Samakal:
2025-06-16@06:07:47 GMT

নজর বিদ্যানন্দের স্টলে

Published: 16th, February 2025 GMT

নজর বিদ্যানন্দের স্টলে

‘প্রতি টন কাগজের জন্য ১৭টি গাছের মৃত্যু হয়। আমাদের জ্ঞানের ক্ষুধা মেটাতে যে গাছ আত্মত্যাগ করেছে; তার প্রতি সম্মান জানিয়ে আরেকটি গাছ রোপণ করি’– স্লোগানে চট্টগ্রামে অমর একুশে বইমেলায় স্টল তৈরি করেছে বিদ্যানন্দ। পাঠক-দর্শনার্থী ঘুরেফিরে ভিড় করছেন এই স্টলে।
চট্টগ্রাম নগরের এম এ আজিজ স্টেডিয়াম-সংলগ্ন জিমনেশিয়াম মাঠে এই মেলার আয়োজন করা হয়েছে। ১ ফেব্রুয়ারি শুরু হওয়া এই মেলা চলবে ২৬ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত।
গতকাল রোববার মেলায় গিয়ে দেখা গেছে, বিদ্যানন্দের স্টলের চারপাশে নানান আকারের গাছের কাটা অংশ। সামনের অংশে ঝুলছে লম্বা আকৃতির গাছের অংশ। রশিতে ঝুলানো গাছের একটি অংশ আবার কাটা; যেখানে রয়েছে রক্তের রং। এর নিচে লম্বা লম্বা গাছের কাটা অংশ দেওয়া হয়েছে পুরো অংশজুড়ে। স্টলের সাইনবোর্ড গাছের তৈরি। সেখানেও রাখা হয়েছে গোল আকারের গাছের একাধিক টুকরো। নামফলকের ডান পাশে লেখা হয়েছে, ‘কাগজ রিসাইকেল করি/বৃক্ষের প্রাণ বাঁচাই।’

পুরো স্টল তৈরি করা হয়েছে গাছের টুকরো দিয়ে। গাছের প্রতি মানুষের নির্মমতা থেকে বৃক্ষনিধন রোধে সচেতনতার বার্তা দিতে এই স্টল। পড়ে থাকা ও অব্যবহৃত গাছ সংগ্রহ 
করে সেগুলোকে নানা আকারে কেটে আকর্ষণীয়ভাবে তৈরি করা হয়েছে স্টলটি। এখানে ৫০০ টাকার বই কিনলে দেওয়া হচ্ছে গাছ উপহার। কাগজ রিসাইকেল করে তা দিয়ে গল্প ও কবিতার বই প্রকাশ করেছে একুশে পদকপ্রাপ্ত এই সংগঠন।

এই স্টল নিয়ে কৌতূহল দেখা গেছে পাঠক ও দর্শনার্থীর মধ্যে। কেউ ঘুরে ঘুরে দেখছেন। কেউ আবার হাত দিয়ে ছুঁয়ে দেখছেন। এর মধ্যে একজনকে দেখা গেল, কয়েকটি বই কিনে গাছের চারা উপহার পেয়ে আনন্দ প্রকাশ করছেন। তাদের একজন কলেজ পড়ুয়া শিমলা। চার বান্ধবীকে সঙ্গে নিয়ে এসেছেন বইমেলায়। তিনি বলেন, ‘উদ্বোধনের পর থেকে মেলায় আসার ইচ্ছা ছিল। কিন্তু সবাইকে একসঙ্গে না পাওয়ায় আসা হয়নি। প্রথমবারের মতো এসে গাছ দিয়ে তৈরি স্টলটি নজর কেড়েছে। সত্যি, এক কথায় দারুণ হয়েছে স্টলটি। গাছের ওপর মানুষের যে নির্মমতা, তা খুব সুন্দর করে ফুটিয়ে তোলা হয়েছে এখানে।’
তাঁর বান্ধবী কানিজ বলেন, ‘পছন্দের তিনটি বই কিনেছি; সঙ্গে উপহার পেয়েছি গাছের চারা। সত্যি, এ এক অন্যরকম অনুভূতি।’ অনেকে মোবাইল ফোনে সেলফি তুলে তা সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে দিচ্ছেন।
বিদ্যানন্দ ফাউন্ডেশনের স্টল তত্ত্বাবধায়ক ওমর ফারুক বলেন, ‘গাছের ওপর মানুষের নির্মমতা প্রতিনিয়ত বাড়ছে। আইন থাকলেও তা মানা হচ্ছে না। গাছের প্রতি মানুষের এমন নির্মমতা রোধ করতে ও গাছ লাগানোর প্রতি উৎসাহ বাড়াতে এই স্টল তৈরি করা হয়েছে। এখানে ব্যবহৃত সব গাছ নষ্ট ও অব্যবহৃত।’
বিদ্যানন্দের প্রতিষ্ঠাতা ও পুনর্ব্যবহৃত কাগজে ছাপানো ‘প্রতিধ্বনি’ বইয়ের লেখক কিশোর কুমার দাস বলেন, ‘নির্বিচারে গাছ ধ্বংস রোধে সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে। আমাদের সবাইকে গাছের প্রাণ বাঁচাতে কাগজ পুনর্ব্যবহার করতে হবে। আশা করছি, এটি অনুসরণ করবেন অন্যরাও।’
সংস্থার পরিচালনা পরিষদের সদস্য জামাল উদ্দিন বলেন, ‘ব্যবহৃত কাগজ না ফেলে ও না পুড়িয়ে পুনর্ব্যবহার করা হলে একদিকে বৃক্ষের প্রাণ বাঁচবে; অন্যদিকে পরিবেশ দূষণমুক্ত হবে। আমরা চাই গাছ বাঁচাতে পুনর্ব্যবহৃত কাগজে নতুন বই প্রকাশ করতে এগিয়ে আসুক সবাই।’

এ বিষয়ে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের মেয়র ডা.

শাহাদাত হোসেন বলেন, ‘বর্তমান প্রজন্মের ছেলেমেয়েরা মোবাইল ও মাদকে আসক্ত। এই আসক্তি থেকে মুক্তি দিতে পারে বই। সৃজনশীল মেধাবী প্রজন্ম গড়ে তুলতেও বড় ভূমিকা রাখবে বই। বইমেলা সৃজনশীল, মননশীল ও বিজ্ঞানমনস্ক প্রজন্ম গড়তে ভূমিকা রাখবে।’
চট্টগ্রাম সৃজনশীল প্রকাশক পরিষদের সভাপতি ও বইমেলা কমিটির সদস্য সচিব মো. সাহাব উদ্দীন হাসান বাবু বলেন, ‘এবারের মেলায় ১৪০টি স্টলে ভালো ভালো বই এসেছে। তথ্যপ্রযুক্তির উৎকর্ষ হলেও মলাটবদ্ধ বইয়ের কদর কখনও শেষ হবে না।’
শিশু প্রকাশের মালিক আরিফ রায়হান বলেন, মেলার শুরুর দিকে বই বেচার হার কম হলেও এখন বাড়ছে।

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: বইম ল ব দ য নন দ ন র মমত ব যবহ ত বইম ল

এছাড়াও পড়ুন:

ইরানের হামলায় ২০ ইসরায়েলি নিহত

ইসরায়েলের সঙ্গে ইরানের পাল্টাপাল্টি হামলা চারদিন ধরে চলছে। এসব হামলায় উভয় দেশের মধ্যে নিহতের সংখ্যা বেড়েই চলছে। ইসরায়েলের জাতীয় পরিষেবা জানিয়েছে, আজ সোমবার ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় ইসরায়েলে পাঁচজন নিহত হয়েছেন। এ নিয়ে গত শুক্রবার থেকে আজ সোমবার পর্যন্ত ইসরায়েলে নিহতের সংখ্যা  ২০ জনে পৌঁছুল। আজ সোমবার এ তথ্য জানিয়েছে বিবিসি।

অন্যদিকে আল-জাজিরা বলছে, ইরানের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ইসরায়েলি বিমান হামলায় রোববার পর্যন্ত ইরানে নিহতের সংখ্যা বেড়ে ২২৪ জনে পৌঁছেছে।

ইসরায়েলের জাতীয় জরুরি পরিষেবার প্রধান ম্যাগেন ডেভিড অ্যাডমের বরাত দিয়ে বিবিসি জানায়, মধ্য ইসরায়েলজুড়ে ইরানের হামলায় চারজন নিহত হয়েছেন। এর মধ্যে দুইজন নারী। 

এর আগে সিএনএন ইসরায়েলের ১৫ জন নিহত হওয়ার খবর দেয়। ইসরায়েলের সরকারি সম্প্রচারমাধ্যম কানের খবর বলছে, বন্দরনগরী হাইফায় অন্তত দুইজন আহত হয়েছেন। এছাড়া, তিনজন নিখোঁজ রয়েছেন।

রোববার ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা বাহিনী (আইডিএফ) জানায়, ইরান থেকে নতুন করে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা শুরু হয়েছে। একাধিক ক্ষেপণাস্ত্র শনাক্ত করেছে ইসরায়েল। বর্তমানে হামলা প্রতিহত করার কাজ চলছে বলে জানিয়েছে আইডিএফ।

আজ সিএনএনের এক খবরে বলা হয়েছে, তেল আবিব ও জেরুজালেমসহ ইসরায়েলের বিভিন্ন শহরে জরুরি সতর্ক সংকেত (সাইরেন) বাজতে শুরু করেছে। আইডিএফ সতর্ক করে বলেছে, তাদের প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা পুরোপুরি অভেদ্য নয়।

সিএনএনের একজন প্রযোজক জেরুজালেমে সাইরেন এবং একাধিক বিস্ফোরণের শব্দ শুনেছেন। তার তোলা ভিডিওতে আকাশে বহু ক্ষেপণাস্ত্র ছুটে যেতে দেখা গেছে।

ইসরায়েলের জরুরি পরিষেবা সংস্থা ম্যাগেন ডেভিড আদোম জানিয়েছে, তাদের দলগুলো আক্রান্ত এলাকার দিকে রওনা দিয়েছে।

সারা দেশের নাগরিকদের আশ্রয়কেন্দ্রে ঢুকতে এবং পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত সেখানে থাকার আহ্বান জানিয়েছে ইসরায়েলি সেনাবাহিনী।

বিবিসির এক প্রতিবেদনে বলা হয়, ইসরায়েলি সেনাবাহিনী এক্সে দেওয়া এক পোস্টে বলেছে, বর্তমানে বিমানবাহিনী হামলা প্রতিহত করার পাশাপাশি পাল্টা হামলা চালানোর কাজ করছে।

ইসরায়েলি সংবাদমাধ্যম ওয়াইনেট নিউজ জানিয়েছে, মধ্য ইসরায়েলের পেতাহ টিকভা শহরের একটি ভবনে একটি ইসরায়েলি ক্ষেপণাস্ত্র সরাসরি আঘাত হেনেছে। হামলার ফলে ওই স্থানে আগুন ধরে যায়। তবে এ ঘটনায় তাৎক্ষণিকভাবে কোনো হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি।

এদিকে মধ্য ইরানে একাধিক বিমান হামলা চালিয়েছে ইসরায়েল। দেশটির সেনাবাহিনী এ তথ্য জানিয়েছে। আল জাজিরার এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সেনাবাহিনীর দাবি, বিভিন্ন ক্ষেপণাস্ত্র স্থাপনা লক্ষ্য করে এসব হামলা চালানো হয়েছে।

ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘ইসরায়েলি বিমানবাহিনী সফলভাবে মধ্য ইরানে অবস্থিত একাধিক স্থাপনায় আঘাত হেনেছে। আমাদের গোয়েন্দা তথ্য বলছে, এসব স্থাপনা থেকে ইসরায়েলের দিকে ক্ষেপণাস্ত্র ছোড়া হচ্ছিল।’

তবে ইসরায়েলের এই হামলার প্রতিক্রিয়ায় ইরান এখনো আনুষ্ঠানিক বিবৃতি দেয়নি।

এদিকে ইরানের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ইসরায়েলি বিমান হামলায় রোববার পর্যন্ত নিহতের সংখ্যা বেড়ে ২২৪ জনে পৌঁছেছে।

বার্তা সংস্থা অ্যাসোসিয়েটেড প্রেসের (এপি) এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, নিহতদের মধ্যে ৯০ শতাংশেরও বেশি বেসামরিক নাগরিক। হামলায় ১ হাজার ২৭০ জনেরও বেশি মানুষ আহত হয়েছেন।

এপির প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, গত ১৩ জুন ইরানে বিমান হামলা শুরু করে ইসরায়েল। ওই হামলায় ইরানের নাতাঞ্জ ও ইসফাহান অঞ্চলের পারমাণবিক স্থাপনা ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। বেশ কয়েকজন উচ্চপদস্থ সামরিক কর্মকর্তা ও পারমাণবিক বিজ্ঞানী নিহত হন। ইরানে বর্তমানে মসজিদ ও মেট্রো স্টেশনগুলোকে অস্থায়ী আশ্রয়কেন্দ্র হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে।

ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় ইসরায়েলের তিন শিশুসহ অন্তত ১৫ জন নিহত হয়েছেন। রোববার ইসরায়েল সরকারের বরাতে এ তথ্য জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের সংবাদমাধ্যম সিএনএন।

ইসরায়েল কর্তৃপক্ষ বলেছে, এছাড়া ইরানের হামলায় কমপক্ষে ৩৮৫ জন আহত হয়েছেন, যার মধ্যে সাত জনের অবস্থা গুরুতর।

এদিকে ইসরায়েলি পুলিশের বরাতে আল জাজিরা জানিয়েছে, তেল আবিবের দক্ষিণে অবস্থিত বাত ইয়াম শহরে ৬ জন নিহত হয়েছেন, যাদের মধ্যে দুই শিশু রয়েছে। এছাড়া সাতজন এখনও নিখোঁজ। ধ্বংসস্তূপের মধ্যে উদ্ধার অভিযান চালাচ্ছেন জরুরি সেবাদানকারীরা।

সম্পর্কিত নিবন্ধ