তিন সাঁওতাল হত্যার ঘটনায় আওয়ামী লীগ–দলীয় সাবেক সংসদ সদস্য (এমপি) আবুল কালাম আজাদকে গ্রেপ্তারের দাবিতে আজ রোববার গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জ উপজেলা সদরে মিছিল, সমাবেশ হয়েছে। সাঁওতাল সম্প্রদায়ের মানুষেরা এই কর্মসূচি শেষে গোবিন্দগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে (ইউএনও) স্মারকলিপিও দিয়েছেন।

আজ দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে সাঁওতাল পল্লি জয়পুর ও মাদারপুর গ্রাম থেকে এসে লোকজন উপজেলা সদরের থানা মোড় এলাকায় সমবেত হন। বেলা একটার দিকে তাঁরা সেখান থেকে মিছিল বের করেন। মিছিলটি উপজেলা সদরের প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে ইউএনও কার্যালয়ে গিয়ে শেষ হয়। সেখানে একটি সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।

সমাবেশে তির-ধনুকসহ বিভিন্ন দাবিসংবলিত ফেস্টুন নিয়ে সাঁওতাল নারী-পুরুষেরা অংশ নেন। গোবিন্দগঞ্জ সাহেবগঞ্জ-বাগদা ফার্ম ভূমি উদ্ধার সংগ্রাম কমিটি এই কর্মসূচির আয়োজন করে। সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন সাহেবগঞ্জ-বাগদা ফার্ম ভূমি উদ্ধার সংগ্রাম কমিটির সভাপতি ফিলিমন বাস্কে। বক্তব্য দেন দুনিয়াস সরেন, শ্যামবালা হেমরম, সাহেব মুরমু, সুফল হেমরম, বিটিশ সরেন, অঞ্জলি মুরমু, ষোয়াস সরেন, অলিভিয়া হেমরম প্রমুখ।

উল্লেখ্য, ২০১৬ সালের ৬ নভেম্বর গোবিন্দগঞ্জ উপজেলার সাহেবগঞ্জ এলাকায় আখ কাটাকে কেন্দ্র করে পুলিশ, চিনিকল কর্মচারীদের সঙ্গে সাঁওতালদের সংঘর্ষ হয়। এতে শ্যামল, মঙ্গল, রমেশসহ ৩ সাঁওতাল নিহত এবং ২০ জন আহত হন। এই ঘটনার পর থোমাস হেমরম বাদী হয়ে গাইবান্ধা-৪ (গোবিন্দগঞ্জ) আসনের তৎকালীন আওয়ামী লীগ–দলীয় সংসদ সদস্য আবুল কালাম আজাদসহ ৩৩ জনকে আসামি করে একটি হত্যা মামলা করেন।

সমাবেশে বক্তারা বলেন, হত্যা মামলার বিচার হওয়া তো দূরের কথা, মামলার আসামি সাবেক সংসদ সদস্য আবুল কালাম আজাদ, গোবিন্দগঞ্জ উপজেলার সাবেক চেয়ারম্যান শাকিল আকন্দসহ অন্য মূল আসামিদের কেউই গ্রেপ্তার হয়নি। গত ৫ আগস্টে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর থেকে আবুল কালাম ও শাকিল পলাতক। ঘটনার ৯ বছরেও গোবিন্দগঞ্জে তিন সাঁওতাল হত্যার বিচার হয়নি। বক্তারা অবিলম্বে আসামিদের গ্রেপ্তার ও বিচারের দাবি জানান।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: গ ব ন দগঞ জ উপজ ল

এছাড়াও পড়ুন:

৬ মাস ধরে খোলা আকাশের নিচে ৩১টি পরিবার

বরিশালের বানারীপাড়া উপজেলার খেজুরবাড়ী আশ্রয়ণ প্রকল্প থেকে উচ্ছেদ হওয়ায় ৩১টি পরিবার ছয় মাস ধরে খোলা আকাশের নিচে বসবাস করছে। বৈধ দলিল ছাড়া বসবাসের অভিযোগে গত বছর আশ্রয়ণ প্রকল্প থেকে তাদের উচ্ছেদ করা হয়। 

গত ৩১ ডিসেম্বর ইউএনও ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. বায়েজিদুর রহমান সলিয়াবাকপুর ইউনিয়নের খেজুরবাড়ী আবাসনে উচ্ছেদ অভিযান পরিচালনা করেন। 

ভুক্তভোগীদের অভিযোগ, পূর্ব ঘোষণা বা লিখিত নোটিশ ছাড়া তাদের ঘর থেকে বের করে দিয়ে তালা লাগিয়ে দেয় উপজেলা প্রশাসন। কোথাও ঠাঁই না পাওয়ায় গত ছয় মাস তারা আশ্রয়ণের তালাবদ্ধ ঘরের সামনে পলি-খড় দিয়ে বেড়া দিয়ে অস্থায়ীভাবে থাকছেন। প্রশাসনের পক্ষ থেকে উচ্ছেদের পর এখন পর্যন্ত কোনো খোঁজখবর নেওয়া হয়নি।

ভুক্তভোগীরা আরও জানান, উচ্ছেদের সময় ইউএনও তাদের জানিয়েছিলেন, যাদের কাছে বৈধ দলিল নেই, কিন্তু যাওয়ারও কোনো জায়গা নেই, তাদেরকে তদন্ত করে দ্রুত পুনর্বাসনের আওতায় আনা হবে। আর যাদের অন্যত্র জমি বা ঘর আছে, তারা পুনর্বাসনের যোগ্য হিসেবে বিবেচিত হবেন না। তবে সেই কথা আর বাস্তবে প্রতিফলিত হয়নি। অবিলম্বে স্থায়ী পুনর্বাসনের দাবি জানিয়েছেন ভুক্তভোগীরা। 

স্থানীয় কয়েকজন বাসিন্দার সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, উচ্ছেদের শিকার কিছু পরিবার সেখানে এক যুগের বেশি সময় ধরে বসবাস করছে। তখন হতদরিদ্র এসব পরিবারের বাড়িঘর সন্ধ্যা নদীতে বিলীন হয়ে গিয়েছিল। সেই সময় খেজুরবাড়ী আশ্রয়ণে কিছু ঘর খালি থাকায় তৎকালীন ইউএনও ও ইউপি চেয়ারম্যান তাদের সেখানে থাকতে দেন। 

ইউএনও বায়েজিদুর রহমান জানান, আবাসনের ওই ৩১টি পরিবার দীর্ঘদিন ধরে বৈধ দলিল ছাড়াই সরকারি ঘরগুলো দখল করে বসবাস করেছে। তারা যে মালিকানা দাবি করে দলিল দেখাচ্ছে, তা একেবারেই গ্রহণযোগ্য নয়। এর আগেও তাদের একাধিকবার ঘর ছেড়ে দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল, কিন্তু তারা তা মানেনি। উপজেলা প্রশাসন বাধ্য হয়ে সরকারি ঘর থেকে তাদের উচ্ছেদ করে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ৬ মাস ধরে খোলা আকাশের নিচে ৩১টি পরিবার