আগামী জাতীয় নির্বাচনকে সামনে রেখে জুলাই সনদ বাস্তবায়ন, উভয় কক্ষে পি আর পদ্ধতি,  আওয়ামী লীগ সহ ফ্যাসিস্টদের দোসর ১৪ দলের বিচার, নির্বাচনে লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড  সহ পাঁচটি দফা নিয়ে কেন্দ্রীয় কর্মসূচীর অংশ হিসেবে সারাদেশের মতো নারায়ণগঞ্জ জামায়াত মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেছে।

নারায়ণগঞ্জ জেলা ও মহানগরী জামায়াতের উদ্যোগে বুধবার সকাল ১১ টায় নারায়ণগঞ্জ প্রেসক্লাবের সামনে এ মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়।

মহানগরী আমির ও জামায়াতের কেন্দ্রীয় কর্ম পরিষদ সদস্য, ইসলামী ছাত্রশিবিরের সাবেক কেন্দ্রীয় সভাপতি নারায়ণগঞ্জ ৪ আসনের সংসদ সদস্য প্রার্থী মাওলানা আব্দুল জব্বার এর সভাপতিত্বে মানব বন্ধনে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় কর্ম পরিষদ সদস্য নারায়ণগঞ্জ ৫ আসনের সংসদ সদস্য প্রার্থী মাওলানা মইনুদ্দিন আহমাদ, বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন নারায়ণগঞ্জ  জেলা আমির কেন্দ্রীয় মজলিসে শুরা সদস্য  মুমিনুল হক সরকার,  মহানগরীর নায়েবে আমির কেন্দ্রীয় মজলিসে শুরা সদস্য  মাওলানা আব্দুল কাইয়ুম, জেলা কর্ম পরিষদ সদস্য অধ্যাপক মাসউদুর রহমান গিয়াস, জেলা কর্ম পরিষদ সদস্য নারায়ণগঞ্জ ২ আসনের জামায়াত মনোনীত এমপি প্রার্থী মুক্তিযোদ্ধা অধ্যাপক ইলিয়াস মোল্লা, নারায়ণগঞ্জ মহানগরীর সেক্রেটারি ইঞ্জিনিয়ার মানোয়ার  হোসাইন, সহকারী সেক্রেটারি জামাল হোসাইন, এইচএম নাসির উদ্দিন, জেলা জামাতের সহকারী সেক্রেটারি আবু সাঈদ মুন্না।

মাওলানা মঈনুদ্দিন আহমাদ বলেন, ৫ দফা শুধু জামায়াতের দাবি নয় দেশের সকল মানুষের দাবি। আমি আগামী নির্বাচনে ব্যাবসায়ী, আলেম সহ সর্বস্তরের জন প্রতিনিধি কে অংশ গ্রহন করার আহবান জানান।

এসময় বক্তারা অবিলম্বে ঘোষিত পাঁচ দফা দাবি মেনে নিয়ে একটি গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের ব্যবস্থা করতে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রতি আহ্বান জানান। 

মূল দাবিগুলোর মধ্যে রয়েছে- জুলাই জাতীয় সনদের ভিত্তিতে দ্রুততম সময়ের মধ্যে ফেব্রুয়ারি মাসে জাতীয় নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের জন্য প্রয়োজনীয় আইন ও কাঠামোগত সংস্কার নিশ্চিত করা এবং অবিলম্বে পিআর পদ্ধতিতে নির্বাচন ঘোষণা করা।

নারায়ণগঞ্জ মহানগরী আমীর মাওলানা আবদুল জব্বার বলেন, ২৪ এর জুলাই আন্দোলনে আমরা প্রায় ২ হাজার ছাত্র জনতা হত্যা এবং অসংখ্য মানুষের অঙ্গ হানির মধ্য দিয়ে আজকের এই দ্বিতীয় স্বাধীনতা পেয়েছি।

জুলাই সনদ এবং পিআর পদ্ধতিতে আগামী জাতীয় নির্বাচনের দাবিতে চাষাঢ়া থেকে মন্ডলপাড়া ব্রিজ পর্যন্ত আমাদের সাথে নারায়ণগঞ্জের সর্বস্তরের জনগণ এই মানববন্ধনে যুক্ত হয়েছেন।

বাংলাদেশের ইসলামীক দলগুলো নির্বাচনের আগে গণ ভোট দেওয়ার জন্য সরকারকে বলছে। অন্য একটি দল  বলছে এটা নাকি অনেক খরচ। আমরা বলছি নির্বাচনের ১৫ দিন পূর্বে গণ ভোটের আয়োজন করলে এক খরচে  নির্বাচনও হয়ে যাবে।

তিনি আরও বলেন, জুলাই সনদ আগে হওয়া দরকার এজন্য যে, আওয়ামী লীগের মতো কোনো দল জোর জবরদখল করে যেন ফ্যাসিজম সৃষ্টি করতে না পারে।

অতীতে  বাংলাদেশের মানুষ এতো পরিমাণ নিষ্পেষিত হয়েছে, নির্যাতীত হয়েছে, সুন্দর সুন্দর কথা বলে দেশকে তলাবিহীন ঝুড়িতে পরিনত করেছিল, জনগণের অধিকার নিয়ে যে ছিনিমিনি খেলেছিল, এখন আর সুন্দর সুন্দর কথা কেউ বিশ্বাস করে না।

বিগত  হাসিনার আমলে ১০০℅ এর উপরে ভোট কাস্ট হয়েছিল! আপনারা কি এটা চান? সুতরাং আমরা পরিস্কার করে বলতে চাই, জুলাই সনদ,  পিআর পদ্ধতিতে নির্বাচন করতে হবে। 

অনুষ্ঠানে  জেলা, মহানগরীর কর্মপরিষদ সদস্য ও বিভিন্ন  পর্যায়ের নেতৃবৃন্দ  শত শত জামায়াত নেতাকর্মী নিয়ে মানব বন্ধনে অংশগ্রহণ করে। 

এ সময় চাষাড়া থেকে মন্ডলপাড়া ব্রিজ পর্যন্ত মানববন্ধনে শত শত নেতা  কর্মীর স্বতঃস্ফূর্ত  উপস্থিতি  লক্ষ করা যায়।
 

.

উৎস: Narayanganj Times

কীওয়ার্ড: ব ল দ শ জ ম য ত ইসল ম ন র য়ণগঞ জ ন র য়ণগঞ জ জ ল ই সনদ স ন দর ইসল ম

এছাড়াও পড়ুন:

সিলেটে মহাসড়ক সংস্কারের দাবিতে গণ-অবস্থান ও মানববন্ধন

ঢাকা-সিলেট মহাসড়ক দ্রুত সংস্কার ও যাতায়াতের দুর্ভোগ দূর করার দাবিতে সিলেটে গণ-অবস্থান ও মানববন্ধন কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হয়েছে। আজ সোমবার দুপুর ১২টা থেকে দেড়টা পর্যন্ত দক্ষিণ সুরমার হুমায়ুন রশিদ চত্বর এলাকায় জেলা বিএনপির সভাপতি আবদুল কাইয়ুম চৌধুরীর আহ্বানে এ কর্মসূচি পালন করা হয়। কর্মসূচিতে বিএনপির নেতা–কর্মী ছাড়াও বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ অংশ নেন।

মানববন্ধনে আবদুল কাইয়ুম চৌধুরী বলেন, ঢাকা-সিলেট মহাসড়ক শুধু একটি রাস্তা নয়, এটি সিলেটবাসীর প্রাণরেখা। কিন্তু সরকারের অব্যবস্থাপনা ও উদাসীনতায় এটি এখন মৃত্যুফাঁদে পরিণত হয়েছে। প্রতিদিন দুর্ঘটনায় প্রাণহানি ঘটছে, মানুষ দুর্বিষহ ভোগান্তিতে পড়ছে বলে তিনি অভিযোগ করেন।

ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের বেহালের বিষয় উল্লেখ করে বিএনপির এই নেতা বলেন, বছরের পর বছর সংস্কারের নামে কোটি কোটি টাকা খরচ হলেও কোনো দৃশ্যমান অগ্রগতি হয়নি। যানজট, দুর্ঘটনা আর ভাঙা রাস্তায় অতিষ্ঠ সিলেটবাসী। এতে পর্যটন ও ব্যবসায়িক কর্মকাণ্ড স্থবির হয়ে পড়েছে। তবু সরকারের কার্যকর কোনো উদ্যোগ নেই।

অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে সিলেটবাসীর দুর্ভোগ লাঘবে ব্যবস্থা নেওয়ার আহ্বান জানিয়ে জেলা বিএনপির সভাপতি বলেন, শুধু চট্টগ্রামে তিন ঘণ্টায় যাওয়া নিশ্চিত করলেই হবে না, সিলেটকেও সমান গুরুত্ব দিতে হবে। সিলেটকে আর বঞ্চিত করা যাবে না। সিলেটকে পূর্ণাঙ্গ আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে বঞ্চিত রাখা হয়েছে। তিন দফা ভয়াবহ বন্যার পরও ক্ষতিগ্রস্ত মানুষদের পুনর্বাসনে কোনো উদ্যোগ নেওয়া হয়নি।

সিলেটবাসীর দুর্ভোগের বিষয়ে অভিযোগ করে আবদুল কাইয়ুম চৌধুরী বলেন, সিলেটে গ্যাস উৎপাদন হলেও এখানকার মানুষ গ্যাসসংকটে ভোগেন। রেলপথে ট্রেন সময়মতো আসে না, বিমানের ভাড়াও বেশি। শিক্ষা, স্বাস্থ্য, কারিগরি, সড়ক-রেলযোগাযোগ কিংবা বিমানবন্দর—সব ক্ষেত্রেই সিলেটকে বৈষম্যের মধ্যে রাখা হয়েছে।

মানববন্ধনে বক্তারা মহাসড়ক সংস্কারের কাজ দ্রুত শেষ করা, অতীত প্রকল্পে দুর্নীতির তদন্ত ও জড়িতদের শাস্তি নিশ্চিত করা, দুর্ঘটনায় নিহতদের ক্ষতিপূরণ ও বিকল্প ট্রাফিক ব্যবস্থার দাবি জানান। কর্মসূচি শেষে ২০ অক্টোবর জেলা বিএনপি জেলা প্রশাসকের কাছে এবং উপজেলা বিএনপি সংশ্লিষ্ট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) কাছে স্মারকলিপি দেবে বলে ঘোষণা দেওয়া হয়।

কর্মসূচি সঞ্চালনা করেন জেলা বিএনপির যুগ্ম সম্পাদক তাজরুল ইসলাম তাজুল। অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন জেলা বিএনপির সহসভাপতি নজমুল হোসেন পুতুল, যুগ্ম সম্পাদক হাসান পাটোয়ারী রিপন, উপদেষ্টা ফালাকুজ্জামান চৌধুরী জগলু, উপদেষ্টা বদরুল ইসলাম জয়দু, দক্ষিণ সুরমা থানা বিএনপির আহ্বায়ক এনামুল হক, গোয়াইনঘাট উপজেলার এম সাইফুর রহমান টেকনিক্যাল অ্যান্ড বিএম কলেজের অধ্যক্ষ জিল্লুর রহমান সুয়েব, সিলেট বিভাগ শিক্ষক–কর্মচারী ঐক্য পরিষদের সভাপতি নিজাম উদ্দিন তরফদার প্রমুখ।

তিন সংগঠনের কর্মসূচি ঘোষণা

সিলেট-ঢাকা রেলপথকে ডাবল করা, নতুন ট্রেন চালু ও রেলের মানোন্নয়নের দাবিতে আগামী বুধবার রেললাইনে শোয়া কর্মসূচি পালনের ঘোষণা দিয়েছে তিনটি সংগঠন—সিলেট কল্যাণ সংস্থা, সিলেট বিভাগ যুব কল্যাণ সংস্থা ও সিলেট প্রবাসীকল্যাণ সংস্থা। সংগঠনগুলোর এক বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, বুধবার বেলা তিনটায় দক্ষিণ সুরমা রেলগেটে নাগরিক সমাবেশ এবং ৩টা ৪০ মিনিটে ১০ মিনিটের জন্য রেললাইনে শোয়া কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হবে।

তাঁদের দাবির মধ্যে রয়েছে ঢাকা, চট্টগ্রাম ও কক্সবাজার রুটে বিরতিহীন নতুন ট্রেন চালু, ডাবল লাইন নির্মাণ, ট্রেনের মানোন্নয়ন, সিলেট-ছাতক রুটে ট্রেন চালু, অতিরিক্ত বগি সংযোজন ও ট্রেনের শিডিউল বিপর্যয় রোধে ত্রুটিমুক্ত ইঞ্জিন যুক্ত করা।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • আমি আয়নাঘরে ছিলাম: আমির হামজা
  • জুলাই সনদ বাস্তবায়নসহ ৫ দফা দাবিতে শহরে খেলাফত মজলিসের মানববন্ধন
  • ৫ দাবিতে নওগাঁয় জামায়াতের মানববন্ধন
  • এক শিক্ষার্থীর বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহারের দাবিতে সহপাঠীদের বিক্ষোভ
  • অস্ত্র মামলায় বহিষ্কৃত ছাত্রের শাস্তি প্রত্যাহার দাবিতে শাবিপ্রবি
  • জাতীয় নির্বাচনের তফসিলের আগেই গণভোটের দাবি ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের
  • পাঁচ দফা দাবিতে যাত্রাবাড়ী থেকে গাবতলী পর্যন্ত মানববন্ধন করল জামায়াত
  • লালনের আখড়ায় মাদক সেবন বন্ধের দাবিতে মানববন্ধন
  • সিলেটে মহাসড়ক সংস্কারের দাবিতে গণ-অবস্থান ও মানববন্ধন