তিস্তা নদীর পানির ন্যায্য হিস্যা এবং তিস্তা মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়নের দাবিতে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে মানববন্ধন ও মশালমিছিল হয়েছে। আজ রোববার সন্ধ্যায় বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ মিনারের সামনে এ কর্মসূচি হয়। ‘জাগো বাহে কোনঠে সবাই’ এ স্লোগানে কর্মসূচির আয়োজন করে ‘রংপুর ডিভিশন স্টুডেন্টস ইউনিট’ নামের একটি সংগঠন।

কর্মসূচিতে চাকসুর নবনির্বাচিত প্রতিনিধি, বিভিন্ন দলের নেতা-কর্মীসহ বিশ্ববিদ্যালয়ের কয়েক শ শিক্ষার্থী অংশ নেন। এতে বক্তারা ‘উত্তরের এই বৈষম্য, মানি না মানব না’, ‘সবার প্রাপ্য সবাই পায়, আমার বেলায় বাজেট নাই’ ও ভারতবিরোধী বিভিন্ন স্লোগান দেন। এরপর শহীদ মিনার থেকে একটি মিছিল বের হয়। এটি কাটাপাহাড় সড়ক হয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের গোল চত্বরে গিয়ে শেষ হয়।

জাতীয় নাগরিক পার্টির উত্তরাঞ্চলের সংগঠক রাসেল আহমেদ বলেন, ‘উত্তরবঙ্গের মানুষ দীর্ঘদিন ধরে অবদমিত হয়েছে। আমরা এ নিয়ে বারবার কথা বলেছি। কিন্তু কোনো সরকার এই পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করতে পারেনি। কারণ, তারা বরাবরই ভারতের অনুগত থেকেছে। যদি কেউ ভারতের আনুগত্য করতে চায়, আমরা তাদের ঐক্যবদ্ধভাবে রুখে দেব।’

কর্মসূচিতে সংহতি প্রকাশ করে চাকসুর সাধারণ সম্পাদক সাঈদ বিন হাবিব বলেন, ‘তিস্তা মহাপরিকল্পনার যে খসড়া তৈরি হয়েছে, এর রোডম্যাপ অবিলম্বে প্রকাশ করতে হবে। এ পরিকল্পনা বাস্তবায়নের জন্য প্রয়োজনীয় জনবল দ্রুত নিয়োগ দিতে হবে। বাংলাদেশের প্রশ্নে আমরা সবাই এক, চাকসুও ঐক্যবদ্ধ থাকবে।’

দর্শন বিভাগের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী মাহাবুবুল হাসান বলেন, ‘উত্তরবঙ্গের দুই কোটি মানুষের কাছে এটি সাধারণ একটি নদী হলেও আমাদের আনন্দ-বেদনা, শিল্প ও সংস্কৃতির অংশ। বর্ষা মৌসুমে আমাদের মায়েদের চোখের পানি বৃদ্ধি পায়, বাবাদের হাহাকার বাড়ে। চলতি বছরের নভেম্বরের মধ্যেই তিস্তা মহাপরিকল্পনার প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়ন করতে হবে।’

কর্মসূচিতে আরও উপস্থিত ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের সংগীত বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক কৌশিক আহম্মেদ, চাকসুর যোগাযোগ ও আবাসনবিষয়ক সম্পাদক ইসহাক ভূঁঞা, সাহিত্য, সংস্কৃতি ও প্রকাশনা সম্পাদক হারেজুল ইসলাম, সহসাহিত্য, সংস্কৃতি ও প্রকাশনা সম্পাদক জিহাদ হোসেন, আইন ও মানবাধিকার সম্পাদক ফজলে রাব্বি, দপ্তর সম্পাদক আবদুল্লাহ আল নোমান, সমাজসেবা ও পরিবেশ সম্পাদক তাহসিনা রহমান, ছাত্রদল মনোনীত চাকসুর জিএস প্রার্থী মো.

শাফায়েত হোসেন ও ইসলামী ছাত্রমজলিসের সভাপতি সাকিব মাহমুদ প্রমুখ।

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: প রক শ

এছাড়াও পড়ুন:

জাবিতে তিস্তা মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়ন ও পানির ন্যায্য হিস্যার দাবি

দেশের অন্যতম প্রধান তিস্তা নদীর পানির ন্যায্য হিস্যা ও তিস্তা মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়নের দাবিতে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে (জাবি) মানববন্ধন করা হয়েছে।

শনিবার (১৮ অক্টোবর) বিকাল ৩টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকের সামনে এই মানবন্ধন করেন শিক্ষার্থীরা।

আরো পড়ুন:

ঢাকা-গোপালগঞ্জ রুটে ট্রেন চলাচলের দাবিতে মানববন্ধন

পাঁচ দাবিতে জেলায় জেলায় জামায়াতের মানববন্ধন

মানববন্ধনে আ ফ ম কামাল উদ্দিন হলের সহ-সভাপতি (ভিপি) জিএমএম রায়হান কবীরের সঞ্চালনায় বিশ্ববিদ্যালয়ের উত্তরবঙ্গের ৮ জেলার শিক্ষার্থীরা বক্তব্য রাখেন।

এ সময় উপস্থিত বক্তারা উত্তরবঙ্গের কৃষি ও প্রকৃতি সংরক্ষণ এবং কোটি মানুষের জীবিকার উন্নয়নের লক্ষ্যে চীনের সহায়তায় আগামী নভেম্বরের মধ্যে তিস্তা মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়ন শুরুর তাগিদ দেন এবং ভারতের কাছ থেকে তিস্তার পানির ন্যায্য হিস্যার দাবি জানান।

জাকসুর যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক (এজিএস) ফেরদৌস আল হাসান বলেন, “তিস্তা শুধু উত্তরবঙ্গের বিষয় নয়, এটি দেশের জাতীয় অর্থনীতির প্রাণ। ভারত বর্ষায় কোনো সতর্কতা ছাড়াই পানি ছেড়ে লাখ লাখ ঘর-বাড়ি ডুবিয়ে দেয়, লাখ লাখ হেক্টর জমির ফসল নষ্ট করে দেয়। আবার শুষ্ক মৌসুমে পানি বন্ধ করে সেচ ব্যবস্থা অকার্যকর করে ফেলে‌, ফলে কোনো ফসল আবাদ হয় না।”

তিনি বলেন, “বিগত ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগ সরকার অবৈধভাবে টিকে থাকতে তিস্তার ন্যায্য হিস্সা ও তিস্তা মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়ন করেনি। আমরা অন্তর্বর্তী সরকারকে নভেম্বরের মধ্যে চীনা অর্থায়নে এটি বাস্তবায়নের জোর দাবি জানাই।”

জাকসুর সহ-সভাপতি (ভিপি) আব্দুর রশিদ জিতু বলেন, “তিস্তা ভারত-বাংলাদেশের অভিন্ন নদী হওয়া সত্ত্বেও এটি পশ্চিমবঙ্গের জন্য আশীর্বাদ এবং বাংলাদেশের জন্য অভিশাপ হয়ে দাঁড়িয়েছে। বর্ষায় আমাদের ডুবিয়ে মারে, শুষ্ক মৌসুমে পানি বন্ধ করে ফসল চাষাবাদে মারাত্মক বিঘ্ন ঘটায়। গণঅভ্যুত্থান পরবর্তী সরকারের কাছে আমরা আশা করেছিলাম, তারা তিস্তা মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়ন করবেন। কিন্তু এই সরকার কোনো কার্যকর উদ্যোগ নেয়নি। সরকারকে জোরালোভাবে বলতে চাই, ভারতীয় যেকোনো চাপকে উপেক্ষা করে তিস্তা মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়ন করুন; আমরা দেশবাসী আপনাদের সঙ্গে থাকব।”

জাবি উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক ড. সোহেল আহমেদ বলেন, “স্বাধীনতার পর থেকেই আমাদের মিত্র রাষ্ট্র (ভারত) মৈত্রীর পরিচয় দেননি। মহান মুক্তিযুদ্ধের ৯ নম্বর সেক্টর কমান্ডার মেজর জলিলকে গুম করার মাধ্যমে ভারতের লক্ষ্য উদ্দেশ্য বুঝা গেছে। আমাদের মেরুদণ্ড সোজা করে মাথা উঁচু করে দাঁড়াতে হবে। তিস্তায় ভারতের বাঁধের কারণে উত্তরবঙ্গের আট জেলা সরাসরি আক্রান্ত। প্রতিবেশী মৈত্রী দেশ হিসেবে তিস্তার ন্যায্য হিস্যা দিতে হবে।”

নভেম্বরের মধ্যে চীনা সহায়তায় তিস্তা মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়নের কাজ শুরু করতে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অন্তর্বর্তী সরকারকে আহ্বান জানান তিনি।

মানববন্ধনে আরো বক্তব্য রাখেন জীববিজ্ঞান অনুষদের ডিন অধ্যাপক মোহাম্মদ মাফরুহী সাত্তার, জাবি শাখা ছাত্রদলের আহ্বায়ক জমির উদ্দিন মোহাম্মদ বাবর, জাবি শাখা ছাত্রশিবিরের সদস্য শফিউজ্জামান শাহীন, ও বাগছাসের যুগ্ম-আহ্বায়ক জিয়াউদ্দিন আয়ান প্রমুখ।

ঢাকা/আহসান/মেহেদী

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • তিস্তা মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়নের দাবিতে চবিতে মানববন্ধন
  • নোবিপ্রবিতে তিস্তা মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়নের দাবিতে মানববন্ধন
  • জাবিতে তিস্তা মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়ন ও পানির ন্যায্য হিস্যার দাবি
  • তিস্তা মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়নের দাবিতে শাহজালাল বিশ্ববিদ্যালয়ে মশালমিছিল