মহাসড়ক যানজট মুক্ত রাখতে অনড় কাঁচপুর হাইওয়ে পুলিশ
Published: 12th, March 2025 GMT
নারায়ণগঞ্জে রমজানে যাত্রীদের ভোগান্তি কমাতে ও ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক যানজট মুক্ত রাখতে রাতদিন কাজ করে যাচ্ছেন কাঁচপুর হাইওয়ে থানা পুলিশ।
সরজমিন ঘরে দেখা গেছে বুধবার (১২ মার্চ) সকাল থেকে কাঁচপুর, মদনপুর, মোগড়াপাড়া, লাঙ্গলবন্দসহ বিভিন্ন পয়েন্ট ঘুরে দেখা যায় কোথাও গাড়ির চাপ বা জট নেই। সকলেই স্বস্তির রমজানে চলাচল করছেন।
এর মধ্যে যারা গন্তব্যে যাওয়ার মত তারা নির্বিঘ্নে যাচ্ছেন। এরকম মহাসড়কের দৃশ্য দেখে যাত্রীদের পাশাপাশি খুশি যানজট নিয়ন্ত্রণে থাকা ট্রাফিক পুলিশও।
কাঁচপুর হাইওয়ে থানার অফিসার ইনচার্জ কাজী ওয়াহিদ মোর্শেদ পুলিশের অভিজ্ঞতা, মেধা ও অন্যান্য সার্জেন্টসহ ট্রাফিক সদস্যদের কর্মদক্ষতার সমন্বয়ে মহাসড়ক যানজট মুক্ত রয়েছে বলে জানান পরিবহন শ্রমিকরা।
কাজী ওয়াহিদ মোর্শেদ জানান, মহাসড়কের শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনতে চোরাই তেলের দোকান ও অবৈধ যান চলাচলে বাঁধা দিলেই আমাদের বিরুদ্ধে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম সহ বিভিন্ন ভাবে অপপ্রচার চালায় একটি চক্র। নিজেদের স্বার্থে অন্যের উপর দোষ চাপানোর প্রবনতা দূর করতে হবে।
হাইওয়ে পুলিশের উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের আদেশে মহাসড়কের পাশে চোরাই তেল বেচাকেনা ও অবৈধ যান চলাচল বন্ধ করতে আমরা বদ্ধপরিকর।
ওসি কাজী ওয়াহিদ মোর্শেদ আরো বলেন, যে বা যারা হীন স্বার্থ চরিতার্থ করার জন্য অপপ্রচার চালাচ্ছে তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে। যেকোনো মূল্যে তা প্রতিহত করা হবে।
কাঁচপুর পরিবহন কাউন্টারের এক শ্রমিক ইসমাইল হোসেন বলেন, প্রতিবছর রোজার প্রথম থেকেই মহাসড়কে তীব্র যানজট দেখা গেলেও এবার চোখে পড়েছে ভিন্ন চিত্র। আগে যেখানে ঘন্টার পর ঘন্টা যানজট লেগেই থাকতো এবার তার উল্টো চিত্র মহাসড়ক একেবারেই যানজট মুক্ত। ভোগান্তি ছাড়াই যাত্রীর ফিরছেন গন্তব্যে।
বাড়ি ফেরা ষাটোর্ধ্ব এক নারী যাত্রী মাহমুদা আক্তার জানান, মহাসড়ক যানজটমুক্ত হওয়ায় এবারের গন্তব্যে ফেরার অনুভুতিটাই অন্যরকম। পথে পথে নেই ভোগান্তি। ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক এত দ্রুত সময়ের মধ্যে পরিবর্তন হবে কখনো ভাবতে পারিনি।
আগে যেখানে ঘন্টার পর ঘন্টা এ সড়কগুলোতে যানজট লেগেই থাকতো এখন আর তা নেই। যানজট কম হওয়াতে যাত্রীসহ সকলের ভোগান্তি অনেক কমেছে।
তবে যাত্রী ও পরিবহন শ্রমিকদের আশংকা ঈদের ছুটির দিন থেকে পরিবহনের চাপ বাড়লে যানজট সৃষ্টি হতে পারে। তবে ঈদের আগে ও পরের সাতদিন বর্তমান সময়ের মতো ট্রাফিক পুলিশ তাদের কর্মদক্ষতা অব্যাহত রাখলে যানজটমুক্ত থাকা সম্ভব।
কথা হয় কাঁচপুর হাইওয়ে থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) কাজী ওয়াহিদ মোর্শেদ এর সাথে। তিনি বলেন, আমাদের প্রধান ও একমাত্র উদ্দেশ্য হলো আসন্ন ঈদুল ফিতরকে সামনে রেখে রমজানের শুরু থেকেই যানজট মুক্ত মহাসড়ক এবং স্বস্তিদায়ক যাত্রা। এরই ধারাবাহিকতায় আমি এবং আমার হাইওয়ের প্রতিটি পুলিশ সদস্য নিরলস ভাবে কাজ করে যাচ্ছি।
ট্রাফিক আইন অমান্যকারীদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নিচ্ছি। ইতিমধ্যেই এর সুফল পেতে শুরু করছে যাত্রীরা। ধীরে ধীরে পাল্টে যাচ্ছে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের যানজটের চিরচেনা রুপ।
চলতি কর্মতৎপরতা অব্যাহত রাখা এবং সকলকে যানজট মুক্ত মহাসড়ক উপহার দেওয়াই এবারের মূল লক্ষ্য বলে তিনি আরো জানান।
উৎস: Narayanganj Times
কীওয়ার্ড: ন র য়ণগঞ জ য নজট ম ক ত পর বহন
এছাড়াও পড়ুন:
কম খরচে দ্রুত মামলা নিষ্পত্তিতে কাজ করছে মন্ত্রণালয়: আসিফ নজরুল
দ্রুত সময়ের মধ্যে কম খরচে মামলা নিষ্পত্তি করে মানুষকে মামলার অভিশাপ থেকে মুক্তি দিতে আইন মন্ত্রণালয় কাজ করছে বলে জানিয়েছেন আইন উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. আসিফ নজরুল। তিনি বলেন, তিনটি লক্ষ্য নিয়ে আইনগত সহায়তা প্রদান আইনের সংশোধন করা হচ্ছে। আগামী মাস থেকে এ সংশোধনের কাজ শুরু হবে। আমাদের নতুন বাংলাদেশ গড়তে হবে। গরীব মানুষের ন্যায়বিচার নিশ্চিত করতে হবে।
আজ শনিবার রাজধানীর বেইলি রোডে জাতীয় আইনগত সহায়তা প্রদান সংস্থার (লিগ্যাল এইড ) কার্যালয়ে আইনগত সহায়তা প্রদান আইন (সংশোধন) অধিকতর সংশোধনকল্পে প্রণীত অধ্যাদেশ-২০২৫ নিয়ে বিভিন্ন অংশীজনের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় তিনি এসব কথা বলেন। সভায় জাতীয় আইনগত সহায়তা সংস্থার পক্ষ থেকে আইনগত সহায়তা প্রদান আইন (সংশোধন) অধ্যাদেশ-২০২৫ এর খসড়া উপস্থাপন করা হয়।
আইন উপদেষ্টা বলেন, ন্যায়বিচার নিশ্চিতে বিচারকদের প্রশিক্ষণ দেওয়াসহ নানামুখী পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। দেশে প্রতি বছর ৫ লাখ মামলা দায়ের হয়। এর মধ্যে লিগ্যাল এইডে ৩৫ হাজার মামলা নিষ্পত্তি হয়। আগামীতে এই হার ২ লাখে নিয়ে যাওয়ার আমাদের লক্ষ্য রয়েছে। এতে মামলার সংখ্যা ৪০ শতাংশ কমবে। এজন্য আইন পরিবর্তন করতে হবে। ছোট ছোট যেমন আপোষযোগ্য পারিবারিক মামলা, চেক ডিজঅনারসহ অন্যান্য মামলা আপসে বাধ্যতামুলক করা হবে।
তিনি বলেন, আদালতে মামলার যে অস্বাভাবিক চাপ, তা শুধুমাত্র বিচারিক কাঠামোকে নয়, ন্যায় বিচারপ্রাপ্তির সম্ভাবনাকে প্রশ্নবিদ্ধ করে তোলে। এ চাপ কমাতে হলে বিকল্প বিরোধ নিস্পত্তি পদ্ধতি আরও গুরুত্ব দিতে হবে। নতুন মামলার চাপ কমানো সময়ের দাবি। এ জন্য মামলার আগে আপস-মধ্যস্থতা বাধ্যতামুলক করা গুরুত্বপুর্ণ।
দ্রুত সময়ে অল্প খরচে মামলার নিষ্পত্তি করতে সিভিল প্রসিডিউর কোড ইতিমধ্যে সংশোধন করা হয়েছে, ফৌজদারি কার্যবিধি সংস্কারের কাজ দ্রুত এগিয়ে চলছে। আগামী এক মাসের মধ্যে কাজ শেষ হবে। এ সময় লিগ্যাল এইডের মামলা নিষ্পত্তিতে একজন বিচারকের জায়গায় ৩ জন বিচারক নিয়োগ দেওয়া হবে বলেও জানান আইন উপদেষ্টা।
মতবিনিময় সভায় অংশীজনদের মধ্যে বক্তব্যে দেন জাতীয় আইনগত প্রদান সংস্থার পরিচালক আজাদ সুবহানি, ঢাকা আইনজীবী সমিতির সভাপতি মো. খোরশেদ আলম, ঢাকা জেলা লিগ্যাল এইড অফিসার সায়েম খান প্রমুখ। এছাড়া চট্টগ্রাম, নারায়ণগঞ্জ, কুমিল্লা জেলার আইনজীবী সমিতি সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক, ইউএনডিপি প্রতিনিধি, জিআইজেড প্রতিনিধি, আইএলও, ব্রাক, ব্লাস্ট ও প্রশিকার প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।
সভায় বক্তারা বলেন, লিগ্যাল এইডের প্রচারের ক্ষেত্রে অনেক ঘাটতি আছে। গ্রামাঞ্চলের অধিকাংশ গরীব ও অসহায় মানুষ জানে না সরকারের এমন একটি আইনিসহায়তা প্রতিষ্ঠান রয়েছে। প্রচারের মাধ্যমে এই প্রতিষ্ঠানের কার্যক্রম আরও বাড়াতে হবে। পাশাপাশি বিভাগীয় শহরে অংশীজনদের সঙ্গে মতবিনিময় করে তাদের পরামর্শ নেওয়া যেতে পারে বলে মত দেন তারা।