যশোর অভয়নগরে মোটরসাইকেল নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে সড়কের পাশে বৈদ্যুতিক খুঁটির সঙ্গে ধাক্কা লেগে আলী মল্লিক (২৯) ও জিহাদ হোসেন (২৭) নামে ২ জন নিহত হয়েছে। 

সোমবার (২৪ ফেব্রুয়ারি) বিকালে উপজেলার পায়রা ইউনিয়নের বারান্দি গ্রামে বারান্দি-জামিরা সড়কে এ দুর্ঘটনা ঘটে।

নিহত আলী মল্লিক অভয়নগর উপজেলার চলিশিয়া ইউনিয়নের কোটা গ্রামের আব্দুর রশিদ মল্লিকের ছেলে ও জিহাদ হোসেন খুলনা জেলার ফুলতলা উপজেলার দামোদর ইউনিয়নের দামোদর গ্রামের ওয়াজেদ আলীর ছেলে।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, সোমবার বিকালে জামিরা বাজারের দিকে যাওয়ার সময় একটি মোটরসাইকেল নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে সড়কের পাশে বৈদ্যুতিক খুঁটিতে আঘাত করে। এতে মোটরসাইকেলের দুই আরোহী গুরুতর আহত হন। পরে এলাকাবাসীর সহযোগিতায় দুজনকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাদের উন্নত চিকিৎসার জন্য খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠিয়ে দেন।

উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরি বিভাগে কর্তব্যরত চিকিৎসক ডা.

মরিয়ার মুনমুন বলেন, “সড়ক দুর্ঘটনায় গুরুতর আহত দুই যুবককে হাসপাতালে ভর্তি করার পর খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। দুজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক ছিল।”

উপজেলার পায়রা ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান ও অভয়নগর মাধ্যমিক শিক্ষক সমিতির সাবেক সভাপতি ফিরোজ আলম বলেন, “দুর্ঘটনায় আহত মোটরসাইকেলের দুই আরোহী সোমবার সন্ধ্যায় চিকিৎসাধীন অবস্থায় খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে মারা গেছেন।”

এ ব্যাপারে অভয়নগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আব্দুল আলিম বলেন, “মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় নিহত দুই যুবকের সুরতহাল সম্পন্ন হয়েছে। দুর্ঘটনাস্থল থেকে ক্ষতিগ্রস্ত মোটরসাইকেলটি উদ্ধার করা হয়েছে। আইনগত ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন।”

ঢাকা/প্রিয়ব্রত/টিপু 

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর দ র ঘটন উপজ ল র

এছাড়াও পড়ুন:

ভারী বর্ষণে ভবদহের গ্রামে গ্রামে জলাবদ্ধতা

যশোরের মনিরামপুর, অভয়নগর, কেশবপুর এবং খুলনার ডুমুরিয়া ও ফুলতলা উপজেলার অংশবিশেষ নিয়ে ভবদহ অঞ্চল গঠিত। এ অঞ্চলের অনেক গ্রাম বছরে চার মাস জলাবদ্ধ থাকে। সাম্প্রতিক ভারী বর্ষণে যশোরের মনিরামপুর ও অভয়নগর উপজেলার ৩০টির বেশি গ্রামে পানি ঢুকেছে। এসব গ্রামের বেশিরভাগ ঘরবাড়ি, ধর্মীয় ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান প্লাবিত হয়েছে। নদী দিয়ে ঠিকমতো পানি নিষ্কাশিত না হওয়ায় দেখা দিয়েছে জলাবদ্ধতা। এতে চরম দুর্ভোগে পড়েছেন সেখানকার বাসিন্দারা।

ভবদহ এলাকার পানি নিষ্কাশন হয় মুক্তেশ্বরী, টেকা, শ্রী ও হরি নদ-নদী দিয়ে। পলি পড়ে নদীগুলো নাব্য হারিয়েছে। ফলে, ভারী বৃষ্টির পানি সহজে ও দ্রুত নিষ্কাশন হচ্ছে না। 

যশোরের বীরশ্রেষ্ঠ মতিউর রহমান বিমান ঘাঁটির আবহাওয়া বিভাগ জানিয়েছে, যশোরে জুন মাসে স্বাভাবিক গড় বৃষ্টিপাত ধরা হয় ২৯৮ দশমিক ৭ মিলিমিটার এবং জুলাই মাসে ৩০৪ দশমিক ১০ মিলিমিটার। গত জুন মাসে যশোরে ২৯৯ মিলিমিটার এবং চলতি জুলাই মাসের ২৭ তারিখ পর্যন্ত ৫১৪ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়েছে। ফলে, ভবদহ অঞ্চলের ৫২টি বিল প্লাবিত হয়েছে। বিল উপচে পানি ঢুকতে শুরু করেছে আশপাশের গ্রামগুলোতে।

সুন্দলী গ্রামের তন্ময় বিশ্বাস বলেছেন, “উঠোনে প্রায় হাঁটুজল। আরেকটু বাড়লে ঘরে জল উঠে যাবে। ঘরে জল উঠলে রাস্তায় ওঠা ছাড়া কোনো উপায় থাকবে না।”

ভবদহ পানি নিষ্কাশন সংগ্রাম কমিটির আহ্বায়ক রণজিত বাওয়ালী বলেছেন, “ভবদহের ২১ ভেন্ট স্লুইসগেটের মধ্যে মাত্র ছয়টি গেট খোলা হয়েছে। সবগুলো গেট খুলে দিলে আরো বেশি জল নামত। কিন্তু, পানি উন্নয়ন বোর্ড সব গেট খুলছে না। এলাকার বিলে টাইডল রিভার ম্যানেজমেন্ট (জোয়ারাধার) চালু না করলে জলাবদ্ধতা থেকে মুক্তি নেই।”  

পানি উন্নয়ন বোর্ডের যশোর কার্যালয়ের নির্বাহী প্রকৌশলী পলাশ কুমার ব্যানার্জি বলেছেন, “নদীতে জোয়ারের সময় ভবদহ স্লুইসগেটের ২১ ভেন্টের ওপর চারটি বড় ও ১৫টি ছোট বৈদ্যুতিক যন্ত্র দিয়ে পানি সেচে বের করে দেওয়া হচ্ছে। এছাড়া, ভাটির সময় ছয়টি গেট খুলে দেওয়া হচ্ছে। গেটগুলো দিয়ে প্রচুর পানি বের হচ্ছে। এতে এলাকার পানি দ্রুত সরে যাবে।” 

তিনি বলেন, “ভবদহ এলাকার পানি নিষ্কাশনের জন্য সেনাবাহিনী আগামী মাসে ছয়টি নদীর ৮১ দশমিক ৫ কিলোমিটার খননে কাজ শুরু করবে। এছাড়া, আমডাঙ্গা খাল সংস্কারের জন্য ঠিকাদার নিয়োগ করা হয়েছে। দুই-এক মাসের মধ্যে আমডাঙ্গা খাল সংস্কারে কাজ শুরু হবে।”

ঢাকা/প্রিয়ব্রত/রফিক

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ভারী বর্ষণে ভবদহের গ্রামে গ্রামে জলাবদ্ধতা