বিএনপির জেলায় জেলায় সমাবেশ কর্মসূচি শুরু কাল
Published: 11th, February 2025 GMT
নিত্যপণ্যের দাম সহনীয় রাখা, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নতি ঘটানোসহ বিভিন্ন দাবিতে আগামীকাল বুধবার জেলায় জেলায় সমাবেশ কর্মসূচি শুরু করতে যাচ্ছে বিএনপি। ২৫ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত ৬৪ জেলায় সমাবেশ করবে দলটি। আগামীকাল প্রথম দিন খুলনা, লালমনিরহাটসহ ছয় জেলায় সমাবেশ করবে বিএনপি।
এ ছাড়া বিএনপি তিস্তা মেগা প্রকল্প বাস্তবায়নের দাবিতে দুই দিনের লাগাতার কর্মসূচির ঘোষণা দিয়েছে। ১৭ ও ১৮ ফেব্রুয়ারি এ কর্মসূচি পালন করবে দলটি।
বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী গতকাল সোমবার সংবাদ সম্মেলন করে জেলায় জেলায় সমাবেশ কর্মসূচির ঘোষণা দেন।
বিএনপি সূত্র জানায়, আগামীকাল খুলনা, লালমনিরহাট, সিরাজগঞ্জ, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, সুনামগঞ্জ ও পটুয়াখালী জেলায় সমাবেশ করবে দলটি। খুলনার সমাবেশে স্থায়ী কমিটির সদস্য হাফিজ উদ্দিন আহমদ, লালমনিরহাটে গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, সিরাজগঞ্জে নজরুল ইসলাম খান, ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ভাইস চেয়ারম্যান বরকতউল্লা, সুনামগঞ্জে চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য আরিফুল হক চৌধুরী ও পটুয়াখালীতে সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন।
১৬ ফেব্রুয়ারি ফেনীর সমাবেশে স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহ উদ্দিন আহমদ প্রধান অতিথি থাকবেন। ১৭ ফেব্রুয়ারি যশোরের সমাবেশে বক্তব্য দেবেন দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, টাঙ্গাইলে স্থায়ী কমিটির সদস্য আবদুল মঈন খান, কক্সবাজারে সালাহ উদ্দিন আহমদ, মাদারীপুরে সেলিমা রহমান, ঠাকুরগাঁওয়ে ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু, চাঁদপুরে ভাইস চেয়ারম্যান আবদুল আউয়াল মিন্টু, বগুড়ায় উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য আবদুস সালাম, শরীয়তপুরে ফরহাদ হালিম, ভোলায় চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য জহির উদ্দিন স্বপন, মৌলভীবাজারে আরিফুল হক চৌধুরী ও নেত্রকোনায় সৈয়দ এমরান সালেহ বক্তব্য দেবেন।
১৮ ফেব্রুয়ারি মানিকগঞ্জের সমাবেশে বক্তব্য দেবেন স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস। একই দিনে পাবনায় স্থায়ী কমিটির সদস্য ইকবাল হাসান মাহমুদ, পঞ্চগড়ে ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু, ঝিনাইদহে উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য আবুল খায়ের ভূঁইয়া, কুমিল্লা দক্ষিণে জয়নুল আবদিন ফারুক, হবিগঞ্জে যুগ্ম মহাসচিব শহীদ উদ্দীন চৌধুরী ও সৈয়দপুরে সৈয়দ এমরান সালেহ বক্তৃতা করবেন।
নোয়াখালীর সমাবেশে ১৯ ফেব্রুয়ারি স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বক্তব্য দেবেন। একই দিনে রাজবাড়ীতে ভাইস চেয়ারম্যান আসাদুজ্জামান রিপন, কুষ্টিয়ায় উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য মিজানুর রহমান মিনু, কিশোরগঞ্জে ফজলুর রহমান, পিরোজপুরে মজিবুর রহমান সরোয়ার, সিলেটে উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল ও জামালপুরে জহুরুল হক শাহজাদা মিয়া বক্তৃতা করবেন।
ঢাকায় সমাবেশ হবে ২০ ফেব্রুয়ারি। মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এ সমাবেশে বক্তব্য দেবেন। এদিন লক্ষ্মীপুরের সমাবেশে আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, বরিশাল দক্ষিণে সেলিমা রহমান, ফরিদপুরে আসাদুজ্জামান রিপন, চুয়াডাঙ্গায় চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য আমানউল্লাহ আমান, কুড়িগ্রামে আবদুস সালাম, নওগাঁয় মিজানুর রহমান মিনু ও ময়মনসিংহে আবদুল আউয়াল মিন্টু বক্তব্য দেবেন।
ঝালকাঠির সমাবেশে ২২ ফেব্রুয়ারি বক্তব্য দেবেন উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য জয়নাল আবেদীন। একই দিন চট্টগ্রাম দক্ষিণের সমাবেশে ভাইস চেয়ারম্যান আহমদ আযম খান, গোপালগঞ্জে আসাদুজ্জামান রিপন, রংপুরে আবুল খায়ের ভূঁইয়া, ময়মনসিংহ উত্তরে সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন, জয়পুরহাটে উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য হারুন অর রশিদ, কুমিল্লা উত্তরে এ এইচ এম মাহবুব উদ্দিন খোকন, বান্দরবানে যুগ্ম মহাসচিব হাবিব উন নবী খান ও নরসিংদীতে যুগ্ম মহাসচিব আবদুস সালাম আজাদ বক্তব্য দেবেন।
মুন্সিগঞ্জে সমাবেশে হবে ২৪ ফেব্রুয়ারি। এ সমাবেশে স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেন বক্তব্য দেবেন। এদিন বরিশাল উত্তরে হাফিজ উদ্দিন আহমদ, নড়াইলে ভাইস চেয়ারম্যান নিতাই রায় চৌধুরী, গাইবান্ধায় উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য হারুন অর রশিদ, রাজশাহীতে ফজলুর রহমান, রাঙামাটিতে হাবিব উন নবী খান, মাগুরায় যুগ্ম মহাসচিব আবদুস সালাম আজাদ বক্তৃতা করবেন।
শেষ দিন ২৫ ফেব্রুয়ারি নারায়ণগঞ্জের সমাবেশে মির্জা আব্বাস, গাজীপুরে গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, চট্টগ্রাম উত্তরে ইকবাল হাসান মাহমুদ, সাতক্ষীরায় নিতাই রায় চৌধুরী, বাগেরহাটে বরকতউল্লা বুলু, খাগড়াছড়িতে উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য মনিরুল হক চৌধুরী, মেহেরপুরে আমানউল্লাহ আমান, নীলফামারীতে উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য জয়নুল আবদীন ফারুক, চাঁপাইনবাবগঞ্জে উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য আবদুস সালাম ও দিনাজপুরে সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন বক্তব্য দেবেন।
তিস্তা নিয়ে ‘লাগাতার’ কর্মসূচিতিস্তা নদীর পানির ন্যায্য হিস্যা আদায় ও তিস্তা মেগা প্রকল্প বাস্তবায়নের দাবিতে তিস্তার তীরবর্তী অঞ্চলে দুই দিনের ‘লাগাতার’ কর্মসূচি ঘোষণা করেছে বিএনপি। ১৭ ফেব্রুয়ারি গাইবান্ধায় এ কর্মসূচির উদ্বোধন করবেন দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। ১৮ ফেব্রুয়ারি লালমনিরহাট সীমান্তে সমাপনী অনুষ্ঠানে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বক্তব্য দেবেন।
বিএনপির সূত্র জানিয়েছে, দুই দিনের কর্মসূচিতে তিস্তা নদীর কাউনিয়া সেতু, মহিপুর সেতু, তিস্তা ব্যারাজ পয়েন্টসহ বিভিন্ন পয়েন্টে তাঁবু করে এ সমাবেশ করবে দলটি।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: আবদ স স ল ম র রহম ন ল ইসল ম উপদ ষ ট ব এনপ র করব ন
এছাড়াও পড়ুন:
জাফলংয়ের পাথর কোয়ারিতে এখনও রাজনৈতিক ছায়া
ছাত্র জনতার অভ্যুত্থানের আগে সিলেটের জাফলংয়ের পাথর কোয়ারির নিয়ন্ত্রণ ছিল আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীর কবজায়। আওয়ামী লীগ ক্ষমতা হারানোর পর রাজত্ব বদলেছে। বিএনপি, যুবদল, ছাত্রদল ও শ্রমিক দলের নেতাকর্মীর হাতে এখন পাথর কোয়ারির চাবি। ইজারা স্থগিত থাকলেও রাতদিন বোমা মেশিন ও এক্সক্যাভেটর দিয়ে পাথর তোলা থেমে নেই। গত ৫ আগস্টের পর ৯ মাসে অন্তত ৪০০ কোটি টাকার বালু পাথর লুট হয়েছে বলে সংশ্লিষ্ট দপ্তরগুলো জানিয়েছে।
লুটের অভিযোগে একাধিক নেতাকর্মী দলের পদ পদবি হারালেও এ পথ থেকে তারা ফিরছেন না। থানায় মামলা করেও দমানো যাচ্ছে না তাদের। সর্বশেষ শনিবার সরকারের দুই উপদেষ্টা জাফলংয়ে পরিদর্শনে গেলে তাদের গাড়িবহরে বাধা দেওয়ার ঘটনা ঘটে। ভিডিও ফুটেজে যুবদল, ছাত্রদল ও শ্রমিক দলের একাধিক নেতাকেই ঘটনাস্থলে দেখা যায়।
শনিবার দুপুরে জাফলংয়ের প্রতিবেশগত সংকটাপন্ন এলাকা (ইসিএ) পরিদর্শনে যান বিদ্যুৎ ও জ্বালানি উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান এবং পরিবেশ উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান। সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা শেষে ফেরার পথে স্থানীয় বিএনপি ও ছাত্রদল নেতার নেতৃত্বে একদল মানুষ পাথর কোয়ারি চালুর দাবিতে উপদেষ্টাদের গাড়িবহরের সামনে দাঁড়িয়ে বিক্ষোভ করেন। এ সময় জাফলং ইউনিয়ন ছাত্রদলের সভাপতি আজির উদ্দিন, যুবদল নেতা সুমন আহমদ ও শ্রমিক দলের দেলওয়ার হোসেনকে দেখা যায়। এ ছাড়া জেলা ছাত্রদলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সোহেল আহমেদসহ আরও কয়েক নেতাকর্মীকে সেখানে দেখা গেছে বলে স্থানীয়রা জানিয়েছেন।
পরিদর্শন শেষে পরিবেশ উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেন, সিলেটের নান্দনিক ও নৈসর্গিক আবেদন আছে। এ রকম জায়গায় আমরা আর পাথর তোলার অনুমতি দেব না। এখানকার শ্রমিকদের বিকল্প কর্মসংস্থানের জন্য কাজ করছি। পরে বিকেলে সিলেট সার্কিট হাউসে সাংবাদিকদের উপদেষ্টা বলেন, অবৈধ পাথর উত্তোলনকারীর বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান বলেন, অবৈধভাবে বালু-পাথর তোলার কারণে পরিবেশের ধ্বংস হচ্ছে। আপাতত পাথর তুলতে দেওয়া হবে না।
গাড়িবহরে বাধার বিষয়ে গোয়াইনঘাট থানার ওসি সরকার মোহাম্মদ তোফায়েল আহমেদ জানান, হঠাৎ কিছু লোক উপদেষ্টাদের গাড়ি আটকে দেয়। পরে পুলিশ তাদের সরিয়ে দিয়ে রাস্তা চলাচলের উপযোগী করে।
শুরুতে জাফলং নিয়ন্ত্রণের অভিযোগ ওঠে সিলেট জেলা বিএনপির যুগ্ম সম্পাদক রফিকুল ইসলাম, বিএনপি থেকে বহিষ্কৃত গোয়াইনঘাটের সাবেক চেয়ারম্যান শাহ আলম স্বপনসহ যুবদল ও ছাত্রদল নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে। এ অভিযোগে গত ১৬ অক্টোবর রফিকুল ইসলামের দলীয় পদ স্থগিত করে কেন্দ্রীয় কমিটি। সর্বশেষ ৯ জুন জেলা যুবদলের সহসাংগঠনিক সম্পাদক আবুল কাশেমকে বহিষ্কার করে কেন্দ্রীয় যুবদল। বালু ও পাথর তোলার দায়ে গত ২৫ মার্চ ৩১ জনের বিরুদ্ধে গোয়াইনঘাট থানায় মামলা করে পরিবেশ অধিদপ্তর।
এ ব্যাপারে জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদ এমরান আহমদ চৌধুরী বলেন, দলের কেউ জড়িত থাকলে ছাড় দেওয়া হচ্ছে না। অনেকে দলের নাম ভাঙিয়েও অপরাধ করছে।
আজিরের নেতৃত্বে দুই উপদেষ্টার গাড়িবহরে বাধা প্রসঙ্গে জেলা ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক দেলোয়ার হোসেন দিনার বলেন, বিষয়টি কেন্দ্রীয় কমিটিকে জানানো হয়েছে। তাঁর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।