বাড়তি ২ হাজার কোটি টাকা চায় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়
Published: 14th, February 2025 GMT
আগামী ২০২৫-২৬ অর্থবছরের বাজেটের জন্য জননিরাপত্তা বিভাগকে ২৮ হাজার ৬৮৭ কোটি টাকার সীমা বেঁধে দেওয়া হয়। তবে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এই বিভাগটি বলছে, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কার্যক্রম সুসংহত ও গতিশীল করার জন্য আরও ২ হাজার ৬৯ কোটি টাকা প্রয়োজন। আগামী বাজেটে এই বাড়তি বরাদ্দের অনুরোধ জানিয়ে এরই মধ্যে অর্থ মন্ত্রণালয়ে চিঠি পাঠিয়েছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। যৌক্তিকতা আমলে নিয়ে অর্থ মন্ত্রণালয় বাড়তি অর্থায়নের বিষয়টি সক্রিয় বিবেচনা করছে। সংশ্লিষ্ট সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলছে, আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় কয়েক বছরে বিভিন্ন বাহিনীর বিশেষায়িত ইউনিট চালু হয়েছে। পাশাপাশি সক্ষমতা বাড়ানোর অংশ হিসেবে বেতন-ভাতা, যানবাহন, অস্ত্র ও গোলাবারুদ, নিরাপত্তা সামগ্রী, যন্ত্রপাতি, তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তি সরঞ্জাম, ভবন নির্মাণ খাতে অর্থের চাহিদা বেড়েছে। তবে অর্থ বিভাগ জননিরাপত্তা বিভাগকে ২৮ হাজার ৬৮৭ কোটি ৭৬ লাখ টাকার মধ্যে আগামী বাজেট প্রস্তুত করার নির্দেশনা দিয়েছে, যা চলতি বাজেটের চেয়ে প্রায় ১ হাজার ৮১০ কোটি টাকা বা ৬ দশমিক ৭ শতাংশ বেশি।
এদিকে বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীগুলোর কার্যকারিতা ও জবাবদিহি নিশ্চিত করার ক্ষেত্রে অগ্রাধিকার দিয়েছে। জননিরাপত্তা বিভাগ এ কার্যক্রম বাস্তবায়নে কাজ করছে।
অর্থ ও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, বাজেটের দুটি অংশের একটি উন্নয়ন বাজেট, অন্যটি অনুন্নয়ন বা পরিচালন বাজেট। জননিরাপত্তা বিভাগের অনুকূলে বরাদ্দের প্রায় পুরোটাই থাকে পরিচালন বাজেটে। চলতি ২০২৪-২৫ অর্থবছরে মোট ২৬ হাজার ৮৭৭ কোটি টাকা বরাদ্দের মধ্যে ২৫ হাজার ১৬৯ কোটি টাকাই রয়েছে এ খাতে। আগামী অর্থবছরের জন্য অর্থ মন্ত্রণালয়ের বেঁধে দেওয়া ২৮ হাজার ৬৮৭ কোটি ৭৬ লাখ টাকার মধ্যে পরিচালন বাজেটে ২৬ হাজার ৮৬৩ কোটি ৯১ লাখ টাকা রাখার প্রস্তাব করা হয়। তবে জননিরাপত্তা বিভাগ থেকে এ খাতে আরও ২ হাজার ৬৯ কোটি টাকা চাওয়া হয়েছে।
অর্থ ও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা সমকালকে জানান, জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার আন্দোলন দমাতে অতিরিক্ত বল প্রয়োগ করে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। এতে মজুত গোলাবারুদের অধিকাংশই শেষ হয়ে যায়। গণঅভ্যুত্থানের সময় বিশেষ করে পুলিশ বাহিনীর ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়। এর পর ছয় মাস পার হলেও মানুষের জীবন ও সম্পদের নিরাপত্তা স্বস্তিদায়ক পর্যায়ে আসেনি।
তা ছাড়া অন্তর্বর্তী সরকারের ঘোষণা অনুযায়ী আগামী ডিসেম্বরে সংসদ নির্বাচন হওয়ার কথা। সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্যও আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নতি জরুরি। এসব যৌক্তিকতা বিবেচনায় নিয়ে দাবি করা বাড়তি টাকার পুরোটা সম্ভব না হলেও কিছু অর্থ দেওয়ার বিষয়ে সক্রিয় বিবেচনা করছে অর্থ মন্ত্রণালয়।
এ ব্যাপারে জননিরাপত্তা বিভাগের অতিরিক্ত সচিব (প্রশাসন ও অর্থ অনুবিভাগ) মো.
পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক (আইজিপি) মুহাম্মদ নুরুল হুদা সমকালকে বলেন, মানুষের মৌলিক তিনটি চাহিদার মধ্যে একটি নিরাপত্তা। তাই জনগণের যথাযথ নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে বাড়তি বরাদ্দ প্রয়োজন। বিশেষ করে ৫ আগস্ট গণঅভ্যুত্থানের পরে ও আগে অনেক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। সেগুলো কাটিয়ে উঠতে হবে। আবার বাড়তি বরাদ্দের ক্ষেত্রে সরকারের রাজস্ব আদায় কেমন হচ্ছে, সেটিও দেখতে হবে। সব মিলিয়ে যতটুকু বাড়ানো সম্ভব সে অনুযায়ী সিদ্ধান্ত নিতে হবে।
বাজেট ব্যবস্থাপনা কমিটির বৈঠক
বাড়তি বরাদ্দ চাওয়ার আগে অধীনস্থ দপ্তর, অধিদপ্তর ও সংস্থার প্রতিনিধি নিয়ে গত ১৩ জানুয়ারি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে জননিরাপত্তা বিভাগের বাজেট ব্যবস্থাপনা কমিটির বৈঠক হয়। মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব নাসিমুল গনির সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এ বৈঠকে বিভিন্ন সংস্থার প্রতিনিধিরা তাদের দাবি-দাওয়া তুলে ধরেন। বৈঠকের কার্যপত্র অনুযায়ী, আগামী বাজেটে বরাদ্দ বিষয়ে অতিরিক্ত আইজিপি মো. তৌফিক মাহবুব চৌধুরী জানান, পরিচালন বাজেটে বাংলাদেশ পুলিশের ভ্রমণ খরচ, পোশাক, খাদ্যদ্রব্য, পেট্রোল, অয়েল ও লুব্রিকেন্ট, প্রশিক্ষণ, ওষুধ ও প্রতিষেধক, চিকিৎসা ও শল্য চিকিৎসা সরঞ্জাম, মোটরযান, বেতার সরঞ্জাম, আসবাব, পৌরকর খাতে অতিরিক্ত এক হাজার ৩১৫ কোটি ১১ লাখ ৯২ হাজার টাকা প্রয়োজন।
তবে সার্বিক অর্থনৈতিক পরিস্থিতি বিবেচনায় নিয়ে পরিচালন ব্যয় বাবদ পুলিশের জন্য অতিরিক্ত ৮৫২ কোটি টাকাসহ আগামী বাজেটে মোট ১৮ হাজার ৪৮৩ কোটি টাকা বরাদ্দ রাখার প্রাথমিক সিদ্ধান্ত হয়। চলতি বাজেটে এ খাতে বরাদ্দ রয়েছে ১৭ হাজার ৩৬৭ কোটি ৫৬ লাখ টাকা।
বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) প্রতিনিধি অতিরিক্ত মহাপরিচালক (সদরদপ্তর) ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. শাহাদাত শিকদার যৌক্তিকতা তুলে ধরে তাদের পরিচালন বাজেটের আওতায় এক হাজার ১১৫ কোটি ৪৩ লাখ ১৫ হাজার টাকা অতিরিক্ত বরাদ্দ দাবি করেন। মূলত বেতার সরঞ্জাম, চিকিৎসা ও শল্য চিকিৎসা সরঞ্জাম, অস্ত্র ও গোলাবারুদ, নিরাপত্তা সামগ্রী, রেশন, কাঁচামাল ও খুচরা যন্ত্রাংশ, পোশাক, গোয়েন্দা কার্যাবলি, আকাশযান, জলযান, মোটরযান কেনা ও মেরামত খাতে এ বাড়তি বরাদ্দ চাওয়া হয়।
বৈঠকে বিজিবির পরিচালন বাজেটে অতিরিক্ত চাহিদার প্রায় পুরোটাসহ ৪ হাজার ৬৯১ কোটি টাকা রাখার সিদ্ধান্ত হয়। চলতি বাজেটে এ খাতে বরাদ্দ রয়েছে ৪ হাজার ২৯১ কোটি ৩২ লাখ টাকা। বাংলাদেশ কোস্টগার্ডের কমান্ডার তাসনিম আহমদ জানান, গভীর সমুদ্র ও সমুদ্রসীমায় চোরাচালান, মাদক, মানব পাচারসহ নানা অপরাধ দমনে আকাশযান (মেরিন হেলিকপ্টার), জলযান এবং ভূমি অধিগ্রহণ খাতে ৩৪৯ কোটি ৫০ লাখ টাকা অতিরিক্ত বরাদ্দ প্রয়োজন। তবে অতিরিক্ত ৬৩ কোটি টাকাসহ কোস্টগার্ডের জন্য পরিচালন বাজেটে মোট ৮৮৮ কোটি টাকা বরাদ্দ রাখার সিদ্ধান্ত হয়। চলতি বাজেটে এ খাতে রয়েছে ৮৩১ কোটি ১৪ লাখ টাকা।
এভাবে বিভিন্ন সংস্থা থেকে পরিচালন বাজেটের আওতায় ২ হাজার ৮৭৩ কোটি ৩৫ লাখ টাকা বাড়তি দাবি করা হয়। তবে চলমান অর্থনৈতিক নাজুক পরিস্থিতি বিবেচনায় নিয়ে বৈঠকে বাড়তি ২ হাজার ৬৯ কোটি টাকা বরাদ্দের প্রাথমিক সিদ্ধান্ত হয়।
রাজস্ব বাড়াতে মনোযোগী হওয়ার পরামর্শ
আগামী অর্থবছরের রাজস্ব লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে বৈঠকে সবাইকে মনোযোগী হওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়। সংস্থাগুলোকে নিজ নিজ ক্ষেত্র চিহ্নিত করে সরকারের নির্বাহী আদেশের মাধ্যমে রাজস্ব বাড়ানোর পরিকল্পনা নিতে অনুরোধ জানানো হয়। আগামী অর্থবছরের জন্য জননিরাপত্তা বিভাগসহ এর অধীন বিভিন্ন সংস্থার মোট ১ হাজার ২৪ কোটি টাকার রাজস্ব লক্ষ্যমাত্রা দেওয়া হয়। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি ৯৫৫ কোটি ৮৪ লাখ টাকা রাজস্ব আদায় করার কথা পুলিশের। এ ছাড়া জননিরাপত্তা বিভাগের ১৬ কোটি ২০ লাখ, বিজিবির ২৯ কোটি ৪৭ লাখ, আনসার ও ভিডিপি অধিদপ্তরের ১৯ কোটি ১০ লাখ এবং কোস্টগার্ডকে ৩ কোটি ৪০ লাখ টাকার রাজস্বের লক্ষ্যমাত্রা দেওয়া হয়। চলতি বাজেটে এসব প্রতিষ্ঠানের রাজস্বের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৯৩০ কোটি ৯৪ লাখ ৩৮ হাজার টাকা।
উল্লেখ্য, আগামী ২০২৫-২৬ অর্থবছরের জন্য প্রাথমিকভাবে ৮ লাখ ৩০ হাজার কোটি টাকা ব্যয়ের পরিকল্পনা করছে অন্তর্বর্তী সরকার। বাজেটের আকার এমন ধরেই আয়-ব্যয়ের খসড়া রূপরেখা তৈরি করেছে অর্থ মন্ত্রণালয়। চলতি ২০২৪-২৫ অর্থবছরের বাজেটের আকার ৭ লাখ ৯৭ হাজার কোটি টাকা।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: ব জ ট ২০২৪ ২৫ স দ ধ ন ত হয় বর দ দ চ বর দ দ র পর স থ ত সরঞ জ ম র জন য সরক র
এছাড়াও পড়ুন:
৯ মাসে ১৪ হাজার কোটি টাকার ব্যবসা
দেশের শীর্ষস্থানীয় রড উৎপাদন ও বিপণনকারী প্রতিষ্ঠান বিএসআরএমের দুই কোম্পানি মিলে ৯ মাসে ১৪ হাজার ৩৫৪ কোটি টাকার ব্যবসা করেছে। কোম্পানি দুটি হলো বিএসআরএম লিমিটেড ও বিএসআরএম স্টিল। শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত বিএসআরএমের এই দুটি কোম্পানিরই মূল ব্যবসা রডের।
চলতি ২০২৪–২৫ অর্থবছরের প্রথম ৯ মাসে (জুলাই–মার্চ) কোম্পানি দুটি সম্মিলিতভাবে এই ব্যবসা করেছে। গত ২০২৩–২৪ অর্থবছরের প্রথম ৯ মাসে কোম্পানি দুটির সম্মিলিত ব্যবসা ছিল ১২ হাজার ৬৯৫ কোটি টাকা। সেই হিসাবে এক বছরের ব্যবধানে বিএসআরএমের ব্যবসা বেড়েছে ১ হাজার ৬৫৯ কোটি টাকা বা ১৩ শতাংশ।
চলতি অর্থবছরের প্রথম ৯ মাসের যে আর্থিক প্রতিবেদন কোম্পানি দুটি প্রকাশ করেছে, তা থেকে তাদের ব্যবসার এই চিত্র পাওয়া গেছে। গত সোমবার কোম্পানি দুটির পরিচালনা পর্ষদের সভায় এই আর্থিক প্রতিবেদন অনুমোদন করা হয়। গতকাল বুধবার তা ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) ও চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) মাধ্যমে বিনিয়োগকারীদের জানানো হয়েছে। আর্থিক প্রতিবেদনের তথ্য অনুযায়ী, চলতি অর্থবছরের জুলাই থেকে মার্চ পর্যন্ত কোম্পানি দুটি ১৪ হাজার ৩৫৪ কোটি টাকার যে ব্যবসা করেছে, তার মধ্যে বিএসআরএম লিমিটেডের ব্যবসা ৬ হাজার ৯৩৮ কোটি টাকার। আর বিএসআরএম স্টিলের ব্যবসার পরিমাণ ছিল ৭ হাজার ৪২০ কোটি টাকা। ব্যবসা বৃদ্ধি পাওয়ায় কোম্পানি দুটি মুনাফাও বেড়েছে।
চলতি অর্থবছরের প্রথম ৯ মাসে কোম্পানির ব্যবসা আগের বছরের একই সময়ের চেয়ে বেড়েছে। কারণ, আমাদের নতুন একটি কারখানা এ সময়ের মধ্যে উৎপাদনে যুক্ত হয়েছে। তপন সেনগুপ্ত, উপব্যবস্থাপনা পরিচালক, বিএসআরএম গ্রুপবিএসআরএম লিমিটেড চলতি অর্থবছরের প্রথম ৯ মাসে মুনাফা করেছে ৪১৫ কোটি টাকা। আগের অর্থবছরের একই সময়ে যার পরিমাণ ছিল ৩৩৪ কোটি টাকা। সেই হিসাবে এক বছরের ব্যবধানে কোম্পানিটির মুনাফা বেড়েছে ৮১ কোটি টাকা বা ২৪ শতাংশের বেশি। আর চলতি বছরের প্রথম ৯ মাসে বিএসআরএম স্টিল মুনাফা করেছে ৩০২ কোটি টাকা। আগের অর্থবছরের একই সময়ে যার পরিমাণ ছিল ২৭৯ কোটি টাকা। সেই হিসাবে এক বছরের ব্যবধানে কোম্পানিটির মুনাফা বেড়েছে ২৩ কোটি টাকা বা সোয়া ৮ শতাংশ।
আর্থিক প্রতিবেদনের তথ্য অনুযায়ী, গত জুলাই থেকে মার্চ—এই ৯ মাসে সম্মিলিতভাবে কোম্পানি দুটি মিলে ৭১৭ কোটি টাকা মুনাফা করেছে। আগের অর্থবছরের একই সময়ে যার পরিমাণ ছিল ৬১৩ কোটি টাকা। সেই হিসাবে এক বছরের ব্যবধানে কোম্পানি দুটির সম্মিলিত মুনাফা ১০৪ কোটি টাকা বা ১৭ শতাংশ বেড়েছে।
মুনাফা বৃদ্ধির কারণ হিসেবে কোম্পানি–সংশ্লিষ্টরা বলছেন, গত ৯ মাসে নতুন একটি কারখানার উৎপাদনে এসেছে। তাতে কোম্পানির বিক্রি বেড়েছে। ব্যবসা বৃদ্ধি পাওয়ায় মুনাফাও বেড়েছে। পাশাপাশি উৎপাদন খরচ কমাতেও সচেষ্ট ছিল কোম্পানিটি। এসব কারণে কোম্পানির মুনাফায় ইতিবাচক প্রভাব পড়েছে।
বর্তমানে বিএসআরএমের রড তৈরির তিনটি কারখানা রয়েছে। চট্টগ্রামের মিরসরাই, ফৌজদারহাট ও নাসিরাবাদে—তিনটি কারখানা অবস্থিত। এই তিন কারখানার মধ্যে মিরসরাই ও ফৌজদারহাটের কারখানা দুটি শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত বিএসআরএম স্টিলের আওতাধীন। আর নাসিরাবাদের কারখানাটি বিএসআরএম লিমিটেডের আওতায় রয়েছে। দুটি কোম্পানিরই মূল ব্যবসা রডের। তবে বিএসআরএম লিমিটেডের ব্যবসার সঙ্গে রডের বাইরে এঙ্গেল, চ্যানেলের আয়ও যুক্ত হয়।
বিএসআরএমের ব্যবসা ও মুনাফা বৃদ্ধির বিষয়ে জানতে চাইলে কোম্পানিটির উপব্যবস্থাপনা পরিচালক তপন সেনগুপ্ত প্রথম আলোকে বলেন, ‘চলতি অর্থবছরের প্রথম ৯ মাসে কোম্পানির ব্যবসা আগের বছরের একই সময়ের চেয়ে বেড়েছে। কারণ, আমাদের নতুন একটি কারখানা এ সময়ের মধ্যে উৎপাদনে যুক্ত হয়েছে। যদিও কারখানাটিতে এখনো পুরোদমে উৎপাদন শুরু হয়নি। তারপরও আংশিক উৎপাদন শুরুর কারণে বিক্রি বেড়েছে। আবার উৎপাদন খরচ কমানোর ক্ষেত্রে আমরা সচেষ্ট ছিলাম। এসব কারণে মুনাফা বেড়েছে।’
অর্থবছরের ৯ মাসের পাশাপাশি চলতি বছরের প্রথম তিন মাসের আয়–ব্যয়ের হিসাবও আলাদাভাবে প্রকাশ করেছে কোম্পানিটি। তাতে দেখা যায়, চলতি বছরের প্রথম তিন মাসে বিএসআরএম লিমিটেড ২ হাজার ৯১৮ কোটি টাকার ব্যবসা করেছে। গত বছরের একই সময়ে যার পরিমাণ ছিল ২ হাজার ৩২১ কোটি টাকা। গত বছরের প্রথম তিন মাসের তুলনায় চলতি বছরের প্রথম তিন মাসে কোম্পানিটির ব্যবসা বেড়েছে ৫৯৭ কোটি টাকার। ব্যবসা বৃদ্ধি পাওয়ায় মুনাফাও বেড়েছে। চলতি বছরের প্রথম তিন মাসে বিএসআরএম লিমিটেড মুনাফা করেছে ২২৫ কোটি টাকা। গত বছরের একই সময়ে যার পরিমাণ ছিল ১৪৭ কোটি টাকা।
একইভাবে বিএসআরএম স্টিল চলতি বছরের প্রথম তিন মাসে ব্যবসা করেছে ৩ হাজার ৩৪৯ কোটি টাকার। এ সময় কোম্পানিটি মুনাফা করেছে ১৬২ কোটি টাকা। গত বছরের একই সময়ের চেয়ে কোম্পানিটির ব্যবসা বেড়েছে ৬০২ কোটি টাকা। আর মুনাফা বেড়েছে ৩৭ কোটি টাকা।