দেশের শিক্ষা ক্ষেত্রে বেহাল অবস্থার চিত্র পত্রিকার পাতা খুললেই আমরা মোটামুটিভাবে দেখতে পাই। এ অবস্থা বোঝার জন্য খুব বেশি বিশেষজ্ঞ হবারও দরকার নেই, দেশের সাধারণ নাগরিকসহ সচেতন সবাই শিক্ষার, বিশেষ করে মাধ্যমিক শিক্ষার পরিস্থিতি নিয়ে কমবেশী অবগত।

প্রাথমিক, মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা শেষে দক্ষ মানবসম্পদ হয়ে যে শিক্ষার্থী বেরিয়ে আসবার কথা, কার্যত তাদের অধিকাংশই জাতির জন্য বোঝা হয়ে বেরিয়ে আসছে! আমরা শিক্ষার্থীদের জন্য যে শিক্ষা কারিকুলামে শিক্ষাদান করছি, তা অত্যন্ত নিম্নমানের এবং আধুনিক বিশ্বের সঙ্গে তাল মিলিয়ে প্রতিযোগিতায় টিকে থাকতে অনেক ক্ষেত্রেই অচল ও অক্ষম!

আমাদের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে যা পড়ানো হচ্ছে, কর্মক্ষেত্রে এ শিক্ষার বাস্তব প্রয়োগ নেই। আবার যেগুলোর প্রয়োগ আছে, সেগুলো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে কার্যকরভাবে পড়ানো হচ্ছে না। আর সবচেয়ে বড় ত্রুটি রয়েছে শিক্ষাদানে নিয়োজিত শিক্ষক ও শিক্ষাদান পদ্ধতির মনিটরিং ব্যবস্থার ওপর। এছাড়াও এই শিক্ষা ব্যবস্থার বেহাল অবস্থার জন্য অপরিকল্পিত কারিকুলাম ও শিক্ষা ব্যবস্থাপনায় ত্রুটি, ব্যাপক অনিয়ম-দুর্নীতি ও কর্মমুখী শিক্ষা বাদ দিয়ে বা কম গুরুত্ব দিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় লেভেলের সাধারণ শিক্ষার দিকে জোর দেওয়াই বিশেষভাবে দায়ী। আবার শিক্ষাদানের জন্য মেধাবী শিক্ষক না পাওয়া এবং যৎসামান্য পাওয়ার পর তাদের ধরে রাখতে না পারার অন্যতম কারণ তাদের নগণ্য সম্মানি ও অপর্যাপ্ত সুযোগ-সুবিধা প্রদান।

আমাদের দেশে সবচেয়ে অবহেলার পেশা শিক্ষকতা। এখানে শিক্ষকদের না আছে সামাজিক ও রাষ্ট্রীয় মর্যাদা, না আছে পর্যাপ্ত আর্থিক সুবিধা, না আছে কোনো সামাজিক নিরাপত্তা। এই পেশাকে প্রাথমিক ক্ষেত্রে তৃতীয় শ্রেণির, মাধ্যমিকের দ্বিতীয় শ্রেণির এবং উচ্চশিক্ষা ক্ষেত্রে প্রথম শ্রেণির মর্যাদায় রাখা হয়েছে। শিক্ষকদের পদমর্যাদার এই বৈষম্য শিক্ষাক্ষেত্রে আমাদের পিছিয়ে দিচ্ছে। বিভিন্ন সময়ে শিক্ষকদের পদমর্যাদা উন্নয়নের জন্য সুপারিশ করা হয়েছে।

অনেকেই যুক্তি দেখাতে পারেন বা শিক্ষকদের পদমর্যাদা ও আর্থিক সুবিধা বৃদ্ধির বিপক্ষে অবস্থান নিতে পারেন। কিন্তু আমরা যদি বাইরের রাষ্ট্রগুলোর দিকে দেখি, তাহলে যে চিত্র দেখতে পাই - জার্মানি শিক্ষকদের মর্যাদা বৃদ্ধির ক্ষেত্রে কি করেছিল!

জার্মানির সবচেয়ে জনপ্রিয় চ্যান্সেলর এঞ্জেলা মার্কেল শিক্ষকদের বেতন যখন সর্বোচ্চ করে দিলেন তখন ডাক্তার, ইঞ্জিনিয়ারসহ বিভিন্ন পেশাজীবী মহল এর কারণ জানতে চাইলে তিনি হাসিমুখে বলেছিলেন, “আমরা ডাক্তার, ইঞ্জিনিয়ার, রাষ্ট্রনায়ক কিংবা সমাজের বৃহৎ পেশায় নিয়োজিত। কিন্তু যাদের হাতে আমাদের বিদ্যার্জনের হাতেখড়ি, তাদের কীভাবে আমাদের থেকে কম পারিশ্রমিক দিতে পারি?”

শিক্ষা নিয়ে কাজ করা ব্যক্তিবর্গ মনে করেন, শিক্ষকদের সামাজিক ও আর্থিকভাবে শক্তিশালী করা উচিত। আর এ কাজটি করতে হলে এই মুহূর্তে সকল পর্যায়ের শিক্ষকদের এবং বিশেষ করে মাধ্যমিক স্তরের মতো গুরুত্বপূর্ণ সেক্টরের বিদ্যালয় ও পরিদর্শন শাখায় কর্মরত সরকারি মাধ্যমিক শিক্ষকদের প্রবেশ পদটি নবম গ্রেডে তথা প্রথম শ্রেণির পদমর্যাদায় উন্নীত করা উচিত। কেননা মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের (মাউশি) বিদ্যালয় ও পরিদর্শন শাখায় কর্মরত সরকারি মাধ্যমিক শিক্ষকরা স্বাধীনতার পর থেকেই একই গ্ৰেড ও মর্যাদা নিয়ে কর্মরত রয়েছেন।

অথচ এই শিক্ষকদের সমপর্যায়ের এমনকি অনেক ক্ষেত্রে নিচের গ্ৰেড ও মর্যাদার পদগুলোকে নানা সময়ে আপগ্রেড করে নবম গ্রেড তথা প্রথম শ্রেণিতে উন্নীত করা হয়েছে। এ অবস্থায় বিদ্যালয় ও পরিদর্শন শাখায় কর্মরত সহকারী শিক্ষকদের পদটি নবম গ্রেডে উন্নীত করে তাদের সঙ্গে চলমান বৈষম্যের অবসান ঘটানো উচিত বলে এ খাত নিয়ে কাজ করা বিশেষজ্ঞগণ মনে করেন। কারণ বিদ্যালয় ও পরিদর্শন শাখায় উপরের সবগুলো পদই ক্যাডার সিডিউল ভুক্ত। 

এছাড়াও শিক্ষকদের কাজে মানসিক আনন্দ এবং পেশায় বৈচিত্র আনতে নির্দিষ্ট সময় পরপর অন্তত ৪ থেকে ৬ ধাপ  বিশিষ্ট একটি ক্যারিয়ার পাথ বা পদোন্নতির সিঁড়ি এর সুযোগ সৃষ্টি করা উচিত। আর ৪ থেকে ৬ ধাপ বিশিষ্ট ক্যারিয়ার পাথ  করতে সরকারের আর্থিক দায় খুব বেশি বৃদ্ধি হবে না কারণ চাকরি জীবনের শুরুতে একজন শিক্ষক যে বেতন নিয়ে যাত্রা শুরু করেন বার্ষিক বেতন বৃদ্ধির কারণে চাকরি জীবনের শেষ ধাপ পর্যন্ত তিনি যেভাবে বর্ধিত বেতন পান (সর্বশেষ ২০১৫ পে স্কেল অনুযায়ী পদোন্নতি না হলেও উচ্চতর গ্রেড পান), এই বিষয়গুলোকে সমন্বয় করে পদসোপান তৈরি করা কঠিন নয়। এ কাজটি করলে একদিকে যেমন শিক্ষকদের পেশায় বৈচিত্র সৃষ্টি হবে, পেশায়/কর্মক্ষেত্রে সন্তুষ্টি আসবে, তেমনি মেধাবীরা শিক্ষকতা পেশার প্রতি আকৃষ্ট হবে। আর মেধাবীরা শিক্ষকতায় আসলে শিক্ষার মান উন্নত হবে এটা খুবই স্বাভাবিক।

দুঃখজনক হলেও সত্য- শিক্ষকদের আমরা টেনে নিচে নামাতে নামাতে এমন এক পর্যায়ে নিয়ে এসেছি যে, এখন কেউ আর শিক্ষকতা পেশায় আসতেই চাইছে না! তাই মেধাবীদের শিক্ষক বানাতে বা মেধাবীদের এই পেশার প্রতি আকৃষ্ট করতে এবং ধরে রাখতে মাধ্যমিক শিক্ষকদের প্রবেশ পদকে নবম গ্রেড এবং তাদের পেশায় বৈচিত্র আনতে চার বা ছয়টি ধাপে একাডেমিক পদোন্নতির সুযোগ সৃষ্টি করা সময়ের দাবি। আর এ কাজটি করতে পারলে আমরা যে ডেমোগ্রাফিক ডিভিডেন্ট যুগে আছি, এই ডেমোগ্রাফিক ডিভিডেন্টকে সহজেই মানব সম্পদে রূপান্তর করা সম্ভব হবে, ইনশাআল্লাহ।

অন্যদিকে, শিক্ষা ব্যবস্থাপনার কথা যদি বলি, তাহলে অবশ্যই শিক্ষা প্রশাসনে শিক্ষকতা পেশায় নিয়োজিত অভিজ্ঞ জনসম্পদকে নিয়োগ বা পদায়ন করতে হবে। যিনি শিখন বিজ্ঞান বা প্যাডাগজি সম্পর্কে জানেন, তার পক্ষেই শিক্ষা প্রশাসক হওয়া উপযুক্ত এবং এই ধারা আমাদের এই উপমহাদেশে শুরু থেকেই প্রচলিত আছে। এছাড়াও যিনি যে বিষয়ে অভিজ্ঞ তাকে সেই বিষয়ে পরিচালনার দায়িত্ব দিলে সেই কাজটি সুচারুরূপে সম্পন্ন হয়।

অতীতে কয়েকজন সচিব চেয়েছিলেন শিক্ষকদের দিয়ে নয়, আমলাদের দিয়ে মাউশি চালাবেন। তাদের ধারণা, শিক্ষকরা শিক্ষা প্রশাসন চালাতে পারেন না, আমলারা প্রশাসন চালাতে দক্ষ। বেশ শক্ত করেই প্রতিবাদ হয়েছিলো বিষয়টির বিরুদ্ধে। আমাদের মনে রাখতে হবে- খোদ সেনাবাহিনীর শিক্ষা প্রশাসনের পরিচালক কিন্তু শিক্ষা কোরের, ইনফ্যান্ট্রির নয়। তাহলে সিভিলে কেন শিক্ষকগণ নয়? উদাহরণ হিসেবে বলা যেতে পারে চিকিৎসা প্রশাসনে চিকিৎসকদের থেকে যেমন নিয়োগ হয়, উচ্চশিক্ষা প্রশাসনে তেমনিভাবে বিসিএস সাধারণ শিক্ষা ক্যাডার থেকে শিক্ষকদের নিয়োগ হয়, ঠিক তেমনিভাবে মাধ্যমিকের জন্য বিদ্যালয় ও পরিদর্শন শাখার কার্যক্রম পরিচালনায় অভিজ্ঞতা সম্পন্ন শিক্ষকদের নিয়োগ ও পদায়ন দেয়া উচিত।

আর এ কার্যক্রম সুচারুরূপে সম্পন্ন করতে বিসিএস নিয়োগ বিধিমালা ১৯৮১ সংশোধন করে মাধ্যমিক শিক্ষা প্রশাসনে মাউশির বিদ্যালয় ও পরিদর্শন শাখায় শিক্ষকদের পদায়নের/পদোন্নতির যে সুযোগ আছে, সেটিকে গতিশীল করা এবং চেয়ার ভিত্তিক পদোন্নতি প্রথা বাতিল করে পদোন্নতির যোগ্য পদ এবং পদায়নযোগ্য পদ আলাদা করে পদসোপান প্রণয়ন করলে শিক্ষকদের পদোন্নতি পাবার সুযোগ সৃষ্টি হবে। এ কাজটি করলে ২৮/৩০ বছর চাকরি করেও শিক্ষকরা যে পদোন্নতি পাচ্ছেন না বা একই পদ থেকে বৈচিত্রহীনভাবে নিরানন্দে ও তীব্র মানসিক যন্ত্রণা নিয়ে অবসরে যাচ্ছেন, সেই বন্ধ্যাত্ব অন্তত ঘুচবে এবং রাষ্ট্রও দায় মুক্ত হবে।

আবার, শিক্ষা ব্যবস্থাপনার ক্ষেত্রে বিশেষত মাধ্যমিক শিক্ষার মানসম্মত ও গুণগত শিক্ষা নিশ্চিত করতে জাতীয় শিক্ষানীতি ২০১০ (২৭নং অধ্যায়ের ৬নং কলাম, পৃষ্ঠা-৬৪) এর আলোকে মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তর ভেঙে দুইটি আলাদা অধিদপ্তর যথা বিদ্যালয় ও পরিদর্শন শাখার নেতৃত্বে মাধ্যমিক শিক্ষা অধিদপ্তর এবং কলেজ শাখার নেতৃত্বে উচ্চ শিক্ষা ও গবেষণা অধিদপ্তর গঠন করা। মূলত শিক্ষা কার্যক্রমের সঠিক বাস্তবায়নে রুট লেভেল পর্যন্ত মনিটরিং কার্যক্রম জোরদার করতে মাধ্যমিকের জন্য মাধ্যমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের অধীনে শিক্ষা পরিদর্শক ও নিয়ন্ত্রক এবং বিদ্যালয় ও পরিদর্শন শাখাকে যুগোপযোগী ও শক্তিশালী করা উচিত।

কারণ এত বিশাল সংখ্যক (ব্যানবেইজ পরিসংখ্যান ২০২২ অনুযায়ী, দেশে বর্তমানে ২০ হাজার ৩৫৩টি মাধ্যমিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান রয়েছে এবং ৪ হাজার ৭৪৭টি কলেজ বা উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠান রয়েছে ) শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, কয়েক লাখ শিক্ষকের কার্যক্রমের তদারকি, চাকরি ব্যবস্থাপনা, শৃঙ্খলা রক্ষা, শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালনা, পরিদর্শন ও যথাযথ মনিটরিং করা মাউশির বর্তমান জনবল দিয়ে কোনোভাবেই সম্ভব নয়। উল্লেখ্য, মাত্র ১ হাজার ৮০০ কারিগরি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের জন্য আলাদা ‘কারিগরি শিক্ষা অধিদপ্তর’ এবং ৯ হাজার ৬০৬টি মাদ্রাসার জন্য আলাদা ‘মাদ্রাসা শিক্ষা অধিদপ্তর’ গঠন করা হলেও প্রায় ২১ হাজারের কাছাকাছি মাধ্যমিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের জন্য জাতীয় সংসদে পাস হওয়া জাতীয় শিক্ষানীতি ২০১০ অনুযায়ী একটি আলাদা অধিদপ্তরের উদ্যোগ না নেওয়াটা অস্বাভাবিক নয় কী?

মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের কলেজ শাখা এবং বিদ্যালয় ও পরিদর্শন শাখার মধ্যে বিদ্যালয় ও পরিদর্শন শাখায় কর্মরত শিক্ষক/কর্মকর্তাদের ইতিহাস খুবই শোষণ-বঞ্ছনার। এ যেন স্বাধীন দেশেই আরেক উপনিবেশবাদের গল্প। দীর্ঘদিন ধরে শোষণের শিকার মাধ্যমিক যেন কলেজ শাখার কলোনিতে পরিণত হয়েছে! শোষণ-বঞ্ছনার বলছি এজন্য যে, এখানে কর্মরত শিক্ষক/কর্মকর্তাগণ অপ্রাপ্তির নানা ধরনের হতাশায় নিমজ্জিত। তবে কলেজ শাখার সাধারণ শিক্ষা ক্যাডার সংখ্যায় কম হলেও মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের (শিক্ষা ভবনের) ৯৫ শতাংশের বেশি পদে কলেজ শিক্ষকগণ (শিক্ষা ক্যাডার) বসে আছেন! সঙ্গত কারণে দীর্ঘদিন ধরে প্রায় ৮১ শতাংশ (মাউশির অধীনে মোট প্রতিষ্ঠানের) মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের মানবসম্পদ ব্যবস্থাপনা কার্যক্রমের গতি মন্থর হয়ে রয়েছে।

তাছাড়া মাউশিতে কর্মরত প্রায় সকল কর্মকর্তা (প্রকৃত অর্থে মাত্র তিনটি পদ ব্যতীত) কলেজ শিক্ষক (সাধারণ শিক্ষা ক্যাডার) হওয়ায় মাধ্যমিক পর্যায়ের শিক্ষকগণ অধিদপ্তরে তাদের দাপ্তরিক কাজের ক্ষেত্রে তেমন কোনো সুবিধা পান না, বরং উল্টো অনেক ক্ষেত্রেই নানা ধরনের হয়রানি ও ভোগান্তির শিকার হন। ফলে বিশাল কলেবরের মাউশি মাধ্যমিক শিক্ষার ওপর ঠিকমত নজর দিতে পারছেই না, বিপরীত দিকে উচ্চশিক্ষার মানও তলানিতে এসে পৌঁছেছে। ফলে দেশের শিক্ষা কার্যক্রমে শৃঙ্খলা বাস্তবায়নের চেষ্টা বারবার ব্যর্থ হচ্ছে। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের দুর্বল মনিটরিং ব্যবস্থা, দীর্ঘদিন ধরে চলে আসা মাউশির ওপেন সিক্রেট দুর্নীতি (বিশেষ করে এমপিও এবং বদলির ক্ষেত্রে) এবং প্রয়োজনীয় দক্ষ জনবল সংকটের কারণে বর্তমানে মাধ্যমিক পর্যায়ের শিক্ষা ব্যবস্থার অবস্থা প্রায় ভঙ্গুর!

তাই মাধ্যমিক স্তরের শিক্ষকগণ মনে করেন, জাতীয় শিক্ষানীতি ২০১০ এর নির্দেশনা মোতাবেক মাধ্যমিক শিক্ষা, শিক্ষার্থী ও শিক্ষকদের উন্নয়ন এবং দুর্নীতি ও বৈষম্য দূর করতে মাধ্যমিকের জন্য একটি স্বতন্ত্র মাধ্যমিক শিক্ষা অধিদপ্তর বাস্তবায়নের কোনো বিকল্প নেই। সংবিধানের মূল চেতনাকে সমুন্নত রাখা এবং টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা-৪ অর্জনে এবং জাতীয় শিক্ষানীতি ২০১০ এর আলোকে মাধ্যমিক শিক্ষা অধিদপ্তর এর কার্যক্রম টেকসইভাবে পরিচালনার জন্য এবং একই সাথে শিক্ষকতা পেশার প্রবেশ পদে সমতা বিধানের জন্য এমপিও শিক্ষকদেরকেও পর্যায়ক্রমে নবম গ্রেডে এবং বিসিএস (সাধারণ শিক্ষা) সিডিউলভুক্ত বিদ্যালয় ও পরিদর্শন শাখার সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়গুলোতে কর্মরত সহকারী শিক্ষক/শিক্ষিকার  প্রবেশ পদটিকে নবম গ্রেডের বিসিএস সাধারণ শিক্ষা ক্যাডারে উন্নীত করা একান্ত প্রয়োজন। এছাড়াও শিক্ষকদের কাজে বৈচিত্র আনতে চাকরি জীবনে সবেচেয়ে বড় আকাঙ্ক্ষা পদোন্নতি প্রথা চালু করতে ৪-৬টি ধাপ বিশিষ্ট পদসোপান বাস্তবায়ন করা অতীব প্রয়োজন।

উল্লেখ্য, সম্প্রতি অন্তর্ভুক্তির সরকারের প্রশাসনিক সংস্কার কমিশনের রিপোর্টেও মাধ্যমিকের জন্য একটি স্বতন্ত্র অধিদপ্তর প্রতিষ্ঠার সুপারিশ করা হয়েছে। নতুন বাংলাদেশে বৈষম্য নিরসনে ছাত্র-শিক্ষক সমন্বয়ে গঠিত সরকার এ কাজটি দ্রুতই করবেন বলে শিক্ষা নিয়ে কাজ করা বিদগ্ধজন মনে প্রাণে বিশ্বাস করেন।

আশার দিক, গত ৩ আগস্ট শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে মাননীয় প্রধান উপদেষ্টার কাছে একটি সারসংক্ষেপ উপস্থাপন করা হয়েছে। যেখানে বলা হয়েছে, মাধ্যমিক শিক্ষা অধিদপ্তর এবং কলেজ শিক্ষা অধিদপ্তর নামে দুটি স্বতন্ত্র অধিদপ্তর প্রতিষ্ঠা করা হবে। শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে কর্তৃক উপস্থাপিত ওই সারসংক্ষেপে আলাদা অধিদপ্তরের যৌক্তিকতা অত্যন্ত সুন্দরভাবে উপস্থাপিত হয়েছে। বিশেষ করে গত বছর ২ অক্টোবর মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগ শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন কলেজ এডুকেশন ডেভেলপমেন্ট প্রজেক্ট (সিইডিপি) কর্তৃক আয়োজিত ‘Impact Analysis on Education Governance and Management’ শীর্ষক জাতীয় কর্মশালায় প্রাপ্ত সুপারিশের ভিত্তিতে ব্যায়াম ফাউন্ডেশন গবেষণা ও পরামর্শ সেবা কেন্দ্র একটি প্রতিবেদন প্রণয়ন করে, যেখানে শিক্ষা প্রশাসন ব্যবস্থাপনার বর্তমান কাঠামোর পরিবর্তে মাধ্যমিক শিক্ষা অধিদপ্তর এবং উচ্চশিক্ষা ও গবেষণা অধিদপ্তর হিসেবে দুটি পৃথক অধিদপ্তর সৃজন করার পরামর্শ প্রদান করা হয়েছে।

উল্লেখ্য এই জাতীয় কর্মশালাটি আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউটে চলতি বছরের শুরুতে অনুষ্ঠিত হয়, যেখানে শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও মাউশির ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা এবং মাঠ পর্যায়ে কর্মরত শিক্ষক ও শিক্ষা কর্মকর্তা প্রতিনিধিদের (সব পর্যায়ের স্ট্রেক হোল্ডার বা অংশীজনদের) অংশগ্রহণে অনুষ্ঠিত হয়। মূলত মাধ্যমিক শিক্ষার আধুনিকায়ন, মাধ্যমিক শিক্ষাকে মানসম্মত, যুগোপযোগী ও বাস্তবমুখী করার লক্ষ্যে স্বতন্ত্র মাধ্যমিক শিক্ষা অধিদপ্তর প্রতিষ্ঠা করার প্রয়োজনীয়তা অংশী যন্ত্রের আলোচনা ও বক্তব্যে উঠে এসেছে।

এছাড়াও গত বছর ৪ সেপ্টেম্বর অনুষ্ঠিত সচিব কমিটির সভায় মাননীয় প্রধান উপদেষ্টা প্রত্যেক মন্ত্রণালয় ও বিভাগকে প্রয়োজনীয় সংস্কার পরিকল্পনা প্রণয়ন ও বাস্তবায়নের জন্য মার্চিং অর্ডার প্রদান করায় মাধ্যমিক উচ্চ শিক্ষা বিভাগ কর্তৃক গত বছর ২৮ নভেম্বর সময়াবদ্ধ সংস্কার পরিকল্পনা দাখিল করা হয়। উল্লেখিত প্রস্তাবনাগুলোর মধ্যে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরকে ‘মাধ্যমিক শিক্ষা অধিদপ্তর’ এবং ‘উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তর’ এ দুটি অধিদপ্তর প্রতিষ্ঠার কার্যক্রম চলতি বছর ডিসেম্বরের মধ্যে সম্পন্ন করার বিষয়টি অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছিল।

আরো উল্লেখ্য যে, জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশনের জানুয়ারি ২০২৫ এর প্রতিবেদনে বাংলাদেশের শিক্ষা সার্ভিসের সংস্কারের জন্য মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরকে পৃথক করার সুপারিশ করা হয়। মধ্য মেয়াদির সংস্কার পরিকল্পনায় পৃথক মাধ্যমিক অধিদপ্তর প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরকে ভেঙে দুটি আলাদা অধিদপ্তর করার প্রস্তাব করা হয় এবং কলেজ শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক পদটিকে গ্রেড-১ এ উন্নীত করার প্রস্তাবনাও রাখা হয়েছে। 

মূলত জাতীয় শিক্ষানীতি ২০১০ বাস্তবায়ন, কর্মশালার সুপারিশ, জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশনের সুপারিশ, প্রধান উপদেষ্টার মার্চিং অর্ডার এবং মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা পর্যায়ে মানসম্মত শিক্ষা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তর হতে মাধ্যমিক শিক্ষাকে পৃথক করে ‘মাধ্যমিক শিক্ষা অধিদপ্তর’ ও ‘কলেজ শিক্ষা অধিদপ্তর’ নামে দুটি আলাদা অধিদপ্তর প্রতিষ্ঠার প্রয়োজনীয়তা মাননীয় প্রধান উপদেষ্টা বরাবর উপস্থাপন করা হয়েছে। 

মাঠ পর্যায়ে কর্মরত কয়েক লাখ শিক্ষক কর্মকর্তা, কোটি কোটি শিক্ষার্থী এবং অভিভাবকগণও মনে করেন এত বিশাল সংখ্যক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান মাউশির একার পক্ষে দেখভাল করা সম্ভব হচ্ছে না। বিধায় দীর্ঘদিন ধরে শিক্ষা ভবন নিয়ে নেতিবাচক সংবাদ পত্রপত্রিকা মারফত প্রকাশিত হয়ে আসছে। যেখানে এমপিও, বদলি ও পদায়নসহ নানা বিষয়ে দুর্নীতি যেন ওপেন সিক্রেট!

শিক্ষায় নানা প্রকল্পের নামে হাজার হাজার কোটি টাকা লুটপাটের সংবাদও জাতীয় সম্প্রচার মাধ্যমে প্রচারিত হয়েছে! সরকারের নীতিগত সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নে বাধাপ্রধানের লক্ষ্যে এরই মাঝে একটি মহল বড় ধরনের বাজেট নিয়ে ‘মাধ্যমিক শিক্ষা অধিদপ্তর’ আলাদার চূড়ান্ত পর্যায়ের গাছটিকে থামিয়ে দিতে কোটি টাকা বিনিয়োগ করেছেন বলে সংবাদ চাউর হয়েছে, যা মাঠ পর্যায়ের শিক্ষক, শিক্ষা কর্মকর্তা, শিক্ষার্থী, অভিভাবক এবং সচেতন মহলকে উদ্বিগ্ন করে তুলেছে।

মাধ্যমিক পর্যায়ের শিক্ষকগণ দীর্ঘদিন ধরে তাদের প্রতি চলে আসা বৈষম্য নিরসন করতে ইতোপূর্বে বহুবার অধিদপ্তরের কর্তাব্যক্তিদের মাধ্যমে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে লিখিতভাবে দাবি-দাওয়া জানিয়ে আসলেও তারা তা কর্ণপাত করেননি। বরং তাদের নানাভাবে হয়রানি এবং বদলি হুমকি দিয়ে এ দাবিদাওয়া থেকে বিরত রাখতে যা কিছু করার সব চেষ্টাই করেছেন। সেই তারাই এখন বলছেন, আলোচনার মাধ্যমে মাধ্যমিক শিক্ষকদের সমস্যার সমাধান করার কথা, যাতে অধিদপ্তর ভেঙে আলাদা করা না হয়- এ যেন ভূতের মুখে রাম নাম! 

মাধ্যমিক শিক্ষকদের প্রবেশপদটি নবম গ্রেডে উন্নীতকরণসহ চারস্তরীয় একটি একাডেমিক পদসোপান বাস্তবায়নের লক্ষ্যে এবং মাধ্যমিক শিক্ষার গুণগত মান উন্নয়নের লক্ষ্যে একটি স্বতন্ত্র মাধ্যমিক শিক্ষা অধিদপ্তর প্রতিষ্ঠার পাশাপাশি সরকারি মাধ্যমিকের শিক্ষকগণ ইতোমধ্যে  ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে স্বতন্ত্র মাধ্যমিক শিক্ষা অধিদপ্তর বাস্তবায়ন জাতীয় কমিটির ব্যানারে মাধ্যমিকের জন্য একটি স্বতন্ত্র অধিদপ্তর প্রতিষ্ঠার যৌক্তিকতা তুলে ধরে সংবাদ সম্মেলন করেছেন। একই দাবিতে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেছেন । আলাদা অধিদপ্তরের দাবিতে সম্প্রতি সরকারি মাধ্যমিকের শিক্ষকগণ মাননীয় প্রধান উপদেষ্টা বরাবর ৬৪ জেলার ডিসি এবং বিভাগীয় কমিশনারদের মাধ্যমে স্মারকলিপিও প্রদান করেছেন। যেখানে মাধ্যমিক শিক্ষকদের পাঁচ দফা দাবি তুলে ধরা হয়েছে। দাবিগুলো হচ্ছে-

এক.

স্বতন্ত্র মাধ্যমিক শিক্ষা অধিদপ্তর প্রতিষ্ঠা।

দুই. এন্ট্রি পদ নবম গ্রেড ধরে একটি চারস্তরীয় একাডেমিক পদসোপান বাস্তবায়ন।

তিন. উপপরিচালকের কার্যালয়সহ মাধ্যমিক স্তরের সকল দপ্তরের স্বতন্ত্র ও মর্যাদা রক্ষা।

চার. দীর্ঘদিনের বকেয়া টাইম স্কেল ও সিলেকশন গ্রেডের মঞ্জুরী আদেশ প্রদান।

পাঁচ. বিদ্যালয় ও পরিদর্শন শাখায় বিদ্যমান সকল শূন্য পদে নিয়োগ, পদোন্নতি প্রদান ও পদায়ন নিশ্চিত করা।

উপর্যুক্ত দাবি বাস্তবায়নের জন্য বাংলাদেশ সরকারি মাধ্যমিক শিক্ষক সমিতির কেন্দ্রীয় কমিটি ঘোষিত কর্মসূচির অংশ হিসেবে সারাদেশের প্রত্যেকটি সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান ফটকে, জেলা শিক্ষা অফিসারের কার্যালয়ে এবং উপপরিচালক এর কার্যালয়ে উল্লিখিত পাঁচ দফা সম্বলিত ব্যানার টাঙিয়ে দাবির পক্ষে জনমত তৈরি এবং সরকারের সুদৃষ্টি কামনা করার চেষ্টা করে যাচ্ছেন। তাদের এসব যৌক্তিক দাবি আদায়ের ব্যাপারে তারা এবার অনঢ় অবস্থানে যাচ্ছেন বলে একাধিক সূত্রে জানা গেছে।

আগামী ১ মাসের মধ্যে এ দাবিগুলোর কার্যক্রম দৃশ্যমান না হলে তারা কেন্দ্রীয়ভাবে ঢাকায় সংবাদ সম্মেলন করে পরবর্তী কর্মসূচি ঘোষণা করবেন বলে একাধিক শিক্ষক নেতা জানিয়েছেন।

সূত্র বলেছে, সংবাদ সম্মেলনের পরবর্তীতে তারা জাতীয়ভাবে সারা দেশে মানববন্ধন এবং এবং জাতীয়ভাবে এবার মহাসমাবেশের মতো কঠোর কর্মসূচির পরিকল্পনা করছেন। যদিও তারা তাদের দাবি শান্তি পূর্ণভাবে আদায়ের জন্য মন্ত্রণালয় ও সরকারের ঊর্ধ্বতন মহলে দৌড়ঝাপ করছেন।

(লেখক: শিক্ষক, সরকারি করোনেশন মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয়, খুলনা এবং মূখপাত্র, স্বতন্ত্র মাধ্যমিক শিক্ষা অধিদপ্তর বাস্তবায়ন জাতীয় কমিটি, বাংলাদেশ)

ঢাকা/মেহেদী/রাসেল

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ও শ ক ষকদ র শ ক ষকদ র ন র পদমর য দ কল জ শ ক ষ নবম গ র ড কর মকর ত র জন য ম ন র জন য ব শ ষ কর র লক ষ য উল ল খ য কল জ শ খ র প রব শ পদস প ন সরক র র উপস থ প শ ক ষকত কর ছ ন আম দ র ম নন য পর য য কর র প ব স এস এ ক জট আর থ ক পর য য় ক পর য ব শ পদ অবস থ

এছাড়াও পড়ুন:

আফ্রিদির অলরাউন্ড নৈপুণ্যে আমিরাতকে হারিয়ে সুপার ফোরে পাকিস্তান

বিকেলে ছিল ম্যাচ হবে কি না অনিশ্চয়তা। নানা নাটকীয়তার পর অনিশ্চয়তা কেটে ম্যাচ শুরু হলো এক ঘণ্টা দেরিতে। তবে বিলম্বিত ম্যাচে আর খুব বেশি অনিশ্চয়তা–নাটকীয়তার দেখা মিলল না। দুবাইয়ে ফেবারিট হিসেবে মাঠে নেমে সংযুক্ত আরব আমিরাতকে ৪১ রানে হারিয়েছে পাকিস্তান।

এই জয়ে এশিয়া কাপের সুপার ফোরে জায়গা করেছে সালমান আগার দল। ‘এ’ গ্রুপ থেকে সেরা চারে জায়গা করেছে ভারতও। যার অর্থ, ২১ সেপ্টেম্বর আবারও মুখোমুখি হতে চলেছে ভারত–পাকিস্তান।

গতকাল দুবাই আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামের পাকিস্তান–আরব আমিরাত ম্যাচ নিয়ে অনিশ্চয়তা তৈরি হয়েছিল ১৪ সেপ্টেম্বরের ভারত–পাকিস্তান গ্রুপ ম্যাচের ঘটনার জেরে। সেদিন ভারতের খেলোয়াড়েরা পাকিস্তানের খেলোয়াড়দের সঙ্গে ম্যাচের শুরু ও শেষে হাত না মেলানোয় ম্যাচ রেফারি অ্যান্ডি পাইক্রফটের ওপর ক্ষোভ প্রকাশ করে পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ড (পিসিবি)।

পাইক্রফট টসের সময় অধিনায়ককে হাত না মেলানোর পরামর্শ দিয়ে নিয়ম লঙ্ঘন করেছেন অভিযোগ তুলে তাঁর অপসারণ চেয়ে রীতিমতো এশিয়া কাপ বর্জনের আবহ তৈরি করে পিসিবি।

শেষ পর্যন্ত পাইক্রফটের ক্ষমা প্রার্থনায় গতকাল তাঁর পরিচালনায় আরব আমিরাতের বিপক্ষে মাঠে নামে পাকিস্তান। তবে খেলতে নামার সিদ্ধান্ত নিতে আলোচনার জন্য এক ঘণ্টা পিছিয়ে দেওয়া হয় ম্যাচ শুরুর সময়।

আরও পড়ুনপাকিস্তান অধিনায়কের কাছে ক্ষমা চেয়েছেন ম্যাচ রেফারি পাইক্রফট, দাবি পিসিবির৬ ঘণ্টা আগে

দেরিতে শুরু হওয়া ম্যাচে আমিরাত অধিনায়ক টসে জিতে পাকিস্তানকে ব্যাটিংয়ে পাঠান। ফখর জামানের ৩৬ বলে ৫০ আর শেষ দিকে শাহিন আফ্রিদির ১৪ বলে ২৯ রানের অপরাজিত ইনিংসে ভর করে পাকিস্তান করে ২০ ওভারে ৯ উইকেটে ১৪৬। মূলত আফ্রিদির শেষ দিকের ঝোড়ো ব্যাটিংই পাকিস্তানের রান দেড় শর কাছাকাছি নিয়ে যায়।

নানা নাটকীয়তার পর অ্যান্ডি পাইক্রফটই পাকিস্তান–আমিরাত ম্যাচে রেফারির দায়িত্বে ছিলেন

সম্পর্কিত নিবন্ধ