জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান বলেছেন, আওয়ামী লীগ প্রমাণ করেছে, তারা কোনো রাজনৈতিক দল নয়, গণহত্যার সিন্ডিকেট। আগে জুলাই-আগস্টের গণহত্যার বিচার হোক, ক্ষতিগ্রস্তরা উপযুক্ত বিচারটা পাক, তার পর তারাই সিদ্ধান্ত দেবেন আওয়ামী লীগ এ দেশে রাজনীতি করার অধিকার রাখে কিনা? 

মঙ্গলবার বরিশাল নগরীতে জামায়াতের কর্মী সমাবেশে এসব কথা বলেন তিনি। নগরের বান্দ রোড ঈদগাহ মাঠে এ সভা হয়।  

ডা.

শফিকুর রহমান বলেন, এ দেশে চার ধর্মের মানুষ যুগ যুগ ধরে মিলেমিশে বাস করছেন। একটি দল (আওয়ামী লীগ) বিভিন্ন মেয়াদে ২৩ বছর ক্ষমতায় ছিল। তারা স্বাধীনতার পর দেশের মানুষকে ভাগ করেছে। স্বাধীনতার পক্ষের শক্তি, বিপক্ষের শক্তি, সংখ্যালঘু– নানা নামে বিভেদ তৈরি করেছে। সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রতি ইঙ্গিত করে তিনি বলেন, ‘আপনি তো নিজেকে দেশপ্রেমিক দাবি করেন। সত্যিই দেশটাকে ভালোবাসলে বিদেশে পড়ে আছেন কেন? দেশে আসেন। আমাদেরও আপনারা বারবার জেলে পাঠিয়েছিলেন। আপনারা আমাদের যেভাবে রেখেছিলেন, আমরাও আপনাকে সেভাবেই রাখব।’ 

তিনি বলেন, আওয়ামী লীগের পতনে সফলতার দাবিদার দেশের ১৮ কোটি মানুষ। তবে নেতৃত্বের দাবিদার ছাত্র-তরুণরা। একটি দল তা মানতে চায় না। চাঁদাবাজ, দলবাজ, লুণ্ঠনকারীদের প্রতি হুঁশিয়ারি দিয়ে জামায়াত আমির বলেন, ‘তোমাদের আর বাংলাদেশ কবুল করবে না। এ দেশে আর ফ্যাসিবাদ ফিরে আসবে না।’ 

বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে শহীদ ফয়সাল আহমেদ শান্তর বাবা জাকির হোসেন সমাবেশে বলেন, আমাদের সন্তানরা যে ইচ্ছা নিয়ে শহীদ হয়েছে, সেই ইচ্ছা পূরণ করতে হবে। তাদের অসমাপ্ত কাজগুলো সম্পন্ন করার আহ্বান জানান তিনি।

বরিশাল মহানগর জামায়াতের সভাপতি অধ্যক্ষ জহির উদ্দিন বাবরের সভাপতিত্বে সমাবেশে আরও বক্তৃতা করেন সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা রফিকুল ইসলাম, মাওলানা আবদুল হালিম, অ্যাডভোকেট মোয়াজ্জেম হোসেন হেলাল, ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সেক্রেটারি ডা. শফিকুল ইসলাম মাসুদ, বরিশাল জেলা আমির মোহাম্মদ আব্দুল জব্বারসহ বিভিন্ন জেলা ও ইউনিট শাখার নেতারা।

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: আওয় ম ল গ জ ম য় ত ইসল ম বর শ ল আওয় ম

এছাড়াও পড়ুন:

হাইতিতে গ্যাং হামলায় ৫০ জনের বেশি নিহত

ক্যারিবীয় দ্বীপপুঞ্জের দেশ হাইতিতে গত সপ্তাহে একাধিক গ্যাং হামলায় ৫০ জনেরও বেশি মানুষ নিহত হয়েছে। জাতীয় মানবাধিকার প্রতিরক্ষা নেটওয়ার্কের (আরএনডিডিএইচ) তথ্যানুসারে, সংকটে জর্জরিত দেশটিতে সর্বশেষ ভয়াবহ গণহত্যার ঘটনা এটি।

মঙ্গলবার (১৬ সেপ্টেম্বর) বার্তা সংস্থা এএফপির বরাত দিয়ে এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে মার্কিন সংবাদমাধ্যম ব্যারন’স। 

গতকাল সোমবার এএফপিকে পাঠানো এক প্রতিবেদনে আরএনডিডিএইচ জানায়, গত ১১ ও ১২ সেপ্টেম্বর রাজধানী পোর্ট-অ-প্রিন্সের উত্তর এলাকায় এই হামলাগুলো ঘটে।

ওই প্রতিবেদনে বলা হয়, ‘২০২৫ সালের ১৪ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত নিহত হওয়া বহু মানুষের লাশ এখনও পাওয়া যায়নি। লাশগুলো এখনও ঝোপের মধ্যে পড়ে আছে এবং কুকুর লাশগুলো খেয়ে ফেলেছে।’

পশ্চিম গোলার্ধের সবচেয়ে দরিদ্র দেশ হাইতি। দেশটির একটি অংশ ও রাজধানী পোর্ট-অ-প্রিন্সের বেশিরভাগ এলাকা সশস্ত্র গ্যাংগুলোর নিয়ন্ত্রণে থাকায় সহিংসতা বৃদ্ধি পাচ্ছে।

২০২৪ সালের শুরুর দিকে গ্যাংগুলোর একটি জোট লাগাতার হামলা শুরু করলে পরিস্থিতির চরম অবনতি হয়। যার ফলে প্রধানমন্ত্রী এরিয়েল হেনরি পদত্যাগ করেন এবং প্রেসিডেন্টের অন্তর্বর্তীকালীন পরিষদের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করেন।

হাইতির পুলিশকে সমর্থন করার জন্য কেনিয়ার নেতৃত্বাধীন বহুজাতিক বাহিনী মোতায়েন করার পরও সহিংসতা দমন করা সম্ভব হয়নি।

আরএনডিডিএইচ জানিয়েছে, ভিভ আনসানম গ্যাং জোট, যারা ২০২৪ সালের মার্চ মাস থেকে ক্যাবারেট শহরের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে, তারা গত সপ্তাহে নিকটবর্তী ল্যাবোডেরি শহরে বেসামরিক জনগণের বিরুদ্ধে অত্যন্ত নিষ্ঠুর গণহত্যা চালিয়েছে। শহরটি রাজধানী পোর্ট-অ-প্রিন্স থেকে প্রায় ২৫ কিলোমিটার উত্তরে অবস্থিত।

সংস্থাটি আরো জানায়, ‘তারা ৫০ জনেরও বেশি মানুষকে হত্যা করেছে এবং বেশ কয়েকটি বাড়িতে আগুন ধরিয়ে দিয়েছে।’

প্রতিবেদনে আরো বলা হয়, ‘বেঁচে থাকা কয়েকজন পার্শ্ববর্তী এলাকায় পালিয়ে যেতে সক্ষম হন। অন্যান্যরা আক্রমণকারীদের হাত থেকে বাঁচতে নৌকায় করে সমুদ্রে পালিয়ে যায়।’ 

জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস গত মাসে সতর্ক করে বলেছেন, হাইতিতে ‘রাষ্ট্রীয় কর্তৃত্ব ভেঙে পড়ছে।’

তিনি নিরাপত্তা পরিষদকে সতর্ক করে বলেন, হাইতির রাজধানীর বাইরেও সহিংসতা ছড়িয়ে পড়ছে। সেখানকার ৯০ শতাংশ অঞ্চলের ওপর গ্যাংগুলোর নিয়ন্ত্রণ রয়েছে।

রবিবার, তিনি ক্যাবারে কমিউনে হামলার নিন্দা জানিয়েছেন এবং দেশগুলোকে প্রয়োজনীয় ‘সরবরাহ, কর্মী ও তহবিল দিয়ে বহুজাতিক নিরাপত্তা সহায়তা মিশনকে শক্তিশালী করার প্রচেষ্টা ত্বরান্বিত করার’ আহ্বান জানিয়েছেন।

জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক হাইকমিশনারের তথ্যানুসারে, চলতি বছরের প্রথমার্ধে হাইতিতে কমপক্ষে ৩ হাজার ১৪১ জন নিহত হয়েছে।

ঢাকা/ফিরোজ

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • গাজায় ইসরায়েলি অভিযানের ‘কঠোরতম ভাষায়’ নিন্দা জানিয়েছে সৌদি আরব
  • যারা জাতীয় পার্টিসহ ১৪ দলকে নিষিদ্ধ চায়, তারা আদালতে অভিযোগ দিতে পারে: সালাহউদ্দিন আহমদ
  • গাজায় ইসরায়েলের গণহত্যার প্রমাণ পেয়েছে জাতিসংঘের তদন্ত কমিশন
  • হাইতিতে গ্যাং হামলায় ৫০ জনের বেশি নিহত
  • ‘গাজায় গণহত্যা চলছে, আমি সেই গণহত্যার নিন্দা করছি’