সীমান্তের সাম্প্রতিক উত্তেজনাকর পরিস্থিতি নিয়ে ঢাকায় নিযুক্ত ভারতীয় হাই কমিশনার প্রণয় ভার্মাকে পররাষ্ট্র দপ্তরে ডাকার পরদিনই দিল্লিতে বাংলাদেশের উপ-হাইকমিশনার নুরুল ইসলামকে তলব করেছে ভারত। 

সোমবার (১৩ জানুয়ারি) বাংলাদেশি উপ-হাইকমিশনার নূরুল ইসলামকে দুপুরের দিকে দিল্লির সাউথ ব্লকের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর দপ্তর থেকে তাকে বের হতে দেখা যায়। এর আগে, রবিবার ঢাকায় নিযুক্ত ভারতের হাইকমিশনার প্রণয় ভার্মাকে তলব করে বাংলাদেশ। 

ভারত বলছে, গেল বছরের জুন মাসে বাংলাদেশের সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিজিবির সঙ্গে স্বাক্ষরিত চুক্তি অনুযায়ী ভারত ও বাংলাদেশের সীমান্তবর্তী কিছু অঞ্চলে বিএসএফ কাঁটাতার বসানোর কাজ শুরু করেছে। কিন্তু মালদহের কালিয়াচক, উত্তর ২৪ পরগনা জেলার বসিরহাট, দক্ষিণ দিনাজপুরের বালুরঘাট ও কোচবিহারের দহগ্রাম সীমান্তে কাঁটাতার বসানোর সময় বিজিবির বাধা দেওয়ার অভিযোগ ওঠে।

বাংলাদেশ সরকারের দাবি, এর ফলে ওই অঞ্চলে ‘শান্তিভঙ্গ’ হচ্ছে, দ্বিপাক্ষিক চুক্তিও ভঙ্গ হচ্ছে। কিন্তু বিএসএফ ও ভারত সরকারের পাল্টা দাবি, সীমান্তের কাঁটাতারের বেড়া দেওয়া হচ্ছিল দুই দেশের চুক্তি মোতাবেক। ভারত ও বাংলাদেশের ৪ হাজার ১৫৬ কিলোমিটার বিস্তীর্ণ সীমান্ত অঞ্চলের প্রায় ৫৩৮ কিলোমিটার এলাকায় কোনো কাঁটাতার নেই। ফলে প্রতিদিনই বাড়ছে চোরাচালান, অনুপ্রবেশ। 

এর আগে, ঢাকার তলবে রবিবার স্থানীয় সময় বিকেল ৩টার দিকে ঢাকায় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে পৌঁছান প্রণয় ভার্মা। সেখানে পররাষ্ট্রসচিব জসিম উদ্দিনের সঙ্গে প্রায় ৪৫ মিনিট বৈঠক করেন তিনি।

বৈঠক শেষে প্রণয় ভার্মা বলেন, ‘‘নিরাপত্তার জন্য সীমান্তে বেড়া নির্মাণের বিষয়ে ঢাকা ও নয়াদিল্লির মধ্যে সমঝোতা রয়েছে। আমাদের উভয় দেশের সীমান্ত রক্ষাবাহিনী বিএসএফ ও বিজিবি এই বিষয়ে যোগাযোগ করেছে। আশা করছি, আমাদের দ্বিপাক্ষিক বোঝাপড়ার বাস্তবায়ন হবে এবং সীমান্তে অপরাধ মোকাবিলায় উভয়পক্ষের সহযোগিতামূলক পদ্ধতি থাকবে।’’

ঢাকা/সুচরিতা/এনএইচ 

.

উৎস: Risingbd

এছাড়াও পড়ুন:

কড়া নজরদারি সুন্দরবন সীমান্তে

দক্ষিণ ২৪ পরগনার সুন্দরবন জলসীমানা প্রায় দেড়শো কিলোমিটার। ভারতীয় প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, এ সীমানা দিয়ে অনুপ্রবেশ ঠেকাতে বাড়তি তৎপরতা নেওয়া হচ্ছে। খবর আনন্দবাজারের।

খবরে বলা হয়েছে, নদী ও বনভূমি এলাকায় সীমান্ত বরাবর বিএসএফ মোতায়েন আছে। ভাসমান বর্ডার আউটপোস্ট, বঙ্গোপসাগর অংশে কোস্ট গার্ডের নজরদারি চলছে। ড্রোন, সেন্সর ও ক্যামেরা, কিছু জায়গায় নাইট ভিশন ক্যামেরা ব্যবহার করা হচ্ছে। পাশাপাশি, পুলিশের তরফেও উপকূল এলাকায় দিনরাত নজরদারি চলছে।

উপকূল থানাগুলোর পক্ষ থেকে নদীপথে নিয়মিত টহল দেওয়া হচ্ছে। রাতেও উপকূলবর্তী এলাকাগুলিতে নজর রাখা হচ্ছে। নদীপথে কোনো জলযান দেখলেই তল্লাশি চালাচ্ছে পুলিশ। মৎস্যজীবীদের পরিচয়পত্রও খতিয়ে দেখা হচ্ছে। নদী বা সমুদ্রে এখন মাছ ধরার উপরে নিষেধাজ্ঞা চলছে। মৎস্যজীবীদের জলযান চলাচল করার কথা নয়। তাই জলযান দেখলেই তল্লাশি চলছে। বাংলাদেশি জাহাজগুলোতেও পুলিশ তল্লাশি চালাচ্ছে।

সুন্দরবন পুলিশ জেলার সুপার কোটেশ্বর রাও নালাভাট বলেন, আগেও উপকূলবর্তী এলাকায় পুলিশের নজরদারি চলত। এখন বাড়তি জোর দেওয়া হচ্ছে। দু’বেলা নদী ও স্থলপথে পুলিশের টহল বৃদ্ধি পেয়েছে। নাকা চেকিং হচ্ছে। চলছে তল্লাশিও।

উত্তর ২৪ পরগনাতেও উপকূল এলাকায় নিরাপত্তা বাড়ানো হয়েছে। নিরাপত্তা বেড়েছে জল ও স্থলসীমান্তে। জল, ভূমি ও আকাশে অত্যাধুনিক ইজ়রাইল রাডারের মাধ্যমে নজরদারি চালাচ্ছে সীমান্তরক্ষী বাহিনী।

ইতোমধ্যে ভারতীয় কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা দফতর জানিয়েছে, বাংলাদেশের আকাশ ব্যবহার করে ভারতকে আক্রমণ করতে পারে সশস্ত্র সংগঠনগুলো। ফলে সুরক্ষা বাড়াতে বিএসএফের তৎপরতা শুরু হয়েছে। বসিরহাট মহকুমার স্বরূপনগর থেকে হিঙ্গলগঞ্জের হেমনগর কোস্টাল থানা পর্যন্ত ৯৪ কিলোমিটার সীমান্ত রয়েছে। তার মধ্যে ৫০ কিলোমিটার জলসীমান্ত। স্থলসীমান্ত ৪৪ কিলোমিটার। সীমান্ত সুরক্ষায় অতিরিক্ত বাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে বলে প্রশাসন সূত্রের খবর।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • কড়া নজরদারি সুন্দরবন সীমান্তে
  • ভুলে সীমানায় পা, বিএসএফ সদস্যকে আটক করল পাকিস্তান
  • স্বাস্থ্য ব্যয়ের চাপ দারিদ্র্য নিরসনে অন্যতম বাধা