খাদ্য অধিকার নিশ্চিতে আইন করা প্রয়োজন
Published: 15th, October 2025 GMT
খাদ্য নিরাপত্তার মূল সমস্যা সুষম বণ্টনের অভাব। বিগত সরকারের লুটপাট ও দুর্নীতির কারণে খাদ্যের যথাযথ বণ্টন ব্যাহত হয়েছে। উৎপাদন ও বণ্টনে সুষমতা নিশ্চিত করা গেলে সবার জন্য খাদ্য নিশ্চিত করা সম্ভব। এ জন্য খাদ্য অধিকার নিশ্চিত করতে একটি আইন প্রণয়ন জরুরি।
বুধবার রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবে ‘বাংলাদেশের দারিদ্র্য পরিস্থিতি এবং খাদ্য ব্যবস্থাপনায় চ্যালেঞ্জ ও করণীয়’ শীর্ষক আলোচনা সভায় এ কথাগুলো বলেন বক্তারা। ‘খাদ্য অধিকার বাংলাদেশ’ নামের একটি নেটওয়ার্ক এই আলোচনার আয়োজন করে।
আলোচনায় প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উন্নয়ন অধ্যয়ন বিভাগের অধ্যাপক আসিফ মোহাম্মদ শাহান। তিনি বলেন, বিগত গণ–অভ্যুত্থান ও বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে সবার প্রত্যাশা ছিল অধিকারের ভিত্তিতে অন্তর্ভুক্তিমূলক উন্নয়ন। এর মধ্যে সবার জন্য খাদ্য অধিকার বাস্তবায়ন ছিল অন্যতম। কিন্তু অন্তর্বর্তী সরকার সেই প্রত্যাশা পূরণে ব্যর্থ হয়েছে। দরিদ্র মানুষের জীবনমান উন্নয়নে কোনো উল্লেখযোগ্য পদক্ষেপ দেখা যায়নি। খাদ্য নিরাপত্তার মানও আগের চেয়ে খারাপ হয়েছে।
ভবিষ্যৎ নীতি প্রণয়নে খাদ্য অধিকারকে অগ্রাধিকার দিতে রাজনৈতিক অংশীজনদের সঙ্গে আলোচনা, নারীদের কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি, স্বাস্থ্য ও শিক্ষায় বিনিয়োগ বাড়ানো, কর্মসংস্থানের ক্ষেত্রে দক্ষতা উন্নয়ন ও কারিগরি প্রশিক্ষণ এবং ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প খাতে সহায়তা বাড়ানোর সুপারিশ করেন আসিফ মোহাম্মদ শাহান।
সভায় সম্মানীয় অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের সাবেক অধ্যাপক এম এম আকাশ। তিনি বলেন, ক্ষুধা, খাদ্য ও পুষ্টির মধ্যে সূক্ষ্ম পার্থক্য আছে। কিন্তু খাদ্য নিরাপত্তার মূল সমস্যা সুষম বণ্টনের অভাব। বিগত সরকারের লুটপাট ও দুর্নীতির কারণে খাদ্যের বণ্টনে নানা সমস্যা তৈরি হয়েছিল। তাঁর মতে, উৎপাদন ও বণ্টনে সুষমতা এলেই খাদ্যে সবার অভিগম্যতা নিশ্চিত হবে। খাদ্য অধিকার নিশ্চিতে একটি আইন করা এখন জরুরি।
সভাপতির বক্তব্যে খাদ্য অধিকার বাংলাদেশের সাধারণ সম্পাদক ও ওয়েভ ফাউন্ডেশনর নির্বাহী পরিচালক মহসিন আলী বলেন, প্রতিবেশী ভারত, পাকিস্তান, নেপালসহ অন্যান্য দেশের সঙ্গে তুলনায় বাংলাদেশের খাদ্য পরিস্থিতির উন্নয়নে ‘খাদ্য অধিকার আইন’ প্রণয়নের কোনো বিকল্প নেই। খাদ্য অধিকার বাংলাদেশ নেটওয়ার্ক দীর্ঘদিন ধরে এই প্রক্রিয়া ত্বরান্বিত করতে কাজ করছে। তিনি আইনটি দ্রুত প্রণয়ন ও বাস্তবায়নে সব পক্ষের সহযোগিতা কামনা করেন।
সভায় খাদ্য অধিকার বাংলাদেশের পক্ষ থেকে কয়েকটি সুপারিশ তুলে ধরা হয়। এর মধ্যে রয়েছে অবিলম্বে খাদ্য অধিকার আইন প্রণয়ন করে বাস্তবায়নের উদ্যোগ নেওয়া, নিত্যপণ্যের দাম স্থিতিশীল রাখা, প্রান্তিক ও শ্রমজীবী মানুষের আয় বাড়ানোর সুযোগ সৃষ্টি করা, নিয়মিত বাজার মনিটরিং ও স্বল্পমূল্যে খাদ্য সরবরাহ বৃদ্ধি, বিদ্যমান বৈষম্য হ্রাস করে সামাজিক সুরক্ষা কর্মসূচির পরিসর বাড়ানো ইত্যাদি।
ওয়েভ ফাউন্ডেশনের উপপরিচালক ও খাদ্য অধিকার বাংলাদেশের সমন্বয়কারী কানিজ ফাতেমার সঞ্চালনায় আলোচনা সভায় আরও বক্তব্য দেন সমাজসেবা অধিদপ্তরের অতিরিক্ত পরিচালক শিলা রানী দাস, বাংলাদেশ উন্নয়ন গবেষণা প্রতিষ্ঠানের গবেষণা পরিচালক এস এম জুলফিকার আলী, ক্রিশ্চিয়ান এইড বাংলাদেশের কান্ট্রি ডিরেক্টর নুজহাত জাবিন ও ওয়েল্ট হাঙ্গার হিলফে বাংলাদেশের হেড অব প্রজেক্ট মো.
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: প রণয়ন
এছাড়াও পড়ুন:
কুকসুর গঠনতন্ত্র প্রণয়নে সময়সীমা বেড়েছে
কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের (কুকসু) গঠনতন্ত্র প্রণয়নের লক্ষ্যে গঠিত কমিটির প্রতিবেদন জমা দেওয়ার সময় আরো ১০ কর্মদিবস বৃদ্ধি করা হয়েছে।
মঙ্গলবার (১৪ অক্টোবর) রাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. হায়দার আলী মুঠোফোনে বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
আরো পড়ুন:
কুরআন অবমাননার প্রতিবাদে কুবিতে কুরআন বিতরণ
কুবি শিক্ষার্থীকে উত্যক্ত করায় ৫ যুবক আটক
এর আগে, গত ২৪ সেপ্টেম্বর বিশ্ববিদ্যালয়ের ১০৬তম সিন্ডিকেট সভায় সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের ডিন ও প্রত্নতত্ত্ব বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ সোহরাব উদ্দীনকে আহ্বায়ক করে পাঁচ সদস্যদের এই কমিটি গঠন করা হয়েছিল।
ওই কমিটিকে সাত কর্মদিবসের মধ্যে চূড়ান্ত প্রতিবেদন জমা দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছিল বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। কিন্তু সময় পার হয়ে গেলেও প্রতিবেদন জমা দিতে পারেননি কমিটির সদস্যরা।
প্রতিবেদন জমা না দেওয়ার বিষয়ে কমিটির আহ্বায়ক ড. মুহাম্মদ সোহরাব উদ্দীন বলেন, “ছাত্র সংসদের মতো গুরুত্বপূর্ণ সংগঠনের গঠনতন্ত্র প্রণয়ন করার জন্য সাত কর্মদিবস যথেষ্ট নয়। আমরা এরই মধ্যে চারদিন কর্মশালার মতো করে বৈঠকে বসেছি। আমরা যেহেতু এটা প্রথম করছি, অনেক বিষয় বিবেচনা করেই করতে হচ্ছে।”
তিনি বলেন, “কমিটির সঙ্গে বৈঠকে বসার পর বুঝতে পারছি, একজন আইনজ্ঞ দরকার। এজন্যই আইন বিভাগের বিভাগীয় প্রধানকে আমরা কমিটিতে অন্তর্ভুক্ত করেছি। জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের গঠনতন্ত্র প্রণয়ন কমিটির সদস্য অধ্যাপক বিল্লাল হোসেন স্যারকেও আমাদের এখানে নিয়ে আসব, যাতে আমাদের গঠনতন্ত্রটা অন্যদের জন্য অনুসরণীয় হয়। এজন্যই আমাদের আরও কিছুদিন সময় দরকার। আমরা উপাচার্য স্যারের কাছে ১০ কর্মদিবস সময় চেয়েছি এবং তিনি সম্মতি দিয়েছেন।”
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. হায়দার আলী বলেন, “কমিটিতে আরো দুইজন সদস্য বাড়ানো হয়েছে। তাদের মধ্যে একজন বিশ্ববিদ্যালয়ের বাইরের। তিনি এসে কমিটির সঙ্গে বৈঠক করে গঠনতন্ত্র প্রণয়ন করার জন্য কমিটির পক্ষ থেকে আরো ১০ কর্মদিবস সময় চেয়েছেন। আমরা তাদের সময় দিয়েছি।”
ঢাকা/এমদাদুল/মেহেদী