সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সংগীতশিক্ষক নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি বাতিলের দাবি উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বলে মনে করছে আইন ও সালিশ কেন্দ্র (আসক)। মানবাধিকার সংগঠনটি বলছে, সংগীতশিক্ষক নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি বাতিল করে ধর্মীয় শিক্ষক নিয়োগের মতো দাবি গ্রহণযোগ্য নয়।

আজ বুধবার এক বিবৃতিতে এসব কথা বলেছে আসক। বিবৃতিতে বলা হয়, সংগীতশিক্ষক নিয়োগ বাতিলের দাবি জাতীয় সংস্কৃতিকে দুর্বল করার অপচেষ্টা। শিশুদের সার্বিক মানসিক বিকাশের জন্য ধর্মীয় শিক্ষার পাশাপাশি সাংস্কৃতিক শিক্ষা ও চর্চার প্রয়োজনীয়তা রয়েছে।

বিবৃতিতে বলা হয়, ‘কিছু গোষ্ঠী সংগীতশিক্ষক নিয়োগ বাতিলের দাবিকে সামনে রেখে উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে শিল্প-সংস্কৃতিকে বিতর্কিত করার চেষ্টা করছে। এ ধরনের প্রচেষ্টা কেবল অযৌক্তিকই নয়, বরং সমাজকে একপেশে করে তোলার ঝুঁকি তৈরি করছে, যার সুদূরপ্রসারী নেতিবাচক ফলাফল আমাদের জাতীয় ঐক্য ও সংস্কৃতির ভিত্তিকে ক্ষতিগ্রস্ত করতে পারে।’

আসক বলেছে, বিদ্যালয়ে ধর্মীয় শিক্ষকের প্রয়োজনীয়তা থাকতে পারে, সেটি আলাদা নীতিগত আলোচনার বিষয়ও হতে পারে। যথাযথ কর্তৃপক্ষের কাছে দাবি উত্থাপন করা যেতে পারে। তবে কোনো অবস্থাতেই সেই দাবিকে অজুহাত করে শিল্প-সংস্কৃতির চর্চা ব্যাহত করা অথবা সংগীতশিক্ষক নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি বাতিল করে ধর্মীয় শিক্ষক নিয়োগের মতো দাবি গ্রহণযোগ্য নয়। এ ধরনের প্রচেষ্টা কেবল সাংস্কৃতিক বিকাশে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করে না, বরং সামাজিক সম্প্রীতি ও বহুত্ববাদী চেতনার ওপর আঘাত হানে।

বিবৃতিতে বলা হয়েছে, বাংলাদেশের সংবিধান প্রত্যেক নাগরিককে নিজস্ব সংস্কৃতিচর্চা ও শিল্প-সাহিত্যে অংশগ্রহণের অধিকার দিয়েছে। বাংলাদেশ একটি রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের দেশ, যেখানে ভাষা আন্দোলন, মুক্তিযুদ্ধ, সামাজিক আন্দোলন এবং সব গণতান্ত্রিক সংগ্রামে সংগীত ও শিল্পসংস্কৃতি ছিল অবিচ্ছেদ্য অংশ।

আসক মনে করে, সংগীতশিক্ষা শুধু বিনোদনের বিষয় নয়, এটি মানসিক বিকাশ, নৈতিক শিক্ষা, সৃজনশীলতা ও সহনশীলতা বৃদ্ধির অন্যতম মাধ্যম। এই ঐতিহ্যকে রক্ষা ও বিকশিত করা রাষ্ট্রের সাংবিধানিক দায়িত্ব এবং সামাজিক সম্প্রীতির অপরিহার্য শর্ত।

.

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

অন্তর্বর্তী সরকার না চাইলে ‘মব সন্ত্রাসের’ ঘটনাগুলো ঘটতে পারত না: বাম গণতান্ত্রিক জোট

গণ-অভ্যুত্থানের পর দেশে যে ‘মব’ সন্ত্রাসের শুরু হয়েছিল, সেটা এখনো চলছে এবং নগ্ন রূপ নিয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন বাম গণতান্ত্রিক জোটের নেতারা। অন্তর্বর্তী সরকার না চাইলে এমন ঘটনাগুলো ঘটতে পারত না বলেও মন্তব্য করেছেন তাঁরা। জোটের নেতারা বলেছেন, মব নিয়ে অন্তর্বর্তী সরকারের ভাব এমন যে খারাপ কিছু তো করছে না।

আজ সোমবার বিকেলে রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে আয়োজিত এক বিক্ষোভ সমাবেশে বাম গণতান্ত্রিক জোটের নেতারা এ কথা বলেন। মব সন্ত্রাস ও মাজার-খানকায় হামলা বন্ধসহ সুষ্ঠু-গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের জন্য প্রয়োজনীয় সংস্কার করে যথাসময়ে নির্বাচনের দাবিতে এ বিক্ষোভ সমাবেশের আয়োজন করা হয়েছিল।

সমাবেশে সভাপতির বক্তব্যে বাম জোটের কেন্দ্রীয় পরিচালনা পরিষদের সমন্বয়ক এবং বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির (সিপিবি) সাধারণ সম্পাদক রুহিন হোসেন বলেন, ‘গণ-অভ্যুত্থানের পর যে মব শুরু হয়েছিল, সেই মব এখনো দূর হয়নি। বরং নগ্ন রূপ নিয়েছে।...তাহলে ইউনূস সাহেব (প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস) তখন কী করলেন?’

সরকার না চাইলে এ ধরনের ঘটনা ঘটতে পারে না মন্তব্য করে রুহিন হোসেন বলেন, মব নিয়ে সরকারের উপদেষ্টারা আকারে-ইঙ্গিতে যা বলেন, তাতে ভাবটা এ রকম যে খারাপ কিছু করছে না। অন্তর্বর্তী সরকার এসব ঘটনার দায় এড়াতে পারবে না।

দ্রুত নির্বাচন অনুষ্ঠানের দাবি জানিয়ে সিপিবির সাধারণ সম্পাদক বলেন, সংস্কারের নামে শ্রমিক–কৃষক–মেহনতি মানুষের স্বার্থ রক্ষা করছেন না, কিন্তু সংবিধানের চার মূলনীতি পরিবর্তন করতে চান। অবিলম্বে নির্বাচন দিয়ে নির্বাচিত প্রতিনিধির হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর করেন।

‘মব’ সন্ত্রাস ও মাজার-খানকায় হামলা বন্ধসহ সুষ্ঠু-গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের জন্য প্রয়োজনীয় সংস্কার করে যথাসময়ে নির্বাচনের দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল করেন বাম গণতান্ত্রিক জোটের নেতা–কর্মীরা। আজ সোমবার সন্ধ্যায় জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • রাকসু নির্বাচন: ৬ দফা দাবিতে ছাত্রদলের স্মারকলিপি
  • অন্তর্বর্তী সরকার না চাইলে ‘মব সন্ত্রাসের’ ঘটনাগুলো ঘটতে পারত না: বাম গণতান্ত্রিক জোট