জার্মানির নির্বাচনে রক্ষণশীলদের জয়, চ্যান্সেলর হচ্ছেন ফ্রিডরিখ মের্ৎস
Published: 24th, February 2025 GMT
জার্মানির জাতীয় নির্বাচনে রক্ষণশীল ক্রিশ্চিয়ান ডেমোক্র্যাটিক ইউনিয়ন (সিডিইউ) জয়ী হয়েছে। সোমবার সকালে (২৪ ফেব্রুয়ারি) প্রকাশিত প্রাথমিক ফলাফলে দেখা গেছে, সিডিইউ পেয়েছে ২৮ দশমিক ৮ শতাংশ ভোট, যা দলটিকে স্পষ্ট বিজয় এনে দিয়েছে। দলের নেতা ফ্রিডরিখ মের্ৎস নতুন চ্যান্সেলর হতে চলেছেন।
ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি জানিয়েছে, গতকাল রোববার অনুষ্ঠিত নির্বাচনে ২০ দশমিক ৮ শতাংশ ভোট পেয়ে দ্বিতীয় স্থানে আছে কট্টর ডানপন্থি দল আল্টারনেটিভ ফর জার্মানি (এএফডি)। আগের ২০২১ সালের নির্বাচনে এএফডি ১০ দশমিক ৩ শতাংশ ভোট পেয়ে পঞ্চম স্থানে ছিল, এবার রেকর্ড জয় পেয়ে ওই জায়গা থেকে দ্বিতীয় অবস্থানে এসেছে।
নির্বাচনে জিতে মেয়াৎস (৬৯) জোট সরকার গঠনের প্রস্তুতি শুরু করেছেন। কিন্তু ঐতিহাসিক উত্থানের মধ্য দিয়ে এএফডি দ্বিতীয় স্থান পাওয়ায় মেয়াৎসকে জোট গঠনে জটিল ও দীর্ঘ দরকষাকষির আলোচনার মধ্য দিয়ে যেতে হবে।
আরো পড়ুন:
ইউক্রেনকে ৬৮০ মিলিয়ন ডলার সামরিক সহায়তার ঘোষণা জার্মানির
আবারও ৭ গোল দিলো জার্মানি
এএফডি যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও মার্কিন ধনকুবের ইলন মাস্কের সমর্থন পেয়ে ধন্য হলেও জার্মানির মূলধারার দলগুলো কট্টর ডানপন্থি দলটির সঙ্গে জোট গঠনের সম্ভাবনা নাকচ করেছে। ফলে দ্বিতীয় অবস্থানে থাকলেও এএফডি দেশটির পরবর্তী সরকারের অংশ হতে পারবে না বলে ধরে নেওয়া হচ্ছে।
বিভিন্ন দলের মধ্যে ভোট ভাগ হয়ে যাওয়া এই নির্বাচনে জার্মানির বর্তমান চ্যান্সেলর ওলাফ শলজের নেতৃত্বাধীন এসপিডি ১৬ দশমিক ৪ শতাংশ ভোট পেয়ে তৃতীয় হয়েছে।
এছাড়া, সমাজতান্ত্রিক দল ডি লিঙ্কে ৮ দশমিক ৫ শতাংশ ভোট পেয়েছে, যা পার্লামেন্টে প্রবেশের জন্য প্রয়োজনীয় ৫ শতাংশ সীমার অনেক ওপরে।
শলৎজের নেতৃত্বাধীন ‘ট্রাফিক লাইট’ জোট বিভক্ত রাজনৈতিক অবস্থানের কারণে দীর্ঘদিন ধরে টিকে থাকলেও শেষ পর্যন্ত ভেঙে পড়ে, যার ফলে রবিবারের আগাম নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। জার্মানির মতো স্থিতিশীল রাজনৈতিক ব্যবস্থায় এটি একটি বিরল ঘটনা।
এই নির্বাচন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সরাসরি হস্তক্ষেপের কারণে বিশেষভাবে আলোচিত হয়েছে এবং জার্মানির অভিবাসন নীতির ওপর নতুন করে বিতর্ক উসকে দিয়েছে।
এদিকে, ইউক্রেন যুদ্ধ নিয়ে কিয়েভ ও ইউরোপীয় নেতাদের বাদ রেখে রাশিয়ার সঙ্গে ট্রাম্পের শান্তি আলোচনার সিদ্ধান্ত ইউরোপ জুড়ে আলোড়ন তুলেছে।
মের্ৎস এই বিষয়ে রবিবার বলেন, “মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র থেকে ‘স্বাধীনতা’ অর্জন তার প্রধান লক্ষ্য।” তিনি বলেন, “আমার সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার হবে ইউরোপকে দ্রুত শক্তিশালী করা, যেন আমরা ধাপে ধাপে সত্যিকারের স্বাধীনতা অর্জন করতে পারি।”
তিনি আরো বলেন, “আমি কখনো ভাবিনি যে টেলিভিশনে আমাকে এমন কিছু বলতে হবে। কিন্তু ডোনাল্ড ট্রাম্পের সাম্প্রতিক বক্তব্যের পর এটা স্পষ্ট যে, অন্তত এই প্রশাসনের একটি অংশ ইউরোপের ভবিষ্যৎ নিয়ে উদাসীন।”
তবে, নতুন সরকারের জন্য চ্যালেঞ্জ কম নয়। নাজি যুগের পর থেকে জার্মানির স্থিতিশীলতা ও উন্নতি নির্ভর করেছে ন্যাটো জোট, সস্তা রুশ জ্বালানি এবং চীনের সঙ্গে বাণিজ্যের ওপর। কিন্তু এই ভিত্তি এখন দুর্বল হয়ে পড়েছে। রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, ইউক্রেন যুদ্ধ, যুক্তরাষ্ট্রের রাজনৈতিক অস্থিরতা এবং অভিবাসন সংকট মের্ৎস প্রশাসনের জন্য বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়াবে।
ঢাকা/ফিরোজ
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর র জন ত ক দশম ক ইউর প
এছাড়াও পড়ুন:
পাশাপাশি খোঁড়া হচ্ছে মা-ছেলের কবর, সেই দৃশ্য কাঁদাচ্ছে এলাকার মানুষকে
বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা থেকে ঋণ নিয়ে কেনেন একটি সিএনজিচালিত অটোরিকশা। সেটি চালিয়ে স্ত্রী আর দুই সন্তানকে নিয়ে শ্বশুরবাড়িতে যাচ্ছিলেন জিয়া উদ্দিন (২৭)। সঙ্গে ছিল তাঁর এক চাচাতো ভাই। পথে নিয়ন্ত্রণ নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে বালুবোঝাই একটি পিকআপ ভ্যান অটোরিকশাটিকে ধাক্কা দেয়। এতে ঘটনাস্থলেই নিহত হন জিয়া উদ্দিনের চাচাতো ভাই সাইফুল ইসলাম (১৬)। জিয়া উদ্দিন, তাঁর স্ত্রী ফারজানা আক্তার (২৩), মেয়ে মাহমুদা কায়সার (৮) ও ছেলে মানারুল ইসলামকে (৩) গুরুতর আহত অবস্থায় ভর্তি করা হয় হাসপাতালে। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান জিয়া উদ্দিনের স্ত্রী ফারজানা আক্তার ও ছেলে মানারুল ইসলাম।
গতকাল শনিবার বেলা তিনটার দিকে মিরসরাই উপজেলার হিঙ্গুলী ইউনিয়নের চিনকিরহাট এলাকায় ঘটে এই সড়ক দুর্ঘটনা। এরপর রাত আটটার দিকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় জিয়া উদ্দিনের স্ত্রী ফারজানা আক্তার ও ছেলে মানারুল ইসলাম মারা যান। জিয়া উদ্দিন উপজেলার কাটাছড়া ইউনিয়নের বামন সুন্দর এলাকার দোস্ত মোহাম্মদের ছেলে। তাঁর শ্বশুরবাড়ি উপজেলার করেরহাট ইউনিয়নের দক্ষিণ অলিনগর এলাকায়।
আহত জিয়া উদ্দিনের বড় ভাই সাইফুল ইসলাম বলেন, চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে এখনো চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে জিয়া উদ্দিনকে। সেখানে চিকিৎসাধীন তাঁর মেয়ে মাহমুদা কায়সারের অবস্থাও শঙ্কাজনক। এর মধ্যেই তিনজনের লাশ দাফনের প্রস্তুতি চলছে পারিবারিক কবরস্থানে। পাশাপাশি খোঁড়া হয়েছে ফারজানা আক্তার ও তাঁর ছেলে মানারুলের কবর।
কাটাছড়া ইউনিয়ন পরিষদের প্যানেল চেয়ারম্যান আলেয়া বেগম বলেন, সড়ক দুর্ঘটনায় বামন সুন্দর এলাকার মা-ছেলেসহ তিনজনের মৃত্যুর ঘটনায় এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে। বাড়ির পারিবারিক কবরস্থানে মা-ছেলের জন্য পাশাপাশি কবর খোঁড়ার দৃশ্য দেখে স্বজন ও প্রতিবেশীদের চোখ সিক্ত হচ্ছে। অনেকে কান্নায় ভেঙে পড়েছেন।
সড়ক দুর্ঘটনায় পুত্রবধূ, নাতিসহ পরিবারের তিন সদস্যকে হারিয়ে আহাজারি করছেন বিবি হালিমা। আজ সকালে