সিদ্ধিরগঞ্জে দুই গাড়িতে অগ্নিসংযোগের ঘটনায় মামলা
Published: 16th, November 2025 GMT
নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জে পৃথক দুটি পরিবহনে আগুন দিয়ে নাশকতার ঘটনায় অজ্ঞাতনামা ৪০ জন আওয়ামী লীগের অঙ্গ সংগঠনের নেতা-কর্মী ও দুষ্কৃতিকারীর বিরুদ্ধে পৃথক দুটি মামলা দায়ের করা হয়েছে।
হামলাকারীরা দলীয় স্লোগান ও রাষ্ট্রবিরোধী স্লোগান দিয়ে পরিবহনে আগুন ধরিয়ে দেয় বলে মামলায় উল্লেখ করা হয়েছে। এই ঘটনায় জনমনে আতঙ্ক সৃষ্টি হয়েছে এবং পুলিশ জড়িতদের দ্রুত গ্রেপ্তারের আশ্বাস দিয়েছে।
জানাগেছে, গত শনিবার (১৫ নভেম্বর) ভোরে নাফ পরিবহন নামের একটি মিনিবাস (ঢাকা-মেট্রো-জ-১১-০৩৩৮) ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের পাশে সড়ক ও জনপথ অফিসের মেইন গেটের সামনে পার্কিং করা অবস্থায় দুষ্কৃতিকারীরা হামলা চালিয়ে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করেছে।
এরআগে , গত ১২ নভেম্বর রাতে তিনি দুই যাত্রী নিয়ে জালকুড়ি এলাকায় পৌঁছালে ২০/২৫ জন ব্যক্তি রাস্তা অবরোধ করে ককটেল বিস্ফোরণ ঘটায় এসময় তারা জয় বাংলা জয় বঙ্গবন্ধুসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক স্লোগান দিতে থাকে। পরবর্তীতে তারা তাঁর সিএনজিতে (ঢাকা-থ-১১-৯৯২১) পেট্রোল ঢেলে আগুন ধরিয়ে দেয়।
দুটি নাশকতার ঘটনায় সিদ্ধিরগঞ্জ থানায় পৃথক দুটি এজাহার দায়ের করা হয়েছে। পুলিশ ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে এবং জড়িতদের শনাক্তে আশেপাশের সিসিটিভি ফুটেজ খতিয়ে দেখা ও প্রত্যক্ষদর্শীর সাথে কথা বলছে বলে জানা গেছে।
মিনিবাসে অগ্নিকান্ডের ঘটনায় দায়েরকৃত এজাহারে উল্লেখ করা হয়, শনিবার ভোরে মিনিবাস চালক সোহাগ মিয়া (৩৮) স্থানীয়দের মাধ্যমে জানতে পারেন যে নাফ পরিবহন নামের একটি মিনিবাস (ঢাকা-মেট্রো-জ-১১-০৩৩৮) ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের পাশে সড়ক ও জনপথ অফিসের মেইন গেটের সামনে পার্কিং করা অবস্থায় দুষ্কৃতিকারীরা হামলা চালিয়ে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করেছে।
তিনি ঘটনাস্থলে পৌঁছে দেখেন, বাসটি সম্পূর্ণ পুড়ে গেছে। ভুক্তভোগী চালক দাবি করেন, এতে প্রায় ৫ লক্ষ টাকার ক্ষতি হয়েছে। পরে হাইওয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে পুড়ে যাওয়া মিনিবাসটি জব্দ করে হেফাজতে নেয়।
অন্যদিকে সিএনজি চালক মো.
পরবর্তীতে তারা তাঁর সিএনজিতে (ঢাকা-থ-১১-৯৯২১) পেট্রোল ঢেলে আগুন ধরিয়ে দেয়। এতে প্রায় ২ লক্ষ টাকার ক্ষতি হয়েছে বলে তিনি জানান। পরে সিদ্ধিরগঞ্জ থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছালে হামলাকারীরা পালিয়ে যায়। পুলিশ সিএনজিটি জব্দ করে থানায় নিয়ে আসে।
সিদ্ধিরগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোহাম্মদ শাহিনূর আলম বলেন, আমরা প্রতিটি নাশকতার ঘটনা গুরুত্ব সহকারে দেখছি। ইতোমধ্যে পৃথক দুটি মামলা রুজু করা হয়েছে এবং তদন্ত দ্রুত গতিতে চলছে। জননিরাপত্তা বিঘ্নিত করে যারা এই ধরনের জঘন্য কাজ করছে, তারা যেই হোক না কেন, তাদের আইনের আওতায় আনা হবে।
উৎস: Narayanganj Times
কীওয়ার্ড: স দ ধ রগঞ জ ন র য়ণগঞ জ স দ ধ রগঞ জ র ঘটন য় পর বহন স এনজ
এছাড়াও পড়ুন:
বর্তমান সংবিধান মানলে পরবর্তী নির্বাচন ২০২৯ সালে: ফরহাদ মজহার
দেশে এখন যাঁরা সংবিধানের দোহাই দিয়ে নির্বাচনের দাবি করছেন, তাঁরা দেশে গৃহযুদ্ধ বাঁধানোর চেষ্টা করছেন বলে মন্তব্য করেছেন কবি ও চিন্তক ফরহাদ মজহার। তিনি বলেন, সংবিধানে লেখা আছে, নির্বাচন হবে পাঁচ বছর পরে; ২০২৪–এর পরের নির্বাচন ২০২৯ সালে।
কোন সাংবিধানিক যুক্তির ভিত্তি থেকে নির্বাচন চাওয়া হচ্ছে, সে প্রশ্নও তোলেন ফরহাদ মজহার। দেশের প্রচলিত আইন মানার বাধ্যবাধকতা তুলে ধরে তিনি বলেন, ‘যদি আপনারা মনে করেন ঠিক আছে উপদেষ্টার সরকার (অন্তর্বর্তী সরকার) শেখ হাসিনার সংবিধান মেনেছে, তাহলে ২০২৯ সালের নির্বাচন আপনাকে মেনে নিতে হবে।’
‘জাতীয় সংসদ নির্বাচন-২০২৬: জাতীয় ঐক্যের প্রয়োজনীয়তা’ শীর্ষক এক নির্বাচনী সংলাপে আলোচকের বক্তব্যে ফরহাদ মজহার এ কথা বলেন। আজ বৃহস্পতিবার বিকেলে রাজধানীর একটি হোটেলে এ সংলাপের আয়োজন করে ফাউন্ডেশন ফর স্ট্র্যাটেজিক অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট স্টাডিজ (এফএসডিএস)।
অন্তর্বর্তী সরকার ২০২৪ সালের নির্বাচনকে অবৈধ ঘোষণা না করায় সমালোচনা করেন এই কবি ও চিন্তক। তিনি বলেন, ‘প্রথমত আমাদের একটি ইলেকশন তো হয়ে গেছে ২০২৪ সালে। এই উপদেষ্টা সরকারের প্রধান তো এখন পর্যন্ত সেই নির্বাচনকে অবৈধ বলেন নাই। তাঁর যে কনস্টিটিউটিং পাওয়ার (সাংবিধানিক ক্ষমতা) গণ–অভ্যুত্থানের মধ্যে হাজির হয়েছিল, এটা তিনি নিজেই নস্যাৎ করেছেন শেখ হাসিনার সংবিধানকে পুনঃপ্রতিষ্ঠিত করে।’
এখন অন্তর্বর্তী সরকারকে পুরোনো সংবিধান অনুযায়ী চলতে হবে মন্তব্য করে ফরহাদ মজহার বলেন, ‘যদি আমরা আইন না মানি, তাহলে সমাজে বিশৃঙ্খলা তৈরি হবে। সমাজে বিশৃঙ্খলা তৈরি করবার, আগামী দিনে সংঘাত তৈরি করবার, আগামী দিনে বাংলাদেশকে বিপদের দিকে ঠেলে দেওয়ার দাবি হচ্ছে নির্বাচন।...বাংলাদেশকে আমরা অত্যন্ত দ্রুতবেগে একটা বিপদের দিকে ঠেলে দিচ্ছি।’
ফরহাদ মজহার বলেন, ‘আপনারা যদি আইন না মানেন, রাজনৈতিক দল যদি আইন না মানে; তাহলে বাংলাদেশকে যে বিশৃঙ্খলা এবং গৃহযুদ্ধের দিকে আপনারা ঠেলে দেবেন, তাঁর দায়দায়িত্ব আপনারা নেবেন।’ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পরিবর্তে গণপরিষদ নির্বাচনে যেতে অসুবিধা কী, রাজনৈতিক দলগুলোর কাছে সেই প্রশ্নও রাখেন তিনি।
সংলাপে স্বাগত বক্তব্যে এফএসডিএসের চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল (অব.) ফজলে এলাহী আকবর বলেন, ‘আমরা আজ জাতীয় জীবনের এক গুরুত্বপূর্ণ সন্ধিক্ষণে দাঁড়িয়ে আছি। বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ স্থিতিশীলতা, উন্নয়ন এবং বৈশ্বিক অবস্থান নির্ধারিত হবে আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচন কতটুকু সুষ্ঠু, অবাধ এবং অংশগ্রহণমূলক হবে তার ওপর।’
সংলাপে আসন্ন নির্বাচনের প্রয়োজনীয়তার ওপর গুরুত্ব তুলে ধরে একটি নিবন্ধ উপস্থাপন করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক আনোয়ারউল্লাহ চৌধুরী। সংলাপ সঞ্চালনা করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সহ-উপাচার্য মামুন আহমেদ।
এ সংলাপে আরও বক্তব্য দেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, স্থায়ী কমিটির সদস্য আবদুল মঈন খান, মেজর (অব.) হাফিজ উদ্দিন আহমদ, বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের উপদেষ্টা মাহদী আমিন, গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি, আমার বাংলাদেশ (এবি) পার্টির চেয়ারম্যান মজিবুর রহমান মঞ্জু, গণ অধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হক, জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) জ্যেষ্ঠ যুগ্ম আহ্বায়ক সামান্তা শারমিন, জাতীয়তাবাদী গণতান্ত্রিক আন্দোলনের (এনডিএম) চেয়ারম্যান ববি হাজ্জাজ, রাষ্ট্রবিজ্ঞানী দিলারা চৌধুরী, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক কামরুল আহসান, পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক (আইজিপি) আশরাফুল হুদা, আমার দেশের সম্পাদক মাহমুদুর রহমান, দৈনিক যুগান্তরের সম্পাদক আবদুল হাই শিকদার, প্রতিদিনের বাংলাদেশের সম্পাদক মারুফ কামাল খান প্রমুখ। সংলাপে উপস্থিত ছিলেন বণিক বার্তার সম্পাদক দেওয়ান হানিফ মাহমুদ, ইউনাইটেড পিপলস (আপ) বাংলাদেশের প্রধান সমন্বয়কারী রাফে সালমান রিফাত প্রমুখ।