বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজে (শেবামেক) শিক্ষার্থীদের ডাকা কমপ্লিট শাটডাউন কর্মসূচির তৃতীয় দিন চলছে। আজ বুধবার (১৯ ফেব্রুয়ারি) তিন দিন ধরে কলেজের একাডেমিক ও প্রশাসনিক ভবনে শিক্ষার্থীদের দেওয়া তালা ঝুলছে। যার ফলে কলেজের সব কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে।

কলেজের একাডেমিক ভবনসহ ক্যাম্পাসে সুনসান নীরবতা বিরাজ করছে। আজ সকাল ১১টায় শিক্ষার্থীরা কলেজ ক্যাম্পাস থেকে বিক্ষোভ মিছিল ও মানববন্ধন করেন। পরে দুপুর ১২টায় তারা হাসপাতালের প্রধান ফটকের সামনের সড়কের একাংশ অবরোধ করে বিক্ষোভ করেন।

শিক্ষার্থীরা জানান, কলেজে চলমান শিক্ষক সংকট নিরসনের দাবি না মানা পর্যন্ত তাদের এ আন্দোলন চলবে। আর কলেজ প্রশাসন বলছে, তারা বিষয়টি মন্ত্রণালয়সহ সংশ্লিষ্ট দপ্তরকে জানিয়েছে। সেখান থেকে উদ্যোগ না নিলে শূন্য পদে শিক্ষক পদায়ন সম্ভব নয়।

আরো পড়ুন:

গাইবান্ধায় ডাল খেয়ে ২ শতাধিক মানুষ অসুস্থ

পিকনিকের খাবার খেয়ে হাসপাতালে ৪৫ জন

আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা দাবি করেন, শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজে ৩৩৪টি শিক্ষকের মঞ্জুরীকৃত পদ রয়েছে। যার মধ্যে বর্তমানে শিক্ষক আছে মাত্র ১৬১টি পদে। অর্ধেকের বেশি অর্থাৎ ১৭৩টি শিক্ষকের পদ শূন্য রয়েছে। শিক্ষক সংকটের কারণে একাডেমিক কার্যক্রমে ব্যাঘাত ঘটছে। যা ভবিষ্যতে চিকিৎসা ব্যবস্থার উপরও নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে বলে মনে করেন শিক্ষার্থীরা। এ অবস্থায় অনতিবিলম্বে মেডিকেল কলেজের সব বিভাগে শূন্য পদগুলোতে শিক্ষক পদায়ন করা না হলে আন্দোলন চলমান থাকবে বলে জানান তারা। 

এদিকে, কলেজে শাটডাউন থাকায় হাসপাতালে চিকিৎসায় ব্যাঘাত ঘটছে না। তবে মাইক্রোবায়োলজি পরীক্ষা-নিরীক্ষায় কিছুটা ভোগান্তির শিকার হচ্ছে। শিক্ষক সংকটের কথা স্বীকার করে কলেজ প্রশাসন। তারা বলছে, বিষয়টি নিয়ে মন্ত্রণালয়ে জানানো হয়েছে। দ্রুত সমস্যা সমাধান করা হবে।
 

ঢাকা/পলাশ/বকুল

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর কল জ র

এছাড়াও পড়ুন:

একজন চা শ্রমিকের দিনে আয় ১৭৮ টাকা

হবিগঞ্জে ছোট-বড় মিলেয়ে চা বাগানের সংখ্যা প্রায় ৪১টি। এসব বাগানের বাসিন্দা প্রায় দেড় লাখ। এর মধ্যে, স্থায়ী ও অস্থায়ী মিলে ৩২ থেকে ৩৫ হাজার মানুষ চা পাতা উত্তোলনে জড়িত।

চা বাগানে একজন শ্রমিককে প্রতিদিন ২৩ কেজি পাতা তুলতে হয়। এর বিনিময়ে মজুরি পান ১৭৮ টাকা ৫০ পয়সা। অভিযোগ রয়েছে, কোনো কোনো বাগানে নিয়মিত এই মজুরিও দেওয়া হয় না।

শ্রমিকদের দাবি, দৈনিক মজুরি ৫০০ থেকে ৬০০ টাকা করতে হবে। বর্তমানে যে মজুরি পাওয়া যায় তা দিয়ে সংসার চলে না। প্রতিদিনই নিত্যপণ্যের দাম বাড়ছে। সেই সঙ্গে চা শ্রমিকদের নৈমিত্তিক ছুটির ব্যবস্থা করতে হবে।

আরো পড়ুন:

বৈষম্য কেন? নারী শ্রমিকেরা পান না সমান মজুরি

ধান কাটায় আধুনিক যন্ত্রের ব্যবহার, পেশা বদলাচ্ছেন কৃষি শ্রমিকেরা

সরেজমিনে কয়েকটি বাগান ঘুরে দেখা যায়, শ্রমিকরা ছোট্ট কুঠুরিতে গাদাগাদি করে পরিবারের সবাইকে নিয়ে বসবাস করেন। পুষ্টিকর খাবার তো দূরের কথা, দু-বেলা পেটভরে খেতে পারেন না।

শ্রমিকদের দাবির বিষয়ে জানতে চাইলে বাংলাদেশ চা শ্রমিক ইউনিয়নের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক নৃপেন পাল বলেন, ‘‘দুই বছর অন্তর চা শ্রমিকদের বিভিন্ন দাবি ও সমস্যা নিয়ে চা বাগান মালিক পক্ষের সংগঠনের সঙ্গে চা শ্রমিক ইউনিয়ন প্রতিনিধির বৈঠক হয়। সর্বশেষ গত বছরের আগস্টে বৈঠক হয়েছে। সে সময় ৮ টাকা ৫০ পয়সা বৃদ্ধি পেয়ে মজুরি ১৭৮ টাকা ৫০ নির্ধারিত হয়েছে।’’

শ্রমিকদের কষ্টের কথা স্বীকার করে তিনি বলেন, ‘‘দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতিতে এই টাকায় চলা যায় না। দেশের কোথাও এতো সস্তা শ্রমের দাম নেই। বর্তমানে একজন কৃষিশ্রমিক দিনে ৫০০-১০০০ টাকা আয় করেন, একজন  রিকশাচালকের প্রতিদিনের আয় ৭০০ থেকে ৯০০ টাকা। সেখানে একজন চা শ্রমিক পান ১৭৮ টাকা ৫০ পয়সা। এজন্য তাকে প্রতিদিন ২৩ কেজি পাতা তুলতে হয়।’’

চা শ্রমিকদের অধিকার আদায়ে নাটক ও গানের মাধ্যমে দাবি জানিয়ে আসা জেলার চুনারুঘাট উপজেলার দেউন্দি প্রতীক থিয়েটারের সভাপতি সুনীল বিশ্বাস বলেন, ‘‘দৈনিক ১৭৮ টাকা ৫০ পয়সা মজুরিতে শ্রমিকদের চলা কঠিন হয়ে পড়েছে। অচিরেই মজুরি ৬০০ টাকা নির্ধারণ করা হোক। এছাড়া, শ্রমিকদের আরো সুযোগ সুবিধা বৃদ্ধি করা প্রয়োজন।’’

ঢাকা/রাজীব

সম্পর্কিত নিবন্ধ