কুড়িগ্রামে কৃষক মহাসমাবেশে অন্তর্বর্তী সরকারের দু’জন উপদেষ্টা যোগ দেওয়ার কথা থাকলে তারা যাচ্ছেন না। ‘রাষ্ট্রীয় গুরুত্বপূর্ণ কাজে’ ঢাকায় থাকার প্রয়োজনের কথা উল্লেখ করে তারা সফর বাতিল করেছেন। তবে সমাবেশে ৩০ হাজার কৃষককে খাওয়ানোর জন্য মন্ত্রণালয়ে সহায়তা চেয়ে আবেদন ঘিরে সমালোচনা হওয়ায় সফর বাতিল করা হয়েছে বলে মন্ত্রণালয় সূত্র জানিয়েছে।

জেলে-তাঁতি-কৃষক মহাসমাবেশ বাস্তবায়ন গণকমিটির আয়োজনে আগামী ২৬ জানুয়ারি কুড়িগ্রামের চিলমারী উপজেলার জোড়গাছে সমাবেশের আয়োজন করা হয়েছে। অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা ফারুক-ই-আজম (বীরপ্রতীক) এবং মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ফরিদা আখতার এতে যোগ দেওয়ার কথা ছিল। আজ বৃহস্পতিবার উপদেষ্টার দপ্তরের এক চিঠিতে কুড়িগ্রাম সফর বাতিলের কথা জানানো হয়।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, মহাসমাবেশে অন্যদের মধ্যে সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা হোসেন জিল্লুর রহমান, রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক হাসনাত কাইয়ূম, জাতীয় নাগরিক কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য সচিব আখতার হোসেন, লেখক ও সংগঠক অধ্যাপক আনু মুহাম্মদ, অধ্যাপক তানজীম উদ্দীন খান, বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কবি আবদুল হাই শিকদার, বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক মোহাম্মদ আজম ও বাংলাদেশ সংবাদ সংস্থার ব্যবস্থাপনা পরিচালক মাহবুব মোর্শেদ উপস্থিত থাকবেন। তাদের উপস্থিতির কথা জানিয়ে প্রচার চালাচ্ছে সমাবেশ বাস্তবায়ন কমিটি।

তবে এরই মধ্যে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের কাছে ৩০ হাজার কৃষকের খাবারের জন্য ৬০ লাখ টাকা বরাদ্দ চেয়ে আবেদনের একটি চিঠি ঘিরে ফেসবুকে সমালোচনা শুরু হয়েছে। 

আবেদনের চিঠির বিষয়ে কৃষক সমাবেশের আহ্বায়ক নাহিদ হাসান বলেন, হাট-ঘাটের ইজারা বাতিল, কৃষকদের উৎপাদিত পণের ন্যায্যমূল্য নির্ধারণ, চরের মানুষের নদীভাঙনের বিষয় নিয়ে আমরা কৃষক সমাবেশের আয়োজন করেছি। এতে  কৃষকদের আমরা একবেলা খাওয়াতে চাই। এ বিষয়ে রাষ্ট্রপক্ষের সঙ্গে আলোচনা করেছি।  আমরা ডিম-খিচুড়ি খাওয়াতে চেয়েছিলাম। কিন্তু সরকারের লোকজনই বলেছে আপনারা মুরগি দিয়ে খাওয়ান। এতে কৃষকপ্রতি গড়ে ২০০ টাকা করে খাওয়ানোর সিদ্ধান্ত হয়। সে অনুযায়ী আবেদন করা হয়।

তিনি বলেন, আমরা আবেদন করেছি মাত্র। কিন্তু একটা সুইও পাইনি। এ নিয়ে বিতর্ক হাস্যকর মনে করছি। দুই উপদেষ্টা না এলেও মহাসমাবেশটি আমরা সফল করব। 

এ বিষয়ে কুড়িগ্রাম জেলা প্রশাসক নুসরাত সুলতানা জানান, আমাদের কাছে আবেদন আসায় তা সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ে পাঠিয়েছি। বরাদ্দ দেবে কি দেবে না, তা মন্ত্রণালয়ের বিষয়।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: উপদ ষ ট র উপদ ষ ট সরক র র

এছাড়াও পড়ুন:

সুস্থ থাকতে চান? তাহলে ‘বোরিং’ জীবনযাপন করুন

কানাডাভিত্তিক ফিটনেস ইনফ্লুয়েন্সার ড্যান গো সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বেশ জনপ্রিয়। এই ফিটনেস কোচ স্বাস্থ্যরক্ষার জন্য একঘেয়ে রুটিন মেনে চলার পরামর্শ দেন। তবে তাঁর এই পরামর্শ নতুনত্বের প্রতি মানুষের আকর্ষণকে চ্যালেঞ্জ করে।

ড্যানের কথা হলো, স্বাস্থ্যরক্ষার জন্য কয়েক দিন পরপর নানা হুজুগে মেতে ওঠার চেয়ে সাধারণ কিছু অভ্যাসের (যেমন নিয়মিত ঘুম, একই ধরনের খাবার খাওয়া, নিয়মিত ব্যায়াম করা ইত্যাদি) গুরুত্ব বেশি। এসব কাজ বিপাকক্রিয়া, হৃৎস্বাস্থ্য ও মানসিক সুস্থতার জন্য দারুণ কার্যকর। দীর্ঘ মেয়াদে স্বাস্থ্যের উন্নতি ঘটাতে চাইলে ব্যয়বহুল ডায়েটের চেয়ে এসব অভ্যাস রপ্ত করাই বেশি গুরুত্বপূর্ণ।

সম্প্রতি এক ভাইরাল পোস্টে ড্যান গো বলেছেন, ‘শরীর সুন্দর রাখার প্রক্রিয়াটি ততটা সুন্দর নয়, যতটা বাইরে থেকে সবাই মনে করে। এ ক্ষেত্রে কঠোর নিয়মানুবর্তিতার সঙ্গে প্রতিদিন একঘেয়ে কিছু কাজ নিয়মিতভাবে করা প্রয়োজন। বিশেষত যেদিন আপনার কাজগুলো করতে ইচ্ছে করবে না, সেদিনও করতে হবে।’

একঘেয়েমিকে ভালোবাসতে শিখুন

ড্যান গো তাঁর ইনস্টাগ্রাম পোস্টে উল্লেখ করেছেন, শরীর সুন্দর ও সুস্থ রাখতে একঘেয়ে জীবনযাপনকে ভালোবাসতে হবে। এটা শুনতে যতটা সহজ, বাস্তবে কিন্তু মোটেও সহজ নয়। কারণ, ড্যান গোর মতে বোরিং বা একঘেয়ে জীবনযাপনের মানে হলো—

নির্দিষ্ট একটি সময়ে ঘুমানো এবং জেগে ওঠা।

প্রতিদিন একই ব্যায়াম করা।

প্রতিদিন একই ধরনের খাবার খাওয়া।

মুখরোচক খাবার বাদ দিয়ে পুষ্টিকর খাবার খাওয়া।

নিয়মিত হাঁটা।

আরও পড়ুনহাঁটা শুরু করতে চান? কখন, কতক্ষণ, কীভাবে হাঁটবেন২০ এপ্রিল ২০২৫হুজুগের চেয়ে স্বাস্থ্যের প্রতি বেশি গুরুত্ব দিন

ফাস্ট ফুড খাওয়া, ঘণ্টার পর ঘণ্টা ফোন স্ক্রলিং, কদিন পরপর নিত্যনতুন উপায়ে সুস্থ থাকতে চাওয়া—এসব আদতে সাময়িক পরিতৃপ্তি দেয়। দীর্ঘ মেয়াদে এসব আপনার স্বাস্থ্যের ভীষণ ক্ষতিই ডেকে আনে।

তাই ড্যান গোর একঘেয়ে রুটিন মেনে চলার অভ্যাস করার চেষ্টা করুন। অর্থাৎ রোজ হাঁটতে যান, ভেজালমুক্ত খাবার খান, রুটিনমাফিক জীবনযাপন করুন। এতে আপনার বিপাকক্রিয়া উন্নত হবে, হৃৎপিণ্ড ও মানসিক স্বাস্থ্যও থাকবে ভালো। ব্যয়বহুল ডায়েটও আপনার জন্য এতটা সুফল বয়ে আনতে পারবে না।

আরও পড়ুনওজন কমাতে চান? এই চারটি পদ্ধতি অনুসরণ করুন ১৪ জুন ২০২৫সুস্থ থাকতে রুটিন মেনে চলা কেন জরুরি

স্বাস্থ্যকর রুটিন মেনে চললে যেকোনো অভ্যাসেরই ধারাবাহিকতা বজায় থাকে। এতে আত্মনিয়ন্ত্রণক্ষমতা বাড়ে, শরীর ধীরে ধীরে স্বাস্থ্যকর অভ্যাসগুলোর সঙ্গে মানিয়ে নিতে থাকে। সুস্থ থাকতে হলে শরীরের নিয়মিত যত্ন নেওয়া জরুরি। প্রতিদিন একই সময়ে এবং একই পরিমাণে ঘুমানো, একই সময়ে ব্যায়াম করা, সুষম খাবার খাওয়া—এসব অভ্যাস শরীরের অভ্যন্তরীণ বিভিন্ন প্রক্রিয়াকে সঠিকভাবে পরিচালিত হতে সহায়তা করে। আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো, এতে হরমোনের মাত্রা ঠিক থাকে।

মানসিক স্বাস্থ্যের দৃষ্টিকোণ থেকে বলা যায়, ছকে বাঁধা জীবন চাপ কমায়, মনোযোগ বাড়ায়। সবশেষে এটাই বলা যায়, ড্যান গোর মতবাদ মেনে চলা কঠিন হলেও এতে যে আপনি দীর্ঘ মেয়াদি ইতিবাচক ফল পাবেন, তা নিয়ে সন্দেহ নেই।

সূত্র: জিকিউ

আরও পড়ুনবিয়ে করলেই নাগরিকত্ব পাবেন যেসব দেশের১০ জুন ২০২৫

সম্পর্কিত নিবন্ধ