জাতীয় নাগরিক কমিটি ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের উদ্যোগে আত্মপ্রকাশ হতে যাওয়া নতুন রাজনৈতিক দল ‘জাতীয় নাগরিক পার্টি’র শীর্ষ ১০ পদ (সুপার টেন) চূড়ান্ত হয়েছে। শীর্ষ ১০ পদে জ্যেষ্ঠ যুগ্ম আহ্বায়ক ও জ্যেষ্ঠ যুগ্ম সদস্যসচিব হিসেবে থাকছেন দুজন করে।

আজ শুক্রবার বিকেলে রাজধানীর মানিক মিয়া অ্যাভিনিউয়ে জাতীয় সংসদ ভবনের সামনের সড়কে তৈরি মঞ্চ থেকে নতুন দলের আনুষ্ঠানিক আত্মপ্রকাশের ঘোষণা দেওয়া হবে। অনুষ্ঠানটি বেলা তিনটায় শুরু হবে।

অনুষ্ঠানে নতুন দলের কমিটি ঘোষণা করা হবে। দেড় শতাধিক সদস্যের এই কমিটিতে নানা মতাদর্শের ব্যক্তিদের দেখা যেতে পারে।

আত্মপ্রকাশ করতে যাওয়া নতুন দলটির নামের ইংরেজি রূপ হবে ‘ন্যাশনাল সিটিজেনস পার্টি’ (এনসিপি)। আনুষ্ঠানিক আত্মপ্রকাশ উপলক্ষে বিকেলে মানিক মিয়া অ্যাভিনিউয়ে বড় জমায়েত করা হবে।

‘সুপার টেন’

নতুন এই রাজনৈতিক দলের আহ্বায়ক মো.

নাহিদ ইসলাম। সদস্যসচিব আখতার হোসেন।

নতুন দলের আহ্বায়কের দায়িত্ব নিতে গত মঙ্গলবার অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা পরিষদ থেকে পদত্যাগ করেন নাহিদ ইসলাম। দলের সদস্যসচিব আখতার হোসেন জাতীয় নাগরিক কমিটির সদস্যসচিব হিসেবে দায়িত্ব পালন করে আসছেন।

নতুন দলের জ্যেষ্ঠ যুগ্ম আহ্বায়ক পদে থাকছেন সামান্তা শারমিন ও আরিফুল ইসলাম আদীব। জ্যেষ্ঠ যুগ্ম সদস্যসচিব পদে থাকছেন তাসনিম জারা ও নাহিদা সারওয়ার (নিভা)।

প্রধান সমন্বয়কারী পদে থাকছেন নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী। যুগ্ম সমন্বয়ক হচ্ছেন আবদুল হান্নান মাসউদ।

হাসনাত আবদুল্লাহকে মুখ্য সংগঠক (দক্ষিণাঞ্চল) ও সারজিস আলমকে মুখ্য সংগঠক (উত্তরাঞ্চল) পদে চূড়ান্ত করা হয়েছে।

নতুন রাজনৈতিক দলের ‘সুপার টেন’-এর এই নামগুলো থাকার তথ্য প্রথম আলোকে নিশ্চিত করেছেন জাতীয় নাগরিক কমিটির মুখপাত্র সামান্তা শারমিন।

নতুন দলের ‘সুপার টেন’-এর এক নেতা প্রথম আলোকে বলেন, আজ বিকেলে মানিক মিয়া অ্যাভিনিউয়ে নতুন দলের আত্মপ্রকাশ অনুষ্ঠানের মঞ্চ থেকে দেড় শতাধিক সদস্যের কমিটি ঘোষণা করা হতে পারে।

‘জাতীয় নাগরিক পার্টি’: আত্মপ্রকাশ বিকেলে, কে কোন পদে আসছেনতরুণদের দলের নাম ‘জাতীয় নাগরিক পার্টি’, শীর্ষ আট পদে নাম চূড়ান্তদুই প্ল্যাটফর্মের সমানসংখ্যক নেতা নিয়ে নতুন দলের কমিটি, আলোচিত সাবেক শিবির নেতারা থাকছেন না

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: সদস যসচ ব সদস য

এছাড়াও পড়ুন:

ইসরায়েলে মার্কিন অস্ত্র বিক্রি ঠেকানোর চেষ্টা সিনেটে ব্যর্থ

গাজায় ইসরায়েলের যুদ্ধের ক্রমবর্ধমান আন্তর্জাতিক নিন্দার মধ্যে, ইসরায়েলের কাছে যুক্তরাষ্ট্রের অস্ত্র বিক্রি আটকাতে মার্কিন সিনেটে তোলা একটি বিল পাস হতে ব্যর্থ হয়েছে।

ব্যর্থ হলেও, বুধবারের ভোটে দেখা গেছে, মার্কিন ডেমোক্র্যাটিক পার্টির ভেতরে ইসরায়েলের যুদ্ধের বিরোধিতা জোরদার হয়ে উঠেছে। 

আজ বৃহস্পতিবার কাতারভিত্তিক আলজাজিরার এক প্রতিবেদনে বলা হয়, ইসরায়েলের কাছে অস্ত্র বিক্রি ঠেকানোর প্রচেষ্টায় এবারের ভোটে উল্লেখযোগ্য সংখ্যাক ডেমোক্র্যাট যোগ দিয়েছেন। 

ইসরায়েলের কাছে ২০ হাজার স্বয়ংক্রিয় অ্যাসল্ট রাইফেল বিক্রি বন্ধ করার প্রস্তাবের পক্ষে ২৭ জন ডেমোক্র্যাট ভোট দিয়েছেন, আর ৬৭৫ মিলিয়ন ডলারের বোমার চালান বন্ধ করার পক্ষে ২৪ জন ভোট দিয়েছেন। 

অন্যদিকে, ভোটদারকারী সব রিপাবলিকান সিনেটররা প্রস্তাবের বিপক্ষে ভোট দিয়েছেন। 

ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলের চলমান হামলার মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রের অস্ত্র বিক্রির দুটি চুক্তি আটকে দিতে প্রস্তাবগুলো সিনেটে আনেন ভার্মন্টের সিনেটর বার্নি স্যান্ডার্স। তিনি প্রগতিশীল ঘরানার স্বতন্ত্র সিনেটর।

ভোটের আগে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্স-এ একটি পোস্টে স্যান্ডার্স বলেন, “ওয়াশিংটন ইসরায়েলের ‘বর্ণবাদী সরকার’কে এমন অস্ত্র সরবরাহ করা চালিয়ে যেতে পারে না, যা নিরীহ মানুষদের হত্যা করার জন্য ব্যবহৃত হচ্ছে।”

ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুকে একজন ‘জঘন্য মিথ্যাবাদী’ হিসেবে উল্লেখ করে স্যান্ডার্স ‘এক্স’ পোস্টে আরো বলেন, “গাজায় শিশুরা না খেয়ে মারা যাচ্ছে।”

প্রথমবারের মতো স্যান্ডার্সের প্রস্তাবকে সমর্থনকারী আইন প্রণেতাদের মধ্যে, ওয়াশিংটন রাজ্যের সিনেটর প্যাটি মারে বলেছেন, প্রস্তাবগুলো ‘নিখুঁত’ না হলেও, তিনি গাজার নিষ্পাপ শিশুদের অব্যাহত দুর্ভোগকে সমর্থন করতে পারেন না।

মারে এক বিবৃতিতে বলেন, “ইসরায়েলের দীর্ঘদিনের বন্ধু ও সমর্থক হওয়া সত্ত্বেও আমি প্রস্তাবের পক্ষে ‘হ্যাঁ’ ভোট দিচ্ছি এই বার্তা দিতে: নেতানিয়াহু সরকার এই কৌশল চালিয়ে যেতে পারবে না।”

তিনি বলেন, “নেতানিয়াহু ক্ষমতায় থাকার জন্য প্রতিটি পদক্ষেপে এই যুদ্ধকে দীর্ঘায়িত করেছেন। আমরা গাজায় মানবসৃষ্ট দুর্ভিক্ষ প্রত্যক্ষ করছি- সীমান্তের ওপারে যখন প্রচুর পরিমাণে সাহায্য ও সরবরাহ পড়ে আছে, তখন শিশু এবং পরিবারগুলোর অনাহার বা রোগে মারা যাওয়া উচিত নয়।”

মার্কিন জনগণের মধ্যে গাজা যুদ্ধের বিরোধিতা ক্রমবর্ধমান হওয়ার পাশাপাশি ডেমোক্র্যাটদের মধ্যে ইসরায়েলের প্রতি সমর্থন নিয়ে ব্যাপক আকারে বিভক্তি দেখা দিয়েছে।

মঙ্গলবার প্রকাশিত গ্যালাপের একটি জরিপে দেখা গেছে, ৩২ শতাংশ আমেরিকান বলেছেন, তারা গাজায় ইসরায়েলের সামরিক অভিযান সমর্থন করেন। গত বছরের সেপ্টেম্বরে ৪২ শতাংশ আমেরিকান ইসরায়েলের অভিযান সমর্থন করেছিলেন।

গ্যালাপের মতে, পরিচয় প্রকাশ করে মাত্র ৮ শতাংশ ডেমোক্র্যাট বলেছেন যে তারা ইসরায়েলের অভিযানের প্রতি সমর্থন জানিয়েছেন, যেখানে ৭১ শতাংশ রিপাবলিকান বলেছেন জানিয়েছেন যে, তারা ইসরায়েলি পদক্ষেপকে সমর্থন করেছেন।

ঢাকা/ফিরোজ

সম্পর্কিত নিবন্ধ