সাতক্ষীরায় জেলা প্রশাসনের আওতাধীন চারটি আদালতে আইনজীবীদের অনির্দিষ্টকালের কলম বিরতি চলছে। 

বৃহস্পতিবার (১৬ জানুয়ারি) থেকে আদালতগুলোতে সরকারি কার্টিজ পেপারের পরিবর্তে ব্লু পেপার চালু রাখার দাবিতে আইনজীবীদের এ কলম বিরতি। 

জেলা প্রশাসন ও আইনজীবীরা নিজ নিজ ক্ষেত্রে অনড় থাকায় ব্যাপক দুর্ভোগের মধ্যে পড়েছেন দূর-দূরান্ত থেকে আসা সেবা গ্রহীতারা।

সাতক্ষীরা জেলা প্রশাসন ও আইনজীবী সমিতি সূত্রে জানা গেছে, জেলা প্রশাসনের অধীনে চারটি কোর্ট রয়েছে। সেগুলো হলো- এডিএম কোর্ট, নির্বাহী কোর্ট, সার্টিফিকেট কোর্ট ও রাজস্ব কোর্ট। এসব কোর্টে আরজি দাখিল, জবাব দাখিল, সময় প্রার্থণাসহ অন্যান্য সেবা গ্রহণ করেন আবেদনকারীরা।

কার্টিজ পেপার ব্যবহারের সরকারি আদেশ উপেক্ষা করে আইনজীবীরা সমিতি থেকে সরবরাহকৃত ব্লু পেপারে আরজি দাখিলসহ অন্যান্য কাজ সম্পন্ন করেন। সম্প্রতি জেলা প্রশাসন থেকে সরকারি কার্টিজ পেপার ব্যবহারের আদেশ দেওয়া হয়। এতে বেঁকে বসেন আইনজীবীরা। 

নির্বাহী আদালতগুলোতে ব্লু পেপারের বৈধতা দেওয়ার দাবিতে বৃহস্পতিবার থেকে অনির্দিষ্টকালের জন্য আদালত বর্জন করেছেন আইনজীবীরা। এতে ব্যাপক ভোগান্তিতে পড়েছেন সেবাগ্রহীতারা।

পাটকেলঘাটা থেকে আগত শামসুর রহমান জানান, তার এডিএম কোর্টে একটি মামলা রয়েছে। বৃহস্পতিবার তার নির্ধারিত দিন ছিল। কিন্তু আইনজীবীদের কলম বরতির কারণে তার ফিরে যাওয়া ছাড়া কোনো পথ নেই।

জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি অ্যাডভোকেট শাহ্ আলম জানান, এডিএম কোর্ট, নির্বাহী কোর্ট, সার্টিফিকেট কোর্ট ও রাজস্ব কোর্টে আইনজীবীরা সমিতি থেকে নেওয়া ব্লু পেপার সরবরাহ করে। এটি শুধু সাতক্ষীরা নয়, ঢাকাসহ দেশের অধিকাংশ জায়গায় এটা করা হয়। ব্লু পেপার দিয়ে আদালতে আরজি, জবাব, সময়ের প্রার্থনা করা হয়। এগুলো উচ্চতর আদালতেও গ্রহণ করা হয়। এ বিষয়ে আইনজীবীদের পক্ষ থেকে জেলা প্রশাসকের সাথে দেখা করা হয়েছে। কিন্তু তিনি অনড়। তাই আইনজীবী সমিতির সিদ্ধান্ত, ব্লু পেপার গ্রহণ না করা পর্যন্ত তারা আদালত বর্জন করে কলম বিরতি পালন করবে।

তিনি বলেন, “ব্লু পেপারের সাথে কোর্ট ফি লাগানো হচ্ছে। তাই সরকার রাজস্ব হারাচ্ছে না। বিকল্প হিসেবে আদালতে সরকারের আয়ের ১০ ভাগ আইনজীবীদের দেওয়ার প্রস্তাব দিচ্ছি।”

এ ব্যাপারে সাতক্ষীরার জেলা প্রশাসক মোস্তাক আহমেদ বলেন, “সরকারিভাবে যে কার্টিজ পেপার দেওয়া হয়, তা আইনজীবীরা ব্যবহার করতে চান না। তারা চান ব্লু পেপার সরবরাহ করতে। কার্টিজ পেপার ব্যবহারে সরকারি নির্দেশনা রয়েছে। তাছাড়া বিজি প্রেস থেকে এটা আসে। কার্টিজ টেকসই ও মানসম্মত। সরকারের রাজস্ব আয়ের অন্যতম এই খাতকে নষ্ট করার সুযোগ নেই।”

তিনি আরও বলেন, “আইনজীবীরা তাকে বলেছে, এটা তাদের আয়ের জায়গা। কিন্তু বার তো আয়ের জায়গা হতে পারে না। তাছাড়া কার্টিজ পেপার কিনতে তো আইনজীবীরা পকেট থেকে টাকা দেন না, মক্কেলদের কাছ থেকে নিয়ে দেন। সুতরাং রাষ্ট্রের নির্দেশনার বাইরে গিয়ে এটা করা উচিৎ নয়।”

ঢাকা/শাহীন/এস

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর আইনজ ব দ র আইনজ ব র ব যবহ র সরক র

এছাড়াও পড়ুন:

বিদ্যুৎ না থাকায় ডিইপিজেডে উৎপাদন কার্যক্রম বন্ধ

ঢাকার সাভার উপজেলার আশুলিয়ায় ঢাকা রপ্তানি প্রক্রিয়াকরণ অঞ্চলে (ডিইপিজেড) আজ সোমবার দুপুর থেকে বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ রয়েছে। এ কারণে দুপুরের পর ডিইপিজেডের সব কারখানায় শ্রমিকদের ছুটি দেওয়া হয়েছে। ডিইপিজেডের জন্য নিরবচ্ছিন্নভাবে বিদ্যুৎ সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান ইউনাইটেড পাওয়ারের বিদ্যুৎকেন্দ্রে গ্যাস–সংযোগ বিচ্ছিন্ন করায় এ সংকট তৈরি হয়েছে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা।

ডিইপিজেডের নির্বাহী পরিচালক মো. শরীফুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, তিতাস গ্যাস কর্তৃপক্ষ ইউনাইটেড পাওয়ারের ডিইপিজেডে বিদ্যুৎ সরবরাহের প্রকল্পটিতে গ্যাস–সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেয়। এতে তারা উৎপাদন করতে না পারায় বিদ্যুৎ সরবরাহ করতে পারছে না। ফলে ডিইপিজেডে প্রায় ৯০টি কারখানার এক লাখের মতো শ্রমিককে ছুটি দেওয়া হয়।

বিদ্যুতের সংযোগ না থাকায় বড় ধরনের বিপর্যয়ের মুখে পড়তে হয়েছে উল্লেখ করে মো. শরীফুল ইসলাম বলেন, মঙ্গলবার যদি এটি অব্যাহত থাকে, তবে সংকট আরও বাড়বে। শ্রমিকেরা কাজ না করতে পেরে বিক্ষুব্ধ হলে বিষয়টি আরও জটিল হয়ে উঠবে। কোনো ধরনের নোটিশ ছাড়া এ ধরনের ঘটনায় বিদেশি প্রতিষ্ঠানগুলো নানাভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবে।

ডিইপিজেডের নির্বাহী পরিচালক বলেন, ‘তিতাস বলছে, ইউনাইটেড পাওয়ারের কাছে বিল বকেয়া রয়েছে। তারা বকেয়া পরিশোধ করেনি। এ ব্যাপারে আদালতে দীর্ঘদিন ধরে মামলা চলছে। কিন্তু আমাদের কথা হচ্ছে, বেপজাকে কোনো ধরনের পূর্ব নোটিশ না দিয়ে হঠাৎ করে এ ধরনের পদক্ষেপ নিয়েছেন। এ ধরনের পদক্ষেপের আগে ডিইপিজেডের গুরুত্ব বিবেচনা করে আলোচনার মধ্য দিয়ে বিষয়টির সমাধান করা উচিত ছিল।’

এ বিষয়ে ইউনাইটেড পাওয়ার প্ল্যান্টের ব্যবস্থাপক মো. মমতাজ হাসান প্রথম আলোকে বলেন, ‘গ্যাসের কোনো প্রেশার নেই। প্রেশার শূন্য। কিন্তু কেন তিতাস কর্তৃপক্ষ এমনটি করল, সে ব্যাপারে এখানকার (আশুলিয়া অঞ্চলের) তিতাসের লোকজন কিছু বলতে পারেননি। আমরা নিজেরাও বিষয়টি নিয়ে জানি না। এ ব্যাপারে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে আলোচনা হচ্ছে।’ তিনি বলেন, ‘আমার জানামতে, বকেয়া নিয়ে কোনো ধরনের মামলা নেই। তিতাস কেন গ্যাস সরবরাহ বন্ধ করে দিল, সেটি জানা নেই।’

জানতে চাইলে তিতাসের আশুলিয়া আঞ্চলিক কার্যালয়ের ব্যবস্থাপক প্রকৌশলী আবু ছালেহ মুহাম্মদ খাদেমুদ্দীন প্রথম আলোকে বলেন, গ্যাসের বিল বকেয়া থাকায় গ্যাস–সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হয়। এটি সরকারের ঊর্ধ্বতন মহলের সিদ্ধান্ত। দুপুরের দিকে গ্যাস–সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হয়েছে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • আদানির সঙ্গে চুক্তি ক‌রে শুল্ক ফাঁকি
  • শিল্প খাতের উৎপাদন যেন ব্যাহত না হয়
  • কারাগারে গাঁজা সরবরাহ করতে গিয়ে নিজেই কারাগারে
  • ‘মানবিক করিডোর’ নিয়ে বৈশ্বিক অভিজ্ঞতা কী
  • ডিইপিজেডে বিদ্যুৎ নেই, ৯০ কারখানায় ছুটি
  • মঙ্গলবার ৭ ঘণ্টা গ্যাস থাকবে না যেসব জায়গায়
  • পাকিস্তানের সঙ্গে উত্তেজনার মধ্যে আরও ২৬টি রাফাল যুদ্ধবিমান কিনছে ভারত
  • পর্তুগাল ও স্পেনে নজিরবিহীন বিদ্যুৎ বিপর্যয়, পর্যুদস্তু জনজীবন
  • হাসপাতালে ডায়রিয়ার প্রকোপ শয্যা ও স্যালাইন সংকট
  • বিদ্যুৎ না থাকায় ডিইপিজেডে উৎপাদন কার্যক্রম বন্ধ