কালচে হয়ে যাচ্ছে মোগল আমলের লালকেল্লা
Published: 17th, September 2025 GMT
ভারতের রাজধানী নয়াদিল্লির সবচেয়ে আকর্ষণীয় স্থাপনাগুলোর একটি লালকেল্লা। মোগল আমলে নির্মিত লালচে রঙের দুর্গটি নিমেষেই নজর কাড়ে মানুষের। তবে রূপ হারাচ্ছে দুর্গটি। এর দেয়ালে সৃষ্টি হচ্ছে ‘কালো রঙের আস্তরণ’। গবেষকেরা বলছেন, এই আস্তরণের জন্য দায়ী নয়াদিল্লির তীব্র বায়ুদূষণ।
লালকেল্লা নিয়ে এক গবেষণায় এ তথ্য উঠে এসেছে। ২০২১ থেকে ২০২৩ সাল পর্যন্ত গবেষণাটি করেছেন ভারত ও ইতালির গবেষকেরা। গত জুন মাসে বিজ্ঞানবিষয়ক সাময়িকী হেরিটেজ–এ গবেষণাটি প্রকাশ করা হয়। লালকেল্লার ওপর বায়ুদূষণের প্রভাব নিয়ে এটিই বড় পরিসরে করা প্রথম গবেষণা।
গবেষকেরা বলেছেন, বাতাসের বিভিন্ন দূষণকারী পদার্থ ও দুর্গটির দেয়ালের লাল বেলে পাথরের মধ্যে রাসায়নিক বিক্রিয়া হচ্ছে। এতে দেয়ালের ওপর শূন্য দশমিক শূন্য ৫ থেকে শূন্য দশমিক ৫ মিলিমিটার পুরু কালো আস্তরণ পড়ছে। এখনই যদি ব্যবস্থা না নেওয়া হয়, তাহলে দুর্গের দেয়ালে খোদাই করা কারুকাজের ক্ষতি হতে পারে।
বিশ্বের সবচেয়ে দূষিত শহরগুলোর মধ্যে একটি নয়াদিল্লি। গবেষণার জন্য ২০২১ থেকে ২০২৩ সাল পর্যন্ত শহরটির বায়ুর মান পরীক্ষা–নিরীক্ষা করা হয়। গবেষণা প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বাতাসে থাকা দূষণ সৃষ্টিকারী অতি ক্ষুদ্র বস্তুকণা ‘পিএম–২.
১৭ শতকে লালকেল্লা নির্মাণ করেছিলেন মোগল সম্রাট শাহজাহান। ১৯৪৭ সালের ১৫ আগস্ট ব্রিটিশ ঔপনিবেশিক শাসন থেকে ভারতের স্বাধীনতার দিন এখান থেকেই জাতীয় পতাকা উত্তোলন করেছিলেন দেশটির প্রথম প্রধানমন্ত্রী জওহরলাল নেহরু। তখন থেকে ভারতের প্রতি স্বাধীনতা দিবসে লালকেল্লা থেকে ভাষণ দেন দেশটির প্রধানমন্ত্রীরা।
এর আগে মোগল আমলের আরেক নিদর্শন তাজমহলও দূষণের কবলে পড়ার খবর সামনে আসে। ২০১৮ সালের ভারতের সুপ্রিম কোর্ট জানিয়েছিলেন, বায়ু ও পানিদূষণের কারণে সাদা মার্বেল পাথরের স্থাপনাটি হলুদ ও সবুজাভ–বাদামি রং ধারণ করছে। ১৭ শতকের এই স্থাপনাটি সংরক্ষণ করতে সে সময় উত্তর প্রদেশ সরকারকে নির্দেশ দিয়েছিলেন আদালত।
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ল লক ল ল
এছাড়াও পড়ুন:
ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের সেই মামলা থেকে অব্যাহতি পেলেন মিনহাজ মান্নান
ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের মামলায় অভিযোগ গঠনের আদেশের বিরুদ্ধে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের বর্তমান পরিচালক মিনহাজ মান্নান ইমনের আপিল মঞ্জুর করে রায় দিয়েছেন হাইকোর্ট। বিচারপতি এ এস এম আব্দুল মোবিন ও বিচারপতি মো. যাবিদ হোসেনের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ আজ বৃহস্পতিবার এ রায় দেন।
এ রায়ের ফলে ওই মামলা থেকে মিনহাজ মান্নান অব্যাহতি পেলেন বলে জানিয়েছেন তাঁর আইনজীবী মঈন ফিরোজী।
আইনজীবীর তথ্য অনুসারে, ওই মামলায় ২০২২ সালের ২৭ ফেব্রুয়ারি কার্টুনিস্ট আহমেদ কবির কিশোর, রাষ্ট্রচিন্তার সদস্য দিদারুল ইসলাম ভূঁইয়া ও মিনহাজ মান্নান ইমনসহ সাতজনের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করে আদেশ দেন ঢাকার সাইবার ট্রাইব্যুনাল। পলাতক অপর চার আসামি হলেন সুইডেনপ্রবাসী সাংবাদিক তাসনিম খলিল, হাঙ্গেরিপ্রবাসী সামিউল ইসলাম খান ওরফে স্যাম ওরফে জুলকার নাইন, আশিক ইমরান ও ওয়াহিদুন নবী।
দিদারুল ইসলাম ও মিনহাজ মান্নান নারাজি আবেদন দিলে তা নামঞ্জুর হয়। এই আদেশের বিরুদ্ধে মিনহাজ মান্নান একই বছর হাইকোর্টে আপিল করেন। ২০২২ সালের ২৪ আগস্ট হাইকোর্ট আপিল শুনানির জন্য গ্রহণ করেন। একই সঙ্গে মিনহাজ মান্নানের ক্ষেত্রে মামলাটির কার্যক্রম স্থগিত করেন। শুনানি শেষে আপিল মঞ্জুর করে আজ রায় দেওয়া হয়।
আদালতে মিনহাজ মান্নানের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী মঈন ফিরোজী। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল সুলতানা আক্তার রুবী।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ব্যবহার করে রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রমূলক কথাবার্তা ও গুজব ছড়ানোর অভিযোগ তুলে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে রাজধানীর রমনা থানায় ১১ জনের বিরুদ্ধে ২০২০ সালের ৫ মে মামলাটি করা হয়। ২০২১ সালের ৪ ফেব্রুয়ারি আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেয় ঢাকা মহানগর পুলিশের কাউন্টার টেররিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম (সিটিটিসি)। এতে কার্টুনিস্ট কিশোর, লেখক মুশতাক আহমেদ ও রাষ্ট্রচিন্তার দিদারুল ইসলামকে আসামি করা হয় এবং আটজনকে অব্যাহতি দেওয়ার আবেদন করা হয়।
আরও পড়ুন১০ মাস পর কারাগার থেকে মুক্তি পেলেন কার্টুনিস্ট কিশোর০৪ মার্চ ২০২১এ মামলায় কারাবন্দী মুশতাক আহমেদ ২০২১ সালের ২৫ ফেব্রুয়ারি মারা যান। এ কারণে তাঁকে মামলা থেকে অব্যাহতি দেওয়ার সুপারিশ করা হয়। তবে রাষ্ট্রপক্ষের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে এ মামলা অধিকতর তদন্তের নির্দেশ দেন ঢাকার সাইবার ট্রাইব্যুনাল।
মামলার নথি থেকে জানা গেছে, অভিযোগ গঠনের সময় ২০২২ সালের ২৭ ফেব্রুয়ারি আদালতে হাজির ছিলেন দিদারুল ইসলাম ও ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের সাবেক পরিচালক মিনহাজ মান্নান। তাঁরা নিজেদের নিরপরাধ দাবি করে আদালতের কাছে ন্যায়বিচার চান। সেদিন কার্টুনিস্ট কিশোর আদালতে হাজির না থাকায় তাঁর জামিন বাতিল করা হয়।
আরও পড়ুনআজিমপুর কবরস্থানে সমাহিত লেখক মুশতাক২৬ ফেব্রুয়ারি ২০২১