সিদ্ধিরগঞ্জে আওয়ামী সন্ত্রাসী রিপন গ্রেপ্তার, ৫৪ ধারায় আদালতে প্রেরণ
Published: 18th, February 2025 GMT
সিদ্ধিরগঞ্জের নাসিক ৫নং ওয়ার্ড সাইলো এলাকার আওয়ামী লীগের সন্ত্রাসী জাহাঙ্গীর আলম (রিপন) কে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। সোমবার দিবাগত রাতে গ্রেপ্তারের পর রিপনকে ছাড়িয়ে নিতে শুরু হয় তদ্ববীর ও দেন দরবার।
পরে মঙ্গলবার দুপুরে গ্রেপ্তার রিপনকে ৫৪ ধারায় আদালতে পাঠায় পুলিশ। এ ঘটনায় এলাকা জুড়ে চলছে আলোচনা-সমালোচার ঝড়।
জানাগেছে, সোমবার রাতে ৫নং ওয়ার্ড সাইলো এলাকায় সিদ্ধিরগঞ্জ থানার উপপরিদর্শক (এসআই) ওয়াসিম আকরাম অভিযান চালিয়ে আওয়ামী লীগের সন্ত্রাসী জাহাঙ্গীর আলম রিপনকে গ্রেপ্তার করে। কয়েকজন বিএনপি নেতার তদবিরে রহস্যজনক কারনে রিপনকে ৫৪ ধারায় আদালতে পাঠায় পুলিশ।
এঘটনায় সিদ্ধিরগঞ্জ থানার এসআই ওয়াসিম আকরামের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, জাহাঙ্গীর আলম রিপন নামে একজনকে গ্রেপ্তার করেছি। কিন্ত আসামিকে কি মামলায় আদালতে পাঠানো হয়েছে জানতে চাইলে রহস্য জনক কারনে তিনি বলেন কি মামলায় আদালতে পাঠানো হয়েছে আমি জানি না। থানায় খোঁজ নিয়ে দেখেন আমি ব্যস্ত আছি বলে কল কেটে দেন।
পরে এ বিষয়য়ে সিদ্ধিরগঞ্জ থানার ওসি শাহিনুর আলম এর সাথে যোগাযোগ হলে তিনি জানান, এলাকাবাসীর তথ্যের ভিক্তিতে আওয়ামীলীগের সন্ত্রাসী জাহাঙ্গীর আলম রিপনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
তবে এলাকার এক পক্ষ বলছে রিপন আওয়ামী লীগ নেতা আরেক পক্ষ বলছে রিপন বিএনপি নেতা। তাই গ্রেপ্তারকৃত রিপনকে ৫৪ ধারায় আদালতে পাঠানো হয়েছে। পরবর্তীতে এ বিষয়ে তদন্ত করে ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।
উৎস: Narayanganj Times
কীওয়ার্ড: স দ ধ রগঞ জ ন র য়ণগঞ জ আওয় ম ল গ জ হ ঙ গ র আলম গ র প ত র কর স দ ধ রগঞ জ র পনক আওয় ম
এছাড়াও পড়ুন:
ভুলে যাবেন না, শরীরচর্চা একটি সুন্নত
খেলাধুলা ও শারীরিক ব্যায়াম আধুনিক জীবনে প্রায়ই অবহেলিত হয়, বিশেষ করে ব্যস্ততার কারণে। কিন্তু ইসলামে খেলাধুলার একটি গৌরবময় ইতিহাস রয়েছে, যা নবীজি (সা.)-এর জীবন থেকে শুরু হয়েছে। তিনি নিজে বিভিন্ন খেলাধুলায় অংশ নিয়েছিলেন এবং এর আধ্যাত্মিক ও সামাজিক উপকারিতার কথা উল্লেখ করেছেন।
শরীরচর্চার আধ্যাত্মিক উপকারিতাশরীরচর্চা ইসলামে একটি ভুলে যাওয়া সুন্নাহ, যা আমাদের শারীরিক, মানসিক ও আধ্যাত্মিকভাবে সমৃদ্ধ করে। এটি আমাদের মনোযোগ ও স্থিতিস্থাপকতা বাড়ায়, সম্প্রদায়ের বন্ধন জোরদার করে এবং হারাম থেকে দূরে রাখে। যেমন:
দুটি নিয়ামত এমন আছে, যার প্রতি অনেক মানুষ প্রতারিত হয়: স্বাস্থ্য ও অবসর সময়।সহিহ বুখারী, হাদিস: ৬,৪১২১. মনোযোগ ও অবিচলতা গড়ে তোলে
ইসলাম আমাদের নিজেকে উন্নত করতে ও পরকালে উত্তম স্থান অর্জনের জন্য সংগ্রাম করতে শেখায়। শরীরচর্চা এই প্রক্রিয়ায় সহায়ক; কারণ, এটি মনোযোগ, সংগ্রাম এবং ধৈর্যের মাধ্যমে আমাদের মন ও শরীরকে শক্তিশালী করে।
শারীরিক ব্যায়ামের সময় আমরা যখন মাত্রা অতিক্রম করে যাই, তখন তাৎক্ষণিক আরাম ত্যাগ করে দীর্ঘমেয়াদি লক্ষ্য অর্জনের জন্য মানসিক শক্তি অর্জন হয়।
আরও পড়ুনউত্তম ব্যবসায়ী হওয়ার নববি কৌশল০৯ জুন ২০২৫২. সমাজের শক্তি বৃদ্ধি করে
ইসলামে সামাজিক ধারণা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। আমরা সবাই এক উম্মাহর অংশ। কোরআনে বলা হয়েছে, ‘নিশ্চয়ই এই যে তোমাদের উম্মাহ, এটা তো একই উম্মাহ, আর আমি তোমাদের রব, অতএব আমার ইবাদত করো।’ (সুরা আম্বিয়া, আয়াত: ৯২)
জুমার নামাজ, হজের মতো ইবাদত আমাদের সম্প্রদায়ের বন্ধনকে শক্তিশালী করে।
দলগত খেলাধুলা বা ব্যায়াম অনুশলীন এই সমস্যার সমাধান দিতে পারে। সাইক্লিং, দৌড় বা সাঁতারের মতো সামাজিক আয়োজনের মাধ্যমে মুসলিমদের মধ্যে বন্ধন তৈরি করে এবং যোগাযোগ, দলগত কাজ ও স্থিতিস্থাপকতার দক্ষতা বৃদ্ধি করে। এটি ব্যক্তিগত ও পেশাগত জীবনেও ইতিবাচক প্রভাব ফেলে।
৩. হারাম থেকে মনোযোগ সরিয়ে নেয়
আধুনিক সমাজে হারাম ক্রিয়াকলাপ—যেমন মদ্যপান, অবৈধ সম্পর্ক, জুয়া বা অনৈতিক কনটেন্ট—সহজলভ্য। এই প্রলোভনগুলো থেকে নিজেকে দূরে রাখা, বিশেষ করে তরুণদের জন্য একটি বড় চ্যালেঞ্জ। নিয়মিত শরীরচর্চা আমাদের সময় ও শক্তিকে ইতিবাচক কাজে লাগাতে সাহায্য করে। জিমে শরীরচর্চা বা মাঠে শারীরিক প্রশিক্ষণ আমাদের মনকে হারাম থেকে দূরে রাখে এবং দ্বীনের প্রতি নিবেদিত রাখে।
সাইক্লিং, দৌড় বা সাঁতারের মতো সামাজিক আয়োজনের মাধ্যমে মুসলিমদের মধ্যে বন্ধন তৈরি করে এবং যোগাযোগ, দলগত কাজ ও স্থিতিস্থাপকতার দক্ষতা বৃদ্ধি করে।নবীজি (সা.) বলেছেন, ‘দুটি নিয়ামত এমন আছে, যার প্রতি অনেক মানুষ প্রতারিত হয়: স্বাস্থ্য ও অবসর সময়।’ (সহিহ বুখারী, হাদিস: ৬,৪১২)
শরীরচর্চা আমাদের স্বাস্থ্য ও সময়কে সঠিকভাবে ব্যবহার করতে সাহায্য করে, যা আমাদের দ্বীন ও দুনিয়া উভয়ের জন্য কল্যাণকর।
আরও পড়ুনযে ৪টি পরীক্ষা নবীজি (সা.)–এর জীবনকে দৃঢ়তা দিয়েছে২২ জুলাই ২০২৫হাদিসে উল্লিখিত খেলাধুলানবীজি (সা.)-এর জীবনে খেলাধুলার গুরুত্ব উল্লেখযোগ্য। তিনি নিজে বিভিন্ন শারীরিক কসরতের মতো খেলায় অংশ নিয়েছিলেন এবং এর প্রশংসা করেছেন। কিছু উল্লেখযোগ্য খেলা হলো:
দৌড়: হজরত আয়েশা (রা.) বর্ণনা করেছেন, তিনি নবী (সা.)-এর সঙ্গে দৌড় প্রতিযোগিতায় অংশ নিয়েছিলেন। তিনি বলেন, ‘আমি রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর সঙ্গে দৌড় দিয়েছিলাম এবং তাঁকে হারিয়েছিলাম। পরে যখন আমার ওজন বেড়ে গেল, তিনি আমাকে হারিয়েছিলেন।’ (সুনানে আবু দাউদ, হাদিস: ২,৫৭৮)
বোঝা যায়, শুধু পুরুষ নয়, নারীদের জন্যও এ ধরনের খেলায় অংশগ্রহণের মাধ্যমে শরীরচর্চা করা অনুমোদিত।
তিরন্দাজি: নবীজি (সা.) বলেছেন, ‘তোমরা তিরন্দাজি অনুশীলন করো, কারণ এটি তোমাদের শক্তি বৃদ্ধি করে।’ (সহিহ মুসলিম, হাদিস: ১,৯১৭)
তিরন্দাজি শারীরিক ও মানসিক দক্ষতা বাড়ায়।
আমি রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর সঙ্গে দৌড় দিয়েছিলাম এবং তাঁকে হারিয়েছিলাম। পরে যখন আমার ওজন বেড়ে গেল, তিনি আমাকে হারিয়েছিলেন।হজরত আয়েশা (রা.), সুনানে আবু দাউদ, হাদিস: ২,৫৭৮ঘোড়দৌড়: নবীজি (সা.) ঘোড়দৌড়ের প্রশংসা করেছেন এবং এতে অংশগ্রহণকারীদের জন্য পুরস্কারের ব্যবস্থা করেছেন। (সুনানে নাসাঈ, হাদিস: ৩,৫৮৫)
সাঁতার: নবীজি (সা.) বলেছেন, ‘তোমাদের সন্তানদের সাঁতার, তিরন্দাজি এবং ঘোড়সওয়ারি শেখাও।’ (মুসনাদে আহমদ, হাদিস: ১৬,৫৮২)
কুস্তি: নবীজি (সা.) একবার নিজেই রুকানা নামক একজন ব্যক্তির সঙ্গে কুস্তি লড়েছিলেন এবং তাঁকে পরাজিত করেছিলেন। (সুনানে আবু দাউদ, হাদিস: ৪,০৭৮)
এই হাদিসগুলো প্রমাণ করে যে খেলাধুলা শুধু শারীরিকভাবে উপকারী নয়, বরং এটি সুন্নাহের একটি অংশ। নবীজির (সা.) জীবন আমাদের জন্য অনুকরণীয়। আধুনিক বিশ্বে যেখানে সামাজিক বিভেদ ও হারামের প্রলোভন আমাদের চ্যালেঞ্জের মুখে ফেলে, সেখানে এই খেলাধুলা ও শরীরচর্চা আমাদের দ্বীন ও সমাজকে শক্তিশালী করতে পারে।
আরও পড়ুনসুস্থ জীবনের জন্য নবীজি (সা.)–এর কয়েকটি সুন্নাহ২৯ জুন ২০২৫