Samakal:
2025-11-03@03:43:56 GMT

ধর্ষণকে ধর্ষণই বলতে হবে

Published: 17th, March 2025 GMT

ধর্ষণকে ধর্ষণই বলতে হবে

ধর্ষণ বিষয়ে ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি) কমিশনার শেখ মো. সাজ্জাত আলীর সাম্প্রতিক বক্তব্যের প্রতিবাদ জানিয়েছে শিশু সুরক্ষা ও মানবাধিকার নিয়ে কাজ করা পাঁচটি বেসরকারি সংস্থা (এনজিও)। এসব সংস্থার প্রতিনিধিরা বলেছেন, আইনি দিক ও অপরাধের ভয়াবহতার বিষয়টি বিবেচনায় নিয়ে ধর্ষণকে ধর্ষণই বলতে হবে। ধর্ষণকে শুধু নারী নির্যাতন ও নারী নিপীড়ন বললে এর ভয়াবহতা হালকা হয়ে যায়।

গতকাল রোববার রাজধানীর সেগুনবাগিচায় ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির শফিকুল কবির মিলনায়তনে ‘শিশু ধর্ষণ, নির্যাতন ও হত্যার ঘটনায় শিশু অধিকারবিষয়ক এনজিওদের (বেসরকারি সংস্থা) প্রতিবাদ ও উদ্বেগ প্রকাশ’ শীর্ষক সংবাদ সম্মেলনে বক্তারা এসব কথা বলেন। যৌথভাবে এই সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে সেভ দ্য চিলড্রেন, প্ল্যান ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ, মানুষের জন্য ফাউন্ডেশন, আইন ও সালিশ কেন্দ্র এবং ব্রেকিং দ্য সাইলেন্স। 

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য উপস্থাপন করেন মানুষের জন্য ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক শাহীন আনাম। আরও বক্তব্য দেন প্ল্যান ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের পরিচালক (প্রভাব, প্রচারাভিযান ও যোগাযোগ) নিশাত সুলতানা, সেভ দ্য চিলড্রেনের পরিচালক (শিশু সুরক্ষা ও শিশু অধিকারবিষয়ক সুশাসন বিভাগ) আবদুল্লা আল মামুন, ব্রেকিং দ্য সাইলেন্সের পরিচালক (কর্মসূচি ও পরিকল্পনা) মোহাম্মদ জাহিদুল ইসলাম, আইন ও সালিশ কেন্দ্রের (আসক) সমন্বয়ক তামান্না হক রীতি, প্ল্যান ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের কান্ট্রি ডিরেক্টর কবিতা বোস প্রমুখ। 

ডিএমপি কমিশনার শেখ মো.

সাজ্জাত আলী সম্প্রতি এক অনুষ্ঠানে গণমাধ্যমকে ‘ধর্ষণ’ শব্দের পরিবর্তে ‘নারী নির্যাতন’ বা ‘নারী নিপীড়ন’ ব্যবহার করার আহ্বান জানান। সংবাদ সম্মেলনে এ বিষয়ে শাহীন আনাম বলেন, ‘ডিএমপি কমিশনার ধর্ষণ শব্দটি সংবাদমাধ্যমে ব্যবহার না করতে বলেছেন। কারণ, তাঁর কাছে শব্দটি ভালো লাগে না। এতে খুবই অবাক হয়েছি।’

নিশাত সুলতানা বলেন, ধর্ষণের ঘটনাকে ধর্ষণই বলতে হবে। এটাকে নমনীয় করে বলার কোনো সুযোগ নেই। আবদুল্লা আল মামুন বলেন, নারী নির্যাতন একটি বড় আমব্রেলা (বিস্তৃত বিষয়)। তার মধ্যে ধর্ষণ একটি অন্যতম জঘন্য অপরাধ। সব অপরাধকে যদি সাধারণীকরণ করা হয়, তাহলে যথাযথ আইন প্রয়োগ সম্ভব হবে না।
জাহিদুল ইসলাম বলেন, ধর্ষণের মামলায় ডিএনএ প্রতিবেদন বাধ্যতামূলক রাখা উচিত। তা না হলে হয়রানিমূলক মামলা হওয়ার ঝুঁকি থাকে। তামান্না হক বলেন, ধর্ষণের অভিযোগের তদন্ত, বিচারপ্রক্রিয়া, সাক্ষী ও ভুক্তভোগীর সুরক্ষা ইত্যাদি যেসব বিষয়ে ঘাটতি রয়েছে, তা মোকাবিলায় নিয়মিত কাজ করতে হবে।
সংবাদ সম্মেলনে যৌন সহিংসতা প্রতিরোধকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিয়ে ন্যায়বিচার ও জবাবদিহি নিশ্চিত করতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে সরকারের প্রতি দাবি জানানো হয়। একই সঙ্গে নারী নির্যাতন প্রতিরোধে মাল্টিসেক্টরাল প্রোগামকে রাজস্ব বাজেটে নেওয়া; শিশুদের অধিকার, সুরক্ষা ও কল্যাণে পৃথক শিশু অধিদপ্তর স্থাপন ও শিশু নির্যাতন সংক্রান্ত মামলাগুলোর দ্রুত ও কার্যকর সমাধানে ‘শিশু সংস্কার কমিশন’ গঠনের দাবি জানানো হয়। 

ডিএমপি কমিশনার বাস্তবে ধর্ষকের পক্ষ নিচ্ছেন: ইফতেখারুজ্জামান
ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের (টিআইবি) নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেছেন, ডিএমপি কমিশনার ‘ধর্ষণ’ শব্দটি ব্যবহার না করার অনুরোধের মাধ্যমে বাস্তবে ধর্ষকের পক্ষ নিচ্ছেন। ধর্ষকের সুরক্ষা দেওয়ার উপায় সৃষ্টি করে দিচ্ছেন। বিষয়টি কোনো অবস্থায় গ্রহণযোগ্য হতে পারে না। তার এই বক্তব্য প্রত্যাখ্যান করা উচিত।

রোববার রাজধানীর মানিক মিয়া অ্যাভিনিউয়ে টিআইবি আয়োজিত ‘নারী ও শিশুর প্রতি সহিংসতা বন্ধ করুন, এখনই!’ শীর্ষক মানববন্ধনে এসব কথা বলেন তিনি। 
ইফতেখারুজ্জামান বলেন, আমাদের রাষ্ট্র পরিচালনার দায়িত্বে যারা থাকে, তাদের আচরণে, কথায়-বার্তায়, চর্চায় কিন্তু আমরা নারীবান্ধব অবস্থা দেখতে পাই না। খুবই দুঃখজনক বিষয়। ধর্ষণ যখন ঘটবে অত্যন্ত জোরালোভাবে আরও সেটিকে প্রচার করতে হবে। যাতে এ বিষয় মানুষের নজরে আসে।
মানববন্ধনে লিখিত বক্তব্য উপস্থাপন করেন টিআইবির আউটরিচ অ্যান্ড কমিউনিকেশনের সহকারী সমন্বয়ক সাইমুম মৌসুমী। 

কন্যাশিশু ধর্ষণ ও যৌন নিপীড়নের ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছে চাইল্ড রাইটস অ্যাডভোকেসি কোয়ালিশন ইন বাংলাদেশ। একই সঙ্গে এসব ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত ও স্বচ্ছ বিচার প্রক্রিয়ার মাধ্যমে ন্যায়বিচার নিশ্চিত করার দাবি জানিয়েছে সংস্থাটি। গতকাল সংস্থার এক বিবৃতিতে এই দাবি জানানো হয়। বিবৃতিতে শিশুদের ধর্ষণ ও যৌন হয়রানি প্রতিরোধে আট দফা দাবি তুলে ধরা হয়। 
নারী নির্যাতন প্রতিরোধ ও আইনি সহায়তা দেওয়ার কার্যক্রম আরও জোরদার করার উদ্যোগ নিয়েছে বাংলাদেশ মহিলা পরিষদ। এ লক্ষ্যে প্যানেল আইনজীবীদের সঙ্গে মতবিনিময় সভা করেছে সংগঠনটি। গতকাল রাজধানীর তোপখানা রোডে মহিলা পরিষদের আনোয়ারা বেগম-মুনিরা খান মিলনায়তনে এই মতবিনিময় সভা হয়। এ ছাড়া মহিলা পরিষদের সভাপতি ডা. ফওজিয়া মোসলেম ও সাধারণ সম্পাদক মালেকা বানু এক বিবৃতিতে বরগুনায় মেয়েকে ধর্ষণের ঘটনায় মামলা করায় বাবাকে হত্যার ঘটনায় গভীর উদ্বেগ ও ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। এ ঘটনায় জড়িতদের দ্রুত বিচারের আওতায় আনার দাবি জানিয়েছেন তারা। 
এদিকে নারী ও শিশুর প্রতি সহিংসতা বন্ধের দাবিতে গতকাল সচেতন নাগরিক কমিটির (সনাক) ব্রাহ্মণবাড়িয়া, চাঁপাইনবাবগঞ্জ, ফরিদপুর ও রাজবাড়ী জেলা শাখার উদ্যোগে মানববন্ধন হয়েছে।

(প্রতিবেদনে তথ্য দিয়েছেন নিজস্ব প্রতিবেদক এবং সংশ্লিষ্ট অফিস ও প্রতিনিধি)

 

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: র ঘটন য় র পর চ ড এমপ গতক ল

এছাড়াও পড়ুন:

সাগর-রুনিসহ সকল সাংবাদিক হত্যার বিচার ও ২১ দফা দাবিতে বিক্ষোভ সমাবেশ

সাগর-রুনিসহ সকল সাংবাদিক হত্যার বিচার, নবম ওয়েজ বোর্ড বাস্তবায়ন, দশম ওয়েজ বোর্ড গঠন, চাকরিচ্যুত সাংবাদিকদের পুনর্বহাল এবং পেশাগত নিরাপত্তা নিশ্চিতসহ ২১ দফা দাবিতে শহরে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে।

শনিবার (১ নভেম্বর) সকাল ১১টায় নারায়ণগঞ্জ প্রেসক্লাবের সামনে সাংবাদিক ইউনিয়ন নারায়ণগঞ্জের উদ্যোগে কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে এ মানববন্ধন ও বিক্ষোভ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।

সাংবাদিক ইউনিয়ন নারায়ণগঞ্জের সভাপতি আবু সাউদ মাসুদের সভাপতিত্বে এবং একেএম মাহফুজুর রহমানের সঞ্চালনায় উক্ত মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন, নিউ নেশন পত্রিকার নির্বাহী সম্পাদক এ আর ফররুখ আহমেদ খসরু, ফতুল্লা প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক নিয়াজ মো: মাসুম, সিনিয়র সাংবাদিক মনির হোসেন, দৈনিক বাংলাদেশ প্রতিদিনের রূপগঞ্জ প্রতিনিধি জাহাঙ্গীর আলম হানিফ, দৈনিক বাংলাদেশ বুলেটিন পত্রিকার সাংবাদিক উজ্জল হোসেন মাসুম, দৈনিক ইয়াদ পত্রিকার স্টাফ রিপোর্টার মেহবুব মিয়া, দৈনিক পূর্বাভাস পত্রিকার যুগ্ম সম্পাদক সোনিয়া দেওয়ান প্রীতি, দৈনিক দেশ পত্রিকার সাংবাদিক মোখলেসুর রহমান তোতাসহ প্রমূখ।

এসময় বক্তারা বলেন, ‘নো ওয়েজ বোর্ড, নো মিডিয়া’ নীতি কার্য্যকর, সাংবাদিকদের বেতন সর্বনিম্ন ৩৫ হাজার টাকা নির্ধারণ, প্রিন্ট, ইলেকট্রনিক ও অনলাইন মিডিয়ায় নবম ওয়েজ বোর্ড বাস্তবায়ন ও দশম ওয়েজ বোর্ড গঠন, সাংবাদিক সুরক্ষা নীতিমালা প্রনয়ন, সাংবাদিকদের সাপ্তাহিক ছুটি ২দিন নির্ধারণ, সাংবাদিক দম্পতি সাগর-রুনীসহ সকল সাংবাদিক হত্যার বিচার, গনমাধ্যমের স্বাধীনতা বিরোধী সকল কালাকানুন বাতিল, আইন অনুযায়ী সাংবাদিকদের ন্যায্যা পাওনা আদায়ের জন্য পৃথক শ্রম আদালত স্থাপন সহ ২১ দফা দাবি আদায়ের লক্ষ্যে কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে আজ আমরা মানববন্ধন করছি।

বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে আমাদের আহ্বান অনতিবিলম্ভে আমাদের এসব দাবিগুলো বাস্তবায়ন করতে হবে।  

এসময় আরও উপস্থিত ছিলেন, প্রতিদিনের বাংলাদেশ পত্রিকার নারায়ণগঞ্জ প্রতিনিধি এম আর কালাম, নাহিদ আজাদ, বাংলাদেশ নিউজের স্টাফ করেসপন্ডেন্ট ইমতিয়াজ আহমেদ, নিউজ টুয়েন্টিফোর টেলিভিশনের নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রতিনিধি শরিফ সুমন, দৈনিক আলোকিত বাংলাদেশ পত্রিকার নারায়ণগঞ্জ প্রতিনিধি মোশতাক আহমেদ, বাংলাদেশের খবর পত্রিকার নারায়ণগঞ্জ প্রতিনিধি আল আমিন, দৈনিক ভোরের ডাক পত্রিকার নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রতিনিধি সাব্বির হোসেন, মানব জমিনের ফতুল্লা প্রতিনিধি আবু সাঈদ পাটুয়ারী রাসেল, মুসলিম টাইমসের নারায়ণগঞ্জ প্রতিনিধি সাইফুল্লাহ খালিদ রাসেল, চ্যানেল এস এর সিদ্ধিরগঞ্জ প্রতিনিধি সাদ্দাম হোসেন মুল্লা, দৈনিক সংগ্রামের সিদ্ধিরগঞ্জ প্রতিনিধি ইখতিয়ার রাহয়ান, সাংবাদিক শরিফুল ইসলাম আরজু, এস এম জহিরুল ইসলাম বিদ্যুৎ, সম্রাট প্রমুখ।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • সুদানে গণহত্যার প্রতিবাদে জাবি ও জবিতে মানববন্ধন
  • ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে ৩০ জন শিক্ষক-কর্মকর্তাকে বরখাস্ত ও ৩৩ জন শিক্ষার্থীকে বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত
  • সালমান শাহ হত্যা মামলার আসামিদের গ্রেপ্তারসহ ৫ দফা দাবি
  • সাগর-রুনিসহ সকল সাংবাদিক হত্যার বিচার ও ২১ দফা দাবিতে বিক্ষোভ সমাবেশ
  • চারঘাটে পদ্মার ভাঙন রোধে স্থায়ী বাঁধ নির্মাণের দাবিতে মানববন্ধন
  • আসামিদের গ্রেপ্তারের দাবি, সালমান শাহ ভক্তদের মানববন্ধন
  • পদ্মার চরে জোড়া খুনের ঘটনায় ‘কাকন বাহিনীর’ সদস্যদের শাস্তির দাবিতে মানববন্ধন
  • সুনামগঞ্জে জমি থেকে ৫ কোটি টাকার বালু চুরির অভিযোগে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে মামলা