স্ত্রীসহ দুই সন্তানকে গুলি করে হত্যার পর যুবকের আত্মহত্যা
Published: 28th, January 2025 GMT
যুক্তরাষ্ট্রের পেনসিলভানিয়ার একটি বাড়ি থেকে একই পরিবারের চারজনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। তদন্তে জানা গেছে, স্ত্রী ও দুই শিশু সন্তানকে হত্যার পর আত্মহত্যা করেছেন এক যুবক। স্থানীয় পুলিশ ঘটনাটিতে ‘অনাকাঙ্খিত’ বলে উল্লেখ করেছে।
রাজ্যটির পুলিশ জানিয়েছে, মৃতরা হলেন- পল সোয়ার্নার (৩৫), তার স্ত্রী কারেন সোয়ার্নার (৩২) এবং দুই সন্তান ইভেলিন (৫) ও কনর (১)। মৃত্যুর খবরটি প্রথমে পুলিশকে জানান পল সোয়ার্নারের শ্বশুর। শুক্রবার এক সংবাদ সম্মেলনে তদন্তকারী পুলিশ কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, পল সোয়ার্নার তার স্ত্রী ও দুই সন্তানকে প্রথমে গুলি করে হত্যা করেছেন। এরপর তিনি আত্মহত্যা করেন।
তদন্তকারীরা আরও বলেছেন, একই কক্ষ থেকে চারজনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। মৃত্যুর আগমুহূর্তে তাদের মধ্যে তেমন কোনো মারামারিও হয়নি।
পেনসিলভানিয়ার পুলিশ প্রধান স্টিভ লিমানি বলেন, ঘটনাটি অভাবনীয় ও অনাকাঙ্খিত।
তিনি বলেন, ঘটনাস্থল থেকে একটি বন্দুক উদ্ধার করা হয়েছে। আমি জানি না পল কেন এমনটা করলেন। এ ঘটনার নেপথ্যের কারণ এখনও উদঘাটন করতে পারিনি আমরা। তাদের পরিবারের সদস্যদের সঙ্গেও আমরা কথা বলেছি। কিন্তু কোনো সূত্র খুঁজে পাইনি।
লিমানি বলেন, ওই দম্পতির কোনো ফৌজদারি অপরাধের ঘটনা বা পারিবারিক কলহও নেই। তাদের সংসার ভালোই চলছিল। আর দশটা পরিবারের মতোই সুখী পরিবার ছিল তাদের। শিশুদের খেলার জন্য পুতুলও সাজানো ছিল ঘরভর্তি।
ওই দম্পতির প্রতিবেশী ডিক শ্যালেও ঘটনাটি সম্পর্কে কিছুই জানেন না। তিনি বলেন, আমি তাদের পরিবারের সদস্য না হতে পারি কিন্তু পরিবারের সদস্যের মতোই ওতপ্রোতভাবে মিশে গিয়েছিলাম। তিনি শোকভরা গলায় বলেন, গত ক্রিসমাসেও তাদের দুই সন্তানকে উপহার দিয়েছি। এই মর্মান্তিক ঘটনা কখনও ভুলব না।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: পর ব র র
এছাড়াও পড়ুন:
পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে বংশে তিনি প্রথম, তাই এত আয়োজন
চীনে উচ্চশিক্ষার জন্য অভিজাত বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মধ্যে প্রথম সারিতে রয়েছে বেইজিংয়ের পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়। সেখানে ভর্তি হওয়ার সুযোগ পাওয়া দেশটির যেকোনো শিক্ষার্থীর জন্য দারুণ সম্মানের। এ বছর পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির সুযোগ পেয়েছেন লি গুওইয়াও।
লির বাড়ি জেজিয়াং প্রদেশের ওয়েনজউ শহরে। এর আগে তাঁর বংশে শত বছরের ইতিহাসে কেউ পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সুযোগ পাননি। এত বড় সম্মানের উপলক্ষ উদ্যাপন করতে তাই বিন্দুমাত্র কার্পণ্য করেননি লির পরিবার ও গ্রামের বাসিন্দারা। রীতিমতো লালগালিচা বিছিয়ে, মোটর শোভাযাত্রা করে, ব্যান্ড বাজিয়ে পরিবার ও গ্রামের মুখ উজ্জ্বল করা লিকে সংবর্ধনা দেন তাঁরা, সঙ্গে ছিল ভূরিভোজের ব্যবস্থা। চীনের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম উইবোতে এই সংবর্ধনার ছবি ও ভিডিও রীতিমতো ভাইরাল হয়ে যায়।
চীনে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির জন্য জাতীয় পর্যায়ে একটি পরীক্ষা নেওয়া হয়। যেটি ‘গাওকাও’ নামে পরিচিত। তীব্র প্রতিযোগিতাপূর্ণ এই পরীক্ষা বেশ কঠিন। পরীক্ষায় মোট ৭৫০ নম্বরের মধ্যে লি পেয়েছেন ৬৯১।
লির গ্রামের এক প্রতিবেশী জানান, লির বাবা নির্মাণশ্রমিক। লির মা মাত্র ২ হাজার ৮০০ ইউয়ান বেতনে একটি সুপারশপে কাজ করেন। সত্যি বলতে, ছেলেটি সম্পূর্ণ নিজের চেষ্টা আর পরিশ্রমে এটা অর্জন করেছেন।
প্রতিবেশী আরেক গ্রামবাসী বলেন, লি তাঁর বাবার কাছ থেকে পাওয়া একটি পুরোনো মুঠোফোন দিয়ে প্রশ্নোত্তর অনুশীলন করতেন। সাপ্তাহিক ছুটির দিনগুলোয় গ্রামের গ্রন্থাগারে বসে পরীক্ষার প্রশ্নপত্র হাতে লিখে তারপর সেগুলো অনুশীলন করতেন। মাধ্যমিকে তিনি কখনো কোনো প্রাইভেট শিক্ষকের কাছে পড়েননি।
লিকে সংবর্ধনা দিতে শতাব্দীপ্রাচীন ঐতিহ্য ভেঙে তাঁদের গ্রামের পূর্বপুরুষদের মন্দিরের প্রধান ফটক খোলা হয়, যা একটি বিশেষ সম্মানের প্রতীক হিসেবে বিবেচিত।
লিকে সংবর্ধনা দেওয়ার ছবি ও ভিডিও চীনজুড়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আলোচনার জন্ম দিয়েছে।
অনলাইনে একজন লেখেন, ‘পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হতে ৬৯১ নম্বর! এটা অবিশ্বাস্য। সত্যিই পুরো পরিবারের মুখ উজ্জ্বল করেছে!’
তবে কেউ কেউ এই জমকালো উদ্যাপন নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন।
তাঁরা বলেছেন, এটা কি একটু বাড়াবাড়ি নয়? উৎসবটা খুবই জাঁকজমকপূর্ণ, এতে ছেলেটার ওপর অকারণ চাপ তৈরি হতে পারে। স্নাতক হওয়ার পর কি পরিবার তাঁর কাছ থেকে অনেক বেশি কিছু প্রত্যাশা করবে না?