ইতিহাস শুধু জুতো বদলায়, চেহারা নয়
Published: 17th, September 2025 GMT
মানুষ একে অপরের অভ্যন্তরে
আজ জুতোর বদলে পরে ফেলেছি দুটো কবিতা
আজ গুনে গুনে খাই অমাবস্যার দাঁতের চল্লিশ কামড়,
হাতে যে কাস্তে ছিল, সেটি এখন আমার গলা কাটে প্রতিদিন।
যে কবিতা নিজেকে খেয়ে ফেলে, তাকেই আমি ভালোবাসি
আমার গলা কেটে দিলে যদি শব্দ বের হয়—তবে আমি কবি।
আর আমি একদিন ধূলিকণার মতো ক্ষমা চাইব
স্বপ্ন দেখব না, স্বপ্ন আমাকে দেখবে
প্রার্থনা করব না, কেবলার দিকে চেয়ে কেবল কাঁদতে চাইব
বালিশে আঁকা তোমার মুখে—
কারণ, এই জিহ্বা পোড়া, এই আঙুলে বারুদ,
এই চোখে ছেঁড়া পোস্টারের নিচে দাঁড়িয়ে থাকা বিস্মৃত স্বপ্ন
জন্মের বিলম্বে মৃত্যুর আগমনী গীতে যুগল যুগল
প্রতিটি তীর্থের পথ দুঃখের পালক রাখে গুঁজে,
মায়া জলের জোনাক নীলে
জীবন কোনো গন্তব্য নয়, কেবল এক চিরন্তন সন্ধ্যা
আয়ুর অশ্রু শুধু, গড়িয়ে পড়ে না, টলমল করে চিরদিন।
প্রত্যেক মানুষ আসলে বাস করে নিজেরই কান্নার ভেতর,
প্রত্যেকে একই পাতা, এক ঝড়ে ভাসমান যুগ্ম জলচর আজ
মানুষ একে অপরের অভ্যন্তরে পাথরের মতো হারিয়ে যায়।
মরা মাছিটা কাচের বৈয়ামের নিচে পড়ে ছিল,
তার ডানা ভাঙা,
একটা হারানো গান হাওয়ার সঙ্গে মিশে গিয়েছিল।
তবুও, আমি তাকে দেখছিলাম
যেন সে কার্যকর কিছু বলতে যাবে,
সে বলবে, এটাই শেষ নয়
আমরা সবাই একদিন মরে যাব,
কিন্তু মাত্র এক দিন বেঁচে থেকেও
এ পৃথিবীতে আমরা সকলে কেবলই ভ্রমণকারী।
এ পৃথিবী কি ভালোবাসার জায়গা নয়
প্রেম কেন নয় প্রার্থিত রাষ্ট্র!
এখানে আমার চৌদিকে ঘিরে আছে কাঁটাতার, আর
সেই মরা মাছির মতো আমি
উড়ে উড়ে থেমে যাই, বিদ্ধ হই অবশেষে।
কিন্তু যদি তোমরা কেউ আসলেই জানতে চাও
একটা মাছির শেষ মুহূর্ত কতটা বাস্তব,
তার নিজের মৃত্যু তার কাছে
একটা স্বপ্নের মতো, তবে বুঝবে,
আমি কেন প্রতিটি প্রলম্বিত দিবসকে
মৃত্যুর দিকে পেছনে ফেলে চলতে থাকি।
মাছি কোন পর্বের অন্তর্গত? উড়নক্ষম কীটের গল্প—
মৃত্যু ও সময়ের দ্বৈরথে
নীরবে নিশ্চিত করে নৃত্য। আমরা সবাই শেষ পর্যন্ত
একসঙ্গে একই কাচের বৈয়ামের নিচে পড়ে থাকব
আসলে কেউ তখন আর কিছু জানবে না,
কেবল একটা মরা মাছির গল্প।
আমি প্রতিদিন এক মৃত সম্রাটকে প্রণাম করি,
তারপর হাঁটি পাথরের পথ দিয়ে,
যেখানে ইতিহাস শুধু জুতো বদলায়, চেহারা নয়।
আমি বেছে নিই না বাঁচা,
আমি বেছে নিই না মরাও—
আমি বেছে নিই এই দাঁড়িয়ে থাকা।
রক্তের নিচে জমে থাকা নৈঃশব্দ্যের পাশে
কোনো এক নীল দাঁতের ভোরে
কথা হবে সম্রাট—
কথা হবে,
চুলে জড়িয়ে যাবে ভুল বসন্তের শিকড়
কুমিরের চোখে লুকিয়ে পড়বে লবণ আকাশ,
কোনো সুখী চিত্রকর বাঁশি বাজিয়ে আঁকবে
কোকিলের ভেতরে মৃত্যু
যেমন আগুন কথা বলে ছাইয়ের সঙ্গে।
কোনো পতাকার নিচে জন্মাওনি
জন্মাওনি কোনো পদকপ্রাপ্ত জেনারেলের নির্দেশে,
তুমি আমাদের হিমেল রাজনীতির মধ্যে
প্রতিদিনের সম্রাট, একটা আগুনের পাতা ফেলে আসো।
মানুষের ভেতর আজ মৃত রাজ্য দাঁড়িয়ে—
সিংহাসনে বসে আছে রক্তাক্ত দেবী,
যার চোখে দেখতে পাই চাঁদের গর্ভপাত।
পাথরের মতো ভারী যে নাম বয়ে বেড়াই—
তা কি মানুষের? নাকি এক মৃত ভবিষ্যতের পুরোহিত
কণ্ঠে ঢুকিয়ে দিয়েছে জিল্লতির জীবন?
অদেখা আগুনের ছোবলে
সময়ের শরীর থেকে চূর্ণ হয়ে পড়ে যে পঙ্ক্তি
ছিলাম ঘর, ছিলাম বাগান, গান—
আজ শুধু স্মৃতির মোরগ ছিন্ন স্নায়ুতে ফোটা পাখি
কোনো ফলের খোসা ছাড়ায় অচেনা পশুর পাখা।
রাত ঘন হলে গহন থেকে ওঠে কাঁসার মতো শব্দ—
কে যেন ডাকে, কে? নদীর গভীরতম স্তর থেকে,
শব্দ নয়, ধ্বনি নয়—একধরনের অনন্ত তৃষ্ণা নিয়ে
হাতের আঙুল পাথর হয়ে যায়—
তবু ছুঁতে চাই
ওই মেঘ, যেখান থেকে জন্মেছিল প্রথম অশ্রু।
ওই বাতাসের কাঁধে ঝরে পড়া হাওয়া, প্রথম নিশ্বাস,
পথ নেই,
শুধু অশোক–রঙের ঝরনা
নীল পর্দার আড়ালে করে ঝলমল, ঝলমল।
যত দূরেই যাই, পথ আমার সঙ্গে কথা বলে,
তার হাওয়া, পাথর, সঙ্গী—
গন্তব্য নেই, শুধু কিছু মুহূর্ত
মিলিয়ে যায় ছায়ার ওজনে।
পৌঁছানোর কোনো নেই তাড়া, তাই
পথই হলো জীবনের ছোট্ট সব কথা
পথের পুনর্লিখনে টাটকা,
একই পথে বারবার হেঁটে যাওয়া
কারও অভাব জেগে থাকে বাতাসে
পথের কৌতূহল, পথের কল্পনা, বিশ্বাসে
এখানে প্রতিটি পদক্ষেপে গল্প জন্মায়
ইতিহাসে, নামহীন ভোরের কাছে নতজানু
এখানে সময় থামে, হয়তো এক মুহূর্তের জন্য,
আর আমি, মাটির গন্ধে ডুবে যাই
কাঁপতে থাকি রোদে—
ঘাসের রক্তে—ঝরা পাতার সাহসে।
পেছনে কিছু নেই, কোনো দিন কেউ ফিরে না আসে
পেছনে কিছু নেই, তোমার নামে জেগে থাকা ঘাসে।
কেবল সম্মুখে হেঁটে গেলে আসল ভালোবাসা—
পথের প্রতিটি ছোঁয়া, প্রতিটি মুহূর্ত হয় লাশ
যত দূর পথ যায়, তত দূর গহন তারকা নিমজ্জন।
উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
আফ্রিদির অলরাউন্ড নৈপুণ্যে আমিরাতকে হারিয়ে সুপার ফোরে পাকিস্তান
বিকেলে ছিল ম্যাচ হবে কি না অনিশ্চয়তা। নানা নাটকীয়তার পর অনিশ্চয়তা কেটে ম্যাচ শুরু হলো এক ঘণ্টা দেরিতে। তবে বিলম্বিত ম্যাচে আর খুব বেশি অনিশ্চয়তা–নাটকীয়তার দেখা মিলল না। দুবাইয়ে ফেবারিট হিসেবে মাঠে নেমে সংযুক্ত আরব আমিরাতকে ৪১ রানে হারিয়েছে পাকিস্তান।
এই জয়ে এশিয়া কাপের সুপার ফোরে জায়গা করেছে সালমান আগার দল। ‘এ’ গ্রুপ থেকে সেরা চারে জায়গা করেছে ভারতও। যার অর্থ, ২১ সেপ্টেম্বর আবারও মুখোমুখি হতে চলেছে ভারত–পাকিস্তান।
গতকাল দুবাই আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামের পাকিস্তান–আরব আমিরাত ম্যাচ নিয়ে অনিশ্চয়তা তৈরি হয়েছিল ১৪ সেপ্টেম্বরের ভারত–পাকিস্তান গ্রুপ ম্যাচের ঘটনার জেরে। সেদিন ভারতের খেলোয়াড়েরা পাকিস্তানের খেলোয়াড়দের সঙ্গে ম্যাচের শুরু ও শেষে হাত না মেলানোয় ম্যাচ রেফারি অ্যান্ডি পাইক্রফটের ওপর ক্ষোভ প্রকাশ করে পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ড (পিসিবি)।
পাইক্রফট টসের সময় অধিনায়ককে হাত না মেলানোর পরামর্শ দিয়ে নিয়ম লঙ্ঘন করেছেন অভিযোগ তুলে তাঁর অপসারণ চেয়ে রীতিমতো এশিয়া কাপ বর্জনের আবহ তৈরি করে পিসিবি।
শেষ পর্যন্ত পাইক্রফটের ক্ষমা প্রার্থনায় গতকাল তাঁর পরিচালনায় আরব আমিরাতের বিপক্ষে মাঠে নামে পাকিস্তান। তবে খেলতে নামার সিদ্ধান্ত নিতে আলোচনার জন্য এক ঘণ্টা পিছিয়ে দেওয়া হয় ম্যাচ শুরুর সময়।
আরও পড়ুনপাকিস্তান অধিনায়কের কাছে ক্ষমা চেয়েছেন ম্যাচ রেফারি পাইক্রফট, দাবি পিসিবির৬ ঘণ্টা আগেদেরিতে শুরু হওয়া ম্যাচে আমিরাত অধিনায়ক টসে জিতে পাকিস্তানকে ব্যাটিংয়ে পাঠান। ফখর জামানের ৩৬ বলে ৫০ আর শেষ দিকে শাহিন আফ্রিদির ১৪ বলে ২৯ রানের অপরাজিত ইনিংসে ভর করে পাকিস্তান করে ২০ ওভারে ৯ উইকেটে ১৪৬। মূলত আফ্রিদির শেষ দিকের ঝোড়ো ব্যাটিংই পাকিস্তানের রান দেড় শর কাছাকাছি নিয়ে যায়।
নানা নাটকীয়তার পর অ্যান্ডি পাইক্রফটই পাকিস্তান–আমিরাত ম্যাচে রেফারির দায়িত্বে ছিলেন