আওয়ামী লীগের কর্মসূচির প্রতিবাদে শহরে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করেছে মহানগর বিএনপি নেতা জাকির খানপন্থি নারায়ণগঞ্জ জেলা ও মহানগর প্রজন্মদল।

বুধবার (৫ ফেব্রুয়ারী) বিকালে শহরের মহানগর বিএনপির সাবেক কার্যালয়ের সামনে থেকে জেলা প্রজন্মদলের আহ্বায়ক সলিমুল্লাহ্ করিম সেলিমের নেতৃত্বে এ বিক্ষোভ মিছিলটি বের করা হয়।


মিছিলটি শহরের প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে নারায়ণগঞ্জ প্রেসক্লাবের সামনে গিয়ে সংক্ষিপ্ত সমাবেশের মধ্যদিয়ে শেষ হয়। কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে এ মিছিল ও সমাবেশে আয়োজন জেলা ও মহানগর প্রজন্মদল।

সমাবেশে সলিমুল্লাহ্ করিম সেলিম বলেন, আমরা যখন এ সড়ক দিয়ে যাই। দেখানেই তাকাই সবখানেই দেখি ‘বঙ্গবন্ধু সড়ক, বঙ্গবন্ধু সড়ক।’ বঙ্গবন্ধু সড়কতে ৫ তারিখের পর থাকার কথা না।

তাহলে এ ইউনূস সাবেরা কি করে? নারায়ণগঞ্জের যারা সমন্বয়ক আছেন, আপনারাতো একবারও বললেন না এ নামটা বদল করা প্রয়োজন? কারণ, এ নামের সাথে মিশে আছে আওয়ামী লীগের নাম। আর আওয়ামী লীগ হলো এ দেশের সবচেয়ে বড় সৈরাচারী সরকারের নাম।

তারা ক্ষমতাকে ব্যবহার করে নির্বিচারে আমাদের ছাত্র-জনতার উপর গুলি চালিয়েছে। এ কথা কি আমরা ভুলে গেছি? না। আমরা একথা ভুলে যেতে চাই না।

তাই বর্তমান অর্ন্তবর্তীকালিন সরকারসহ সকল উপদেষ্ট এবং সমন্বয়কদের কাছে আমাদের দাবি থাকবে, অবিলম্বে বঙ্গবন্ধু সড়কের নাম পরিবর্তন করে মহান একাত্তোরে যে প্রথম শহীদ (শংকু সমাজদার) হয়েছিলেন তার নামে নামকরণ করা হোক।

তিনি বলেন, আপনারা জানেন আমাদের নারায়ণগঞ্জের সবচেয়ে জনপ্রিয় ছাত্রনেতা ছিলেন জাকির খান। সে একটি মিথ্যা মামলা বিগত দুই বছর যাবৎ কারাগারে। তিনি বর্তমানে অসুস্থ। তিনি যেন দ্রুত সুস্থ হতে পারে এবং অচিরেই কারামুক্ত হয়ে আপনাদের মাঝে ফিরে আসতে পারে, আমি আপনাদের কাছে সেই দোয়াই চাচ্ছি।

এছাড়া আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্য করে সেলিম বলেন, আপনাদের যদি লজ্জা থাকতো তাহলে এ মুখে আর কর্মসূচির কথা বলতেন না। বাংলার মানুষ আপনাদের চিনে ফেলেছে। তারা আর এখন অতটা বোকা নয় যে, আপনাদের ডাকে সাড়া দেবে।

আমি আমার প্রজন্মদলের সমস্ত নেতাকর্মীদের নিষিদ্ধ ছাত্রলীগসহ আওয়ামী লীগের প্রতিটি নেতাকর্মী ও তাদের দোসরদের বিরুদ্ধে সর্তক হওয়ার আহ্বান জানাচ্ছি। তারা যেন কোন ভাবেই প্রকাশ্যে না আসতে পারে সেদিকে আপনারা খেয়াল করবেন, প্রয়োজনে পুলিশকে খবর দিবেন। আমরা এ বাংলার মাটিতে আরও ষড়যন্ত্র হতে দেবো না।

জেলা প্রজন্মদলের সদস্য সচিব রায়হান উদ্দিন জিল্লুর সঞ্চালনায় সমাবেশে উপস্থিত ছিলেন, জেলা প্রজন্মদলের সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক সানি খোকন, যুগ্ম আহ্বায়ক জাকির হোসেন মামুন, হাজী সুমন, মহানগরের আহ্বায়ক সারোয়ার করিম, সদস্য সচিব আক্তার হোসেন অপু, যুগ্ম আহ্বায়ক মাহাবুব আলম রিপন, ফতুল্লা থানা প্রজন্মদলের আহ্বায়ক মো: ইউসুফ চৌধুরী, সদস্য সচিব আলমগীর দেওয়ান, যুগ্ম আহ্বায়ক কামাল হোসেন, সদর থানা প্রজন্মদলের আহ্বায়ক শাহীন মোল্লা, সদস্য সচিব ফারুক আহমেদ, বন্দর থানার সদস্য সচিব রফিকুল হাসান, যুগ্ম আহ্বায়ক শেখ আলমগীর, মো: অনিক, সিদ্ধিরগঞ্জ থানার আহ্বায়ক হাজী মনির হোসেন প্রধান, সদস্য সচিব আবুল হোসেন সানি, কাশীপুর ইউনিয়নের আহ্বায়ক মো: ফয়সাল, সদস্য সচিব ইমাম হোসেন, এনায়েত নগর ইউনিয়নের আহ্বায়ক আ: কাদির, সদস্য সচিব শাহীন নজরুল, যুগ্ম আহ্বায়ক তপন, রনি, ফারুক, জনি, জুলহাস, রিয়াজ প্রমূখ।
 

.

উৎস: Narayanganj Times

কীওয়ার্ড: ন র য়ণগঞ জ ন র য়ণগঞ জ আপন দ র আওয় ম

এছাড়াও পড়ুন:

কারখানার বর্জ্যে মরছে নদ

ডাইং কারখানার বর্জ্যে মরছে ব্রহ্মপুত্র নদ। প্রকাশ্যে এ দূষণ ঘটলেও দেখার কেউ নেই। প্রশাসনের ভূমিকা নিয়ে ক্ষোভ ভুক্তভোগীদের। পরিবেশ কর্মকর্তা চাইছেন সুনির্দিষ্ট প্রমাণসহ অভিযোগ।
নারায়ণগঞ্জের আড়াইহাজার ও নরসিংদী সদর উপজেলায় অন্তত ৬০টি ডাইং কারখানা ব্রহ্মপুত্র দূষণের সঙ্গে জড়িত বলে জানা গেছে। নদের তীরে অবস্থিত এসব কারখানায় এফ্লুয়েন্ট ট্রিটমেন্ট প্ল্যান্ট (ইটিপি) থাকলেও তারা বর্জ্য পরিশোধন না করেই প্রতিদিন নদে ফেলছে। এতে পরিবেশ দূষণের পাশাপাশি বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হচ্ছেন এ নদের সঙ্গে সম্পর্কিত মানুষজন।
অভিযোগ রয়েছে, নদের তীরে অবস্থিত কারখানাগুলো ইটিপি রাখলেও তারা বর্জ্য পরিশোধন না করেই নদে ফেলছে। অনেক কারখানায় ইটিপি থাকলেও খরচ কমাতে বেশির ভাগ সময় তা বন্ধ রাখা হয়। এ ছাড়া বেশকিছু কারখানার ইটিপি প্রয়োজনের তুলনায় ছোট হওয়ায় সঠিকভাবে বর্জ্য পরিশোধন করা সম্ভব হয় না।
পরিবেশ অধিদপ্তরের হিসাব অনুযায়ী, নরসিংদী সদর উপজেলায় রয়েছে ছোট-বড় ৫০টি ডাইং কারখানা। আড়াইহাজারে স্পিনিং মিলসহ ডাইং কারখানা রয়েছে অন্তত ১০টি। নরসিংদীর ডাইং কারখানাগুলোর মধ্যে পাঁচদোনা এলাকার আবদুল্লাহ ডাইং ইন্ডাস্ট্রিজ, বাঘহাটা এলাকার ফাইভ অ্যান্ড ফাইভ ডাইং অ্যান্ড প্রিন্টিং, সাজেদা ডাইং, আনোয়ার ডাইং, শতরূপা ডাইং, রুকু ডাইং, মেসার্স একতা ডাইং, কুড়েরপাড় এলাকার ব্রাদার্স টেক্সটাইল, ইভা ডাইং, ভগীরথপুর এলাকার এম এমকে ডাইং, নীলা ডাইং, এইচ এম ডাইং, মা সখিনা টেক্সটাইল, মুক্তাদিন ডাইং, পাঁচদোনা এলাকার তানিয়া ডাইং, সান ফ্লাওয়ার টেক্সটাইল প্রভৃতি।
আড়াইহাজারের কয়েকটি কারখানা হলো– ভাই ভাই স্পিনিং মিলস, ছাবেদ আলী স্পিনিং মিল, রফিকুল ডাইং, দিপু ডাইং ও হাজী হাবিবুর ডাইং।
আড়াইহাজার পৌরসভার চামুরকান্দি এলাকার বাসিন্দা মিয়াজউদ্দিন মিয়া বলেন, দখল-দূষণে অস্তিত্ব সংকটে পড়েছে নদটি। দেশীয় জাতের মাছের অভয়াশ্রম এ নদ থেকে মাছ হারিয়ে গেছে।
আড়াইহাজারের বালিয়াপাড়া এলাকার ইসমাইল হোসেন জানান, রফিকুল ডাইংয়ের বর্জ্য সরাসরি নদীতে ফেলা হচ্ছে। এতে পানির রং কালচে হয়ে গেছে। একই অবস্থা অন্য কারখানাগুলোর। বর্জ্য নদে ফেলার বিষয়ে স্থানীয়রা কথা বলতে গিয়ে উল্টো কারখানা কর্তৃপক্ষের হুমকির সম্মুখীন হয়েছেন। এ ব্যাপারে প্রশাসন কোনো ব্যবস্থা না নেওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেন তিনি।
রফিকুল ডাইংয়ের মালিক রফিকুল ইসলাম জানান, তাদের ইটিপি নেই। ডাইংয়ের পানি তারা নির্দিষ্ট পানির ট্যাংকে রাখেন, সরাসরি নদে ফেলেন না। ট্যাংকে জমানো পানি কোথায় ফেলেন জানতে চাইলে তিনি কথা বলতে রাজি হননি।
নরসিংদী সদর উপজেলার শিলমান্দী ইউনিয়নের গনেরগাঁও গ্রামের বাসিন্দা মাহবুব হাসান শুভর ভাষ্য, কুড়েরপাড় এলাকার ডাইং কারখানাগুলোর রং মেশানো বর্জ্য পরিশোধন না করে ব্রহ্মপুত্রে ফেলায় নদটি এখন মৃতপ্রায়। দূষণের কারণে দুর্গন্ধে এর পারে দাঁড়ানো যায় না। স্থানীয়রা অনেকবার প্রতিবাদ করেও প্রতিকার পাননি বলে জানান তিনি।
গত ১৫ এপ্রিল শিলমান্দী ইউনিয়নের কুড়েরপাড় এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, ইভা ডাইং অ্যান্ড প্রিন্টিং লিমিটেড নামে একটি কারখানা থেকে বর্জ্য এসে পড়ছে নদের পানিতে। ভিডিও করতে দেখে কারখানা কর্তৃপক্ষ বর্জ্য ফেলা বন্ধ করে দেয়।
ইভা ডাইংয়ের ইটিপি ইনচার্জ রেজাউল করিম জানান, বিভিন্ন মহলের সঙ্গে সম্পর্ক রেখে তারা প্রতিষ্ঠানটি চালাচ্ছেন। অনেক কারখানা সরাসরি নদে বর্জ্য ফেললেও তারা নদ দূষণ করেন না। 
একই এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, ফাতেমা ডাইংসহ ব্রহ্মপুত্রের তীরে গড়ে ওঠা কারখানাগুলো থেকেও নদে বর্জ্য ফেলা হচ্ছে। কিন্তু এ নিয়ে এসব কারখানার কেউ কথা বলতে রাজি হননি।
নরসিংদী পরিবেশ অধিদপ্তরের উপসহকারী পরিচালক কামরুজ্জামান জানান, নদে বর্জ্য ফেলার সুনির্দিষ্ট অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন নারায়ণগঞ্জ শাখার সাবেক সাধারণ সম্পাদক তারেক বাবু জানান, ব্রহ্মপুত্রে নদে সরাসরি বর্জ্য ফেলছে ডাইংসহ যেসব কারখানা সেসবের অধিকাংশই নরসিংদী জেলার অন্তর্গত। তাই নারায়ণগঞ্জ ও নরসিংদী প্রশাসনের যৌথ উদ্যোগে নদ দূষণমুক্ত করতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া প্রয়োজন।
আড়াইহাজারের ইউএনও সাজ্জাত হোসেন বলেন, কখনও কখনও কিছু কারখানা বর্জ্য পরিশোধন না করেই নদে ছেড়ে দেয়। কোন কারখানা নদ দূষণ করছে, স্থানীয় প্রশাসন ও পরিবেশবাদী সংগঠন তা জানালে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • নারায়ণগঞ্জ পাসপোর্ট অফিস চালু হচ্ছে ১০ মাস পর
  • অটোরিকশার ধাক্কায় ছিটকে বাসের নিচে, দুই বন্ধু নিহত
  • আজমির ওসমান বাহিনীর অন্যতম ক্যাডার মাসুম প্রকাশ্যে. আতঙ্ক
  • মে দিবসের সমাবেশকে সফল করতে মহানগর বিএনপির মতবিনিময় সভা 
  • নারায়ণগঞ্জে বালক (অনূর্ধ্ব-১৫) ফুটবল প্রতিযোগিতা ও প্রশিক্ষণের উদ্বোধন
  • নারায়ণগঞ্জে ডাকাত সন্দেহে গণপিটুনিতে তরুণের মৃত্যু
  • নারায়ণগঞ্জের কদম রসুল সেতুর সংযোগ সড়কের প্রবেশমুখ পুনর্নির্ধারণের দাবিতে স্মারকলিপি
  • জেলা প্রশাসককে ২৪’র শহীদদের স্মারক দিল জামায়াত
  • কমিউনিষ্ট পার্টির হাফিজের বিরুদ্ধে ইসমাইলের সংবাদ সম্মেলন
  • কারখানার বর্জ্যে মরছে নদ