জয়পুরহাট ও সিরাজগঞ্জে পানিতে ডুবে ৪ শিশুর মৃত্যু
Published: 7th, March 2025 GMT
জয়পুরহাটের ক্ষেতলাল উপজেলা এবং সিরাজগঞ্জের কাজিপাড়ায় চার শিশু পানিতে ডুবে মারা গেছে। শুক্রবার এসব ঘটনা ঘটে।
ক্ষেতলালের রসুলপুর গ্রামে সাফায়াত ও ফারহান নামে চার বছরের দুই শিশুর মৃত্যু হয়। শুক্রবার ইফতারের আগে এ ঘটনা ঘটে। উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের মেডিকেল অফিসার ডা. নওশিন নাজিয়া এ তথ্য নিশ্চিত করেন।
পরিবার সূত্রে জানা যায়, বিকেলে রসুলপুর গ্রামের সরোয়ার হোসেনের ছেলে সাফায়াত ও প্রতিবেশী সোহাগ হোসেনের ছেলে ফারহান বাড়ির পাশে খেলছিল। এক পর্যায়ে সবার অজান্তে তারা একটি পুকুরে পড়ে যায়। এ সময় তাদের দেখতে না পেয়ে পরিবারের লোকজন খোঁজাখুঁজি করতে থাকেন। ইফতারের কিছু আগে এক প্রতিবেশী শিশুদের পুকুরে দেখতে পেয়ে চিৎকার দিলে পরিবারের লোকজন এসে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
ক্ষেতলাল থানার ওসি আরিফুল ইসলাম বলেন, পানিতে ডুবে দুই শিশুর মৃত্যুর খবর শুনেছি। তবে এ ব্যাপারে এখনও কোনো অভিযোগ পাওয়া যায়নি। অভিযোগ পেলে তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এদিকে সিরাজগঞ্জের কাজিপুর উপজেলার মাইজবাড়ী ইউনিয়নের বিলচতল গ্রামে ডোবার পানিতে পড়ে দুই শিশুর মৃত্যু হয়। তারা হলো হাফিজার রহমানের মেয়ে টুল্লি (৮) ও হাফিজার রহমানের বোনের মেয়ে অনিকা (৮)। একই বাড়িতে তারা বাস করত। শুক্রবার দুপুরে বাড়ির পাশে বালু তোলার কারণে সৃষ্ট ডোবার পানি থেকে ওই দুই শিশুর মরদেহ উদ্ধার করেন স্বজনরা। খবর পেয়ে কাজিপুর থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে যায়।
কাজিপুর থানার ওসি নূরে আলম জানান, পুলিশ মরদেহ দুটি উদ্ধার করে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করেছে।
.উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে বংশে তিনি প্রথম, তাই এত আয়োজন
চীনে উচ্চশিক্ষার জন্য অভিজাত বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মধ্যে প্রথম সারিতে রয়েছে বেইজিংয়ের পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়। সেখানে ভর্তি হওয়ার সুযোগ পাওয়া দেশটির যেকোনো শিক্ষার্থীর জন্য দারুণ সম্মানের। এ বছর পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির সুযোগ পেয়েছেন লি গুওইয়াও।
লির বাড়ি জেজিয়াং প্রদেশের ওয়েনজউ শহরে। এর আগে তাঁর বংশে শত বছরের ইতিহাসে কেউ পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সুযোগ পাননি। এত বড় সম্মানের উপলক্ষ উদ্যাপন করতে তাই বিন্দুমাত্র কার্পণ্য করেননি লির পরিবার ও গ্রামের বাসিন্দারা। রীতিমতো লালগালিচা বিছিয়ে, মোটর শোভাযাত্রা করে, ব্যান্ড বাজিয়ে পরিবার ও গ্রামের মুখ উজ্জ্বল করা লিকে সংবর্ধনা দেন তাঁরা, সঙ্গে ছিল ভূরিভোজের ব্যবস্থা। চীনের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম উইবোতে এই সংবর্ধনার ছবি ও ভিডিও রীতিমতো ভাইরাল হয়ে যায়।
চীনে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির জন্য জাতীয় পর্যায়ে একটি পরীক্ষা নেওয়া হয়। যেটি ‘গাওকাও’ নামে পরিচিত। তীব্র প্রতিযোগিতাপূর্ণ এই পরীক্ষা বেশ কঠিন। পরীক্ষায় মোট ৭৫০ নম্বরের মধ্যে লি পেয়েছেন ৬৯১।
লির গ্রামের এক প্রতিবেশী জানান, লির বাবা নির্মাণশ্রমিক। লির মা মাত্র ২ হাজার ৮০০ ইউয়ান বেতনে একটি সুপারশপে কাজ করেন। সত্যি বলতে, ছেলেটি সম্পূর্ণ নিজের চেষ্টা আর পরিশ্রমে এটা অর্জন করেছেন।
প্রতিবেশী আরেক গ্রামবাসী বলেন, লি তাঁর বাবার কাছ থেকে পাওয়া একটি পুরোনো মুঠোফোন দিয়ে প্রশ্নোত্তর অনুশীলন করতেন। সাপ্তাহিক ছুটির দিনগুলোয় গ্রামের গ্রন্থাগারে বসে পরীক্ষার প্রশ্নপত্র হাতে লিখে তারপর সেগুলো অনুশীলন করতেন। মাধ্যমিকে তিনি কখনো কোনো প্রাইভেট শিক্ষকের কাছে পড়েননি।
লিকে সংবর্ধনা দিতে শতাব্দীপ্রাচীন ঐতিহ্য ভেঙে তাঁদের গ্রামের পূর্বপুরুষদের মন্দিরের প্রধান ফটক খোলা হয়, যা একটি বিশেষ সম্মানের প্রতীক হিসেবে বিবেচিত।
লিকে সংবর্ধনা দেওয়ার ছবি ও ভিডিও চীনজুড়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আলোচনার জন্ম দিয়েছে।
অনলাইনে একজন লেখেন, ‘পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হতে ৬৯১ নম্বর! এটা অবিশ্বাস্য। সত্যিই পুরো পরিবারের মুখ উজ্জ্বল করেছে!’
তবে কেউ কেউ এই জমকালো উদ্যাপন নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন।
তাঁরা বলেছেন, এটা কি একটু বাড়াবাড়ি নয়? উৎসবটা খুবই জাঁকজমকপূর্ণ, এতে ছেলেটার ওপর অকারণ চাপ তৈরি হতে পারে। স্নাতক হওয়ার পর কি পরিবার তাঁর কাছ থেকে অনেক বেশি কিছু প্রত্যাশা করবে না?