১০ টাকায় ইলিশ খাওয়াতে গিয়ে তোপের মুখে ‘এমপি প্রার্থী’ জামিল
Published: 17th, September 2025 GMT
ফরিদপুরের সদরপুরে ১০ টাকায় ইলিশ মাছ বিতরণের ঘোষণা দিয়েছিলেন মাওলানা রায়হান জামিল (৩৬) নামের এক স্বতন্ত্র এমপি প্রার্থী। তবে, ইলিশের চেয়ে মানুষ বেশি হওয়ায় উপস্থিত জনতার মধ্যে শুরু হয় হট্টগোল। একপর্যায়ে জনতার তোপের মুখে এলাকা ছাড়তে বাধ্য হন তিনি।
আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ফরিদপুর-৪ (ভাঙ্গা, সদরপুর ও চরভদ্রাসন) আসন থেকে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে অংশ নেওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন রায়হান জামিল। প্রায় এক সপ্তাহ আগে মাত্র ১০ টাকায় ইলিশ মাছ বিতরণের ঘোষণা দিয়ে পোস্টার সাঁটিয়াছিলেন তিনি।
পূর্ব ঘোষণা অনুযায়ী, বুধবার (১৭ সেপ্টেম্বর) বেলা ১১টায় সদরপুর উপজেলার বিশ্ব জাকের মঞ্জিল সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে ইলিশ বিতরণের কথা ছিল। তবে, সকাল থেকে শত শত মানুষ জাকের মঞ্জিল উচ্চ বিদ্যালয় প্রাঙ্গণে ভিড় জমাতে শুরু করেন।
রায়হান জামিল প্রায় ৬০০টি ইলিশ নিয়ে ঘটনাস্থলে হাজির হন। কিন্তু, মাছ নেওয়ার জন্য সেখানে দুই সহস্রাধিক মানুষ আগে থেকে উপস্থিত ছিলেন। বিতরণ শুরুর কিছুক্ষণের মধ্যেই মাছ ফুরিয়ে যায়। মাছ না পেয়ে ক্ষিপ্ত হয়ে উঠেন লাইনে দাঁড়ানো লোকজন।
তারা বলেন, সকাল থেকে অপেক্ষা করেও মাছ পাননি। উল্টো ধাক্কাধাক্কি ও মারামারি লেগে যায়। পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে উঠলে রায়হান জামিলকে সেখান থেকে পালিয়ে যেতে হয়।
এ বিষয়ে সদরপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) সুকদেব রায় বলেন, ‘‘রায়হান জামিলকে আগেই এ বিষয়ে সতর্ক করা হয়ে ছিল। কিন্তু, তিনি তা শোনেননি। বিশৃঙ্খলার খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।’’
রায়হান জামিল ফরিদপুরের চরভদ্রাসন উপজেলার এমপিডাঙ্গা গ্রামের বাসিন্দা। তিনি ঢাকায় ব্যবসা করেন বলে জানা গেছে।
এ ঘটনার পর রায়হান জামিল বলেন, ‘‘দেশের সবচেয়ে দামি মাছ ইলিশ। অনেক মানুষের ইলিশ কিনে খাওয়ার সক্ষমতা নেই। এই চিন্তা থেকে আমি প্রায় ৬০০ মানুষের মধ্যে ১০ টাকায় ইলিশ দেওয়ার চেষ্টা করি। কিন্তু, হাজার হাজার মানুষ জড়ো হওয়ায় সবাইকে মাছ দিতে পারিনি। পরে আমি এ ঘটনার জন্য সবার কাছে ক্ষমা চেয়ে ফিরে আসি।’’
ঢাকা/তামিম/রাজীব
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর সদরপ র ব তরণ
এছাড়াও পড়ুন:
ফরিদপুরে পদ্মা নদীতে ভাঙন, ঝুঁকিতে ২০০ পরিবার
ফরিদপুরের সদরপুর উপজেলার পদ্মা নদী তীরবর্তী গ্রামগুলোতে নতুন করে ভাঙন দেখা দিয়েছে। ফলে স্থানীয় বাসিন্দাদের মধ্যে আতঙ্ক বিরাজ করছে। পানি উন্নয়ন বোর্ড জানায়, নদীর পানি কমতে শুরু করায় এমন পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে।
গ্রামগুলোর বাসিন্দারা জানান, উপজেলার আকোটের চর ইউনিয়নের শয়তানখালী ও ছলেনামা গ্রাম এলাকায় নতুন করে ভাঙন শুরু হয়েছে। পাশাপাশি আকোটের চর গুচ্ছ গ্রামটিও চরম ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় রয়েছে। এই তিন এলাকার প্রায় দুই শতাধিক পরিবার নদীগর্ভে বাড়ি বিলীন হওয়ার শঙ্কায় এখন নির্ঘুম রাত কাটাচ্ছেন।
আরো পড়ুন:
বিষখালীতে হঠাৎ ভাঙন
ফুঁসছে তিস্তা, লালমনিরহাটে রেড অ্যালার্ট জারি
স্থানীয় বাসিন্দা মালেক প্রামাণিক উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেন, “সারা বছরই ভাঙনের শিকার হচ্ছি। হঠাৎ করে ভাঙন তীব্র হওয়ায় এখন বাড়ি না সরালে নদীতে চলে যাবে। কোথায় যাব, তা নিয়ে চিন্তায় আছি।”
মো. মোজাম্মেল বেপারী নামে অপর এক বাসিন্দা বলেন, “এ বছর পদ্মায় ফসলি জমি ও গাছপালা বিলীন হয়েছে। অনেকেই ইতোমধ্যে নিরাপদ স্থানে চলে গেছেন, অনেকে ঘর সরানোর প্রস্তুতি নিচ্ছেন।”
ফরিদপুর পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) নির্বাহী প্রকৌশলী মো. রাকিব হোসেন বলেন, “নদীর পানি কমতে শুরু করায় ভাঙনের ঝুঁকি বেড়েছে। ভাঙন প্রবণ এলাকা পর্যবেক্ষণ করে ইতোমধ্যেই ৬০ লাখ টাকা ব্যয়ে ১৩ হাজার জিও ব্যাগ ফেলা হয়েছে। ভাঙন রোধে খুব শিগগিরই টেকসই ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
সদরপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) জাকিয়া সুলতানা বলেন, “নদী ভাঙনের বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জরুরি ভিত্তিতে জানানো হয়েছে। ভাঙন রোধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার চেষ্টা চলছে।
ঢাকা/তামিম/মাসুদ