নাবি মুম্বাইয়ের ডিওয়াই পাতিল স্টেডিয়ামে গতকাল রাতে নারী বিশ্বকাপের সেমিফাইনালে অস্ট্রেলিয়াকে ৫ উইকেটে হারিয়ে ফাইনালে উঠেছে ভারত। অস্ট্রেলিয়ার ৩৩৮ রান তাড়া করতে নেমে ভারত জয় তুলে নেয় ৯ বল হাতে রেখে। নারী বিশ্বকাপে এটাই সর্বোচ্চ রান তাড়া করে জয়ের রেকর্ড। এ ছাড়া আরও বেশ কিছু রেকর্ড হয়েছে এ ম্যাচে। আসুন, দেখে নিই।৩৩৯

অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে রান তাড়ায় ভারতের লক্ষ্য। নারী বিশ্বকাপে এটাই সর্বোচ্চ রান তাড়া করে জয়ের বিশ্ব রেকর্ড। এবারের নারী বিশ্বকাপের বিশাখাপত্তনমে ভারতের দেওয়া ৩৩১ রানের লক্ষ্য তাড়া করে জিতেছিল অস্ট্রেলিয়া। সেই রেকর্ড ভেঙে গতকাল রাতে নতুন রেকর্ড গড়েছে ভারত। মেয়েদের ওয়ানডেতে এর আগে সর্বোচ্চ ২৬৪ রান তাড়া করে জিতেছে ভারত। তবে মেয়েদের বিশ্বকাপে ভারত এর আগে কখনো ন্যূনতম ২০০ রান তাড়া করে জিততে পারেনি।

১৫

নারী বিশ্বকাপে অস্ট্রেলিয়ার টানা ম্যাচ জয়সংখ্যা। গতকাল রাতে হারের আগে সর্বশেষ ২০১৭ নারী বিশ্বকাপের সেমিফাইনালে এই ভারতের বিপক্ষেই হেরেছিল অস্ট্রেলিয়া। নারী বিশ্বকাপে এটা যৌথভাবে টানা সর্বোচ্চ ম্যাচ জয়ের রেকর্ড। আগের রেকর্ডটিও ছিল অস্ট্রেলিয়ার (১৯৯৩-২০০০)।

৬৭৯

ভারত ও অস্ট্রেলিয়ার দুই ইনিংস মিলিয়ে মোট রান। নারী বিশ্বকাপে দুই দলের ইনিংস মিলিয়ে এটাই সর্বোচ্চ রানের ম্যাচ। ২০১৭ সালে ব্রিস্টলে ইংল্যান্ড ও দক্ষিণ আফ্রিকার মধ্যে ম্যাচে উঠেছিল ৬৭৮ রান।

আরও পড়ুনচ্যাম্পিয়ন অস্ট্রেলিয়াকে বিদায় করে ফাইনালে ভারত১১ ঘণ্টা আগে৩

ছেলে ও মেয়েদের ওয়ানডে মিলিয়ে নকআউট ম্যাচে ৩০০–এর বেশি রানের লক্ষ্য তাড়া করে জয়ের নজির। আগের দুবার এই নজির গড়েছে ভারতের ছেলেদের ক্রিকেট দল। ১৯৯৮ সালে ইনডিপেনডেন্স কাপের তৃতীয় ফাইনালে পাকিস্তানের ৩১৪ রান তাড়া করে জিতেছিল ভারত। ২০০২ সালে ন্যাটওয়েস্ট ত্রিদেশীয় সিরিজের ফাইনালে ইংল্যান্ডের ৩২৫ রান তাড়া করে জেতে ভারত।

১২৭*

নারী ওয়ানডেতে রান তাড়ায় ভারতের হয়ে সর্বোচ্চ রানের ইনিংস, যেটা গতকাল রাতে খেলেন জেমাইমা রদ্রিগেজ। গত মাসে দিল্লিতে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ১২৫ রানের ইনিংস খেলেন স্মৃতি মান্ধানা।

৭৭

ভারতের বিপক্ষে সেঞ্চুরি করতে অস্ট্রেলিয়ার ফোবে লিচফিল্ডের খেলা বলসংখ্যা। মেয়েদের ওয়ানডেতে নকআউট ম্যাচে এটা দ্রুততম সেঞ্চুরির রেকর্ড। ২০১৭ বিশ্বকাপের সেমিফাইনালে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ৯০ বলে সেঞ্চুরি করেন হারমানপ্রীত কৌর। ২০২২ বিশ্বকাপের ফাইনালে ইংল্যান্ডের ন্যাট শিভার-ব্রান্টও ৯০ বলে সেঞ্চুরি করেন।

২০২৫ সালে মেয়েদের এই বিশ্বকাপ ফাইনালই প্রথম ফাইনাল যেখানে অস্ট্রেলিয়া কিংবা ইংল্যান্ডের মধ্যে কাউকে দেখা যাবে না। আগের সব কটি বিশ্বকাপের ফাইনালেই এই দুই দলের মধ্যে কেউ না কেউ ছিল।

আরও পড়ুনবোলাররা ভাসান, ব্যাটসম্যানেরা ডোবান—আজ কী করবে বাংলাদেশ৩ ঘণ্টা আগে.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ব শ বক প র গতক ল র ত ম ফ ইন ল র র কর ড

এছাড়াও পড়ুন:

রন ও রিক হক সিকদারের বিরুদ্ধে দুদকের অভিযোগপত্র অনুমোদন

৭১ কোটি টাকা বিদেশে পাচারের অভিযোগে করা মামলায় সিকদার গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক রন হক সিকদার ও তাঁর ভাই রিক হক সিকদারের বিরুদ্ধে অর্থ পাচারের দুই মামলার অভিযোগপত্র (চার্জশিট) অনুমোদন দিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। রাজধানীর সেগুনবাগিচায় দুদকের প্রধান কার্যালয়ে আজ বুধবার দুদকের মহাপরিচালক মো. আক্তার হোসেন সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান।

গত বছরের এপ্রিলে দুদকের পরিচালক বেনজীর আহমেদ রন, রিকসহ সাতজনের বিরুদ্ধে মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ আইনে দুটি মামলা করেন। মামলাগুলো হয় দুদকের ঢাকা সমন্বিত জেলা কার্যালয়ে। দুটি মামলার অভিযোগ প্রায় একই ধরনের। সেখানে দুই ভাইয়ের বিরুদ্ধে ৭১ কোটি টাকা বিদেশে পাচারের অভিযোগ আনা হয়েছে।

সিকদার গ্রুপের প্রতিষ্ঠাতা জয়নুল হক সিকদারের গড়ে তোলা ব্যবসা বর্তমানে দেখভাল করছেন তাঁর স্ত্রী ও সন্তানেরা। রন ও রিক হক সিকদারের বিরুদ্ধে কয়েক বছর ধরে নানা অনিয়মের অভিযোগ সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের হস্তক্ষেপে তাঁরা ব্যাংকের পরিচালক পদও হারিয়েছেন।

অভিযোগপত্রে বলা হয়েছে, বিদেশে অবস্থানকালে তাঁরা নিজেদের ক্রেডিট কার্ড ব্যবহার করে নির্ধারিত সীমার বাইরে বিপুল অঙ্কের অর্থ খরচ করেন। এসব তথ্য বাংলাদেশ ব্যাংকের ক্রেডিট ইনফরমেশন ব্যুরোকে (সিআইবি) জানানো হয়নি; বরং ন্যাশনাল ব্যাংকের কিছু কর্মকর্তা অবৈধভাবে তাঁদের ক্রেডিট লিমিট বাড়িয়ে দেন।

রন হক সিকদার প্রায় ৫০ কোটি টাকা এবং রিক হক সিকদার প্রায় সাড়ে ২১ কোটি টাকা সীমার অতিরিক্ত খরচ করেন—২০১৭ সালের ডলার বিনিময় হার অনুযায়ী। ওই অর্থ ন্যাশনাল ব্যাংক থেকে থাইল্যান্ডে থাকা ২০টি ব্যাংক হিসাবে পাঠানো হয়, যা দিয়ে দুই ভাইয়ের ক্রেডিট কার্ডের ঋণ পরিশোধ করা হয়। দুদক বলছে, তাঁদের নামে আরও বিভিন্ন দেশ থেকেও অর্থ স্থানান্তরের তথ্য পাওয়া গেছে।

দুই ভাই ছাড়াও এ দুটি মামলায় আসামি করা হয়েছে ন্যাশনাল ব্যাংকের সাবেক এক্সিকিউটিভ ভাইস প্রেসিডেন্ট ও হেড অব কার্ড ডিভিশন মো. মাহফুজুর রহমান, সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক শাহ সৈয়দ আবদুল বারী, অতিরিক্ত ব্যবস্থাপনা পরিচালক এম এ ওয়াদুদ, সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক এ এস এম বুলবুল, চৌধুরী মোশতাক আহমেদ ওরফে চৌধুরী রাসেল আহমেদ, সাবেক সিনিয়র অ্যাসিস্ট্যান্ট ভাইস প্রেসিডেন্ট উজ্জ্বল কুমার পাল, মোহাম্মদ রেজওয়ানুল হক, সাবেক ভাইস প্রেসিডেন্ট সুবীর চন্দ্র কর, সাবেক অ্যাসিস্ট্যান্ট ভাইস প্রেসিডেন্ট মো. শামসুল আলম, সাবেক ভাইস প্রেসিডেন্ট এ এন এম আহসান হাবিব ও সিনিয়র অ্যাসিস্ট্যান্ট ভাইস প্রেসিডেন্ট তারিকুল ইসলাম খানকে।

দুই ভাইয়ের বিরুদ্ধে অভিযোগ

অভিযোগপত্রে বলা হয়েছে, রন হক সিকদার ২০১৭ থেকে ২০২১ সালের মধ্যে পাঁচবার বিদেশে গিয়ে ক্রেডিট কার্ডে ৬১ লাখ ৫২ হাজার ২২৫ ডলার খরচ করেন। অথচ তাঁর সর্বোচ্চ অনুমোদিত সীমা ছিল ৬০ হাজার ডলার; অর্থাৎ তিনি সীমার অতিরিক্ত ৬০ লাখ ৯২ হাজার ২২৫ ডলার (প্রায় ৫০ কোটি টাকা) খরচ করেন।

রিক হক সিকদার একই সময়ে পাঁচবার বিদেশ ভ্রমণে ক্রেডিট কার্ডে ২৬ লাখ ৮২ হাজার ৪৯৯ ডলার খরচ করেন, যেখানে তাঁর সীমা ছিল ৬০ হাজার ডলার। ফলে তিনি অতিরিক্ত ২৬ লাখ ২২ হাজার ৪৯৯ ডলার খরচ করেন এবং সেই অর্থ পাচার করে কার্ডের ঋণ পরিশোধ করেন।

বাংলাদেশ ব্যাংকের নিয়ম অনুযায়ী, ক্রেডিট কার্ডের ঋণের তথ্য মাসিক ভিত্তিতে সিআইবি ডেটাবেজে আপলোড করতে হয়। কিন্তু ন্যাশনাল ব্যাংকের কার্ড বিভাগের তৎকালীন প্রধান মাহফুজুর রহমান ২০২০ সাল পর্যন্ত চার বছরেও এসব তথ্য রিপোর্ট করেননি।

মামলার এজাহারে বলা হয়েছে, সিআইবিকে কোনো তথ্য না জানিয়ে আসামিরা অবৈধভাবে রন ও রিক হক সিকদারের আন্তর্জাতিক ক্রেডিট কার্ডে লিমিট বাড়িয়ে দেন। নিয়ম অনুযায়ী, তাঁরা সর্বোচ্চ ৩৮ হাজার ৪৬১ ডলার খরচ করতে পারতেন, কিন্তু নিয়মবহির্ভূতভাবে সীমা বাড়ানো হয়।

দুদকের অনুসন্ধানে দেখা গেছে, এই ঋণ পরে পরিশোধ করা হয়েছে বাংলাদেশ থেকে বিদেশে অর্থ পাচার করে।

বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিটের (বিএফআইইউ) প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, থাইল্যান্ডে রন ও রিক হক সিকদারের নামে ও স্বার্থসংশ্লিষ্ট অন্তত ২০টি ব্যাংক হিসাব রয়েছে। ন্যাশনাল ব্যাংক থেকে এসব হিসাবে অর্থ স্থানান্তর করা হয়েছে। তাঁদের নামে ও স্বার্থসংশ্লিষ্টদের হিসাবে যুক্তরাষ্ট্র, সিঙ্গাপুর, মালয়েশিয়া, থাইল্যান্ড, সুইজারল্যান্ড, চীন, ভিয়েনা, অস্ট্রেলিয়া, ব্রিটেন ও রাশিয়া থেকেও অর্থ স্থানান্তরের তথ্য পাওয়া গেছে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • রন ও রিক হক সিকদারের বিরুদ্ধে দুদকের অভিযোগপত্র অনুমোদন