আদালতে হাজিরা শেষে সাবেক এমপি মুক্তিকে কারাগারে প্রেরণ
Published: 19th, October 2025 GMT
নড়াইল-১ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য (এমপি) ও আওয়ামী লীগ নেতা বি এম কবিরুল হক মুক্তিকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছেন কালিয়া আমলী আদালতের বিচারক রত্মা সাহা। রবিবার (১৯ অক্টোবর) সকালে একটি নিয়মিত মামলায় তাকে হাজির করা হলে আদালত এ আদেশ দেন।
নড়াইল আদালতের অতিরিক্ত পাবলিক প্রসিকিউটর (এপিপি) অ্যাডভোকেট আজিজুল ইসলাম এ তথ্য জানিয়েছেন।
আরো পড়ুন:
মাদারীপুরে বাস-মাহিন্দ্রা সংঘর্ষে নিহত ১
খুলনায় ডোবা থেকে যুবকের মরদেহ উদ্ধার
কড়া পুলিশি নিরাপত্তার মধ্যে দিয়ে মুক্তিকে আদালতে হাজির করা হয়। শুনানি শেষে বিচারক তাকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন। আদালত প্রাঙ্গণে এ সময় স্থানীয় আওয়ামী লীগের কিছু নেতাকর্মীর উপস্থিতি লক্ষ্য করা যায়।
আদালত সূত্রে জানা গেছে, কালিয়া থানায় শেখ মনিরুজ্জামান মনা বাদী হয়ে ২০২৪ সালের ১২ সেপ্টেম্বর একটি মামলা দায়ের করেন। মামলা নম্বর ৬। সেই মামলায় নিয়মিত হাজিরার অংশ হিসেবে মুক্তিকে আদালতে হাজির করা হয়।
গত ১৪ অক্টোবর দুপুর ২টার দিকে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগার (কেরানীগঞ্জ) থেকে প্রিজন ভ্যানে করে মুক্তিকে নড়াইল জেলা কারাগারে আনা হয়।
কবিরুল হক নড়াইল-১ আসন থেকে ২০০৮ সালে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। এরপর ২০১৪, ২০১৮ ও ২০২৪ সালে আওয়ামী লীগ থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। গত বছর গণ–অভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর দলটির অনেক নেতার মতো কবিরুলও আত্মগোপনে চলে যান। শেষ পর্যন্ত গুলশানের নিকেতন এলাকার একটি বাসা থেকে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়। তাঁর বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগে মামলা করেছে দুর্নীতি দমন কমিশনও।
ঢাকা/শরিফুল/বকুল
.উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
কী আছে জুলাই সনদের অঙ্গীকারনামায়
বহুল প্রতিক্ষিত ‘জুলাই জাতীয় সনদ ২০২৫’ সই হয়েছে।
শুক্রবার (১৭ অক্টোবর) বিকেলে রাজধানীর জাতীয় সংসদ ভবনের দক্ষিণ প্লাজায় জুলাই জাতীয় সনদে সই করেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস ও বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতারা। পরে গণমাধ্যমের হাতে আসে জুলাই জাতীয় সনদ ২০২৫ বাস্তবায়নের অঙ্গীকারনামা।
আরো পড়ুন:
জুলাই সনদ পৃথিবীর জন্য উদাহরণ হয়ে থাকবে: প্রধান উপদেষ্টা
২৫ রাজনৈতিক দলের যেসব নেতারা অংশ নিলেন
অঙ্গীকারনামার ওই কপিতে দেখা গেছে, এতে ৭টি ধারা রয়েছে।
জুলাই জাতীয় সনদ-২০২৫ বাস্তবায়নের অঙ্গীকারনামা
গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ এবং জাতীয় ঐকমত্যের ভিত্তিতে ২০২৪ সালের জুলাই গণঅভ্যুত্থানে প্রকাশিত জনগণের ইচ্ছাকে প্রাধান্য দিয়ে আমরা নিম্নস্বাক্ষরকারীগণ এই মর্মে অঙ্গীকার ও ঘোষণা করছি যে-
১। জনগণের অধিকার ফিরে পাওয়া এবং গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠার সুদীর্ঘ আন্দোলন-সংগ্রামের ধারাবাহিকতায় ২০২৪ সালের জুলাই-আগস্টের গণঅভ্যুত্থানে হাজারো মানুষের জীবন ও রক্তদান এবং অগণিত মানুষের সীমাহীন ক্ষয়ক্ষতি ও ত্যাগ-তিতিক্ষার বিনিময়ে অর্জিত সুযোগ এবং তৎপ্রেক্ষিতে জন-আকাঙ্ক্ষার প্রতিফলন হিসেবে ধারাবাহিক প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে প্রণীত ও ঐকমত্যের ভিত্তিতে গৃহীত নতুন রাজনৈতিক সমঝোতার দলিল হিসেবে জুলাই জাতীয় সনদ ২০২৫-এর পরিপূর্ণ বাস্তবায়ন নিশ্চিত করব।
২। যেহেতু জনগণ এই রাষ্ট্রের মালিক, তাদের অভিপ্রায়ই সর্বোচ্চ আইন এবং গণতান্ত্রিক ব্যবস্থায় সাধারণত জনগণের অভিপ্রায় প্রতিফলিত হয় রাজনৈতিক দলের মাধ্যমে সেহেতু রাজনৈতিক দল ও জোটসমূহ সম্মিলিতভাবে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার দীর্ঘ সংগ্রামের ধারাবাহিকতায় আলাপ-আলোচনার ভিত্তিতে জনগণের অভিপ্রায়ের সুস্পষ্ট অভিব্যক্তি হিসেবে জুলাই জাতীয় সনদ-২০২৫ গ্রহণ করেছি বিধায় এ সনদ পূর্ণাঙ্গভাবে সংবিধানে তফসিল হিসেবে বা যথোপযুক্তভাবে সংযুক্ত করব।
৩। জুলাই জাতীয় সনদ-২০২৫ এর বৈধতা ও প্রয়োজনীয়তা সম্পর্কে কোনো আদালতে প্রশ্ন উত্থাপন করব না, উপরন্তু উক্ত সনদ বাস্তবায়নের প্রতিটি ধাপে আইনি ও সাংবিধানিক সুরক্ষা নিশ্চিত করব।
৪। গণতন্ত্র, মানবাধিকার ও আইনের শাসন প্রতিষ্ঠার জন্য জনগণের দীর্ঘ ১৬ বছরের নিরবচ্ছিন্ন সংগ্রাম এবং বিশেষত ২০২৪ সালের অভূতপূর্ব গণঅভ্যুত্থানের ঐতিহাসিক তাৎপর্যকে সাংবিধানিক তথা রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি প্রদান করব।
৫। গণঅভ্যুত্থানপূর্ব ১৬ বছরের ফ্যাসিবাদ বিরোধী গণতান্ত্রিক সংগ্রামে গুম, খুন ও নির্যাতনের শিকার হওয়া ব্যক্তিদের এবং ২০২৪ সালের জুলাই-আগস্টের গণঅভ্যুত্থানকালে সংঘটিত সব হত্যাকাণ্ডের বিচার, শহীদদের রাষ্ট্রীয় মর্যাদা প্রদান ও শহীদ পরিবারগুলোকে যথোপযুক্ত সহায়তা প্রদান এবং আহতদের সুচিকিৎসা ও পুনর্বাসনের ব্যবস্থা নিশ্চিত করব।
৬। জুলাই জাতীয় সনদ ২০২৫-এ বাংলাদেশের সামগ্রিক রাষ্ট্র ব্যবস্থা তথা সংবিধান, নির্বাচন ব্যবস্থা, বিচার ব্যবস্থা, জনপ্রশাসন, পুলিশি ব্যবস্থা ও দুর্নীতি দমন ব্যবস্থা সংস্কারের বিষয়ে যেসব সিদ্ধান্ত লিপিবদ্ধ রয়েছে সেগুলো বাস্তবায়নের জন্য সংবিধান এবং বিদ্যমান আইনগুলোর প্রয়োজনীয় সংশোধন, সংযোজন, পরিমার্জন বা নতুন আইন প্রণয়ন, প্রয়োজনীয় বিধি প্রণয়ন বা বিদ্যমান বিধি ও প্রবিধির পরিবর্তন বা সংশোধন করব।
৭। জুলাই জাতীয় সনদ-২০২৫ এর ঐকমত্যের ভিত্তিতে গৃহীত যেসব সিদ্ধান্ত অবিলম্বে বাস্তবায়নযোগ্য সেগুলো কোনো ধরনের কালক্ষেপণ না করেই দ্রুততম সময়ে অন্তর্বর্তী সরকার ও অন্যান্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ সম্পূর্ণরূপে বাস্তবায়ন করবে।
ঢাকা/নঈমুদ্দীন/সাইফ