দক্ষিণ কোরিয়া ও জাপানের বিপক্ষে দুই ম্যাচে কেমন খেলল আনচেলত্তির ব্রাজিল
Published: 16th, October 2025 GMT
গ্রিক দার্শনিক প্লেটো বলেছিলেন ‘ফর্ম’ বা ‘আইডিয়াজ’-এর কথা। তাঁর মতে, প্রতিটি জিনিসের একটি চিরস্থায়ী, নিখুঁত ও আদর্শ রূপ আছে। আমরা পৃথিবীতে যা দেখি, তা আসলে সেই নিখুঁত রূপেরই অনুকরণ। যেমন কালো রঙের একটা নিখুঁত ধারণা আমাদের মনের ভেতরে আছে বলেই আমরা চারপাশে কালো রঙের নানা রূপ দেখি। বাস্তবে আমরা যে কালো দেখি, সেটা আসলে সেই নিখুঁত কালোরই প্রতিলিপি।
ফুটবলকে যদি প্লেটোর এই ধারণার আলোকে দেখি, তবে ব্রাজিলিয়ান ফুটবলের সৃষ্টি ‘জোগো বনিতো’কে নিখুঁত ফুটবল বলা যায়। আমরা যে ফুটবলের নান্দনিকতা, কৌশল আর সৌন্দর্য দেখি, তা মূলত সেই নিখুঁত ফুটবলেরই প্রতিফলন। আমাদের চোখ সব সময় সেই আদর্শ ফুটবল খুঁজে বেড়ায়। কোথাও তার আভাস পেলেই আমরা উল্লসিত হয়ে উঠি। যদিও শেষ পর্যন্ত সেই প্রত্যাশা থাকে ব্রাজিলের কাছেই, যারা নিজেরাও অনেক আগেই সেই খেলা পেছনে ফেলে এসেছে।
সাম্প্রতিক সময়ে দক্ষিণ কোরিয়ার বিপক্ষে প্রীতি ম্যাচ ঘিরে আবারও সামনে এসেছে ‘জোগো বনিতো’র আলাপ। সেদিন ৯০ মিনিট ধরে অসাধারণ ফুটবল খেলেছিল ব্রাজিল। এরপরই কিছু সংবাদমাধ্যম ও সমর্থক প্রশ্ন তোলে—ব্রাজিলের ‘জোগো বনিতো’ কি আবার ফিরে এল? তবে প্লেটোর ফর্মের যুক্তি মেনে নিলে, সেই নিখুঁত রূপ আসলে কোথাও নেই।
আরও পড়ুনদক্ষিণ কোরিয়াকে উড়িয়ে দিয়ে যা বললেন ব্রাজিল কোচ আনচেলত্তি১০ অক্টোবর ২০২৫বরং মনে হয়, ব্রাজিলও হয়তো ভুলে গেছে সেই রূপটা কেমন ছিল। কিন্তু হারানো ঐতিহ্যের প্রতি টানই মাঝেমধ্যে আমাদের মনে করিয়ে দেয় সেই খেলার কথা। ‘জোগো বনিতো’র আলোচনাটা সরিয়ে রাখলেও, সেদিন ৫–০ গোলে জেতার পথে ব্রাজিলের ফুটবল সত্যিই ছিল চোখধাঁধানো। অনেক দিন পর সমর্থকেরা হয়তো খেলা দেখে তৃপ্তির ঢেকুর তুলেছিলেন। যদিও পরের ম্যাচে জাপানের বিপক্ষে সেই ব্রাজিলকে পাওয়া গেল সামান্যই।
প্রথমার্ধে ২–০ গোলে এগিয়েও শেষ পর্যন্ত ৩–২ গোলে হেরে যায় ব্রাজিল। আনচেলত্তি এ ম্যাচে দলে অনেক পরিবর্তন এনেছিলেন। তবু প্রশ্ন উঠতেই পারে—আসল ব্রাজিল কোনটা? দক্ষিণ কোরিয়াকে উড়িয়ে দেওয়া দল, নাকি জাপানের বিপক্ষে এগিয়েও হেরে যাওয়া দল? হয়তো আসল ব্রাজিলকে খুঁজতে হবে এই দুই রূপের মাঝামাঝি কোথাও।
ব্রাজিল কোচ কার্লো আনচেলত্তি.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ফ টবল
এছাড়াও পড়ুন:
রাজবাড়ীতে প্রভাষককে পেটালেন সহযোগী অধ্যাপক
রাজবাড়ী সরকারি কলেজে এক প্রভাষককে কলার ধরে টেনে মারধরের অভিযোগ উঠেছে একই কলেজের এক সহযোগী অধ্যাপকের বিরুদ্ধে। এ ঘটনার ১০ সেকেন্ডের একটি ভিডিও ভাইরাল হয়েছে। যেখানে মারধরের অংশবিশেষ দেখা গেছে।
বুধবার (১৫ অক্টোবর) বিকেল ৪টার দিকে কলেজের একাডেমিক ভবনের নিচতলায় এ ঘটনা ঘটে। ভুক্তভোগী শিক্ষক হলেন হিসাববিজ্ঞান বিভাগের প্রভাষক এ কে এম আজাদুর রহমান। অভিযুক্ত শিক্ষক অর্থনীতি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ও বিভাগীয় প্রধান মোস্তফা কামাল। তিনি কলেজের শিক্ষক পরিষদের সাধারণ সম্পাদকও।
প্রভাষক আজাদুর রহমান বলেন, “দুপুর একটার দিকে পরীক্ষার ডিউটি চলাকালে আমার বিশ্ববিদ্যালয়ের বন্ধু ও একই কলেজের ব্যবস্থাপনা বিভাগের প্রভাষক কুতুব উদ্দিনকে হঠাৎ ধাক্কা দিয়ে ফেলে দেন ইসলামের ইতিহাস বিভাগের আমির স্যার। এ ঘটনার পর কুতুব উদ্দিন অধ্যক্ষের কাছে লিখিত অভিযোগ দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়। আমি তার সঙ্গে ছিলাম। কুতুব অভিযোগ লিখে প্রিন্ট করতে যায়। এর মধ্যে মোস্তফা কামাল স্যার এসে আমাকে কলার ধরে টেনে নিচে নিয়ে গিয়ে কিল-ঘুষি মারতে থাকে। এতে আমার ঘাড়, চোখ ও মুখে আঘাত লাগে। পরে সন্ধ্যায় আমি সদর হাসপাতালে গিয়ে চিকিৎসা নিয়েছি। এ ঘটনার বিচার চাই, আমি মামলা করব।”
ব্যবস্থাপনা বিভাগের প্রভাষক কুতুব উদ্দিন বলেন, “দুপুরে পরীক্ষার ডিউটি চলাকালে কথা কাটাকাটির একপর্যায়ে ইসলামের ইতিহাস বিভাগের আমির স্যার আমাকে হঠাৎ ধাক্কা দেন। বিষয়টি নিয়ে আমি অধ্যক্ষের কাছে লিখিত অভিযোগ দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিই। অভিযোগ লিখে প্রিন্ট করতে যাই। তখন মোস্তফা কামাল স্যার গিয়ে আজাদুর রহমানকে বলে, ‘এই আজাদ, এদিকে এসো’ এ কথা বলেই তিনি আজাদের কলার ধরে নাক-মুখে কিল ঘুষি দেন। ঠেকাতে গেলে বাংলা বিভাগের শিক্ষক জাহাঙ্গীর আলমকেও ঘুষি মারেন মোস্তফা কামাল স্যার। আজাদুর রহমানকে আমরা হাসপাতালে নিয়ে গিয়ে ডাক্তার দেখিয়েছি। ওকে অনেক মারধর করা হয়েছে।”
এ বিষয়ে অভিযুক্ত শিক্ষক মোস্তফা কামাল বলেন, “ওরা একজন শিক্ষককে হুমকি দিয়েছে। বিষয়টি জানতেই আমি তাদের কাছে যাই। তখন আমার সাথেও আজাদুর খারাপ ব্যবহার করে। তাই কলার ধরেছি, তবে মারধর করিনি।”
কোন শিক্ষককে হুমকি দেওয়া হয়েছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, “তার বাড়ি খুলনা, এখানে চাকরি করে।”
ঘটনা সম্পর্কে জানতে চাইলে রাজবাড়ী সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর এ কে এম ইকরামুল করিম বলেন, “আমি শুনেছি দুই শিক্ষকের মধ্যে কথাকাটাকাটি হয়েছে। তবে মারধরের বিষয়টি আমি জানি না।”
ঢাকা/রবিউল/এস