কুমিল্লায় জামায়াত আমির ডা. শফিকুর রহমানের পথসভায় যোগ দিতে এসে বাসচাপায় জসিম উদ্দীন (৫২) নামের এক জামায়াত কর্মী নিহত হয়েছেন। শুক্রবার সন্ধ্যা সোয়া ৭টার দিকে লালমাই উপজেলার বাগমারা উত্তর বাজার এলাকায় এ দুর্ঘটনা ঘটে। নিহত উপজেলার বাগমারা উত্তর ইউনিয়নের সৈয়দপুর পশ্চিমপাড়া এলাকার প্রয়াত আলী আশ্রাফ মোল্লার ছেলে। সমকালকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন লালমাই থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো.

শাহ আলম।

দলীয় নেতারা জানান, জামায়াত আমির ডা. শফিকুর রহমান সাংগঠনিক সফরে কুমিল্লা-নোয়াখালী আঞ্চলিক মহাসড়ক হয়ে লক্ষ্মীপুর যাচ্ছিলেন। সন্ধ্যার পর লালমাইয়ের উত্তর বাজার এলাকায় তার বহরের চারটি গাড়ি যানজটে আটকা পড়ে। পথসভাস্থলে পৌঁছার কিছুক্ষণ আগে তার গাড়িবহর যানজটে আটকা পড়ে। তখন তিনিসহ সংগঠনের ১৫ থেকে ২০ জন কর্মী যানজট নিয়ন্ত্রণের দায়িত্ব পালন শুরু করেন। আমিরকে নিয়ে তারা পথসভায় চলে যাওয়ার পর জামায়াতের কর্মী জসিম উদ্দীন বাসচাপায় মারা যান।

প্রত্যক্ষদর্শী রিকশাচালক আবু তালেব বলেন, তিশা পরিবহনের ঢাকামুখী একটি দ্রুতগতির বাস চাপা দিলে জসিম উদ্দীনের মাথা থেকে অনেক রক্ত বের হয়। নিহত ব্যক্তির ভাই মোহাম্মদ ইব্রাহীম বলেন, দুর্ঘটনার পর জসিম উদ্দীনকে সঙ্গে সঙ্গে কুমিল্লা সদর দক্ষিণের একটি হাসপাতালে নেওয়ার পর কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। পরে মরদেহ বাড়িতে নিয়ে আসা হয়। লালমাই উপজেলা জামায়াতের সেক্রেটারি মাওলানা ইমাম হোসেন বলেন, আমাদের দল জসিম উদ্দীনের পরিবারের পাশে থাকবেন। জসিমের তিন ছেলের মধ্যে একজন এখনো শিশু। তাই দল থেকে এ পরিবারকে সহায়তা দেয়া হবে।

লালমাই থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. শাহ আলম সমকালকে বলেন, বাগমারা উত্তর বাজারে বাসচাপায় জসিম উদ্দীন নামের একজন ব্যক্তি মারা গেছেন। পরিবারের লোকজন মরদেহ বাড়িতে নিয়ে গেছেন। পরিবার মামলা করবে না বলে জানিয়েছেন।

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: জ ম য় ত র আম র পর ব র

এছাড়াও পড়ুন:

নড়াইলে সরকারি গাছ বিক্রির অভিযোগে চেয়ারম্যানসহ ১৩ জনের বিরুদ্ধে মামলা

নড়াইল সদর উপজেলার শাহাবাদ ইউনিয়নে সড়কের পাশে সরকারি গাছ চুরি করে বিক্রির অভিযোগে মামলা হয়েছে। গতকাল বুধবার রাতে শাহবাদ ইউনিয়ন ভূমি সহকারী কর্মকর্তা মশিউর রহমান বাদী হয়ে সদর থানায় মামলাটি করেন।

মামলায় ওই ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান জিয়াউর রহমানসহ ১৩ জন আসামি করা হয়েছে। অন্য আসামিরা হলেন প্রশিকা নড়াইল উন্নয়ন এলাকা ব্যবস্থাপক শাহাব উদ্দিন ও প্রশিকার গঠিত সংগঠন প্রভাতী যুব সংঘের সভাপতি নড়াইল সদর উপজেলার তুজরডাঙ্গা এলাকার মুজিবুর রহমান, সদস্য একই এলাকার জরিনা বেগম, রজব আলী, মো. আজিবর, মো. ইলিয়াছ, ইমান আলী, মো. ওমর, মো. হায়দার, আবু সাঈদ, মো. এনামুল ও মো. শরিফুল।

এ বিষয়ে আজ বৃহস্পতিবার সকালে নড়াইল সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সাজেদুল ইসলাম বলেন, ‘সরকারি গাছ চুরি করে বিক্রির অভিযোগে একটি মামলা হয়েছে। ঘটনার তদন্ত করে দোষী ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে আইনানুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

মামলার এজহারে বাদী অভিযোগ করেছেন, গত ২৯ এপ্রিল নড়াইল সদর উপজেলার শাহাবাদ বাজার থেকে হাজির বটতলা পর্যন্ত সরকারি রাস্তার জায়গা থেকে গাছ কাটা ও চুরি করে বিক্রির সংবাদ পেয়ে তিনি ঘটনাস্থলে যান। উপস্থিত হয়ে দেখেন, কাটা গাছবোঝাই একটি ট্রাক এবং নছিমন জব্দ করেছেন নড়াইল সদর উপজেলা ভূমি অফিসের সহকারী কমিশনার দেবাশীষ অধিকারী। তখন ঘটনাস্থলে শ্রমিকদের জিজ্ঞাসাবাদ ও খোঁজ নিয়ে জানতে পারেন, মামলার আসামিরা কোনো ধরনের অনুমতি ছাড়াই খাসজমি থেকে গাছ কেটে বিক্রি করেছেন। এর আগেও একবার তাঁরা ওই জমি থেকে গাছ বিক্রি করেছিলেন। জব্দ করা গাছের লগ, ডালপালা এবং আগে কাটা গাছের অবশিষ্ট ভূমিসংলগ্ন গুঁড়ি পর্যবেক্ষণ করে বোঝা গেছে, ওই স্থান থেকে আনুমানিক পাঁচ লাখ টাকার অধিক গাছ চুরি করে কাটা ও বিক্রি হয়েছে।  

প্রশিকা নড়াইল উন্নয়ন এলাকার ব্যবস্থাপক শাহাব উদ্দিন বলেন, ২০০৯ সালে প্রশিকা, ইউনিয়ন পরিষদ ও প্রভাতী যুব সংঘের যৌথ উদ্যোগে একটি চুক্তির মাধ্যমে সড়কের পাশে গাছগুলো রোপণ করেছিল। সে সময় সড়কটি খাস খতিয়ানভুক্ত ছিল না। বর্তমানে তা সরকারের আওতায় পড়ায় গাছ কাটার অনুমতি চেয়ে ইউএনওর কাছে আবেদন করা হয়েছিল, তবে প্রশাসন কোনো সিদ্ধান্ত দেয়নি।  কিছুদিন আগে ইউপি সদস্য ইব্রাহিম তাঁকে ফোনে জানান, বিদ্যুৎ বিভাগের কাটা ডালপালা বিক্রি করতে চান চেয়ারম্যান। বিদ্যুৎ বিভাগের কাটা ডালপালাগুলো পড়ে থেকে নষ্ট হবে ভেবে তিনি বিক্রিতে সম্মতি দেন। পরে গাছ কীভাবে বা কারা কেটেছে, তা তিনি জানেন না।

মামলা করার আগে অবৈধভাবে গাছ কাটার অভিযোগের ব্যাপার জানতে চাইলে ইউপি চেয়ারম্যান জিয়াউর রহমান বলেছিলেন, প্রশিকার সঙ্গে চুক্তির একটি পক্ষ ছিল ইউনিয়ন পরিষদ। সেই হিসেবে গাছ কাটার অনুমতি নিতে ইউএনও বরাবর প্রশিকার আবেদন তিনি চেয়ারম্যান হিসেবে সুপারিশ করেছিলেন। তবে গাছ কেটেছে প্রশিকা আর তাদের সংগঠন। এখানে চেয়ারম্যান-মেম্বরের কিছু নেই।

নড়াইল সদর উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) দেবাশীষ অধিকারী বলেন, প্রশিকার চুক্তির সময় সড়কটি ব্যক্তিমালিকানাধীন জমিতে ছিল, পরে ২০১৫ সালে এটি খাস খতিয়ানভুক্ত হয়। খাসজমি থেকে গাছ কাটা বেআইনি। এ কারণে তাঁদের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ