জন ‘মাদক সন্ত্রাসীকে’ হত্যা করেছে বলে জানিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প।
ট্রুথ সোশ্যালে এক পোস্টে ট্রাম্প করেন, নৌকাটি ‘মাদক সন্ত্রাসীদের’ এবং এটি ‘মাদক পাচার’ করছিল। খবর বিবিসির।
আরো পড়ুন:
গাজা চুক্তির ‘দ্বিতীয় পর্যায়’ শুরুর ঘোষণা দিলেন ট্রাম্প
থাইল্যান্ড-কম্বোডিয়া শান্তি চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে যোগ দেবেন ট্রাম্প
মাদক পাচারের অভিযোগ তুলে গত সেপ্টেম্বর মাস থেকে ভেনেজুয়েলার উপকূলে আন্তর্জাতিক জলসীমায় যুক্তরাষ্ট্রের এটি পঞ্চম হামলা। এসব হামলায় এখন পর্যন্ত ২৭ জন নিহত হয়েছেন। তবে নৌকাগুলো মাদক পাচারের সঙ্গে জড়িত থাকার কোনো প্রমাণ যুক্তরাষ্ট্র এখনও দেয়নি।
ফলে হামলার বৈধতা নিয়ে ইতিমধ্যে আন্তর্জাতিক মহলে প্রশ্ন উঠেছে। কিছু আইনজীবী যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক আইন লঙ্ঘনের অভিযোগ তুলেছেন। কলম্বিয়া এবং ভেনেজুয়েলার মতো প্রতিবেশী দেশগুলো এই হামলার নিন্দা জানিয়েছে।
ট্রুথ সোশ্যাল পোস্টে ট্রাম্প বলেন, গোয়েন্দা সংস্থা নিশ্চিত করেছে যে, নৌকাটি মাদক পাচার করছিল, অবৈধ মাদক সন্ত্রাসী সংগঠনের সঙ্গে যুক্ত ছিল এবং চোরাচালানের জন্য একটি পরিচিত রুট দিয়ে যাতায়াত করছিল।
তিনি তার পোস্টের সঙ্গে একটি ভিডিও শেয়ার করেন, যেখানে ড্রোন থেকে তোলা ফুটেজে একটি দ্রুতগামী নৌকা বিস্ফোরিত হয়ে আগুনে পুড়ে যেতে দেখা যায়।
ট্রাম্প নৌকায় থাকা ব্যক্তিদের জাতীয়তা বা তারা কোন মাদক চোরাচালানকারী সংগঠনের সঙ্গে জড়িত বলে সন্দেহ করা হচ্ছে, তা নির্দিষ্ট করে বলেননি।
এদিকে ভেনেজুয়েলা বলছে, যুক্তরাষ্ট্র দেশটির বিরুদ্ধে ‘অঘোষিত যুদ্ধ’ শুরু করেছে। ভেনেজুয়েলার প্রেসিডেন্ট নিকোলাস মাদুরো প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন, দেশটি মার্কিন সামরিক হস্তক্ষেপের যেকোনো প্রচেষ্টার বিরুদ্ধে লড়াই করবে।
যুক্তরাষ্ট্র সাম্প্রতিক সময়ে ক্যারিবীয় অঞ্চলে একাধিক যুদ্ধজাহাজও মোতায়েন করেছে। ট্রাম্প প্রশাসন মাদক চোরাচালানকারী নৌকার ওপর তাদের হামলাকে ‘আত্মরক্ষামূলক পদক্ষেপ’ হিসেবে অভিহিত করেছে।
বিবিসির প্রতিবেদন বলছে, এ ধরনের নৌকা সাধারণত আটক করা হয় ও ক্রুদের গ্রেপ্তার করা হয়। কিন্তু সাম্প্রতিক মার্কিন অভিযানগুলোতে বিস্ফোরণ ঘটিয়ে পুরো নৌকা ধ্বংস করা হচ্ছে।
ভেনেজুয়েলা থেকে যুক্তরাষ্ট্রে মাদক পাচারের কিছু ঘটনা ঘটে থাকে। একাধিক মাদক গ্যাং এ অঞ্চলে সক্রিয় রয়েছে। কিন্তু যুক্তরাষ্ট্রে যেখানে হামলা চালাচ্ছে সেটি মাদক পাচারের জন্য একটি হটস্পট হিসাবে বিবেচিত হয় না।
এ কারণে অনেকেই মনে করছেন, এটি ভেনেজুয়েলার প্রেসিডেন্ট নিকোলাস মাদুরোর ওপর সামরিক চাপ প্রয়োগের জন্য ট্রাম্প প্রশাসনের একটি রাজনৈতিক কৌশল।
ট্রাম্প প্রশাসন মাদুরোর সরকারকে ভেনেজুয়েলার ‘বৈধ সরকার’ বলে মনে করে না। মার্কিন কর্মকর্তারা মাদুরোর বিরুদ্ধে ‘কার্টেল অব দ্য সানস’ নামের একটি মাদকচক্র পরিচালনার অভিযোগ এনে তার গ্রেপ্তারে ৫ কোটি ডলার পুরস্কার ঘোষণা করেছে। তবে মাদুরো এসব অভিযোগ অস্বীকার করে একে ‘আমেরিকার সাম্রাজ্যবাদী ষড়যন্ত্র’ বলে অভিহিত করেছেন।
ঢাকা/ফিরোজ
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর য ক তর ষ ট র য ক তর ষ ট র
এছাড়াও পড়ুন:
যুক্তরাষ্ট্রের ‘এরিয়া ৫১’ সম্পর্কে জানলে চমকে যাবেন
যুক্তরাষ্ট্রের দক্ষিণে রয়েছে গোপন ও রহস্যময় স্থান ‘এরিয়া ৫১’ । এখানে যুক্তরাষ্ট্রের বিমান বাহিনীর বিভিন্ন এয়ারক্রাফট ও ওয়েপন সিস্টেম নিয়েই পরীক্ষানিরীক্ষা চালানো হয় এ জায়গাটিতে। শুরু থেকেই গোপনীয়তার দুর্ভেদ্য চাদরে মোড়ানো এরিয়া ৫১।
এরিয়া ৫১ সম্পর্কে কোনো সঠিক তথ্য পাওয়া যায় না বলে- এ নিয়ে নানা রকম কন্সপিরেসি থিওরি তৈরি হয়েছে। এরিয়া ৫১ নিয়ে কন্সপিরেসি থিওরিগুলো আপনাকে চমকে দেবে।
আরো পড়ুন:
ভেনেজুয়েলার উপকূলে নৌকায় ফের মার্কিন হামলা, নিহত ৬
গাজা চুক্তির ‘দ্বিতীয় পর্যায়’ শুরুর ঘোষণা দিলেন ট্রাম্প
কন্সপিরেসি থিওরি—এক
১৯৮৯ সালের কথা। বব লাজার নামের এক দাবী করে বসেন যে, তিনি কিছুদিনের জন্য ‘এরিয়া ৫১’ এর অংশ হিসেবে কাজ করেছিলেন। যার নাম এস-৪।এটি এমন একটি জায়গা যেখানে কর্মীদের এমন বাসে করে নেওয়া হয়েছিলো, যাতে বাইরের কোনো দৃশ্য না দেখা যায়, এবং কর্মীরা যাতে যাতায়াতের রাস্তা মনে রাখতে না পারে।
লাজারের মন্তব্য মানুষকে চমকে দিয়েছিলো। কারণ তিনি বর্ণনা করেছিলেন, সেখানে এমন সব ফ্লাইং সসার দেখেছেন যেগুলো কোনোভাবেই পৃথিবীতে তৈরি হতে পারে না। লাজার একবার বন্ধুদের নিয়ে সেসব সসারের টেস্ট ফ্লাইট দেখতে গিয়ে ধরা পড়ে যান। এরপরই তার চাকরি চলে যায়।
কন্সপিরেসি থিওরি—দুই
ভিনগ্রহের প্রাণীদের নাকি জেলখানার আসামীর মতোই জিজ্ঞাসাবাদ করা হয় এরিয়া-৫১ এ! এমনটাই দাবি করেছেন ঐ ইউএফও তত্ত্বের প্রবক্তা বব লাজার। তিনি একবার দেখতে পেয়েছিলেন, ছোট, ধূসর বর্ণের একটি প্রাণীকে সাদা কোট পরিহিত দুজন মানুষের মাঝে দাঁড়িয়ে আছে।
কন্সপিরেসি থিওরি—তিন
১৯৯৭ সালে ভিক্টর নামের এক ব্যক্তি দাবি করেন—তিনি এরিয়া ৫১ এ চাকরি করেন। তিনিও এলিয়েনদের জিজ্ঞাসাবাদের ব্যাপারটি দেখেছেন। শুধু তাই না, একটি ঝাপসা ভিডিও করেছিলেন। যেখানে দেখা যায় যে, যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক বাহিনীর হাতে গুলি খাওয়া এক বহির্জাগতিক পাইলটের সাথে টেলিপ্যাথির মাধ্যমে যোগাযোগের চেষ্টা চালাচ্ছেন— এরিয়া ৫১ এর একজন অফিসার।
কন্সপিরেসি থিওরি—চার
নব্বইয়ের দশকের মাঝামাঝি সময়ে হঠাৎ করে সতের মিনিটের একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছিলো। যেখানে দেখা যায় বায়ো-হ্যাজার্ড প্রোটেকশন স্যুট পরিহিত একদল মানুষ ছোটখাট একটি এলিয়েনের শরীরে নিয়ে গবেষণা করছেন। তবে ভিডিওটি নিয়ে সন্দেহ পোষণ করেন।
কন্সপিরেসি থিওরি—পাঁচ
কোনো কোনো কন্সপিরেসি থিওরিস্ট মনে করেন, এরিয়া ৫১ এর মাটির নিচে ৪০ তলা ভবনের সমান উঁচু বিশাল বাঙ্কার গড়ে তুলেছে যুক্তরাষ্ট্র সরকার। অত্যাধুনিক বিমানগুলো লুকিয়ে রাখা আছে ব্যাঙ্কারে, যাতে স্যাটেলাইটের মাধ্যমেও সেগুলোর কোনো হদিস কেউ না পায়।
কন্সপিরেসি থিওরি—ছয়
একটি আশ্চর্য হবার মতো থিওরি হলো এরিয়া ৫১ এ আসলে একসাথে কাজ করছে আমেরিকান সরকার এবং ভিনগ্রহের প্রাণীরা। তাদের ধারণানুযায়ী, সেখানে দুই পক্ষের মিলিত প্রচেষ্টায় মানুষ ও এলিয়েনের এমন সংকর প্রজাতি বানাতে কাজ চলছে যাদের দেখলে মনে হবে তারা মানুষ। কিন্তু শারীরিক ও মানসিকভাবে তারা হবে সেই এলিয়েনদের মতোই! তারাই নাকি ভবিষ্যতের পৃথিবীতে নেতৃত্ব দিবে।
কন্সপিরেসি থিওরি—সাত
‘ম্যাজেস্টিক ১২’ নামে সুপরিচিত একটি টার্ম আছে, যা দিয়ে আমেরিকার একটি গোপন দলকে বোঝায়। বিভিন্ন বিজ্ঞানী ও সামরিক বাহিনীর সদস্যদের সমন্বয়ে গঠিত সেই দলটি নাকি গত ছয় দশক ধরে নিরলস পরিশ্রম করে যাচ্ছে এমন একটি ব্যবস্থা করার জন্য যাতে আমাদের এই ধরণীটি একইসাথে মানুষ এবং অভিজাত এলিয়েনরা পরিচালনা করতে পারবে! ম্যাজেস্টিক ১২ নাকি ইতোমধ্যেই এলিয়েনদের সাথে যোগাযোগ করতে সক্ষম হয়েছে। ১৯৪৭ সালে সূত্রপাত হওয়া এ প্রজেক্টের মাধ্যমে এলিয়েনদের বিভিন্ন প্রযুক্তি যুক্তরাষ্ট্রের হাতে এসেছে বলে দাবি কনস্পিরেসি থিওরিস্টদের। এর বিনিময়ে এলিয়েনরা পেয়েছিলো বিভিন্ন পশুপাখি, এমনকি মানুষের উপর বৈজ্ঞানিক পরীক্ষা চালানোর অধিকার!
সময় পরিভ্রমণ ও টেলিপোর্টেশনের মতো মানব কল্পনার এ বিষয় নিয়ে এরিয়া ৫১ এ কাজ চলছে বলে মনে করেন অনেকে। এরিয়া ৫১ সত্যিকার অর্থেই এসব কাজ করছে নাকি করছে না, সেই সঠিক উত্তরটা কী আদৌ পাওয়া সম্ভব?
সূত্র: নিউজ ন্যাশনাল জিওগ্রাফিক, উইকিপিডিয়া ও রোর বাংলা অবলম্বণে
ঢাকা/লিপি