‘অবিক্রীত’ মুশফিক–মাহমুদউল্লাহকে আরও বেশি টাকা দামে কিনতে চেয়েছিল রাজশাহী–রংপুর
Published: 1st, December 2025 GMT
বিপিএল নিলামে ‘এ’ ও ‘বি’ ক্যাটাগরিতে খেলোয়াড় ছিলেন ১৪ জন। প্রতিটি দলের জন্য এখান থেকে দুজন খেলোয়াড় নেওয়ার বাধ্যবাধকতা ছিল। ৬ দল দুজন করে ১২ জন কিনে ফেলার পর বাকি ছিল দুজন। সেই দুজনই মুশফিকুর রহিম ও মাহমুদউল্লাহ।
দুজনের কেউই এখন আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টি খেলেন না। কিন্তু মুশফিক ও মাহমুদউল্লাহর মতো দুই ক্রিকেটারের বিপিএলে নিলামে দল না পাওয়ার ঘটনা অনেককেই বিস্মিত করে। নিলামকারী মুশফিক ও মাহমুদউল্লাহর নাম ডাকছেন, কিন্তু ৬ দলের কেউ সাড়া না দেওয়ায় ‘আন সোল্ড’ বা অবিক্রীত থেকে গেছেন—এমন দৃশ্য বিস্ময়ের বৈকি।
শেষ পর্যন্ত দুই অভিজ্ঞ ক্রিকেটার অবশ্য দল পেয়েছেন। মুশফিক রাজশাহী ওয়ারিয়র্সে, মাহমুদউল্লাহ রংপুর রাইডার্সে। নিলামের পর দুটি দলের কোচই বলেছেন, এই ক্রিকেটারদের দলে পেয়ে নিজেদের ভাগ্যবান মনে করছেন তাঁরা।
নিয়ম অনুযায়ী ‘অবিক্রীত’ খেলোয়াড়ের নাম পরে আবার ডাকা হয়, তখন তাঁর ক্যাটাগরি এক ধাপ নেমে যায়। মুশফিক ও মাহমুদউল্লাহ ‘বি’ ক্যাটাগরিতে ছিলেন, যার ভিত্তিমূল্য ৩৫ লাখ টাকা। তাঁদের পরেরবার ডাকলে ‘সি’ ক্যাটাগরি হওয়ার কথা, যার ভিত্তিমূল্য ২২ লাখ টাকা।
তবে বিসিবি পরিচালক ইশতিয়াক সাদেকের প্রস্তাবে দুজনকে আবারও ‘বি’ ক্যাটাগরিতেই তোলা হয়। তখন মুশফিকের জন্য রাজশাহী আর মাহমুদউল্লাহর জন্য রংপুর ছাড়া অন্য কোনো দল বিড না করলে ভিত্তিমূল্যেই বিক্রি হন দুই ক্রিকেটার।
নিলামের পর বাংলাদেশ দলের দুই সাবেক অধিনায়কের শুরুতে অবিক্রীত থেকে যাওয়া পরে বিক্রি নিয়ে গণমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলেন রাজশাহীর কোচ হান্নান সরকার ও রংপুরের সহকারী কোচ মোহাম্মদ আশরাফুল।
হান্নান জানান, মুশফিক ও মাহমুদউল্লাহকে প্রথমে কেউ না কেনায় তিনি নিজেও অবাক হয়েছিলেন, ‘আমারও একটা সময় খারাপ লেগেছে যে এটা আসলে কীভাবে সম্ভব। ওরা দল পাবে না, এটা আসলে মেনে নেওয়ার মতো নয়। টিম কম্বিনেশন বা দুজন প্লেয়ার নেওয়ার যে নিয়ম করেছে, সে কারণেই হয়তো কোনো কোনো দল ভিন্ন কৌশলে দল সাজিয়েছিল। যে কারণে প্রথমে তাদের কেউ নেয়নি। তবে আমরা দুটি দল অপেক্ষা করছিলাম (কখন আবার ডাকবে)। রংপুরের সঙ্গে কথা হচ্ছিল যে তারা আসলে (এ বিষয়ে) কী ভাবছে।’
স্থানীয় খেলোয়াড়দের দলে টানার নির্ধারিত কোটা শেষে বাড়তি খেলোয়াড় নেওয়ার পর্বে যখন মুশফিক ও মাহমুদউল্লার নাম ডাকা হয়, একডাকেই রাজশাহী মুশফিককে, রংপুর মাহমুদউল্লাহকে পেয়ে যায়। হান্নান জানিয়েছেন, মুশফিকের জন্য ৩৫ লাখ টাকার বেশিই ভেবে রেখেছিল তাঁর দল, ‘আমি মুশফিকের জন্য আরও বেশি টাকা রেখে দিয়েছিলাম। ভাবনা ছিল মুশফিককে আমি নেবই। আমাদের কিপিং অপশনে আকবর আলী আছে। মুশফিকের মতো আরেকজন অভিজ্ঞ ক্রিকেটার পেয়েছি, আলহামদুলিল্লাহ।’
রংপুরের টিম ডিরেক্টর শাহনিয়ান তানিমও মনে করেন, মাহমুদউল্লাহকে তাঁরা কম দামেই পেয়ে গেছেন, ‘(দল না পাওয়া) আমাদের বিস্মিত করেছে। তবে রয়ে যাওয়ার পর আমরা নেওয়ার বিষয়ে আত্মবিশ্বাসী ছিলাম। সৌভাগ্যবান যে ভিত্তিমূল্যে পেয়েছি। তিনি আরও বেশি ডিজার্ভ করেন।’
রংপুরের সহকারী কোচ আশরাফুলও মাহমুদউল্লাহকে পাওয়ায় খুশি, ‘মুশফিক ও মাহমুদউল্লাহর মতো বাংলাদেশের বড় দুজন সুপারস্টার আমাদের পরিকল্পনায় ছিল। শেষ মুহূর্তে যেহেতু পেয়েছি, আমরা নিজেদের ভাগ্যবানই মনে করছি।’
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
আলোচিত রায়হান হত্যার রায় ৭ জানুয়ারি
সিলেটের বহুল আলোচিত রায়হান উদ্দিন হত্যা মামলার রায় আগামী ৭ জানুয়ারি ঘোষণা করবেন আদালত। রবিবার (৩০ নভেম্বর) যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শেষে সিলেট মহানগর দায়রা জজ মুন্সী আব্দুল মজিদ রায় ঘোষণার তারিখ ধার্য করেন।
২০২০ সালের ১০ অক্টোবর মধ্যরাতে রায়হানকে বন্দরবাজার ফাঁড়িতে তুলে নেয় পুলিশ। পরদিন সকালে তাকে সিলেটের এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানকার চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। এ ঘটনায় দেশজুড়ে তীব্র ক্ষোভ দেখা দেয়। পরিবারের দাবি ছিল-পুলিশি নির্যাতনে রায়হানের মৃত্যু হয়েছে।
আরো পড়ুন:
খলাপাড়ার গণহত্যা দিবস: স্বাধীনতার প্রান্তে শহীদ হন ১০৬ জন
মেহেরপুরে ১০ স্বর্ণের বার উদ্ধার, ভারতীয়সহ গ্রেপ্তার ২
আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) বদরুল ইসলাম বলেন, “আদালতে কারাবন্দি বহিষ্কৃত এএসআই আশেক এলাহির যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শেষ হয়। এর আগে, ২৬ নভেম্বর মামলার পলাতক থাকা পাঁচ আসামির যুক্তিতর্ক সম্পন্ন হয়। আদালত আগামী ৭ জানুয়ারি রায়হান হত্যার রায় ঘোষণা করবেন বলে জানান।”
সূত্র জানায়, মামলার অন্য আসামিদের বেশির ভাগই জামিনে বের হওয়ার পর থেকে পলাতক। প্রধান আসামি বরখাস্তকৃত এসআই আকবর হোসেন ভুঁইয়া উচ্চ আদালত থেকে জামিনে বের হলেও পরবর্তীতে তাঁর জামিন স্থগিত করা হয় এবং ১০ দিনের মধ্যে আত্মসমর্পণের নির্দেশ দেওয়া হয়। তিনি আদালতে হাজির না হয়ে দেশ ছেড়ে পালিয়েছেন বলে গুঞ্জন রয়েছে।
নিহতের স্ত্রীর করা মামলায় গঠিত তদন্ত কমিটি রায়হানকে নির্যাতনের সত্যতা পায়। এরপর এসআই আকবরসহ চারজনকে সাময়িক বরখাস্ত ও তিনজনকে প্রত্যাহার করা হয়। পরে পিবিআই তদন্ত করে মামলায় ৬ জনকে অভিযুক্ত করে অভিযোগপত্র দেয় ২০২১ সালের ৫ মে।
অভিযুক্তরা হলেন- ফাঁড়ির তৎকালীন ইনচার্জ এসআই আকবর হোসেন ভুঁইয়া, এএসআই আশেক এলাহী, কনস্টেবল হারুন অর রশিদ, টিটু চন্দ্র দাস, এসআই হাসান উদ্দিন এবং সংবাদকর্মী আবদুল্লাহ আল নোমান।
এ মামলায় ৬৯ সাক্ষীর মধ্যে ৬৩ জনের সাক্ষ্য গ্রহণ শেষ হয়েছে। চার বছর পর এখন রায়ের অপেক্ষায় রয়েছেন রায়হানের পরিবার।
ঢাকা/রাহাত/মাসুদ