মাধ্যমিক শিক্ষা জাতীয়করণসহ ঈদের আগেই শতভাগ ভাতা দাবি শিক্ষকদের
Published: 8th, March 2025 GMT
মাধ্যমিক শিক্ষা জাতীয়করণসহ আসন্ন ঈদের আগেই শতভাগ উৎসব ভাতা, পূর্ণাঙ্গ বাড়ি ভাড়া ও চিকিৎসা ভাতা প্রদান এবং বিভিন্ন সমস্যার দ্রুত সমাধানসহ ১০ দফা দাবিতে সংবাদ সম্মেলন করেছে বাংলাদেশ শিক্ষক সমিতি। দাবি পূরণে সুনির্দিষ্ট প্রজ্ঞাপন জারি করা না হয় তাহলে ঈদের পর সারা দেশে কর্মসূচি পালনের ঘোষণা দেওয়া হয়। শনিবার রাজধানীর সেগুনবাগিচায় ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে (ডিআরইউ) সংবাদ সম্মেলনে এ দাবি জানানো হয়েছে।
এতে বক্তারা বলেন, আমরা এমপিওভুক্ত শিক্ষক-কর্মচারীরা মাত্র ১,০০০ টাকা বাড়ি ভাড়া, ২৫ শতাংশ উৎসব ভাতা এবং ৫০০ টাকা চিকিৎসা ভাতা পাই। অথচ একই কারিকুলামের অধীন একই সিলেবাস, একই একাডেমিক সময়সূচি, একইভাবে প্রশ্নপত্র প্রণয়ন ও উত্তরপত্র মূল্যায়নের কাজে নিয়োজিত থেকেও আর্থিক সুবিধার ক্ষেত্রে সরকারি ও বেসরকারি শিক্ষক-কর্মচারীদের মধ্যে রয়েছে অনেক বৈষম্য। এছাড়া বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের প্রধানদের বেতন স্কেল সরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের প্রধানদের বেতন স্কেলের এক ধাপ নিচে এবং সহকারী প্রধান শিক্ষকদের উচ্চতর স্কেল না দেওয়ায় উচ্চতর স্কেলপ্রাপ্ত সিনিয়র শিক্ষকদের বেতন স্কেল ও সহকারী প্রধান শিক্ষকদের বেতন স্কেল সমান হওয়ায় সহকারী প্রধান শিক্ষকদের মধ্যে দীর্ঘদিনের অসন্তোষ রয়েছে।
সংবাদ সম্মেলনে বিভিন্ন কর্মসুচি ঘোষণা দেওয়া হয় যার মধ্যে রয়েছে, ১২ মার্চ সকাল ১১টায় কেন্দ্রীয়ভাবে জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে মানববন্ধন, বিক্ষোভ মিছিল ও বিভাগীয় কমিশনারের মাধ্যমে প্রধান উপদেষ্টা ও শিক্ষা উপদেষ্টা বরাবর স্মারকলিপি প্রদান। ১৬ মার্চ সকাল ১১টায় দেশের সকল জেলা ও বিভাগীয় সদরে মানববন্ধন, বিক্ষোভ মিছিল ও খেলা প্রশাসক বা বিভাগীয় কমিশনারের মাধ্যমে প্রধান উপদেষ্টা ও শিক্ষা উপদেষ্টা বরাবর স্মারকলিপি প্রদান। এরপরও দাবি পূরণে প্রজ্ঞাপন জারি করা না হলে ঈদের পর সারা দেশের এমপিওভুক্ত শিক্ষক-কমচারীরা কঠোর কর্মসূচি পালন করবে।
সংবাদ সম্মেলনের সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশ শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যক্ষ শেখ কাওছার আহমেদ। সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক মো.
সঞ্চালনায় বক্তব্য দেন সংগঠনের উপদেষ্টা আলী আহমেদ, হাজী আবুল কাশেম, সহসভাপতি গোলাম রব্বানী, মীর মনিরুজ্জামান, রণজিৎ কুমার নাথ প্রমুখ।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: শ ক ষকদ র উপদ ষ ট সরক র
এছাড়াও পড়ুন:
‘মবের’ পিটুনিতে নিহত রূপলাল দাসের মেয়ের বিয়ে আজ
রূপলাল রবিদাসের বাড়িতে সকাল থেকেই ব্যস্ততা। সড়কে রঙিন গেট, উঠানে বাঁশের মাচা, রঙিন কাপড়ের প্যান্ডেল, ধোঁয়া উঠছে রান্নার হাঁড়ি থেকে। বাইরে থেকে দেখে মনে হয়, আনন্দঘন উৎসব। তবে পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে কথা বলে বোঝা যায়, এই উৎসবের ভেতর আছে গভীর শোকের ছায়া। আজ রোববার রূপলালের মেয়ের বিয়ে। এই মেয়ের বিয়ে দিন ঠিক করতে যাওয়ার আগের দিন ‘মবের’ শিকার হয়ে পিটুনিতে প্রাণ হারান রূপলাল।
রংপুরের তারাগঞ্জ উপজেলার কুর্শা ইউনিয়নের ঘনিরামপুর গ্রামে নিহত রূপলাল রবিদাসের বাড়ি। রূপলালের পরিবার ও স্থানীয় মানুষেরা জানান, ১০ আগস্ট মিঠাপুকুর উপজেলার শ্যামপুর এলাকার এক তরুণের সঙ্গে রূপলালের বড় মেয়ে নূপুর রানীর বিয়ের দিন ঠিক করার কথা ছিল। এ জন্য ৯ আগস্ট মিঠাপুকুর থেকে নিজের ভ্যান চালিয়ে রূপলালের বাড়ির উদ্দেশে রওনা হন তাঁর ভাগনির স্বামী প্রদীপ দাস। কিন্তু গ্রামের ভেতর দিয়ে রাস্তা না চেনায় প্রদীপ দাস সয়ার ইউনিয়নের কাজীরহাট এলাকায় এসে রূপলালকে ফোন করেন। রূপলাল সেখানে যান। তাঁরা দুজনে ভ্যানে চড়ে রূপলালের বাড়ি ঘনিরামপুর গ্রামের দিকে রওনা হন। রাত ৯টার দিকে তারাগঞ্জ-কাজীরহাট সড়কের বটতলা এলাকায় পৌঁছালে ভ্যানচোর সন্দেহে তাঁদের দুজনকে থামান স্থানীয় কয়েকজন। এরপর সেখানে লোক জড়ো হতে থাকেন। একপর্যায়ে মব তৈরি করে রূপলাল দাস ও প্রদীপ দাসকে গণপিটুনি দিয়ে হত্যা করা হয়। এ ঘটনায় রূপলালের স্ত্রী হত্যা মামলা করেন এবং পুলিশ ৬ জনকে গ্রেপ্তার করে কারাগারে পাঠায়।
আরও পড়ুনহাত জোড় করে বাঁচার আকুতি, তবু শেষ রক্ষা হয়নি রূপলাল ও প্রদীপের১১ আগস্ট ২০২৫বাবার মৃত্যুর পর নূপুর রানীর বিয়ের আয়োজন বন্ধ হয়ে যায়। রূপলালকে হারিয়ে পুরো পরিবার দিশাহারা হয়ে পড়ে। তবে রূপলালের পরিবার জানিয়েছে, মেয়ের বিয়ের জন্য উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে এক লাখ, তারাগঞ্জ হাটের ব্যবসায়ীরা ৭১ হাজার, উপজেলা বিএনপির পক্ষ থেকে ৭৫ হাজার, একটি সংগঠন থেকে এক লাখ টাকা পেয়েছেন। এ ছাড়া নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক দুজন হৃদয়বান ব্যক্তি রূপলালের ছেলে জয় রবিদাস ও ছোট মেয়ে রুপার পড়াশোনা দায়িত্ব নিয়েছেন। তাঁদের সমাজসেবা অধিদপ্তরের মাধ্যমেও শিক্ষাবৃত্তি দেওয়া হচ্ছে। ওই টাকায় তাঁরা পড়াশোনা করছেন।
নূপুর রানীর বিয়ে উপলক্ষে বাড়ির সামনের সড়কে রঙিন গেট স্থাপন করা হয়েছে। আজ রোববার সকালে রংপুরের তারাগঞ্জ উপজেলার কুর্শা ইউনিয়নের ঘনিরামপুর গ্রামে