ফিলিস্তিনিদের ওপর ন্যাক্কারজনক হামলা ও ভারতে হিন্দুত্ববাদীদের আগ্রাসনের প্রতিবাদে বিক্ষোভ মিছিল করেছেন বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের (বেরোবি) শিক্ষার্থীরা।

বুধবার (১৯ মার্চ) সন্ধ্যা ৭টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটক থেকে মিছিল নিয়ে খামার মোড় হয়ে আবার প্রধান ফটকে এসে সমাবেশ করেন তারা।

মিছিলে তারা ‘ফ্রি ফ্রি প্যালেস্টাইন’, ‘ইসরায়েলের বিরুদ্ধে, ডাইরেক্ট অ্যাকশন’, ‘ভারত ও ইসরায়েলের বিরুদ্ধে, ডাইরেক্ট অ্যাকশন’, ‘কিলার কিলার মোদী, নেতানিয়াহু কিলার’, ‘বদরের হাতিয়ার, গর্জে উঠুক আরেকবার’সহ বিভিন্ন স্লোগান দেন।

সমাবেশে শিক্ষার্থী শাহরিয়ার সোহাগ বলেন, “সুইডেনের মতো দেশ যেখানে প্রতিবাদ জানাতে পারে, সেখানে আরব বিশ্ব চুপ কেন? তারা কি নেতানিয়াহুর পকেটে ঢুকে আছে? ছিন্নভিন্ন দেহের ছবি আমাদের সামনে এলে আমরা ঘুমাতে পারি না। আরব বিশ্ব কীভাবে ঘুমায়? যদি ১২০ কোটি মুসলিম একসঙ্গে রুখে দাঁড়াই, তাহলে তারা পালানোর জায়গা পাবে না। বাংলাদেশ থেকে যেমন একেকটা করে ফেরাউন পতন হয়েছে, তেমনি ভারত ও ইসরায়েলের আগ্রাসনও রুখে দেওয়া হবে।”

হেলাল মিয়া নামে আরেক শিক্ষার্থী বলেন, “শুধু দোয়া করলে যদি এই সংকটের সমাধান হতো, তাহলে বদরের যুদ্ধের প্রয়োজন হতো না। এখনো সময় আছে, নিরস্ত্র ফিলিস্তিনি ভাইদের পাশে দাঁড়ান। পাশের দেশগুলোর মুসলিম ভাইদের উপর যে হামলা চালানো হচ্ছে, তারও তীব্র নিন্দা জানাই।”

শিক্ষার্থী আল আমিন মিয়া বলেন, “মুসলিম বিশ্ব আপনারা কোথায়, আপনারা কি এখনো আবাবিলের স্বপ্ন দেখেন? আবাবিল যদি সৃষ্টিকর্তা পাঠিয়ে দেন, তাহলে আপনাদের উপর পাঠাবেন। আপনারা যে নিশ্চুপ হয়ে আছেন, আপনারা তো আরো বেশি স্বৈরাচার।”

ঢাকা/সাজ্জাদ/মেহেদী

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর আপন র

এছাড়াও পড়ুন:

‘আমরার এইতা দিবস-টিবস দিয়া কী অইব’

ঘড়ির কাঁটায় তখন দুপুর ২টা ২০ মিনিট। মাথার ওপর প্রখর রোদের উত্তাপ। প্রচণ্ড গরমে ত্রাহি অবস্থায় একটু বিশ্রাম নিতে গাছের ছায়ার খোঁজে ক্লান্ত পথিক। এমন সময় ঘর্মাক্ত শরীরে একটি ভবন নির্মাণের কাজ করতে দেখা গেল কয়েকজন শ্রমিককে। তাদের একজন তোঁতা মিয়া, অপরজন হাবিবুল।

হাবিবুল পাথর ভরেই যাচ্ছেন, তোঁতা মিয়া সেগুলো মাথায় করে একের পর এক টুড়ি ছাদ ঢালাইয়ের জন্য পৌঁছে দিচ্ছেন নির্দিষ্ট স্থানে। সেখানেও বালু-পাথরের মিশ্রণ করছেন আরও কয়েকজন। তাদের কর্মযজ্ঞের এক ফাঁকে কথা হয় তোঁতা মিয়ার সঙ্গে।

আলাপকালে তোঁতা মিয়া বলেন, ‘সারাদিন কাম (কাজ) কইরা ৫০০ ট্যাহা (টাকা) হাজিরা পাই। এইডি দিয়া কোনোমতে বউ-পুলাপান নিয়া দিন পার করতাছি। মে দিবস-টিবস কী কইতারতাম না। আমরার মতো গরিব মানুষ কাম না করলে পেডে ভাত জুটতো না এইডাই কইতারবাম।’

গতকাল বুধবার ঈশ্বরগঞ্জ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভবন নির্মাণকাজ করার সময় এসব কথা বলেন তোঁতা মিয়া (৪৫)। তাঁর বাড়ি ময়মনসিংহ সদর উপজেলার আকুয়া এলাকায়। এ সময় কথা হয় আরেক নির্মাণ শ্রমিক একাদুল মিয়ার সঙ্গে। একাদুলও জানেন না মে দিবস কী। তিনি বলেন, ‘এই কাম কইরা খাইয়া-না খাইয়া বউ-পুলাপান লইয়া কোনোরহমে দিন পার করতাছি। বর্তমান বাজারো জিনিসপাতির দাম বাড়লেও আমরার মজুরি বাড়ে না। পাঁচ বছর আগেও যা পাইতাম, অহনও তাই পাই।’ তিনি বলেন, ‘কয়েক ট্যাহা সঞ্চয় করবাম এই বাও (উপায়) নাই। অসুখ অইয়া চার দিন ঘরে পইড়া থাকলে না খাইয়া থাহন লাগব। আমরার এইতা দিবস-টিবস দিয়া কী অইব?’

আজ বৃহস্পতিবার মহান মে দিবস। শ্রমজীবী মানুষের অধিকার আদায়ের এই দিনটি সারাবিশ্বের শ্রমিক শ্রেণির কাছে গুরুত্বপূর্ণ। বহির্বিশ্বের মতো বাংলাদেশেও দিবসটি পালিত হয় নানা আয়োজনে। কিন্তু যাদের অধিকার আদায়ের জন্য এ দিনটি পালন করা হয়– তারাই জানেন না দিবসটি সম্পর্কে। তাদের আরেকজন দিনমজুর রাজন মিয়া। রাজন জানান, এসব দিবসে তাদের মতো গরিব মানুষের কোনো লাভ-লোকসান নেই। 

সম্পর্কিত নিবন্ধ