জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস চ্যান্সেলর (ভিসি) অধ্যাপক ড. এ এস এম আমানুল্লাহ বলেছেন, “জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের আওতায় ৫০ হাজার ফ্রিল্যান্সার তৈরি করা হবে। ফ্রিল্যান্সিংয়ের মাধ্যমে ঘরে বসে টাকা রোজগার করা যাবে। থাকবে না বেকার সমস্যা।”

তিনি বলেন, “জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় দেশের প্রায় আড়াই হাজার কলেজের অভিভাবক। ৩৮ লাখ শিক্ষার্থী রয়েছে। বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম বিশ্ববিদ্যালয়। নকলমুক্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান গড়ে তুলতে কার্যক্রম পরিচালনা হচ্ছে।” 

শুক্রবার (১৭ জানুয়ারি) দুপুর ১২টার দিকে হবিগঞ্জের শায়েস্তাগঞ্জের দাউদনগর বাজার এলাকায় জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের হবিগঞ্জ আঞ্চলিক কেন্দ্রের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন।

ভিসি এ এস এম আমানুল্লাহ বলেন, “হবিগঞ্জ জেলায় কলেজের সংখ্যা কম। মানসম্মত শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গড়ে তুলতে হবে। শায়েস্তাগঞ্জে টেকনিক্যাল ও বিজ্ঞান কলেজ প্রতিষ্ঠা করেন। আমি সব ধরণের সহযোগিতা করব। এখান থেকে দক্ষ জনশক্তি গড়ে উঠবে। তাহলে চাকরির পেছনে দৌঁড়াতে হবে না। চাকরি তাদের পেছনে ঘুরবে। সহজে কর্মসংস্থান তৈরি হবে।” 

তিনি বলেন, “দেশের নানা স্থানে রাজনৈতিক উদ্দেশ্য হাসিলের জন্য অনার্স-মাস্টার্স কলেজ করা হয়েছে। খোঁজ নিয়ে দেখা গেছে, এইসব কলেজগুলোতে পড়ালেখা হয় না। শিক্ষকদের ঠিক মতো বেতন দেওয়া হয় না। এইসব কলেজের কার্যক্রম বন্ধ করা হবে। জুলাই আন্দোলনের মাধ্যমে আমরা দ্বিতীয় জীবন পেয়েছি। এবার শিক্ষা ব্যবস্থার আমূল পরিবর্তন করতে চাই।”

জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি বলেন, “আজ ভাড়া করা ভবনে আঞ্চলিক কেন্দ্রের কার্যক্রমের শুভ সূচনা হয়েছে। এ কেন্দ্রের মাধ্যমে ৩০ থেকে ৩৫টি উপজেলার কার্যক্রম নিয়ন্ত্রণ হবে। দ্রুত ১০ বিঘা জমির সন্ধান দেন। আমাদের নিজস্ব টাকায় জমি ক্রয় করা হবে। এ জমিতে স্থায়ীভাবে আঞ্চলিক কেন্দ্র নির্মাণ করা হবে। পাশাপাশি এ কেন্দ্রের সঙ্গে ট্রেনিং সেন্টারের কার্যক্রমও চালু থাকবে। অচিরেই বগুড়াতেও চালু হবে আঞ্চলিক কেন্দ্র।”

জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের হবিগঞ্জ আঞ্চলিক কেন্দ্রের পরিচালক (ভারপ্রাপ্ত) আব্দুস সালাম ইকবালের সভাপতিত্বে ও শায়েস্তাগঞ্জ ডিগ্রি কলেজের ইংরেজি বিভাগের প্রভাষক নুরুননাহারের সঞ্চালনায় অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন- হবিগঞ্জ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড.

সৈয়দ সায়েম উদ্দিন আহম্মদ, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের একান্ত সচিব আমিনুল আকতার, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিচালক জসিম উদ্দীন, সফিউল করীম, মুসলেহ উদ্দীন, নজরুল ইসলাম, সিলেট আঞ্চলিক কেন্দ্রের পরিচালক আবু হুরায়রা, শায়েস্তাগঞ্জ থানার ওসি দিলীপ কান্ত নাথ, শায়েস্তাগঞ্জ ডিগ্রি কলেজের অধ্যক্ষ গাজী গোলাম মোস্তুফা, উপজেলা বিএনপির সভাপতি ও নূরপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান গোলাম কিবরিয়া চৌধুরী বেলাল, শায়েস্তাগঞ্জ পৌর বিএনপির সভাপতি সাবেক মেয়র মো. ফরিদ আহমেদ অলি।

ঢাকা/মামুন/মাসুদ

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর কল জ র

এছাড়াও পড়ুন:

সাকিবের পথে হাঁটছেন মিরাজ

সাকিব আল হাসানের সঙ্গে নিজের তুলনাকে মেহেদী হাসান মিরাজ হয়তো উপভোগই করেন। কারণ, তাঁর স্বপ্ন সাকিবের মতো বিশ্বনন্দিত অলরাউন্ডার হয়ে ওঠা। সেই পথে বোধ হয় গুটি গুটি পায়ে এগিয়ে যাচ্ছেন। বিশেষ করে টেস্টে দেশে-বিদেশে সম্প্রতি ভালো করছেন। পাকিস্তানে দারুণ প্রশংসিত ছিলেন অলরাউন্ড পারফরম্যান্স করে। জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে দুই টেস্টের হোম সিরিজে উভয় টেস্টে নিজেকে ছাপিয়ে গেলেন। সিলেটের হারের ম্যাচেও ১০ উইকেট ছিল তাঁর। চট্টগ্রামে সেঞ্চুরি ও পাঁচ উইকেট নিয়ে সাকিব ও সোহাগ গাজীর কাতারে নাম লেখালেন। মূলত মিরাজের অলরাউন্ড নৈপুণ্যে ইনিংস ব্যবধানে টেস্ট জেতা সম্ভব হয়। 

গতকাল শতকের ঘরে যেতে কম কসরত করতে হয়নি তাঁর। নব্বইয়ের ঘরে গিয়ে তো অনিশ্চয়তায় পড়ে গিয়েছিলেন হাসানের আউটের শঙ্কায়। ভাগ্য সুপ্রসন্ন হওয়ায় দ্বিতীয় শতকের দেখা পান তিনি। ২০২১ সালে এই চট্টগ্রামেই ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে প্রথম টেস্ট সেঞ্চুরি ছিল মিরাজের। গতকালের পারফরম্যান্স নিয়ে টাইগার এ অলরাউন্ডার বলেন, ‘ব্যাটিংয়ের সময় চেষ্টা করেছিলাম ২ রান নিয়ে ১০০ রানে যেতে। সেভাবে দৌড় দিয়েছিলাম। কিন্তু ফিল্ডারের হাতে বল চলে গিয়েছিল (হাসি)। তার পর তো আল্লাহর ওপর ছেড়ে দিয়েছিলাম। হাসান অনেক ভালো সাপোর্ট দিয়েছে। তানজিমও ভালো সাপোর্ট দিয়েছে। তাইজুল ভাইও। এই তিনজনকেই অনেক অনেক ধন্যবাদ। কারণ, ওদের জন্যই আমি ১০০ রান করতে পেরেছি।’ 

জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে করা সেঞ্চুরি ও পাঁচ উইকেট প্রাপ্তিকে নিজের সেরা পারফরম্যান্স দাবি মিরাজের, ‘ওয়েস্ট ইন্ডিজের সাথে ১০০ করেছিলাম, ৩ উইকেট নিয়েছিলাম। অল্পের জন্য ৫ উইকেট হয়নি। হলে ভালো লাগত। ওই ম্যাচ হেরেছিলাম এই মাঠে। সে জিনিসটা মাথায় ছিল। ভালো লাগছে ম্যাচটি জিতেছি।’ মিরাজ ১৬২ বলে ১১টি চার ও একটি ছয় মেরে ১০৪ রান করেন। ২১ ওভারে ৩২ রান দিয়ে নেন পাঁচ উইকেট।

টেস্টে এ রকম অলরাউন্ড পারফরম্যান্স বাংলাদেশে আর দু’জনের আছে। সাকিব আল হাসান দু’বার ম্যাচে সেঞ্চুরি ও পাঁচ উইকেট পেয়েছেন ২০১১ সালে পাকিস্তানের বিপক্ষে মিরপুরে আর ২০১৪ সালে খুলনায়। সোহাগ গাজী নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে সেঞ্চুরি ও পাঁচ উইকেট শিকার করেন চট্টগ্রামে। সেই মাইলফলক ছোঁয়া মিরাজকে সম্প্রতি অলরাউন্ডার ক্যাটেগরিতে ফেলা হয়। সাকিবের বিকল্প ভাবা হয় তাঁকে এখন। 

এ ব্যাপারে মিরাজের অভিমত, ‘দেখেন একটা জিনিস, যখন সাকিব ভাই ছিলেন, ভিন্ন রোল ছিল। এখন ভিন্ন রোল। যেহেতু টিম ম্যানেজমেন্ট, সবাই ব্যাটিংয়ে আস্থা রাখে। আমিও ভেবেছি আমার ব্যাটিংটা গুরুত্বপূর্ণ। এখন হয়তো আমি লিডিং রোল প্লে করছি, আগে সাকিব ভাই করত। এখন আমাদের দায়িত্ব আরও বেশি।’ 

সিলেটে দুই ইনিংসে পাঁচ উইকেট করে নিয়েও দলকে জেতাতে পারেননি মিরাজ। চট্টগ্রামে সাদমান, তাইজুলের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে ম্যাচ জয়ের নায়ক হন। এই সাফল্য নিয়ে বলেন, ‘সত্যি কথা বলতে, প্রথম ম্যাচ হারার পর যেভাবে কামব্যাক করেছি, এটা খুবই দরকার ছিল। আমাদের সবাই ভেবেছিল, আমরা ভালো করব।’ মিরাজ কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন কোচিং স্টাফ ও সতীর্থের কাছে। আর তাঁর কাছে কৃতজ্ঞতা পুরো দলের।

সম্পর্কিত নিবন্ধ