হারানো নির্বাচনী ব্যবস্থা ফিরিয়ে আনাই বড় চ্যালেঞ্জ : ইসি সানাউল্
Published: 26th, January 2025 GMT
নির্বাচন কমিশনার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) আবুল ফজল মো. সানাউল্লাহ বলেছেন, এবারের নির্বাচনের প্রধান চ্যালেঞ্জ হবে হারানো নির্বাচনী ব্যবস্থা ফিরিয়ে আনা। তবে সুষ্ঠু নির্বাচন আয়োজনের মাধ্যমে নির্বাচন কমিশন এ সুযোগ হারাতে চায় না বলেও জানান তিনি।
তিনি বলেন, “প্রশ্নবিদ্ধ নির্বাচনের কারণে শুধু পুলিশ নয়, সব প্রতিষ্ঠানের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন হয়েছে। নির্বাচন কমিশনসহ সংশ্লিষ্ট সবার উপলব্ধি যে, ভাবমূর্তি পুনরুদ্ধার করতে হবে। সেটার একমাত্র উপায় হচ্ছে সুষ্ঠু নির্বাচন, যা করতে সবাই বদ্ধপরিকর।”
রবিবার (২৬ জানুয়ারি) সকাল ১০ টায় রংপুর আঞ্চলিক নির্বাচন কমিশন কার্যালয়ে ভোটার তালিকা হালনাগাদ ও ত্রয়োদশ সংসদ নির্বাচন নিয়ে কর্মকর্তাদের সঙ্গে মতবিনিময় সভা শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এসব কথা বলেন তিনি।
সানাউল্লাহ বলেন, “অতীতে প্রিসাইডিং কর্মকর্তা ও পোলিং অফিসার নিয়োগ নিয়ে অনেক অভিযোগ আছে। দলীয় বিবেচনায় তাদেরকে নির্বাচন করা হতে পারে অথবা তারা যেভাবে কাজ করার কথা সেভাবে করতে পারেনি। তবে এটা নিশ্চিত করব যে কর্মকর্তাদের মধ্য থেকে বেছে বেছে যারা নিরপেক্ষ ও কাজ করার মতো সাহসী, তাদের দিয়েই নির্বাচন করতে।
একই সঙ্গে তাদের ক্ষমতায়ন করা হবে, যাতে করে তারা এ প্রক্রিয়াটা স্বচ্ছভাবে সম্পন্ন করতে পারেন। প্রার্থীরা সমানভাবে সুযোগ পায় সে বিষয়ে নির্বাচন কমিশন তা নিশ্চিত করবে।”
তিনি আরও বলেন, “স্থানীয় সরকারের নির্বাচনের বিষয়টি সরকারের একটি সিদ্ধান্ত। কমিশনের সাংবিধানিক দায়িত্ব হলো সংসদীয় নির্বাচন অনুষ্ঠান করা। সংসদীয় নির্বাচনকে সামনে রেখে সার্বিক প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে। স্থানীয় সরকার নির্বাচন নিয়ে সরকার যদি কোনো সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে তাহলে সরকারকে নির্বাচন কমিশন সহায়তা করবে।”
আওয়ামী লীগ নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে পারবে কিনা এমন প্রশ্নে নির্বাচন কমিশনার বলেন, “প্রধান নির্বাচন কমিশনার এ বিষয়ে স্পষ্ট করে বলেছেন। তপশিল ঘোষণার সময় পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে। সার্বিক রাজনীতি এবং বিচারিক প্রক্রিয়া কোথায় গিয়ে দাঁড়ায় এবং সে সময় যারা তপশিলভুক্ত এবং নিবন্ধিত থাকবে তাদের নিয়ে ভোট অনুষ্ঠান হবে। আগে থেকে কিছু বলা যাবে না, কারণ এটি একটি বিচারিক প্রক্রিয়া, রাজনৈতিক প্রজ্ঞা ও সিদ্ধান্তের বিষয়। এছাড়া ঐকমত্যেরও বিষয় আছে।”
এসময় রংপুরের জেলা প্রশাসক রবিউল ফয়সাল, জেলা পুলিশ সুপার, আবু সাঈম, রংপুর আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তা আজিজুল ইসলাম আজিজসহ নির্বাচন সংশ্লিষ্ট অন্য কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
ঢাকা/আমিরুল/টিপু
.উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
কাশ্মীর নিয়ে পাকিস্তান সেনাপ্রধান আসিম মুনিরের মন্তব্যে ভারতে ক্ষোভ, কী বলেছেন তিনি
পাকিস্তানের সেনাপ্রধান জেনারেল আসিম মুনির সাধারণত আলোচনার কেন্দ্রে আসেন না। তবে সাম্প্রতিক সপ্তাহগুলোতে খবরের শিরোনাম হয়ে উঠেছেন তিনি—শুধু পাকিস্তানে নয়, সীমানা পেরিয়ে ভারত ও বিশ্বের বিভিন্ন কূটনৈতিক কেন্দ্রেও।
ভারতনিয়ন্ত্রিত জম্মু ও কাশ্মীরের জনপ্রিয় পর্যটনকেন্দ্র পেহেলগামে গত ২২ এপ্রিল বন্দুকধারীদের হামলায় ২৬ জন নিহত হন। এর কয়েক দিন আগে কাশ্মীর নিয়ে কিছু মন্তব্য করেন আসিম মুনির। তাঁর এসব মন্তব্য পাকিস্তান সেনাবাহিনীর অবস্থান ও আঞ্চলিক উত্তেজনায় তাদের ভূমিকা নিয়ে নতুন করে বিতর্কের জন্ম দিয়েছে।
ভারত ও পাকিস্তান উভয়ই কাশ্মীরকে পুরোপুরি নিজেদের বলে দাবি করে। কিন্তু তারা এটির একেক অংশ শাসন করে। ১৯৪৭ সালে দেশভাগের পর থেকে দুই দেশের মধ্যে উত্তেজনার কেন্দ্রে রয়েছে এ ভূখণ্ড।
জেনারেল মুনিরের বক্তব্য যদিও প্রত্যক্ষভাবে পেহেলগামের হামলার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট নয়, তবু তাঁর বক্তব্য বিশ্লেষণ করে এটিকে বেশি আগ্রাসী মনোভাবের হিসেবে দেখা হচ্ছে।
সেনাপ্রধান হিসেবে জেনারেল আসিম মুনিরকে বর্তমানে পাকিস্তানের সবচেয়ে ক্ষমতাধর ব্যক্তি হিসেবে ধরা হয়। দেশটির রাজনীতিতে হস্তক্ষেপ, সরকারকে ক্ষমতায় বসানো ও অপসারণে দীর্ঘদিন ধরে সেনাবাহিনী নানা ভূমিকা রাখছে বলে অভিযোগ করা হয়ে থাকে। এখন ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে উত্তেজনা বেড়ে যাওয়ায় পারমাণবিক অস্ত্রের অধিকারী প্রতিবেশী এ দুই দেশে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দু হয়ে উঠছেন তিনি।
ইসলামাবাদে গত ১৭ এপ্রিল প্রবাসীদের সঙ্গে একটি বৈঠকে আসিম মুনির বলেন, ‘আমরা প্রতিটি ক্ষেত্রে হিন্দু সম্প্রদায়ের মানুষ থেকে আলাদা।’ কাশ্মীরকে পাকিস্তানের ‘জীবন সঞ্চারণী শিরা’ উল্লেখ করে তিনি অঙ্গীকার করেন, ‘ভারতের দখলদারত্বের বিরুদ্ধে কাশ্মীরিদের বিরোচিত লড়াইকে পাকিস্তান কখনো পরিত্যাগ করবে না।’২০২২ সালের নভেম্বরে সেনাপ্রধানের দায়িত্ব নেন জেনারেল মুনির। দায়িত্ব গ্রহণের পর তাঁকে প্রকাশ্যে তেমন কথা বলতে শোনা যায়নি। তবে তাঁর একটি বক্তব্য ব্যাপকভাবে মনোযোগ কেড়েছে।
আরও পড়ুনভারতে অনলাইনে ছড়ানো হচ্ছে মুসলিমবিদ্বেষী গান, কনটেন্ট২৯ এপ্রিল ২০২৫ইসলামাবাদে গত ১৭ এপ্রিল প্রবাসীদের সঙ্গে একটি বৈঠকে আসিম মুনির বলেন, ‘আমরা প্রতিটি ক্ষেত্রে হিন্দু সম্প্রদায়ের মানুষ থেকে আলাদা।’ কাশ্মীরকে পাকিস্তানের ‘জীবন সঞ্চারণী শিরা’ উল্লেখ করে তিনি অঙ্গীকার করেন, ‘ভারতের দখলদারত্বের বিরুদ্ধে কাশ্মীরিদের বিরোচিত লড়াইকে পাকিস্তান কখনো পরিত্যাগ করবে না।’
জেনারেল মুনিরের এ বক্তব্যের সঙ্গে পেহেলগামে হামলার কোনো সংশ্লিষ্টতা না থাকতে পারে। কেননা পাকিস্তানের নেতারা অনেক বছর ধরেই এমন ধরনের আদর্শিক বক্তব্য–বিবৃতি দিয়ে আসছেন।
ভারতনিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরের পেহেলগামে হামলার স্থলে ছড়িয়ে আছে চেয়ার–টেবিল