প্রধান উপদেষ্টার নিউইয়র্ক সফরে সঙ্গী হচ্ছেন ফখরুল, তাহেরসহ চার রাজনীতিবিদ
Published: 17th, September 2025 GMT
জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে যোগ দিতে আগামী ২১ সেপ্টেম্বর দিবাগত রাতে নিউইয়র্কের উদ্দেশে ঢাকা ছাড়বেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস। তাঁর সফরসঙ্গী হিসেবে যাবেন চারজন রাজনীতিবিদ। তাঁরা হলেন- বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমির সৈয়দ আব্দুল্লাহ মুহাম্মদ তাহের, জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) মহাসচিব আখতার হোসাইন এবং বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের পররাষ্ট্রবিষয়ক উপদেষ্টা হুমায়ুন কবির।
আজ বুধবার বিকেলে রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে এক সংবাদ সম্মেলনে এই তথ্য জানান পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো.
দেশের বিশেষ পরিস্থিতির প্রেক্ষাপটে চারজন রাজনীতিবিদ প্রধান উপদেষ্টার সফরসঙ্গী হচ্ছেন বলে সংবাদ সম্মেলনে জানান পররাষ্ট্র উপদেষ্টা। তিনি বলেন, জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে যোগ দিতে একটি বাণিজ্যিক ফ্লাইটে ২১ সেপ্টেম্বর দিবাগত রাতে নিউইয়র্কের উদ্দেশে দেশ ছাড়বেন প্রধান উপদেষ্টা। ২২ সেপ্টেম্বর তিনি নিউইয়র্ক পৌঁছাবেন। তিনি দেশে ফিরবেন ২ অক্টোবর।
২৬ সেপ্টেম্বর জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদে প্রধান উপদেষ্টা ভাষণ দেবেন জানিয়ে তৌহিদ হোসেন বলেন, প্রধান উপদেষ্টা তাঁর বক্তব্যে বিগত এক বছরে দেশে ঘটে যাওয়া সংস্কার ও আগামী দিনের নির্বাচন অনুষ্ঠানের মাধ্যমে একটি সত্যিকারের গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রব্যবস্থা গড়ে তোলার দৃঢ় প্রত্যয় বিশ্ব দরবারে তুলে ধরবেন বলে আশা করা হচ্ছে।
পররাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, এ বছরের অধিবেশন বাংলাদেশের জন্য খুবই তাৎপর্যপূর্ণ। কারণ, ৩০ সেপ্টেম্বর জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের সভাপতির সভাপতিত্বে ‘হাই লেভেল কনফারেন্স অন দ্য সিচুয়েশন অব রোহিঙ্গা মুসলিমস অ্যান্ড আদার মাইনোরিটিস ইন মিয়ানমার’ শীর্ষক একটি উচ্চ পর্যায়ের সভা হবে। রোহিঙ্গা সংকটকে কেন্দ্র করে জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদে এমন একটি উচ্চ পর্যায়ের সভার আয়োজন এবারই প্রথম। এই উচ্চ পর্যায়ের সভা থেকে যেন রোহিঙ্গা সংকটের দ্রুত সমাধানের একটি কার্যকর পরিকল্পনা উঠে আসে, সেজন্য আন্তর্জাতিক অংশীদার ও রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর প্রতিনিধিদের নিয়ে গত মাসে কক্সবাজারে একটি অংশীদার সভা অনুষ্ঠিত হয়।
সংবাদ সম্মেলনে পররাষ্ট্র উপদেষ্টার সঙ্গে উপস্থিত ছিলেন পররাষ্ট্র সচিব আসাদ আলম সিয়াম, প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম, উপ-প্রেস সচিব আবুল কালাম আজাদ মজুমদার, জ্যেষ্ঠ সহকারী প্রেস সচিব ফয়েজ আহম্মদ প্রমুখ।
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: পরর ষ ট র উপদ ষ ট স প ট ম বর ন উইয়র ক
এছাড়াও পড়ুন:
ইসরায়েলি বন্ডে আর বিনিয়োগ নয়—ঘোষণা দিলেন জোহরান মামদানি
নিউইয়র্ক সিটির মেয়র পদে ডেমোক্রেটিক পার্টির প্রার্থী জোহরান মামদানি একটি টেলিভিশন সাক্ষাৎকারে বলেছেন, তিনি মনে করেন, এ শহরের পেনশন তহবিল ইসরায়েলি বন্ডে বিনিয়োগ করা উচিত নয়। কারণ, ইসরায়েল আন্তর্জাতিক আইন ভাঙছে।
গত সপ্তাহে সিবিএস নিউইয়র্কের সঙ্গে ওই সাক্ষাৎকার দেন মামদানি। সেখানে সাংবাদিক মারসিয়া ক্রেমারের প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন।
মারসিয়া ক্রেমার মামদানিকে জিজ্ঞাসা করেন, মেয়র হলে তিনি কি শহরের পেনশন তহবিলের দায়িত্বে থাকা কর্তৃপক্ষকে বলবেন, ইসরায়েলের সঙ্গে ব্যবসা করা প্রতিষ্ঠান বা ইসরায়েলি বন্ড থেকে বিনিয়োগ সরাতে? নিউইয়র্ক সিটি ঐতিহাসিকভাবে এ দুই ক্ষেত্রেই বড় অঙ্কের বিনিয়োগ করে আসছে।
মামদানি জবাবে বলেন, ‘আমি মনে করি, আন্তর্জাতিক আইনভঙ্গের কাজে আমাদের কোনো তহবিলের জড়িত থাকা উচিত নয়।’
মামদানি আরও বলেন, বর্তমান সিটি কম্পট্রোলার ব্র্যাড ল্যান্ডার ইসরায়েলি বন্ড নিয়ে সঠিক পদক্ষেপ নিয়েছেন। ‘আমি মনে করি, ইসরায়েলি বন্ড নিয়ে বর্তমান কম্পট্রোলারের যে অবস্থান, সেটাই সঠিক পথ’, বলেন তিনি।
বর্তমানে নিউইয়র্ক সিটির পেনশন তহবিলের প্রায় ৩১৫ মিলিয়ন (৩১ কোটি ৫০ লাখ) ডলার ইসরায়েলি কোম্পানি ও রিয়েল এস্টেটে বিনিয়োগ রয়েছে।তবে ক্রেমার প্রশ্ন ঘুরিয়ে আবার জানতে চান, ইসরায়েলের সঙ্গে ব্যবসা করা অন্যান্য প্রতিষ্ঠান থেকে বিনিয়োগ সরানো নিয়ে তাঁর অবস্থান কী।
‘আর বাকি কোম্পানিগুলো কী হবে, যেগুলো ইসরায়েলের সঙ্গে ব্যবসা করছে? বিডিএস?’—প্রশ্ন করেন ক্রেমার। মামদানি সরাসরি উত্তর না দিয়ে বলেন, এ শহরের সম্পৃক্ততা কোথায় সবচেয়ে স্পষ্ট, সেটা আগে বোঝা জরুরি।
‘সবচেয়ে জরুরি বিষয় হলো, আমরা কোথায় সরাসরি জড়িত, সেটা চিহ্নিত করা। শহরের পেনশন তহবিলে ইসরায়েলি বন্ড কেনা আসলে আমাদের মূল্যবোধের স্পষ্ট প্রকাশ। আর আমরা জানি, আমাদের মূল্যবোধ আন্তর্জাতিক আইনের সঙ্গে রয়েছে,’ বলেন মামদানি।
গত বছরের মার্চ পর্যন্ত ‘নিউইয়র্ক স্টেট কমন রিটায়ারমেন্ট ফান্ড’–এ প্রায় ৩৫২ মিলিয়ন (৩৫ কোটি ২০ লাখ) ডলারের ইসরায়েলি বন্ড ছিল। যুক্তরাষ্ট্রে যেসব প্রতিষ্ঠান বা ফান্ড ইসরায়েলি বন্ডে বিনিয়োগ করে, সেসবের অন্যতম এটি।
মামদানি ক্রেমারকে আরও বলেন, তিনি তাঁর প্রচারাভিযান চলাকালে বারবারই বলেছেন, বর্তমান প্রশাসন যেসব ক্ষেত্রে আন্তর্জাতিক আইন ভঙ্গ করছে, সেসব ক্ষেত্রে আইন মেনে চলায় ফিরতে হবে।
আমি মনে করি, আন্তর্জাতিক আইনভঙ্গের কাজে আমাদের কোনো তহবিল জড়িত থাকা উচিত নয়।জোহরান মামদানি, নিউইয়র্কের ডেমোক্র্যাট মেয়র প্রার্থীপেনশন তহবিলের মোট সম্পদ ও ইসরায়েলি বন্ডের অবস্থাননিউইয়র্ক সিটির পেনশন তহবিল পাঁচটি আলাদা তহবিল নিয়ে গঠিত। এর মধ্যে রয়েছে নিউইয়র্ক এমপ্লয়িজ রিটায়ারমেন্ট সিস্টেম, নিউইয়র্ক সিটি ফায়ার পেনশন ফান্ড, নিউইয়র্ক পুলিশ পেনশন ফান্ড, নিউইয়র্ক সিটি টিচার্স রিটায়ারমেন্ট সিস্টেম ও নিউইয়র্ক সিটি বোর্ড অব এডুকেশন রিটায়ারমেন্ট সিস্টেম।
এই পেনশন তহবিলগুলোর মোট সম্পদের পরিমাণ ২৮৯ বিলিয়ন (২৮ হাজার ৯০০ কোটি) ডলার। এগুলো তত্ত্বাবধান করেন সিটির কম্পট্রোলার।
আরও পড়ুনভারতের উগ্র হিন্দুত্ববাদীরা কেন জোহরান মামদানিকে আক্রমণ করছেন২৩ জুলাই ২০২৫প্রায় ৫০ বছর ধরে নিউইয়র্ক সিটির পেনশন তহবিল ইসরায়েলি বন্ডে বিনিয়োগ করে আসছিল। কিন্তু ২০২৩ সালে বর্তমান কম্পট্রোলার ব্র্যাড ল্যান্ডার নীতি পরিবর্তন করেন।
২০২২ সালে দায়িত্ব নেওয়ার পর ল্যান্ডার সিদ্ধান্ত নেন, ২০২৩ সালের শুরুর দিকে ৩০ মিলিয়ন ডলারের পুরোনো বন্ডের মেয়াদ পূর্ণ হওয়ার পর আর নতুন কোনো ইসরায়েলি বন্ড কেনা হবে না। কারণ হিসেবে তিনি শহরের নীতি অনুযায়ী বিদেশি সরকারের ঋণ এড়িয়ে চলার কথা জানান। একই সঙ্গে তিনি বলেন, অন্য দেশগুলোর তুলনায় ইসরায়েলকে বিশেষ সুবিধা দেওয়াও উচিত নয়।
ম্যানহাটানে সমর্থকদের উদ্দেশে হাত নাড়াচ্ছেন নিউইয়র্ক সিটির ডেমোক্রেটিক পার্টির মেয়র প্রার্থী জোহরান মামদানি। ২৯ জুন ২০২৫