বিএনপির মনোনয়ন পরিবর্তনের দাবিতে শেখ সাদীর কর্মী-সমর্থকদের বিক্ষোভ
Published: 27th, November 2025 GMT
কুষ্টিয়া-৪ (কুমারখালী-খোকসা) আসনে বিএনপি মনোনীত সৈয়দ মেহেদী আহমেদ রুমীর মনোনয়ন পরিবর্তন করে জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক শেখ সাদীকে প্রার্থী করার দাবিতে বিক্ষোভ ও মানববন্ধন করেছেন বিএনপির একাংশের নেতা-কর্মীরা।
বৃহস্পতিবার বিকেল চারটার দিকে কুষ্টিয়া-রাজবাড়ী আঞ্চলিক মহাসড়কের কুমারখালী গোলচত্বর এলাকায় সর্বস্তরের জনগণের ব্যানারে মানববন্ধনের আয়োজন করা হয়। সেখানে নারী–পুরুষসহ বিভিন্ন শ্রেণি–পেশার মানুষ অংশ নেন। তাঁদের হাতে প্ল্যাকার্ড ও ফেস্টুন ছিল।
মানববন্ধনে কুমারখালী উপজেলা কৃষক দলের আহ্বায়ক সাইদুল ইসলাম বলেন, দলের ত্যাগী নেতা-কর্মীদের বাদ দিয়ে মেহেদী আহমেদকে মনোনয়ন দেওয়া হয়েছে। যিনি দীর্ঘ ১৭ বছর আন্দোলন-সংগ্রামে ছিলেন না। নেতা-কর্মীদের বিপদে পাশে ছিলেন না। তাঁকে মনোনয়ন দেওয়ায় অখুশি তৃণমূল নেতা-কর্মীরা। দ্রুত তাঁর মনোনয়ন পরিবর্তন করে শেখ সাদীকে চূড়ান্ত মনোনয়ন দেওয়া হোক।
উপজেলা যুবদলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক আতিকুর রহমান বলেন, তৃণমূল বিএনপির সব নেতা-কর্মী তারুণ্যের প্রতীক শেখ সাদীর পক্ষে। কাজেই সাদীকে মনোনয়ন দিলে এই আসনে ধানের শীষের বিজয় সুনিশ্চিত হবে।
উপজেলা বিএনপির সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক হাফিজুর রহমান বলেন, মেহেদীকে পরিবর্তন করে সাদীকে মনোনয়ন না দিলে এই আসনে ধানের শীষ প্রতীকের বিজয়ী করা সম্ভব হবে না। শেখ সাদী অনেক বছর আগে থেকেই দুই উপজেলার বিভিন্ন সামাজিক কর্মকাণ্ড চালিয়ে আসছেন। গ্রামের সাধারণ মানুষ তাঁকে ভোট দিতে উন্মুখ হয়ে আছেন। এখানে রুমী থাকলে জামায়াতের প্রার্থী জিতে যাবেন। যতক্ষণ মনোনয়ন পরিবর্তন করা না হবে, ততক্ষণ শান্তিপূর্ণভাবে আন্দোলন চলতেই থাকবে।
৩ নভেম্বর বিএনপি কেন্দ্রীয়ভাবে ২৩৭ আসনে দলীয় প্রার্থীদের মনোনয়ন ঘোষণা করে। এতে কুষ্টিয়া-৪ আসনে বিএনপির মনোনয়ন দেওয়া হয় সাবেক সংসদ সদস্য ও জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি সৈয়দ মেহেদী আহমেদ রুমীকে। মনোনয়ন ঘোষণার পর থেকেই জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক শেখ সাদীর সমর্থকেরা বিক্ষোভ সমাবেশ করে আসছেন।
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে জুলাই হামলায় মদদদাতা শিক্ষকদের বিচার দাবি
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে জুলাই আন্দোলন চলাকালে ছাত্র–জনতার ওপর হামলায় মদদ ও পরীক্ষার অনিয়মে জড়িত শিক্ষকদের বিচার দাবিতে মানববন্ধন করেছেন জাতীয় ছাত্রশক্তির নেতা–কর্মীরা। আজ বৃহস্পতিবার বেলা দেড়টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের নতুন প্রশাসনিক ভবনের সামনে এ কর্মসূচি পালন করেন তাঁরা।
মানববন্ধন সঞ্চালনা করেন জাতীয় ছাত্রশক্তি বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সংগঠক কাজী মেহরাব। এতে বক্তারা বলেন, জুলাই আন্দোলনে হামলায় মদদদাতা শিক্ষকদের বিচার না করে গাদ্দারি করছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। একাডেমিক ক্ষেত্রে শিক্ষকদের আক্রোশের শিকার হয়ে বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষার্থীরা ‘রেজাল্ট টেম্পারিংয়ের’ শিকার হচ্ছেন। এই প্রশাসন ওই শিক্ষকদের বিরুদ্ধেও কোনো ব্যবস্থা নিচ্ছে না। শিক্ষার্থীদের বলির পাঁঠা বানিয়ে তারা শিক্ষক সিন্ডিকেট জিইয়ে রেখেছে। অবিলম্বে এসব শিক্ষকের বিচারকাজ শেষ করার দাবি জানান তাঁরা।
ইংরেজি বিভাগের ৫১তম ব্যাচের শিক্ষার্থী ও ছাত্রশক্তির সংগঠক খন্দকার আল ফাহাদ বলেন, ‘আমরা প্রথম থেকে অভিযুক্ত শিক্ষকদের বিচারের দাবি করে আসছি। কিন্তু আমাদের প্রশাসন একটা কথা বলে যে, তারা শিক্ষকদের প্রতি কোনো অবিচার করতে পারবে না। ঠিক কথা, তারা শিক্ষকদের প্রতি কোনো অবিচার করতে পারবে না। কিন্তু তারা ঠিকই প্রতিবার শিক্ষার্থীদের প্রতি অবিচার করতে পারে; এমনটি আগেও করেছে, বর্তমানেও করছে। যে প্রশাসনকে আমরা একটি গণ–অভ্যুত্থানের মাধ্যমে বসিয়েছি, তারা আজ এটিকে হাস্যকর বিষয়ে পরিণত করছে।’
ব্যবস্থাপনা বিভাগের ৫১তম ব্যাচের শিক্ষার্থী ও ছাত্রশক্তির সংগঠক নাদিয়া রহমান বলেন, হামলাকারী শিক্ষার্থীদের বিচার যদি এই দেড় বছরে করা সম্ভব হয়, তাহলে মদদদাতা শিক্ষকদের বিচার কেন এই দেড় বছরে করা সম্ভব নয়? তারা জাকসুর আগে মিটিংগুলোয় বলেছিল, জাকসু হওয়ার এক সপ্তাহের মধ্যেই এসব শিক্ষকের বিচার সম্ভব। কোথায় সেই বিচার? জাকসু হওয়ার পর আজ প্রায় দুই মাস হয়ে যাচ্ছে। কিন্তু এ পর্যন্ত অভিযুক্ত শিক্ষকদের কোনো ধরনের বিচারের তৎপরতা প্রশাসনের ভেতরে দেখা যাচ্ছে না।
অবিলম্বে শিক্ষকদের বিচার না হলে এই প্রশাসনকে টেনেহিঁচড়ে নামানোর হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে সরকার ও রাজনীতি বিভাগের শিক্ষার্থী ও ছাত্রশক্তির সংগঠক জিয়াউদ্দিন আয়ান বলেন, এই শিক্ষকদের বিচার না হওয়ার পেছনে আওয়ামীপন্থী সিন্ডিকেট জড়িত আছে। যে শিক্ষকেরা রেজাল্ট টেম্পারিং করছেন, তাঁদের অধিকাংশই আওয়ামীপন্থী সিন্ডিকেট। যদি প্রশাসন এসব শিক্ষকের বিচার না করে, তাহলে সাবেক ভিসি নুরুল আলমের প্রশাসন যেভাবে বিদায় নিয়েছিল, এই প্রশাসনকেও সেভাবে নামানো হবে।
মানববন্ধনে আরও বক্তব্য দেন ইংরেজি বিভাগের শিক্ষার্থী মোহাম্মদ আলী চিশতি, বায়োটেকনোলজি অ্যান্ড জেনেটিকস ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের শিক্ষার্থী আহসান লাবিব, সরকার ও রাজনীতি বিভাগের শিক্ষার্থী নাহিদ ইমন প্রমুখ।