উগ্রবাদকে নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থ হলে ফ্যাসিবাদী অপশক্তির পুনরুত্থান ঘটবে: তারেক রহমান
Published: 19th, March 2025 GMT
ধর্মীয় উগ্রবাদীদের অপতৎপরতা ও চরমপন্থা নিয়ন্ত্রণ করতে অন্তর্বর্তী সরকারের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। তিনি দেশের অসাম্প্রদায়িক গণতান্ত্রিক চরিত্র সমুন্নত রাখতে চরমপন্থা ও ধর্মীয় উগ্রবাদী অপশক্তিকে প্রতিহত করার আহ্বান জানান।
তারেক রহমান বলেন, ধর্মীয় উগ্রবাদীদের অপতৎপরতা ও চরমপন্থা নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থতার পরিচয় দিলে উগ্রবাদী জনগোষ্ঠী ও পরাজিত ফ্যাসিবাদী অপশক্তি দেশে আবার গণতন্ত্রের কবর রচনা করবে। অপর দিকে গণতান্ত্রিক বিশ্বে বাংলাদেশ ইমেজ সংকটে পড়তে পারে।
আজ বুধবার রাজধানীর ইস্কাটনের লেডিস ক্লাবে বিএনপি আয়োজিত ইফতার মাহফিলে অনলাইনে যুক্ত হয়ে তিনি এ কথাগুলো বলেন। বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও বিশিষ্ট ব্যক্তিদের সম্মানে এ ইফতারের আয়োজন করে দলটি।
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বলেন, গণহত্যাকারী পলাতক মাফিয়া চক্রকে যেকোনো মূল্যে বিচারের মুখোমুখি করার মাধ্যমে বাংলাদেশে গণতান্ত্রিক বিধিব্যবস্থা শক্তিশালী করতে হবে।
জাতীয় নির্বাচন প্রসঙ্গে তারেক রহমান বলেন, বিএনপিসহ গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক দলগুলো জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠানের বিষয়ে সোচ্চার। কিন্তু অন্তর্বর্তী সরকারের কোনো কোনো উপদেষ্টা, এমনকি দু-একটি রাজনৈতিক দলকেও জাতীয় নির্বাচনের ব্যাপারে ইদানীং কিছুটা ভিন্ন সুরে কথা বলতে শোনা যায়। জনপ্রত্যাশার প্রতি শ্রদ্ধা না দেখিয়ে অকারণে সময়ক্ষেপণের চেষ্টা হলে, সেটি জনমনে ভুল বার্তা পৌঁছাবে।
ইফতার মাহফিলে বিভিন্ন দরের রাজনীতিবিদেরা যোগ দেন। রাজধানীর ইস্কাটনের লেডিস ক্লাব, ১৯ মার্চ.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ত র ক রহম ন গণত ন ত র ক র জন ত ব এনপ
এছাড়াও পড়ুন:
জয় যেন হাতছাড়া না হয়, সে বিষয়ে সতর্ক থাকতে হবে
বাংলাদেশ উদীচী শিল্পীগোষ্ঠীর ৫৭তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উদ্যাপন শেষ হয়েছে। আজ শুক্রবার বিকেলে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে আলোচনা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে শেষ হয় উদীচীর কেন্দ্রীয় সংসদের উদ্যোগে তিন দিনের এই আয়োজন। শেষ দিনের আয়োজনে বক্তরা বলেন, অপশক্তির বিরুদ্ধে বারবার জয় পেলেও তা হাতছাড়া হয়ে যায়। এ বিষয়ে সতর্ক থাকতে হবে।
এবার উদীচীর প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উদ্যাপন হয়েছে দুই অংশে ভাগ হয়ে। আজ বিকেলে আয়োজিত হয় কেন্দ্রীয় সংসদের আলোচনা পর্ব এবং সাংস্কৃতিক পরিবেশনা। আলোচনা পর্বে সভাপতিত্ব করেন উদীচীর কেন্দ্রীয় সংসদের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মাহমুদ সেলিম। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন সহসাধারণ সম্পাদক সঙ্গীতা ইমাম।
শুরুতে জাতীয় পতাকা ও সাংগঠনিক পতাকা উত্তোলনের পর সমবেত কণ্ঠে জাতীয় সংগীত পরিবেশন করেন উদীচীর শিল্পীরা। অনুষ্ঠানের শুরুতে স্মরণ করা হয় সত্যেন সেন, রণেশ দাশগুপ্ত, কলিম শরাফী, গোলাম মোহাম্মদ ইদু, কামাল লোহানী, পান্না কায়সার, যতীন সরকার ও বদিউর রহমানকে।
আজকের আয়োজনে উদীচীর সাধারণ সম্পাদক অমিত রঞ্জন দে বলেন, ৫৬ বছর ধরে মুক্তির ব্রত নিয়ে উদীচী কাজ করছে। হতাশা, নিরাশা আর সাম্রাজ্যবাদ থেকে মুক্তিই উদীচীর চাওয়া। এ সময় সাবেক সংগঠক মোফাখখারুল ইসলাম বলেন, আদর্শচ্যুতি হলে ঐক্য হয় না। উদীচীতে পারস্পরিক সংকট সব সময়ই ছিল। কিন্তু উদীচী কখনো রাজনৈতিক সংগঠন হয়নি।
উদীচীর সাবেক সহসভাপতি অধ্যাপক নিরঞ্জন অধিকারীর বক্তব্যে উঠে আসে ১৯৬৮ সালে একজন শিল্পীর নারিন্দার বাসায় উদীচী শুরু হওয়ার স্মৃতিকথা। তিনি বলেন, দেশের বর্তমান পরিস্থিতিতে উদীচীর কার্যক্রম আরও বেগবান করা প্রয়োজন। সত্যেন সেনের গানের কথা উল্লেখ করে তিনি তাঁর বক্তব্য শেষ করেন।
আয়োজনে উদীচীর সাবেক সাধারণ সম্পাদক রেজাউল করিম সিদ্দিক রানাসহ অন্য বক্তারা বলেন, প্রতিষ্ঠার পর থেকে এ পর্যন্ত সাম্রাজ্যবাদ ও সাম্প্রদায়িকতার বিরুদ্ধে লড়াই করে চলেছে উদীচী। যখনই দেশে কোনো সংকট দেখা দেয়, তখনই উদীচী আলোকবর্তিকা হয়ে মানুষকে পথ দেখানোর চেষ্টা করে। মানুষ বারবার আন্দোলন করে আত্মাহুতি দিয়ে অপশক্তির হাত থেকে রক্ষা পেলেও বারবারই সে জয় হাতছাড়া হয়ে যায়। এই জয় যেন হাতছাড়া না হয়ে যায়, সে বিষয়ে সতর্ক থাকতে হবে।
আলোচনা পর্ব সমাপ্ত করেন উদীচীর ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মোহাম্মদ সেলিম। তিনি বলেন, ‘আমাদের দেশটি সাম্প্রদায়িক করে ফেলার চেষ্টা করা হচ্ছে। কিন্তু গোটা উপমহাদেশের ঐতিহ্য হচ্ছে পরমতসহিষ্ণুতা। সেই ঐতিহ্য এখন নষ্ট করার চেষ্টা হচ্ছে—বিশেষ “মব” তৈরি করে।’ আলোচনা অনুষ্ঠান শেষে শুরু হয় সাংস্কৃতিক আয়োজন।
‘ঘোর আঁধারে পথ দেখাবে আগুনের নিশান’ স্লোগানে উদীচীর একাংশের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর তিন দিনব্যাপী আয়োজন শুরু হয় ২৯ অক্টোবর। ‘সাম্প্রদায়িকতা ও সাম্রাজ্যবিরোধী লড়াইয়ে উদীচী’ শিরোনামে প্রবন্ধ পাঠের পর সেদিন আলোচনা অনুষ্ঠিত হয়েছিল রাজধানীর ডিআরইউতে। একই দিনে আরেক অংশের অনুষ্ঠান শুরু হয়েছিল কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে। তাদের প্রতিপাদ্য ছিল ‘প্রগতির পথে জীবনের গান’। দেশে ও বিদেশে উদীচীর সাড়ে তিন শতাধিক জেলা ও শাখা সংসদে এবার একযোগে উদ্যাপন করেছে ৫৭তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী।