দিনাজপুর-৬ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য শিবলী সাদিকের স্বপ্নপুরী পিকনিক স্পটে ফের অভিযান চালিয়েছে বন্যপ্রাণী অপরাধ দমন ইউনিট। এ সময় ৪৮টি বন্যপ্রাণী উদ্ধার করা হয়েছে। বন্যপ্রাণী সংরক্ষণের বৈধ কাগজ দেখাতে না পারায় চিড়িয়াখানাটি বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে।

মঙ্গলবার দুপুরে এ অভিযান চালানো হয়। বন্যপ্রাণী অপরাধ দমন ইউনিটের সদস্য ছাড়াও অভিযানে দিনাজপুর সামাজিক বন বিভাগ, বন্যপ্রাণী ব্যবস্থাপনা ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগ চট্টগ্রাম ও রাজশাহীর কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

দিনাজপুর-৬ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য শিবলী সাদিক এবং তাঁর চাচা জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও জেলা জাতীয় পার্টির সভাপতি দেলোয়ার হোসেন ১৯৮৯ সালে নবাবগঞ্জের আফতাবগঞ্জ এলাকায় স্বপ্নপুরী পিকনিক স্পট চালু করেন। অভিযোগ উঠেছে, ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর বসবাসের জায়গা, কবরস্থান ও বনের জায়গা দখল করে স্পটটি গড়ে উঠেছে। সেখানে অবৈধভাবে পশু সংরক্ষণ করেন তারা।

চাচা ও ভাতিজা প্রভাবশালী রাজনীতিবিদ হওয়ায় প্রশাসন তাদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নিতে পারেনি। আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর শিবলী সাদিক পালিয়ে গেছেন। এর পর থেকে স্বপ্নপুরীর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে তোড়জোড় শুরু হয়। চলতি বছরের ২৬ জানুয়ারি পার্কটিতে অভিযান চালায় বন্যপ্রাণী অপরাধ দমন ইউনিট। ৭৪টি বন্যপ্রাণী জব্দ করা হয়। 

এর মধ্যে ২২টি প্রাণীকে বিভিন্ন সরকারি চিড়িয়াখানায় নেওয়া হয়। অবশিষ্ট ৫২টি স্বপ্নপুরী কর্তৃপক্ষের জিম্মায় রাখা হয়। চার দিনের মধ্যে কর্তৃপক্ষকে বৈধ কাগজপত্র উপস্থাপন করতে বলা হয়। তারা কাগজপত্র দেখাতে না পারায় দ্বিতীয়বার এই অভিযান চালানো হয়। 

মঙ্গলবার দুপুর থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত অভিযানে ৫টি ভালুক, ৫টি মায়া হরিণ, ১১টি বানর, ১৭টি সাম্বার হরিণ, ৫টি রাজধনেশ, দুটি শজারু, একটি ভোদড় উদ্ধার করা হয়। 

অভিযানের বিষয়ে জানতে চাইলে বন্যপ্রাণী অপরাধ দমন ইউনিট ও জেলা বন বিভাগের কোনো কর্মকর্তা কথা বলতে রাজি হননি। 

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক অভিযানে থাকা এক কর্মকর্তা জানান, উদ্ধার প্রাণীগুলোকে গাজীপুর ও ডুলাহাজারা সাফারি পার্কসহ বিভিন্ন বন্যপ্রাণী অভয়ারণ্যের কর্তৃপক্ষের কাছে হস্তান্তর করা হবে। স্বপ্নপুরী কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থার প্রক্রিয়া চলছে। 

ওই কর্মকর্তা আরও বলেন, বন্যপ্রাণী (সংরক্ষণ ও নিরাপত্তা) আইন ২০১২ অনুযায়ী অনুমোদনহীনভাবে বন্যপ্রাণী সংগ্রহ, প্রদর্শন ও সংরক্ষণ করা দণ্ডনীয় অপরাধ। তাই বন অধিদপ্তর সব ধরনের অবৈধ মিনি চিড়িয়াখানা বন্ধে কঠোর অবস্থানে রয়েছে। কোথাও বন্যপ্রাণী অবৈধভাবে আটকে রাখার তথ্য পেলে তাৎক্ষণিকভাবে নিকটস্থ বন বিভাগ বা বন্যপ্রাণী অপরাধ দমন ইউনিটকে জানানোর জন্য অনুরোধ করেন তারা।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ব যবস থ

এছাড়াও পড়ুন:

ক্রান্তিকালে বিসিবির প্রস্তুতির অভাব দেখছেন তামিম

জাতীয় দলের দীর্ঘদিনের নির্ভরতার প্রতীক তামিম ইকবাল মনে করছেন, সাকিব-মুশফিক-রিয়াদদের বিদায়ের পর বাংলাদেশের ক্রিকেটে যে সংকট তৈরি হয়েছে, তার জন্য আগেভাগে প্রস্তুত ছিল না বিসিবি। এই পরিস্থিতিতে হাই পারফরম্যান্স (এইচপি), টাইগার্স ও ‘এ’ দলের কাঠামোতে আরও বেশি বিনিয়োগের ওপর জোর দিয়েছেন তিনি।

সমকালকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তামিম বলেন, ‘পাঁচজন অভিজ্ঞ ক্রিকেটার সরে গেছে, যাদের অভিজ্ঞতা ১৫-১৭ বছরের। তারা হাজারের বেশি ম্যাচ খেলেছে। এই মানের ক্রিকেটারদের বিদায়ে শূন্যতা আসবেই। কিন্তু প্রশ্ন হচ্ছে, বোর্ড কি এই ক্রান্তিকালের জন্য প্রস্তুত ছিল?’

তামিমের মতে, জাতীয় দলের অনেক ক্রিকেটারই এখন ৭-১০ বছর ধরে খেলছেন। এই সময়টাতে তাদের পাশাপাশি ভবিষ্যতের জন্য বিকল্প খেলোয়াড় গড়ে তোলার উদ্যোগ নেওয়া উচিত ছিল। তিনি বলেন, ‘জাতীয় দলকে যতটা সম্ভব সুযোগ-সুবিধা দিন, কিন্তু ভবিষ্যতের কথা ভেবে এইচপি, টাইগার্স ও “এ” দলে বেশি ফোকাস করুন। এই জায়গাগুলোতে ভালো বিনিয়োগ না হলে জাতীয় দল সবসময় ধুঁকতেই থাকবে।’

তবে সামগ্রিকভাবে দেশের ক্রিকেট নিয়ে আশাবাদী তামিম। তার ভাষায়, ‘আমরা কখনোই তিন সংস্করণে একসঙ্গে ভালো করিনি। এই দলটাকেও যদি সময় দেওয়া হয়, তারা ঘুরে দাঁড়াবে।’

ভবিষ্যৎ তারকা নিয়ে কথা বলতে গিয়ে তামিম বেশ কয়েকজনের নাম তুলে ধরেন। তিনি বলেন, ‘পেস বিভাগে তাসকিন আছে, নতুন নাহিদ রানা ভালো করছে। তাইজুল চমৎকার স্পিনার। হৃদয়, জাকের আলীরাও সম্ভাবনাময়। এদের মধ্য থেকেই কেউ কেউ বড় তারকা হয়ে উঠতে পারে।’

সবশেষে তিনি বোর্ডের প্রতি ক্রিকেটারদের পাশে দাঁড়ানোর আহ্বান জানিয়ে বলেন, ‘ক্রিকেটারদের আত্মবিশ্বাস দিন, বোঝান– তারা বোর্ডের পূর্ণ সমর্থন পাচ্ছে।’

সম্পর্কিত নিবন্ধ