‘মেসি কাপ’ আয়োজনের ঘোষণা দিলেন মেসি, কারা খেলবে এই টুর্নামেন্ট
Published: 15th, October 2025 GMT
নিজের ইনস্টাগ্রামে হ্যান্ডলে চমকপ্রদ এক ঘোষণা দিয়ে সবাইকে অবাক করেছেন লিওনেল মেসি। গতকাল রাতে এই পোস্টে ‘মেসি কাপ’ নামে বিশেষ একটি আন্তর্জাতিক টুর্নামেন্ট আয়োজন করার কথা জানিয়েছেন আর্জেন্টিনা অধিনায়ক। অনূর্ধ্ব-১৬ পর্যায়ের বয়সভিত্তিক এই টুর্নামেন্টটি অনুষ্ঠিত হবে যুক্তরাষ্ট্রের মায়ামিতে। এতে অংশ নেবে আর্জেন্টিনার রিভার প্লেট, নিওয়েলসসহ ইউরোপের বেশ কিছু ক্লাব।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে করা পোস্টে টুর্নামেন্ট আয়োজনের ঘোষণায় মেসি বলেন, ‘আমি অবশেষে বলতে পারছি, প্রতিশ্রুতিশীল যুব খেলোয়াড়দের জন্য একটি বিশেষ টুর্নামেন্ট ডিসেম্বরে মায়ামিতে অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে।
যেখানে বিশ্বের সেরা কিছু ক্লাব অংশ নেবে। সেই সঙ্গে ওই দিনগুলোতে আরও নানা ধরনের আয়োজন রাখা হবে। এটা পরের প্রজন্মের জন্য। আশা করি, মেসি কাপ সবাই পছন্দ করবে।’
আরও পড়ুনআন্তর্জাতিক ফুটবলে গোল করানোর রেকর্ড মেসির৯ ঘণ্টা আগে‘মেসি কাপ’ টুর্নামেন্টের প্রথম সংস্করণ অনুষ্ঠিত হবে মায়ামিতে আগামী ৯ থেকে ১৪ ডিসেম্বর পর্যন্ত। এর আয়োজনে রয়েছে মেসির নিজস্ব প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান ‘৫২৫ রোজারিও’। এই আন্তর্জাতিক যুব ফুটবল প্রতিযোগিতায় বিশ্বের বিভিন্ন মর্যাদাপূর্ণ ক্লাবের অনূর্ধ্ব-১৬ দল অংশ নেবে।
এই টুর্নামেন্টে ৮টি ক্লাব অংশ নেবে। ক্লাবগুলো হলো ইন্টার মায়ামি, বার্সেলোনা, ম্যানচেস্টার সিটি, রিভার প্লেট, ইন্টার মিলান, নিওয়েল’স, আতলেতিকো মাদ্রিদ এবং চেলসি।
ছয় দিনের টুর্নামেন্টে মোট ১৮টি ম্যাচ খেলা হবে এবং ম্যাচগুলো ইন্টার মায়ামির চেজ স্টেডিয়াম ও ক্লাবটির অনুশীলন মাঠে অনুষ্ঠিত হবে। টুর্নামেন্টের ফরম্যাট অনুযায়ী চারটি করে দল দুটি গ্রুপে ভাগ হয়ে খেলবে। এরপর প্লে-অফ এবং ফাইনাল অনুষ্ঠিত হবে।
আরও পড়ুনমেসি যেন একটি নদীর নাম০৫ সেপ্টেম্বর ২০২৫মেসির প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান ‘৫২৫ রোজারিও’–এর পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, ফুটবলের ভবিষ্যৎ বিনির্মানই এই টুর্নামেন্টের লক্ষ্য। প্রতিষ্ঠানটির বিবৃতিতে বলা হয়, ‘এটি শুধু একটি টুর্নামেন্ট নয়—এটি এক ধারাবাহিক আয়োজন ও ডিজিটালভিত্তিক প্ল্যাটফর্ম, যেখানে খেলাধুলা, সংস্কৃতি ও উদ্ভাবন একসূত্রে মিশেছে।’ প্রতিষ্ঠানটির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা টিম পাস্তোরে বলেন, ‘মেসি কাপ হলো আজকের ফুটবল আর আগামী দিনের খেলোয়াড়দের মিলনমেলা।’
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: এই ট র ন ম ন ট ফ টবল
এছাড়াও পড়ুন:
খাদ্য অধিকার নিশ্চিতে আইন করা প্রয়োজন
খাদ্য নিরাপত্তার মূল সমস্যা সুষম বণ্টনের অভাব। বিগত সরকারের লুটপাট ও দুর্নীতির কারণে খাদ্যের যথাযথ বণ্টন ব্যাহত হয়েছে। উৎপাদন ও বণ্টনে সুষমতা নিশ্চিত করা গেলে সবার জন্য খাদ্য নিশ্চিত করা সম্ভব। এ জন্য খাদ্য অধিকার নিশ্চিত করতে একটি আইন প্রণয়ন জরুরি।
বুধবার রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবে ‘বাংলাদেশের দারিদ্র্য পরিস্থিতি এবং খাদ্য ব্যবস্থাপনায় চ্যালেঞ্জ ও করণীয়’ শীর্ষক আলোচনা সভায় এ কথাগুলো বলেন বক্তারা। ‘খাদ্য অধিকার বাংলাদেশ’ নামের একটি নেটওয়ার্ক এই আলোচনার আয়োজন করে।
আলোচনায় প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উন্নয়ন অধ্যয়ন বিভাগের অধ্যাপক আসিফ মোহাম্মদ শাহান। তিনি বলেন, বিগত গণ–অভ্যুত্থান ও বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে সবার প্রত্যাশা ছিল অধিকারের ভিত্তিতে অন্তর্ভুক্তিমূলক উন্নয়ন। এর মধ্যে সবার জন্য খাদ্য অধিকার বাস্তবায়ন ছিল অন্যতম। কিন্তু অন্তর্বর্তী সরকার সেই প্রত্যাশা পূরণে ব্যর্থ হয়েছে। দরিদ্র মানুষের জীবনমান উন্নয়নে কোনো উল্লেখযোগ্য পদক্ষেপ দেখা যায়নি। খাদ্য নিরাপত্তার মানও আগের চেয়ে খারাপ হয়েছে।
ভবিষ্যৎ নীতি প্রণয়নে খাদ্য অধিকারকে অগ্রাধিকার দিতে রাজনৈতিক অংশীজনদের সঙ্গে আলোচনা, নারীদের কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি, স্বাস্থ্য ও শিক্ষায় বিনিয়োগ বাড়ানো, কর্মসংস্থানের ক্ষেত্রে দক্ষতা উন্নয়ন ও কারিগরি প্রশিক্ষণ এবং ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প খাতে সহায়তা বাড়ানোর সুপারিশ করেন আসিফ মোহাম্মদ শাহান।
সভায় সম্মানীয় অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের সাবেক অধ্যাপক এম এম আকাশ। তিনি বলেন, ক্ষুধা, খাদ্য ও পুষ্টির মধ্যে সূক্ষ্ম পার্থক্য আছে। কিন্তু খাদ্য নিরাপত্তার মূল সমস্যা সুষম বণ্টনের অভাব। বিগত সরকারের লুটপাট ও দুর্নীতির কারণে খাদ্যের বণ্টনে নানা সমস্যা তৈরি হয়েছিল। তাঁর মতে, উৎপাদন ও বণ্টনে সুষমতা এলেই খাদ্যে সবার অভিগম্যতা নিশ্চিত হবে। খাদ্য অধিকার নিশ্চিতে একটি আইন করা এখন জরুরি।
সভাপতির বক্তব্যে খাদ্য অধিকার বাংলাদেশের সাধারণ সম্পাদক ও ওয়েভ ফাউন্ডেশনর নির্বাহী পরিচালক মহসিন আলী বলেন, প্রতিবেশী ভারত, পাকিস্তান, নেপালসহ অন্যান্য দেশের সঙ্গে তুলনায় বাংলাদেশের খাদ্য পরিস্থিতির উন্নয়নে ‘খাদ্য অধিকার আইন’ প্রণয়নের কোনো বিকল্প নেই। খাদ্য অধিকার বাংলাদেশ নেটওয়ার্ক দীর্ঘদিন ধরে এই প্রক্রিয়া ত্বরান্বিত করতে কাজ করছে। তিনি আইনটি দ্রুত প্রণয়ন ও বাস্তবায়নে সব পক্ষের সহযোগিতা কামনা করেন।
সভায় খাদ্য অধিকার বাংলাদেশের পক্ষ থেকে কয়েকটি সুপারিশ তুলে ধরা হয়। এর মধ্যে রয়েছে অবিলম্বে খাদ্য অধিকার আইন প্রণয়ন করে বাস্তবায়নের উদ্যোগ নেওয়া, নিত্যপণ্যের দাম স্থিতিশীল রাখা, প্রান্তিক ও শ্রমজীবী মানুষের আয় বাড়ানোর সুযোগ সৃষ্টি করা, নিয়মিত বাজার মনিটরিং ও স্বল্পমূল্যে খাদ্য সরবরাহ বৃদ্ধি, বিদ্যমান বৈষম্য হ্রাস করে সামাজিক সুরক্ষা কর্মসূচির পরিসর বাড়ানো ইত্যাদি।
ওয়েভ ফাউন্ডেশনের উপপরিচালক ও খাদ্য অধিকার বাংলাদেশের সমন্বয়কারী কানিজ ফাতেমার সঞ্চালনায় আলোচনা সভায় আরও বক্তব্য দেন সমাজসেবা অধিদপ্তরের অতিরিক্ত পরিচালক শিলা রানী দাস, বাংলাদেশ উন্নয়ন গবেষণা প্রতিষ্ঠানের গবেষণা পরিচালক এস এম জুলফিকার আলী, ক্রিশ্চিয়ান এইড বাংলাদেশের কান্ট্রি ডিরেক্টর নুজহাত জাবিন ও ওয়েল্ট হাঙ্গার হিলফে বাংলাদেশের হেড অব প্রজেক্ট মো. মামুনুর রশিদ।