ইউনিয়ন বিএনপির ইফতার মাহফিল ছিল মঙ্গলবার। প্রধান অথিতিকে বরণ করা নিয়ে সংঘর্ষ হয়। এতে আহত এক কর্মী বুধবার বিকেলে মারা গেছেন। এটি ঘটেছে রাজশাহীর তানোর উপজেলার পাঁচন্দরে। নিহত গনিউল ইসলাম (৫৭) পাঁচন্দর ইউনিয়নের বাসিন্দা। তিনি ইউনিয়ন বিএনপির সাবেক সভাপতির বড় ভাই।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, মঙ্গলবার বিকেলে ইফতার মাহফিলের আগে তানোরের কৃষ্ণপুর মোড়ে দুই পক্ষে হাতাহাতি ও মারামারি ঘটে। এক পক্ষে ছিলেন পাঁচন্দর ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি প্রভাষক মুজিবুর রহমান ও উপজেলা যুবদলের আহ্বায়ক গোলাম মোর্তুজা এবং তাদের অনুসারীরা। আরেক পক্ষে ছিলেন ইউনিয়নের সাবেক সভাপতি আব্দুল মোমিন ও তাঁর লোকজন।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, ইফতার মাহফিল শুরুর আগে উভয় পক্ষের নেতাকর্মী-সমর্থকরা কৃষ্ণপুর মোড়ে প্রধান অতিথিকে বরণ করার জন্য রাস্তায় অপেক্ষা করছিলেন। প্রধান অতিথি ছিলেন বিএনপি চেয়ারপারসনের সাবেক সামরিক সচিব ও উপদেষ্টামণ্ডলীর সদস্য মেজর জেনারেল (অবসরপ্রাপ্ত) শরীফ উদ্দিন। মোমিনের পক্ষ থেকে প্রধান অতিথিকে বরণ করে নিয়ে যেতে চাইলে বাধা দেন মুজিবুর। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে মোমিন ও তাঁর অনুসারীরা মুজিবুর ও মোর্তুজার ওপর চড়াও হয়। তাদের লাঞ্ছিত করে। এ খবর ছড়িয়ে পড়লে মুজিবুরের নেতাকর্মীরা মোমিন ও গনিউলের ওপর হামলা চালায়। এতে গনিউল গুরুতর আহত হলে তাঁকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়।

এ বিষয়ে মেজর জেনারেল (অবসরপ্রাপ্ত) শরীফ উদ্দিন সমকালকে বলেন, ‘ইফতার মাহফিলে অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনার জন্য আমি মর্মাহত। ইফতারির স্থান থেকে অনেক দূরে এসব ঘটেছে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী দোষীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবে। আমরা দলীয়ভাবে অপরাধীদের বিষয়ে কঠোর অবস্থান নেব।’

রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসাপাতালের জরুরি বিভাগের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ডা.

শংকর কুমার বিশ্বাস বলেন, গনিউল নিউরো সার্জারি বিভাগে চিকিৎসাধীন ছিলেন। তাঁর মাথায় গুরুতর আঘাত ছিল। এর পর তাঁকে নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) নেওয়া হয়। গতকাল বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে তাঁর মৃত্যু হয়।

এ বিষয়ে তানোর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আফজাল হোসেন বলেন, মারামারির ঘটনায় একজন মারা গেছেন। থানায় কেউ লিখিত অভিযোগ করেনি। অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
 

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ব এনপ ন ব এনপ ত কর ম

এছাড়াও পড়ুন:

পাবনায় অবসরপ্রাপ্ত অধ্যাপককে কুপিয়ে জখমের ঘটনায় প্রতিবাদ অব্যাহত, একজন গ্রেপ্তার

পাবনা শহরের কালাচাঁদপাড়ার নিজ বাড়িতে জওহরলাল বসাক তুলশী (৭৭) নামের অবসরপ্রাপ্ত অধ্যাপককে কুপিয়ে জখমের ঘটনায় প্রতিবাদ অব্যাহত রয়েছে। আজ মঙ্গলবার দুপুরে ঘটনার প্রতিবাদ জানিয়ে শহরের আবদুল হামিদ সড়কে জেলা ছাত্রদল, যুবদল ও সেচ্ছাসেবক দল মানববন্ধন করেছে। মানববন্ধন থেকে অবিলম্বে হামলাকারীদের গ্রেপ্তার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করা হয়েছে।

এদিকে ঘটনায় করা মামলায় জেলা পুলিশের গোয়েন্দা শাখা (ডিবি) ঢাকা থেকে একজনকে গ্রেপ্তার করেছে বলে পুলিশ জানিয়েছে। তবে তদন্তের স্বার্থে তাঁর নাম–পরিচয় প্রকাশ করেনি।

আরও পড়ুনপাবনা এডওয়ার্ড কলেজের অবসরপ্রাপ্ত অধ্যাপককে কুপিয়ে জখম, বিচারের দাবিতে মানববন্ধন২৮ জুলাই ২০২৫

স্থানীয় লোকজন ও প্রত্যক্ষদর্শীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ঘটনার পর থেকেই জেলা শহরের বিভিন্ন মহলে প্রতিবাদ শুরু হয়েছে। এরই ধারাবাহিকতায় দুপুর ১২টার দিকে জেলা ছাত্রদল, যুবদল ও স্বেচ্ছাসেবক দল যৌথভাবে মানববন্ধনের আয়োজন করে। প্রায় ঘণ্টাব্যাপী মানববন্ধন থেকে তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানানো হয়। সেই সঙ্গে অবিলম্বে ঘটনায় জড়িত ব্যক্তিদের গ্রেপ্তার দাবি করা হয়।

মানববন্ধন চলাকালে বক্তব্য দেন জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক নুর মাসুম, জেলা যুবদলের আহ্বায়ক হিমেল রানা, জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের আহ্বায়ক ইয়ামিন খান, সদস্যসচিব কমল শেখ, যুগ্ম আহ্বায়ক দীপঙ্কর সরকার প্রমুখ।

বক্তারা জানান, জহুরলাল বসাক সর্বজনশ্রদ্ধেয় একজন শিক্ষক। তিনি মানুষ গড়ার কারিগর। দেশব্যাপী তাঁর হাজার হাজার ছাত্র রয়েছে। তাঁর মতো একজন মানুষের ওপর এই হামলা ন্যক্কারজনক। এই হামলার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে অবিলম্বে হামলাকারীদের গ্রেপ্তার দাবি করছেন মানববন্ধনে অংশগ্রহণকারীরা।

নুর মোহাম্মদ মাসুম বলেন, ‘স্যার (জওহরলাল বসাক তুলশী) একজন সাদামাটা ও হাসিখুশি মানুষ। তাঁর মতো মানুষের ওপর হামলা আমাদের জন্য লজ্জাকর। আমরা ছাত্র হিসেবে এটা কিছুতেই মেনে নিতে পারছি না। অবিলম্বে হামলাকারীদের গ্রেপ্তার ও দৃষ্টান্তমুলক শাস্তি দাবি করছি।’

এ প্রসঙ্গে সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আবদুস সালাম প্রথম আলোকে বলেন, ঘটনার পরই পুলিশের বিভিন্ন শাখা আসামিদের ধরতে অভিযান শুরু করেছে। ইতিমধ্যেই ডিবি পুলিশ অভিযান চালিয়ে ঢাকা থেকে একজনকে গ্রেপ্তার করেছে। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে ওই ব্যক্তি হামলার কথা স্বীকার করেছেন। তাঁকে ঢাকা থেকে পাবনায় আনা হচ্ছে। ঘটনায় জড়িত অন্যজনকে ধরতে অভিযান চালানো হচ্ছে। তবে তদন্তের স্বার্থে এখনই বিস্তারিত বিছু বলা সম্ভব হচ্ছে না।

প্রসঙ্গত, আহত জওহরলাল বসাক পাবনা সরকারি এডওয়ার্ড কলেজের পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের অবসরপ্রাপ্ত অধ্যাপক ও বিভাগীয় প্রধান ছিলেন। গত রোববার বিকেলে দুই ব্যক্তি তাঁর বাড়িতে ঢুকে তাঁকে কুপিয়ে আহত করে ও আসবাবপত্র তছনছ করে। এ ঘটনায় অজ্ঞাতপরিচয় ব্যক্তিদের আসামি করে থানায় একটি মামলা করেছেন জওহরলাল বসাক। এ ঘটনার প্রতিবাদে গতকাল সোমবার দুপুরে পাবনা সরকারি এডওয়ার্ড কলেজে শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা এবং শহরে হিন্দু সম্প্রদায়ের ব্যানারে মানববন্ধন করেন।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • অধ্যাপক জওহরলাল বসাকের উপর হামলার প্রতিবাদে মানববন্ধন
  • পাবনায় অবসরপ্রাপ্ত অধ্যাপককে কুপিয়ে জখমের ঘটনায় প্রতিবাদ অব্যাহত, একজন গ্রেপ্তার