চট্টগ্রামের হাটহাজারীর বড় দিঘির পাড় থেকে ভাটিয়ারী যাওয়ার সংযোগ সড়ক ধরে কিছু দূর এগোলেই ৩ নম্বর বাজার। হাটহাজারী উপজেলার এই বাজার পেরোতেই সড়কের পশ্চিম পাশে ৫০ থেকে ৬০ ফুট উচ্চতার একটি পাহাড়। পাহাড়ের পাদদেশে আধা পাকা কিছু বসতঘর। ফটক দিয়ে উঁকি দিতেই দেখা গেল বসতি সম্প্রসারণের জন্য কাটা হচ্ছে পাহাড়ের পাদদেশ।

খালি চোখে বিশাল পাহাড় দেখা গেলেও ৩ নম্বর বাজার এলাকার এই পাহাড়কে বাংলাদেশ সার্ভে বা বিএস জরিপে শ্রেণিভুক্ত করা হয়েছে ‘নাল’ জমি হিসেবে। স্থানীয় ভূমি কার্যালয়ে যোগাযোগ করে জানা গেল, জঙ্গল দক্ষিণ পাহাড়তলী মৌজার বিএস ৩৫৭৩ নম্বর দাগে থাকা পাহাড়টির আয়তন প্রায় সাড়ে ৭ একর। বিএস জরিপে ভুলবশত ব্যক্তিমালিকানাধীন এই পাহাড়টিকে নাল শ্রেণিতে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। যদিও নাল বলতে সাধারণত নিচু সমতল কৃষিজমিকে বোঝায়।

সরেজমিনে দেখা যায়, বিশাল পাহাড়টির পাদদেশে বেশ কিছু বসতি গড়ে উঠেছে। পাহাড়টির ওপর বড় কোনো গাছপালা নেই। তবে ঝোপঝাড়ে পরিপূর্ণ। পাহাড়ের কিছু অংশে মাটি ধসে পড়ছে। ভূমি কার্যালয়ের তথ্য অনুযায়ী, মিয়ার পাহাড়ের অন্তত ১৬০ শতক টিলা শ্রেণির জমিকে ‘নাল’ হিসেবে শ্রেণিভুক্ত করা হয়েছে বিএস জরিপে।

চট্টগ্রাম নগর এবং এর পাশের দুই উপজেলা হাটহাজারী ও সীতাকুণ্ডে দেড় শতাধিক পাহাড়-টিলাকে বিএস জরিপে ভুলভাবে শ্রেণিভুক্ত করার তথ্য পাওয়া গেছে। এসব পাহাড়-টিলার জমির পরিমাণ প্রায় ১ হাজার ৪০০ একর। তবে ১৯৭০ সালে জরিপ শুরুর সময় কত পরিমাণ জমির পাহাড়-টিলা এমন ভুলভাবে শ্রেণিভুক্ত করা হয়েছিল এবং কাটা হয়েছিল, সে হিসাব পাওয়া যায়নি। কোথাও এসব পাহাড়-টিলার পুরোটাই, কোথাও আবার অংশবিশেষকে ‘শণখোলা’, ‘নাল’, ‘খিলা’, ‘বাড়ি’ ইত্যাদি শ্রেণিতে নথিভুক্ত করা হয়েছে। সরকারি জরিপের এমন ভুলের সুযোগ নিয়ে চলছে পাহাড়-টিলা কেটে স্থাপনা নির্মাণ।

ভূমি মন্ত্রণালয়ের ওয়েবসাইটে থাকা তথ্য অনুযায়ী, বিএস জরিপ শুরু হয় ১৯৭০ সালে। বাংলাদেশ পরিবেশ সংরক্ষণ আইনে (সংশোধিত) বলা হয়েছে, পাহাড় ও টিলা বলতে প্রাকৃতিকভাবে সৃষ্ট পার্শ্ববর্তী সমতল ভূপৃষ্ঠ থেকে উঁচু মাটি অথবা মাটি ও পাথর অথবা পাথর অথবা মাটি ও কাঁকড় অথবা অন্য কোনো কঠিন পদার্থের সমন্বয়ে গঠিত স্তূপ বা স্থান এবং সরকারি রেকর্ডপত্রে পাহাড় বা টিলা হিসেবে উল্লিখিত ভূমিকে বোঝায়।

ভূমি কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, যেসব জঙ্গলাকীর্ণ স্থানে শণ নামক উদ্ভিদ জন্মায়, সেটিকে শণখোলা বলা হয়। অকর্ষিত বা পতিত জমিকে বলা হয় খিলা।

পাহাড়টির ওপর বড় কোনো গাছপালা নেই। তবে ঝোপঝাড়ে পরিপূর্ণ। পাহাড়ের কিছু অংশে মাটি ধসে পড়ছে। ভূমি কার্যালয়ের তথ্য অনুযায়ী, মিয়ার পাহাড়ের অন্তত ১৬০ শতক টিলা শ্রেণির জমিকে ‘নাল’ হিসেবে শ্রেণিভুক্ত করা হয়েছে বিএস জরিপে।শ্রেণীকরণের ভুলে যে ক্ষতিবিএস জরিপে ‘শণখোলা’ হিসেবে শ্রেণিভুক্ত পাহাড় কেটে প্লট বিক্রি করা হচ্ছে। গত সোমবার চট্টগ্রাম নগরের পশ্চিম খুলশীর রূপসী পাহাড় এলাকায়.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: শ র ণ ভ ক ত কর

এছাড়াও পড়ুন:

জরিপের ভুলে বিলীনের ঝুঁকিতে দেড় শ পাহাড়

চট্টগ্রামের হাটহাজারীর বড় দিঘির পাড় থেকে ভাটিয়ারী যাওয়ার সংযোগ সড়ক ধরে কিছু দূর এগোলেই ৩ নম্বর বাজার। হাটহাজারী উপজেলার এই বাজার পেরোতেই সড়কের পশ্চিম পাশে ৫০ থেকে ৬০ ফুট উচ্চতার একটি পাহাড়। পাহাড়ের পাদদেশে আধা পাকা কিছু বসতঘর। ফটক দিয়ে উঁকি দিতেই দেখা গেল বসতি সম্প্রসারণের জন্য কাটা হচ্ছে পাহাড়ের পাদদেশ।

খালি চোখে বিশাল পাহাড় দেখা গেলেও ৩ নম্বর বাজার এলাকার এই পাহাড়কে বাংলাদেশ সার্ভে বা বিএস জরিপে শ্রেণিভুক্ত করা হয়েছে ‘নাল’ জমি হিসেবে। স্থানীয় ভূমি কার্যালয়ে যোগাযোগ করে জানা গেল, জঙ্গল দক্ষিণ পাহাড়তলী মৌজার বিএস ৩৫৭৩ নম্বর দাগে থাকা পাহাড়টির আয়তন প্রায় সাড়ে ৭ একর। বিএস জরিপে ভুলবশত ব্যক্তিমালিকানাধীন এই পাহাড়টিকে নাল শ্রেণিতে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। যদিও নাল বলতে সাধারণত নিচু সমতল কৃষিজমিকে বোঝায়।

সরেজমিনে দেখা যায়, বিশাল পাহাড়টির পাদদেশে বেশ কিছু বসতি গড়ে উঠেছে। পাহাড়টির ওপর বড় কোনো গাছপালা নেই। তবে ঝোপঝাড়ে পরিপূর্ণ। পাহাড়ের কিছু অংশে মাটি ধসে পড়ছে। ভূমি কার্যালয়ের তথ্য অনুযায়ী, মিয়ার পাহাড়ের অন্তত ১৬০ শতক টিলা শ্রেণির জমিকে ‘নাল’ হিসেবে শ্রেণিভুক্ত করা হয়েছে বিএস জরিপে।

চট্টগ্রাম নগর এবং এর পাশের দুই উপজেলা হাটহাজারী ও সীতাকুণ্ডে দেড় শতাধিক পাহাড়-টিলাকে বিএস জরিপে ভুলভাবে শ্রেণিভুক্ত করার তথ্য পাওয়া গেছে। এসব পাহাড়-টিলার জমির পরিমাণ প্রায় ১ হাজার ৪০০ একর। তবে ১৯৭০ সালে জরিপ শুরুর সময় কত পরিমাণ জমির পাহাড়-টিলা এমন ভুলভাবে শ্রেণিভুক্ত করা হয়েছিল এবং কাটা হয়েছিল, সে হিসাব পাওয়া যায়নি। কোথাও এসব পাহাড়-টিলার পুরোটাই, কোথাও আবার অংশবিশেষকে ‘শণখোলা’, ‘নাল’, ‘খিলা’, ‘বাড়ি’ ইত্যাদি শ্রেণিতে নথিভুক্ত করা হয়েছে। সরকারি জরিপের এমন ভুলের সুযোগ নিয়ে চলছে পাহাড়-টিলা কেটে স্থাপনা নির্মাণ।

ভূমি মন্ত্রণালয়ের ওয়েবসাইটে থাকা তথ্য অনুযায়ী, বিএস জরিপ শুরু হয় ১৯৭০ সালে। বাংলাদেশ পরিবেশ সংরক্ষণ আইনে (সংশোধিত) বলা হয়েছে, পাহাড় ও টিলা বলতে প্রাকৃতিকভাবে সৃষ্ট পার্শ্ববর্তী সমতল ভূপৃষ্ঠ থেকে উঁচু মাটি অথবা মাটি ও পাথর অথবা পাথর অথবা মাটি ও কাঁকড় অথবা অন্য কোনো কঠিন পদার্থের সমন্বয়ে গঠিত স্তূপ বা স্থান এবং সরকারি রেকর্ডপত্রে পাহাড় বা টিলা হিসেবে উল্লিখিত ভূমিকে বোঝায়।

ভূমি কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, যেসব জঙ্গলাকীর্ণ স্থানে শণ নামক উদ্ভিদ জন্মায়, সেটিকে শণখোলা বলা হয়। অকর্ষিত বা পতিত জমিকে বলা হয় খিলা।

পাহাড়টির ওপর বড় কোনো গাছপালা নেই। তবে ঝোপঝাড়ে পরিপূর্ণ। পাহাড়ের কিছু অংশে মাটি ধসে পড়ছে। ভূমি কার্যালয়ের তথ্য অনুযায়ী, মিয়ার পাহাড়ের অন্তত ১৬০ শতক টিলা শ্রেণির জমিকে ‘নাল’ হিসেবে শ্রেণিভুক্ত করা হয়েছে বিএস জরিপে।শ্রেণীকরণের ভুলে যে ক্ষতিবিএস জরিপে ‘শণখোলা’ হিসেবে শ্রেণিভুক্ত পাহাড় কেটে প্লট বিক্রি করা হচ্ছে। গত সোমবার চট্টগ্রাম নগরের পশ্চিম খুলশীর রূপসী পাহাড় এলাকায়

সম্পর্কিত নিবন্ধ